বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০

ব্যক্তিত্ব || শিক্ষক সুদীপকুমার খাঁড়া রক্তদানে সদাব্যস্ত ছিলেন লকডাউনের কঠিন সময়েও || নিজস্ব কলম

 

ব্যক্তিত্ব

শিক্ষক সুদীপকুমার খাঁড়া রক্তদানে সদাব্যস্ত ছিলেন লকডাউনের কঠিন সময়েও

নিজস্ব কলম




শিক্ষক ও সমাজকর্মী সুদীপ কুমার খাঁড়ার জন্ম অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার ঝাড়গ্রাম মহকুমার, ঝাড়গ্রাম ব্লকের রাধাগোবিন্দ গ্রামে। পড়াশোনা করেছেন গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়,মহাপাল শ্রী বিদ‍্যাপীঠ,বেলদা গঙ্গাধর একাডেমি, মেদিনীপুর কলেজ,বিদ‍্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় ও বিদ‍্যাসাগর শিক্ষক শিক্ষণ মহাবিদ্যালয়ে। ইতিহাসের ছাত্র সুদীপবাবু ২০০৪ সালে মেদিনীপুর সদর ব্লকের চুয়াডাঙ্গা হাইস্কুলে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে নিজের কর্মজীবন শুরু করেন।  নেতৃত্বদান ও সমাজসেবায় তাঁর হাতখড়ি সেই ছাত্রজীবন থেকেই। একজন ছাত্রদরদী শিক্ষক হিসেবে ক্লাসরুমের পঠন-পাঠনের পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের সর্বাঙ্গীন বিকাশে তাদের ক্রীড়া, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, পরিবেশ সচেতনতা বিষয়ক নানা কর্মসূচিতে পাশে থেকে উৎসাহিত করেন। নিজের বিদ্যালয়ের পাশাপাশি বিদ‍্যালয়ের গন্ডীর বাইরেও মেধাবী অথচ আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া অনেক ছাত্র-ছাত্রীর পাশে দাঁড়িছেন কখনো ব‍্যক্তিগত ভাবে, কখনও যে সব সংস্থার সঙ্গে যুক্ত সেই সব সংস্থার সাহায্য নিয়ে আবার অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ছাত্রদের স্কলারশিপসহ অন্যান্য প্রয়োজনে কখনো ছুটে গেছেন হুগলীর উত্তরপাড়া, কখনো কলকাতায়।ব‍্যক্তিগত উদ‍্যোগে ও বিভিন্ন সমাজসেবী​ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থেকে সামর্থ মত  সর্বদায় সচেষ্ট থাকেন নানা সাংস্কৃতিক, পরিবেশ সচেতনতা, স্বাস্থ্য সচেতনতা সহ নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডে।সেই ১৯৯৮ সালে কলেজে পড়ার সময় থেকেই নিয়মিত রক্তদান করেন। এখনো পর্যন্ত চল্লিশ বারের বেশি রক্তদান করে ফেলেছেন। শুধু নিজে রক্তদান করে ক্ষান্ত থাকেননি যুক্ত থাকা বিভিন্ন সংগঠন,পরিচিত বন্ধু-বান্ধব ও সোশ্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে চেনা-অচেনা বহু মানুষের জন্য রক্ত যোগাড় করে দিয়েছেন রক্তদান আন্দোলনের এই অগ্রণী সেনানী। মুমুর্ষ রোগীর  রক্তের প্রয়োজনে মেদিনীপুর শহরের যাঁরা অগ্র পশ্চাৎ বিবেচনায় না করে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন তাঁর মধ্যে সুদীপবাবু অন‍্যতম।আর এ কাজটা তিনি কলেজ জীবন থেকেই করে চলেছেন। রোগীর রক্তের প্রয়োজনে রাতদুপুরেও ছুটে যান হাসপাতালে ব্লাড ব্যাংকে। বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে মুমূর্ষু রোগীর রক্তের প্রয়োজন সহ, কোভিড আক্রান্ত রোগীকে ভর্তির বিষয়ে সহযোগিতাসহ, বিভিন্ন ভাবে সমস্যায় থাকা মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছেন। লেখালেখির প্রবল ইচ্ছা রয়েছে, বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় মাঝে মাঝে লেখালেখি করেন। তবে নানা কাজের চাপে সেটা সবসময় হয়ে ওঠে না।

কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার নদীদীন সম্মুখীন । সুবীর ঘোষ

 কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার 



নদীদীন সম্মুখীন । সুবীর ঘোষ । আলোপৃথিবী । ত্রিশ টাকা ।


' আমার দেশে আমার নদী আমারই মতো/  লজ্জা জড়োসড়ো ' র মতো যিনি লেখেন ,  তাঁর ক্ষীণতনু কাব্যপুস্তিকাটি অন্তদৃষ্টিতে বৃহৎ হয়ে হাজির হয় পাঠক মনে । তাই ঘটেছে কবি সুবীর ঘোষের ১৬ পৃষ্ঠার কাব্য পুস্তিকা ' নদীদীন সম্মুখীন ' - এর ক্ষেত্রে । সুবীরের নিয়ত এই কাব্য প্রয়াস তাঁকে বিশেষভাবে চিন্হিত করে তোলে কবি হিসেবে । তাঁর কাছে আরো পাই:  '  কারা যেন পূর্বাশ্রম ভুলে যেতে চায় / সময় নতুনের সঙ্গে সঙ্গে চলে/  মায়াবী বেনীর স্পর্শে যন্ত্রণায় সরগম বাজে । ' ( ' সময় কখনও ') , ' জীবনের পাতাগুলো একবার ফিরে পড়া চাই , / জীর্ণ পাতা খুলবার বিপদ প্রচুর; / বিবর্ণ নারীকে নিয়ে পথিকের পথ ভুল হয় ।' ( ' অসংলগ্ন অন্তরাল ' ) এর মতো উজ্জ্বল পংক্তিগুলি ।

             সুবীর সেই কবিদের একজন,  যাঁকে ধরা যায় প্রতিটি কবিতায়  নতুনভাবে । যার ভেতর প্রতিটি শব্দের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে ভালো লাগে । কারণ তিনি ভালোবাসেন কবিতা,  আর সেই ভালোবাসা থেকে উঠিয়ে আনেন তাঁর কাব্য ফসল । 

            ' বুকের ভেতর/  যে নদী শুকোয়/  অন্যরূপে সে বাঁচে ' ( 'মুক্তি ' ) -র মতো প্রগাঢ় ব্যন্জ্ঞনা ছুঁয়ে দিয়ে যেতে পারেন বলেই তিনি সার্থকতার পথে । দীর্ঘ কবিতা 

যাপনের ভেতর দিয়ে তিনি যেভাবে ধীরে ধীরে নিজেকে গড়ে তুলেছেন তা আনন্দ জোগায় । ক্যাটরিনা ক্রিস্টোফ্লিডো- প্রচ্ছদ বাড়তি অক্সিজেন দেয় ।

আটপৌরে কবিতা ৮৪৬-৮৫০ || নীলাঞ্জন কুমার || ধারাবাহিক বিভাগ

আটপৌরে কবিতা

নীলাঞ্জন কুমার

৮৪৬

যোগ/  ধ্যান/  সংযম
   ) রিপুদমন  (
শুদ্ধি বোধ সন্ন্যাসী নির্লিপ্ত ।

৮৪৭

সাময়িকী/  খবর/  প্রত্যক্ষ
       ) পত্রিকা  (
সকালের চায়ের সঙ্গে জমে!

৮৪৮

লাইব্রেরি/  গ্রন্থকীট/ জ্ঞানী
          ) বইপত্র  (
যাদের সংগ্রহ একান্ত প্রয়োজন ।

৮৪৯

অবৈধ/  নারী/  শিশু
     ) পাচার  (
প্রতিদিন কত কত যটছে !

৮৫০

মদ / রিপু/  মত্ততা
  )  মাতাল  (
কালী মার্কা লেবেল সেঁটেছে !


পথ হাঁটা || অচিন্ত্য নন্দী || কবিতা

পথ হাঁটা 

অচিন্ত্য নন্দী 



ছায়াপথের বাইরে থেকে বড় বেশি পথ হাঁটা l চোখ কান খোলা l চোখ আর কিছুই দ্যাখে না l 'হায়' 'হায়' ধ্বনি দেয়ালের বাইরে দাঁড়িয়ে l যন্ত্র   মাথায় হাত বুলিয়ে দিলে সুখ -নিদ্রা l ঘুমের মধ্যে অচেনা পৃথিবীর সাথে দড়ি টানাটানি l

স্বপ্ন তখন বিচারকের পদ অলংকৃত করে l এ সময় দরজায় শব্দ 'তুমি' প্রবেশের সূচক l ঠিক তখনই কেন যে 

ঝাউবন অকারণ স্মৃতিচারণ !

শিকড় || ফটিক চৌধুরী || কবিতা

শিকড়

ফটিক চৌধুরী



শিকড় কতদূর মাটির গভীরে গেলে

তা ঝড়ে উপড়ে পড়বে না ?

সম্পর্ক কত গভীরে গেলে

তা  জীবনে আছড়ে পড়বে না ?

এখন দেখতে হবে মাটিটা কেমন

গাছটাই বা কি

কিংবা সম্পর্কের গভীরতাই বা কত !

মাটির সঙ্গে যেমন শিকড়ের সম্পর্ক

মানবজমিনের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই।

আমফানের মত বিপর্যয়

করোনার মত অতিমারি

বুঝিয়ে দেয় শিকড়ের সম্পর্ক।

শিকড়ের একটা টান আছে

যা মাটিকে ধরে রাখে।

সম্পর্কও তাই। টান না থাকলে

কোন সম্পর্কই স্থায়ী হয় না।

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য ১৪৯ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক বিভাগ

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য

প্রভাত চৌধুরী



১৪৯.

দীপংকর ঘোষের মতো আরো কয়েকজন আছেন বা ছিলেন কবিতাপাক্ষিক পরিবারে , যাঁদের সম্পর্কেও আলাদা করে লেখা উচিত আমার। কিন্তু এই মুহূর্তে কেন্দ্রীয় উৎসবের ঘণ্টা বেজে গেছে , সেকারণে এই বিশ্লেষণ এখন মুলতুবি রাখলাম।

তবে উৎসবে প্রবেশের আগে কবিতাপাক্ষিকের গাইড-লাইন সম্পর্কে দু-চার কথা বলে রাখতে চাইছি।প্রথমেই পুরস্কার-পর্ব।

এবং প্রথমেই স্বজনপোষণের পক্ষে গুটিকয় স্বীকারোক্তি জানিয়ে রাখতে চাইছি।

অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পায়ে পা মিলিয়ে হাঁটতে চেয়েছি আমরা। আমরাও আমাদের আত্মজনদের পুরস্কৃত বা সম্মানীত করার চেষ্টা করেছি। কখনোই তা থেকে সরে আসিনি। সরে আসার প্রলোভনও ছিল।কিন্তু আমার সামন্ততন্ত্রের প্রতি বিপুল অনুরাগ তা হতে দেয়নি। মধ্যস্বত্বভোগী-র রক্ত এবং অহংকার- কে এর জন্য দায়ী করি আমি। কারো কাছে অনুকম্পা চাইতে গেলে মেরুদণ্ড আপত্তি করে। মনে করিয়ে দেয় , আমি লিখেছিলাম :

জুতোর ফিতে বাধার সময় ছাড়া যে মানুষ নতজানু হয় তাকে করুণা করতে শেখো।

নিজেকে কখনোই করুণার পাত্র রূপে উপস্থিত করতে চাইনি। এবার জানিয়ে রাখছি প্রথম কয়েক বছরের পুরস্কৃত / সম্মানীতদের নাম :

কবিতাপাক্ষিক সম্মান ১৪০৪

অমিতেশ মাইতি পিনাকী ঘোষ রফিক উল ইসলাম সুব্রত চেল মানসকুমার চিনি যশোধরা রায়চৌধুরী সুদীপ বসু সুমিতেশ সরকার এবং কৃত্তিবাস , শতভিষা পত্রিকাদ্বয়।

সনাতন দে স্মৃতি পুরস্কার ১৪০৪ : নাম ঘোষণা হয়নি


কবিতাপাক্ষিক সম্মান ১৪০৫

অরুণকুমার চট্টোপাধ্যায় কেষ্ট চট্টোপাধ্যায় চিত্ত ভট্টাচার্য মধু চট্টোপাধ্যায় সুধাংশু সেন ধীমান চক্রবর্তী অংশুমান কর সুবীর সরকার এবং কবিপত্র

সনাতন দে স্মৃতি পুরস্কার ১৪০৫: সমীর রায়চৌধুরী


কবিতাপাক্ষিক সম্মান ১৪০৬

অমিতাভ মৈত্র মুরারি সিংহ তীর্থঙ্কর মৈত্র জয়দীপ চক্রবর্তী কৌশিক চট্টোপাধ্যায় এবং কবিতা পরিচয়

সনাতন দে স্মৃতি পুরস্কার ১৪০৬ : প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত


কবিতাপাক্ষিক সম্মান ১৪০৭

রজতশুভ্র গুপ্ত নিখিলকুমার সরকার কানাইলাল জানা বিভাবসু শুভাশিস গঙ্গোপাধ্যায় এবং গল্পকবিতা

সনাতন দে স্মৃতি পুরস্কার : আলোক সরকার


কবিতাপাক্ষিক সম্মান ১৪০৮

কৌশিক চক্রবর্তী রথীন বন্দ্যোপাধ্যায় রামকিশোর ভট্টাচার্য রুদ্র কিংশুক শুভশ্রী রায়  এবং 

অজ্ঞাতবাস ভাইরাস

সনাতন দে স্মৃতি পুরস্কার ১৪০৮: মণীন্দ্র গুপ্ত


কবিতাপাক্ষিক সম্মান ১৪০৯

গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায় পিনাকীরঞ্জন সামন্ত রাজকুমার রায়চৌধুরী শ্যামলবরণ সাহা সন্দীপ বিশ্বাস এবং আত্মপ্রকাশ এবং পত্রিকাদ্বয়

সনাতন দে স্মৃতি পুরস্কার ১৪০৯ : নারায়ণ মুখোপাধ্যায়


অরুণ মিত্র স্মারক সম্মান 2001 : রাজকল্যাণ চেল

অরুণ মিত্র স্মারক সম্মান2002 : পুণ্যশ্লোক দাশগুপ্ত


এই তালিকা থেকে কেউ কেউ যেমন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে শিফ্ট করেছেন।আবার এমন আমরা করেছি সম্মান দেবার পরই আমরা তাদের কবিতাপাক্ষিকের এডিটোরিয়াল টিমে নিয়ে এসেছি। আমি আমার দোষ স্বীকার করলাম।

মঙ্গলবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০

চলে গেলেন কবি পার্থপ্রতিম কাঞ্জিলাল

চলে গেলেন কবি পার্থপ্রতিম কাঞ্জিলাল


দেহান্তর হল কবি পার্থপ্রতিম কাঞ্জিলাল-এর । ২৩ ডিসেম্বর ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় জন্ম । তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থগুলির মধ্যে  "দেবী",   "রাত্রি চতুর্দশী ",  "টেবিল , দূরের সন্ধ্যা ",    "পাঠকের সঙ্গে , ব্যক্তিগত " ,   "কবিতা সংগ্রহ "  প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য ।  একাধিক পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হয়েছেন । আমাদের অত্যন্ত কাছের মানুষ ছিলেন । কবিকে আমাদের গভীর শ্রদ্ধা জানাই । তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি।

- সৌমেন সাউ

কথাবন্ধ || শ্যামাশ্রী মুখার্জী

 কথাবন্ধ

শ্যামাশ্রী মুখার্জী



আজ তিনদিন...


৭২ ঘণ্টা

৪৩২০ মিনিট

২৫৯২০০ সেকেন্ড

আমাদের কোনো কথা হয়নি


এই তিনদিন আমরা

আলাদা আলাদা সময় 

সবুজ বিন্দুতে


এই তিনদিন ছুড়ে ছুড়ে

যেটুকু তোর দিকে চেয়েছি

তারও বেশি না চাওয়া জুড়ে

ছুঁয়েছিলি তুই

কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার আমার বিভ্রান্তিকর আত্মহত্যাসমূহ । অনুপ মন্ডল ।

 কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার 



আমার বিভ্রান্তিকর আত্মহত্যাসমূহ । অনুপ মন্ডল ।কবিতা ক্যাম্পাস । একশো টাকা ।


অনুপ মন্ডল সেই জাতের কবি যার মগ্নতার সঙ্গে নিজেকে না মিশিয়ে দিলে তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যান । যেমন:  ' ভারী হতে হতে কাৎ হয়ে ডুবে মাথা আর অমরত্ব/  লোভী মাস্তুল উঁকি মেরে নেয় জেগে ওঠা চরের নিশানা ' , ' তবু আজও সে আগের মতোই ফিক করে হেসে ফেলে,  / ছোপ ধরা দাঁতের ধার যদিও তার আজ কমে গেছে অনেকটাই ' পংক্তি দুটোর কাছে মিশে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকে না ।

           অনুপ সেই সত্যকে চিনতে বাধ্য করাতে পারেন যার ভেতরে থাকে অন্তর্গত আনন্দ,  হিসেব নিকেশের বাইরের বেহিসেবি দিক । সেই মজা যদি একবার ধরে যায় তবে পাঠক কি তাকে ছাড়তে পারবে? কবির ভেতরের বিস্ময় চিন্হিত করতে গিয়ে দেখি তাঁর নির্মিতির শৃঙ্খলা,  বিনির্মাণের প্রতি আকর্ষণ । কবি তাঁর জাত চেনান তাঁর শব্দসৌকর্যে,  নিরন্তর নিজেকে ঘষে মেজে পরিশিলিত করার ভেতর দিয়ে ।

             কবির কাব্যগ্রন্থ ' আমার বিভ্রান্তিকর আত্মহত্যা সমূহ ' শিরোনামহীন আটান্নটি কবিতার সমষ্টি , যার টিউনিং টেনে নিয়ে যায় । অনুপ কথা বলেন চেনা পরিবেশ নিয়ে । তার ভেতরে হয়তো কখনো সখনো জটিলতা আসে কিন্তু তা দুর্বোধ্য হয়ে ওঠে না ।  ' ঈশ্বর নামক ধারনাটা এক অবতল আলোয় নীরবতা হয়ে ঝুলে আছে ' - র মতো নির্লিপ্ত উচ্চারণ তাই চমকে দেয় । সন্ঞ্জয় ঋষির বিমূর্ত প্রচ্ছদ কবিতার সঙ্গে মানানসই ।

সৌমিত্র রায়-র জন্য গদ্য ১৪৮ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক বিভাগ

সৌমিত্র রায়-র জন্য গদ্য

প্রভাত চৌধুরী



১৪৮.

এতগুলি পর্ব লেখা হয়ে গেল , এখনো দীপংকর-দার কথা লেখা হল না। তবে আমি মূলত নয়ের দশকের কবিদেরই আমার আলোচ্য-সৃচিতে রেখেছি। তবু বিভিন্ন প্রসঙ্গে রাজকল্যাণ চেল অমিতাভ মৈত্র নিখিলকুমার সরকার প্রশান্ত গুহমজুমদার সন্দীপ বিশ্বাস প্রমুখ সাত কিংবা আটের দশকের কবিদের প্রসঙ্গ এসেছে। কিন্তু দীপংকর ঘোষ-র কথা লেখাই হয়নি। কিন্তু এটাকে অস্বীকার করা যাবে না , যে কাটোয়ার মতি এবং জপমালা-র মতোই কবিতাপাক্ষিকের প্রতি ভালোবাসা ওদের থেকে কম ছিল না। এর জন্য দীপংকরদার ভাগ্যকে দোষারোপ করে আমি মুক্ত হতে পারবো না। আমি বরং দীপংকরদার   কবিতাপাক্ষিক সম্পর্কিত কিছু লেখা এখানে তুলে দিলাম।  

' হ্যাঁ নদী হাঁটে । কবিতাপাক্ষিকের দশম বর্ষ পূর্তি  অনুষ্ঠান হল কাটোয়ায়। তখনও কবিতাপাক্ষিকের সঙ্গে নদী হেঁটেছিল ।হেঁটেছিল ভাগীরথী, অজয়। সারা কাটোয়া শহর তখন কবিতাপাক্ষিক হয়ে গিয়েছিল। নাসের , মুরারি, ঠাকুরদাস,শান্তনু, শুভাশিস , কওসর, সুবীর সবাই যেন কাটোয়ার ঘরের ছেলে। মঞ্চ ছেড়ে আলোক সরকার, শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়, সমীর রায়চৌধুরীরা তো আমাদের শশাঙ্কদার সঙ্গে নীচে বসেছিলেন। এই না হলে কবিতাপাক্ষিক পরিবার। '  

আমি এই লেখাটিতে যখন ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে  কাটোয়া-পর্ব লিখেছিলাম , কই তখন তো এত বিশদে লেখা হয়নি। দীপংকরদার লেখার এই উদ্ধৃতি প্রমাণ করে দেবে উৎসবের ঐতিহ্য। নেহাৎ ছেলেদের -ছোকরাদের খেলা ছিল না। এতজন অগ্রজ কবি কাটোয়ায় চলে এসেছিলেন কেবলমাত্র পারিবারিক সূত্রে। 

কবিতাপাক্ষিকের সঙ্গে নাসের-এর যে আত্মীয়তা , দীপংকারদার সঙ্গেও সেই একই আত্মীয়তা।

একটা খবর আমার কানে এসেছিল। আমার তথা আমাদের বই সে ফেরিওয়ালার ঝুলি থেকে কিনেছিল। অর্থাৎ দীপংকরদার মৃত্যুর পর যেভাবেই হোক তাঁর সঞ্চিত বইপত্র কেজি দরে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল।

এই খবরটি পেয়েছিলাম তরুণতম কবি-সম্পাদক শুভদীপ সেনশর্মা সূত্রে। সংবাদটি আমাকে ব্যথিত করেছিল। আমি মতি বা মুহম্মদ মতিউল্লাহ-কে ফোন করে সত্যতা যাচাই করেছিলাম।

এই ঘটনার জন্য নিজেকে দোষী ভাবছি । কাটোয়া-র ' অজয় ' সাহিত্য পর্ষদের দায়িত্ব যদি শতকরা ১০ ভাগ হয় , বাকি ৯০ ভাগের দায় কবিতাপাক্ষিকের। এবং তা আমার একার।

আমি পারিনি দীপংকর ঘোষ-এর মতো একজন কবি এবং লেখক-কে ঠিক মতো প্রজেক্ট করতে। বাংলাভাষার পাঠকের কাছে দীপংকরদার লেখাকে পৌঁছে দিতে। কেন পারিনি তার ব্যাখ্যা একটা আছে আমার কাছে , সেটা বলার মতো সময় এখনো আসেনি।

কবি দীপংকর ঘোষের লেখার সূচনা কলকাতায়। তখন আনন্দমোহন এবং বিদ্যাসাগর কলেজ সূত্রে। বিদ্যালয় শিক্ষা ময়মনসিংহ -এ।

কফি হাউসে রমানাথ রায় সুব্রত সেনগুপ্ত আশিস ঘোষ -দের বা শাস্ত্রবিরোধী গল্পকারদের সঙ্গে বসতেন। পবিত্র মুখোপাধ্যায় এবং আমার সঙ্গেও আড্ডা হয়েছিল। আর কবিতাপাক্ষিক পর্বে দীপংকরদা আমার মতোই পরিবারের অভিভাবক।

দীপংকর ঘোষ তাঁর কবিতা এবং গল্প-কে বলতেন প্রস্তাব।  যেমন  বলতেন : প্রস্তাব -আলেখ্য গল্প।

এই কনসেপ্ট বাংলাসাহিত্যে একেবারেই নতুন। কবিতাকেও বলতেন প্রস্তাব - আলেখ্য।

সে-সময় আমরা কবিতাপাক্ষিক নিয়ে এতটাই মগ্ন ছিলাম , দীপংকারদার প্রস্তাব-কে আলাদা করে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তখন আমার কাটোয়া-কলকাতার মান্থলি টিকিটটি হারিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কাটোয়া না গিয়েও দীপংকর ঘোষের প্রস্তাব সম্পর্কে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া উচিত ছিল।

আজ শুরু করছি। পড়া যাক কয়েকটি প্রস্তাব -এর অংশ।

১॥ নদী বলে মেয়েটি কোনোকালে নদী ছিল না। নদী নদীর দিকে তাকিয়ে থাকত।নিজের দিকে তাকাবার তার সময় কই ?

২॥ নদীর সঙ্গে বিয়ে হয় আকাশমণির।পাগলা মাতাল জলঙ্গি শান্ত হয়। এয়োতিরা সিঁদুর খেলে আকাশমণির ঘাটে। 

৩॥ একজন কবি যে , এমন করে নিঃশব্দে চলে যায় তা আমার জানা ছিল না। লোকটা দোকানপাট খোলা শহরের ভিড়ভাট্টার মধ্য দিয়ে চলে গেল। কেউ কিছু জানল না।

দীপংকর ঘোষ লিখেছিলেন। আমরা পড়েছিলাম। পড়েও কোনো শিক্ষাগ্রহণ করিনি । আমি অনুতপ্ত। এই শুরু করলাম দীপংকরদার ' প্রস্তাব ' নিয়ে কথা বলা। আজকের তরুণদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে তাঁর প্রস্তাবগুলিকে।

কথা দিলাম।

আটপৌরে কবিতা ৮৪১-৮৪৫ || নীলাঞ্জন কুমার || ধারাবাহিক বিভাগ

আটপৌরে কবিতা

নীলাঞ্জন কুমার

৮৪১

রোগ/ অস্বস্তি/  রাত্রিযাপন
         ) অনিদ্রা  (
যদি জোটে জীবন দুর্বিসহ ।

৮৪২

অযৌক্তিক / কুসংস্কার/  ভ্রম
        ) বকোয়াস  (
যারা বোঝে তাদের কাছে ।

৮৪৩

গর্হিত/  নিষিদ্ধ/  অসামাজিক
       ) বেআইনি  (
কাজ করলে ' হিরো ' হয় ।

৮৪৪

মাদক / কলকে  / নেশা
     ) গাঁজাখোর (
চার টানেতে সবাই সুখী!

৮৪৫

মিত্র  / বন্ধু/  প্রেমিক
      ) সঙ্গী  (
মন শুধু যারে চায় ।


নস্টালজিয়া ১৮ || পৃথা চট্টোপাধ্যায় || ন্যানো টেক্সট

নস্টালজিয়া ১৮

পৃথা চট্টোপাধ্যায়




পুজোর দিন এগিয়ে এলেও  এবার এই করোনার আবহে কারোরই সেই ভাবে পুজোর অনুভব আসছে না। এ এক অদ্ভুত সময়। কখনো কেউ এইরকম সময়, এরকম  আতঙ্কিত দিন  যে আসতে পারে আমরা হয়ত কল্পনাও করি নি। বরাবরই পুজোর সময় এগিয়ে আসা মানেই খুশি খুশি ভাব। নতুন জামা কাপড়ের গন্ধ। আলমারি খুললেই ন্যাপথালিনের গন্ধ। এখনও ন্যাপথালিনের গন্ধের সাথে আমার ছোটবেলার অনেক কথা ,অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। আমাদের নতুন জুতো মোজা কেনা হতো পুজোর সময়।আমরা পুজোর সময় জুতোর সাথে অবশ্যই মোজা কিনতাম।জুতো, জামা সব এক সাইজ করে বড়ো কেনা হতো আমাদের।জুতোর ক্ষেত্রে শৌখিনতার চেয়ে টেকসই যাতে হয় সেদিকে বেশি গুরুত্ব দিত মা।বেল্ট দেওয়া জুতো অথবা এখন যাকে ব্যালেরিনা বলে সেই ধরনের জুতো কেনা হতো ছোটবেলায়।   মোজা যদিও শীত কালে পারতাম তবু পুজোর সময়ই কেনা হতো।ছোটবেলায় পুজোতে নতুন জামার সাথে নতুন জুতো পরে প্রতিবছর  পায়ে ফোস্কা পড়ত। ঠাকুর দেখতে বেড়িয়ে হাঁটতে কষ্ট হতো। পুজোর আগে জুতো পরে একটু অভ্যাস করে রাখলে এটা হয় না তখন জানতাম না। আর তখন ধারণা ছিল আগে ব্যবহার করা মানেই তো  পুরোনো হয়ে যাওয়া। পুজো শেষ হলে সব  নতুন জামা কেচে মা আলমারিতে অথবা ট্রাঙ্কে রেখে দিত,আর গতবছরের জামা বের করে দিত পুজোর পর ব্যবহারের জন্য।  নতুন প্রসাধন সামগ্রীও কেনা হতো পুজোর সময়। আমার মা তেমন সাজগোজ করত না। সিঁদুরের টিপ আর সাধারণ আটপৌরে শাড়িতে মাকে কী সুন্দর লাগত! আমি আর বোন যেতাম বাবার সঙ্গে  বাবার  বন্ধু ভবাকাকুর দোকানে সাজগোজের  জিনিস কিনতে।তখন সেই দোকানের নাম ছিল উর্বশী।অনেক দিন লালবাগ ছেড়ে কলকাতায়। জানি না সেই দোকান এখন আছে কি না। খুব প্রথাগতভাবে প্রতি বছর একই জিনিস কেনা হতো। চুলের তেল ডাবর আমলা, পন্ডস্ পাউডার, ভিকো ক্রিম, ফেমিনা ক্রিম, ক্লিনিক প্লাস শ্যাম্পু, পন্ডস্ কোল্ড ক্রিম,সিঁদুর, আলতা, একটা নেলপালিশ, দুটো টিপের পাতা নানারঙের, সিঙ্গার টিপ,ওলি সেন্ট। যদিও আমাদের কাজল পাতা হত কাজল লতায় তবু  সিঙ্গার কাজলের ছোট্ট  কৌটো, আমাদের চুলের ক্লিপ আর কাচের চুড়িও কিনতাম । সামনে শীতকাল আসবে তাই ভেবে একটা বসন্ত মালতি আর বোরোলীনও পুজোর সময়ই কেনা হতো। একটু বড় হবার পর আমরা পাড়ার চুড়িওয়ালির বাড়িতে কাচের চুড়ি পরতাম  পুজোর নতুন জামার  সঙ্গে রং  মিলিয়ে। মা আমার হাত কেটে যাওয়ার ভয়ে কাচের চুড়ি পরা পছন্দ করতো না। পুজোর সময় শুধু ঠাকুর দেখা আর খাওয়া এই নিয়মে চলতাম না। তখন অবাধ মুক্তি। আমার মায়ের কড়া শাসন থাকলেও এই দিনগুলোতে  মা একটুও বকতো না।পুজোর ক' দিন তো মোটেই পড়াশোনা করতাম  না। মহালয়ার  পর থেকেই আকাশে বাতাসে খুশির সুর ধ্বনিত হতো। খুব ছোটাছুটি খেলতাম আমরা।একবার দেওয়াল বা কোথাও ধাক্কা লাগলে অথবা হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলে কাচের চুড়ি  সত্যিই ভেঙে যেত। মন খারাপ হলেও সেদিকে বিশেষ ভ্রূক্ষেপ থাকত না। আবার খেলায় মেতে যেতাম।

সোমবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০

কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার ঝ'রে পড়া কবিতা । সৌমিত বসু।

 কিছু বই কিছু কথা ।  নীলাঞ্জন কুমার 



ঝ'রে পড়া কবিতা । সৌমিত বসু। বনানী । পঁচিশ টাকা ।



' একটি নদী সমুদ্র হ'তে চেয়ে অন্ধকার দুহাতে মাখছে ' -র মতো শব্দগুণের কবিতা অবলীলায় লিখে ফেলেন কবি সৌমিত বসু । তাঁর সাম্প্রতিক কাব্য পুস্তিকা ' ঝ'রে পড়া কবিতা ' র ভেতরে এ ধরনের হরেক নমুনা পাই । যেমন:  ' সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি লিখে রাখছি পাতায় । তুমি একবার শূন্যে তাকিও ' ( ' ঋণ '  ) , ' আমি নিশাচর । রাত্রি ভাঙি । চিরে দেখি রোদ আছে কিনা । ' ( গর্ভ-  ২) এর মতো উৎকৃষ্ট উচ্চারণ মন ভালো করে দেয় ।

          সৌমিত সেই কবি যার ভেতরে কেবল কবিতা । তাঁর কথাবার্তায় ধরা পড়ে তিনি কবিতাতে আছেন । তাঁকে কবিতার উপাদান সংগ্রহ করার জন্য হাতড়াতে হয় না আকাশ পাতাল । ছুঁয়ে থাকেন এক অপার্থিব জগৎ যা সাধারণের উর্দ্ধে । সে কারণে পংক্তিতে পংক্তি তে ছুটে আসে সেই বার্তা:  ' সংসার । ভেঙে যাচ্ছে । আবার অদ্ভুত ভাবে ফুটে উঠছে দ্যাখো । ' ( ' বংশধর ' ) , ' অন্ধকার জেঠুকে জানাবো,  সে যেন খানিকটা দেরী করে আসে ।' (' সংস্কার ')। যার ভেতর কোন ছলনা পাই না ।

                 ' কেউ সফল নই । না তুমি,  না তোমার তোবড়ানো বিকেল ' -( 'যাত্রী') এর মতো শব্দ ব্যন্জ্ঞনা ছুঁয়ে যায় বলে সৌমিত কবি হয়ে উঠতে পেরেছেন ।তাঁর পরবর্তী কাব্যগ্রন্থ পাবার জন্য লোভী হয়ে উঠেছি । কবিকৃত প্রচ্ছদ প্রকৃতার্থে কবিতার প্রচ্ছদ হয়ে উঠেছে ।

যার থেকে শিক্ষা নেওয়া যায় ।

কবিতা || ছায়াযুদ্ধের রণনীতি || সৌতিক হাতি

 কবিতা

ছায়াযুদ্ধের রণনীতি 

সৌতিক হাতি



মাঝে মাঝে হেরে যাওয়া ভালো।

ছায়াযুদ্ধের রণনীতি 

শিখতে শিখতে...

এ জীবন বেঁচে নেওয়া ভালো৷


ঝড়ের সন্নিবেশে বজ্রগর্ভ মেঘের

শীৎকার এই বেশ,

পক্বকেশে বারবনিতার কালো

অথবা চিলেকোঠার আলো।


মাঝে মাঝে হেরে যাওয়া ভালো

অদ্ভুত অসম্ভবে বৈভবের পাশবালিশ

ছেড়ে কাশের বনে সঙ্গোপনে

জীবন খুঁজে নেওয়া ভালো।


রাষ্ট্র বোঝেনি তোমার অস্তিত্বযাপন,

কাঁপন তোমার শরীর মনে

ভাত ডাল আর প্রিয়ার সংস্থানে,

অলীক যানে মন্ত্রী টহল

স্তব স্তূতির চরণামৃতে  রাষ্ট্র মাতে,

একলা রাতে দলছুট মেঘের সাথে

বিড়ির ধোঁয়া মিশে যায়...


মাঝে মাঝে হেরে যাওয়া ভালো

আরও ভালো হারতে হারতে 

জিতে যাওয়া...


সৌমিত্র রায় -এর জন্য গদ্য ১৪৭ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক বিভাগ

সৌমিত্র রায় -এর জন্য গদ্য

প্রভাত চৌধুরী



১৪৭.

দুঃখিত। আমাদের কাকদ্বীপ-এর অনুষ্ঠানটি বাদ পড়ে   গিয়েছিল। আগের কথা পরে লিখতে হচ্ছে।

অনুষ্ঠানটি হয়েছিল ৩১ আগস্ট ২০০৩ রবিবার দুপুর ২ টোয়। 

কারা করেছিলেন কলামের নীচে লেখা আছে  নোনা থিয়েটার এবং মুকুল নাট্য সংস্থা। এই তথ্যটি লেখা থাকলেও আমার বেশ মনে আছে , এর পুরো দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল ওথেলো হক। সামসুল হক -এর ছেলে ওথেলো।

আর সামসুল হক-এর কথা উঠলেই আমার মনে পড়ে যায় কয়েকটি লাইন :

' এই মে মাসে দুপুরবেলা বাবলাতলায়

মানুষ নামে একটা মানুষ থাকার সঠিক কথা ছিল। '

আমি গর্বিত বাংলাভাষায় এরকম একটি আদতকথা লেখা হয়েছিল বলে। এই কথাটা বলতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। ফিরে যাই অনুষ্ঠানে।

আমরা কলকাতা থেকে গিয়েছিলাম , নাসের হোসেন ঠাকুরদাস চট্টোপাধ্যায় সুমিতেশ সরকার গৌরাঙ্গ মিত্র দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় যূথিকা এবং আমি।

ওখানের সৌমিত বসুও সম্ভবত ছিল। আমার বোন দুগ্গা বা শুক্লা তখন কাকদ্বীপের কাছাকাছি একটা প্রজেক্টে কাজ করত। দুগ্গাও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল।

খুবই ঘরোয়া তথা আন্তরিক এই অনুষ্ঠানে আমরা দেখেছিলাম ওথেলো হক -এর পরিচালন-দক্ষতা।

আমরা মুগ্ধ হয়েছিলাম।

সেদিন ওথেলো-কে ধন্যবাদ জানানোর কোনো সুযোগ ছিল না। আজ সুযোগ পেলাম ওথেলো-কে ধন্যবাদ জানানোর।


এবার দুটি  জিজ্ঞাসার জবাব দিতে হবে। কেন এই  পরিকল্পনা ?  কেন ৫০টি প্রান্ত ?

এই পরিকল্পনাকে একত্রে মিশিয়ে নিতে সক্ষম হলে উত্তর-পর্ব -এ দ্রুত পৌঁছে যাওয়া যাবে।

আমরা এর থেকেই প্রান্তিকের প্রাধান্য-র কথা বলে আসছিলাম। আমাদের পত্রিকার মূল ভিত্তি ছিল প্রান্তিকের কবিজনেরা। আর আমাদের মূল উৎসব হত পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলাসদরে। পুরুলিয়ার আদ্রায় , বাঁকুড়ায় , বহরমপুরে , কাটোয়ায়।

 এর ফলে প্রান্তিকের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ সুদৃঢ় ছিল। আর সেই যোগাযোগকে আরো সুরক্ষিত করার জন্য ৫০ টি প্রান্ত।

কেউ যদি বলেন , এই পরিকল্পনার সঙ্গে বাম-চেতনার একটা মিল দ্যাখা যাচ্ছে  কবিতায়। আধুনিক কবিতা থেকে আমরা কতটা বের করে আনতে সক্ষম হয়েছিলাম , তার জন্যও চোখ রাখতে হবে পরবর্তী কালের কবিতায়।

যদি একজনও এ-কথা স্বীকার করেন বাংলাকবিতা- কে আমরা বদলে দিতে পেরেছি , একরৈখিকতা থেকে বহুরৈখিকতায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি , কবিতার পরিসরকে এক হাজার গুণ বাড়াতে পেরেছি , তাহলেই সার্থকতা। এর বেশি আর কিছুই চাইনি।

আগামীকাল শুরু করব কেন্দ্রীয় উৎসব সংক্রান্ত কথাবার্তা।

আটপৌরে কবিতা ৮৩৬-৮৪০ || নীলাঞ্জন কুমার || ধারাবাহিক বিভাগ

আটপৌরে কবিতা

নীলাঞ্জন কুমার

৮৩৬

স্থিরতাহীন/  অপূর্ণ/  নেতিবাচক
        ) পরীক্ষামূলক  (
তবুও এগিয়ে যেতে হয় ।

৮৩৭

উপেক্ষা/  আগ্রহহীন/  কল্পনাময়
        ) উদাসীনতা  (
বসবাস তাদের অন্য কোনখানে ।

৮৩৮

রাম/  কৃষ্ণ/  কিশলয়
    ) দূর্বাদলশ্যাম (
সব আমাদের ভেতরে মিশেছে

৮৩৯

স্মৃতিকথা/  নস্টালজিয়া/  অতীত
         ) আত্মজীবনী  (
  পুরনো সমাজ চেনা যায় ।

৮৪০

দরকারি/  গুরুত্বপূর্ণ/  চাহিদা
       ) প্রয়োজন  (
না থাকলে সব অবান্ঞ্ছিত ।

ব্যক্তিত্ব || মানুষ গড়ার কারিগর সুব্রত মহাপাত্র || নিজস্ব কলম

ব্যক্তিত্ব || গড়ার কারিগর সুব্রত মহাপাত্র

নিজস্ব কলম



    আদর্শ শিক্ষক শুধুমাত্র ক্লাসে পড়ান না। তাঁর জীবনাচরণ, তাঁর সস্নেহ ছত্রছায়া দিয়ে তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যান। সময় বিশেষে সেই দৃষ্টান্ত ছাপ ফেলে ছাত্র- ছাত্রীদের মনের ওপর,তাদের বোধবুদ্ধি র ওপর।  আজ এমনই এক শিক্ষকের কথা জানাবো  যিনি মনে করেন ছাত্রছাত্রীরাই তাঁর জীবনের অমূল্য সম্পদ,প্রাণের হৃদস্পন্দন।

তিনি হলেন  ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর ২ নম্বর ব্লকের বেলিয়াবেড়া কৃষ্ণ চন্দ্র স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়- এর সহকারী প্রধান শিক্ষক শ্রী সুব্রত মহাপাত্র। থাকেন মেদিনীপুর শহরের এক ভাড়া বাড়িতে। কর্মস্থল থেকে বাড়ীর দূরত্ব প্রায় ৯০ কিমি । সব দিন বাড়ী ফেরা তাঁর হয় না। বেশীরভাগ দিনই থেকে যান স্কুলের একটা রুমে। শুধু ক্লাসে পড়িয়ে বাড়ী ফিরে গেলাম আর দায়িত্ব শেষ হয়ে গেল- এমন নীতি সুব্রত বাবুর নয়। স্কুল ছুটির পর বহুদূরের সব প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছুটে যান এই মাষ্টারমশাই সাইকেলে চেপে।শুধু সমস্যা দেখেন তা নয়, হৃদয় দিয়ে অনুভব করেন গরীব আদিবাসী ছাত্রছাত্রী ও তাদের পরিবারের দুঃখ-কষ্ট, যন্ত্রণা। তাদের নানান সমস্যা স্বেচ্ছায় কাঁধে তুলে নিতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেন না। ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে নিরলস ভাবে কাজ করে চলেছেন সুব্রত বাবু।একজন মাষ্টারমশাই হিসেবে  মনে করেন শুধু শিক্ষাদানই একজন প্রকৃত শিক্ষকের কাজ নয়, পাশাপাশি সমাজ সচেতকের ভূমিকাও পালন করা উচিত- এই সামাজিক মূল্যবোধই এই শিক্ষক মহাশয়ের মূলমন্ত্র। দায়সারা শিক্ষা পদ্ধতিতে তিনি বিশ্বাস করেন না। এই বিষয়ে তাঁর মানসিকতা কেমন তা একটা ছোট্ট ঘটনা দিয়ে বললে পাঠকরা বুঝতে পারবেন।

একদিন নবম শ্রেণীর ক্লাস নিচ্ছিলেন। বার বার পড়া বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন। কিন্তু কি আশ্চর্য! ক্লাসের মেধাবী ছাত্রীটিকে পড়া জিজ্ঞাসা করলে পড়া পারছে না। দু দিন ধরে একই অবস্থা। বকুনি দিয়ে জানতে চান কি সমস্যা ? অনেক পরে মুখ খোলে সুনিতা মুর্মু।- স্যার "বাবা রোজ সন্ধ্যার সময় চোলাই খেয়ে এসে বাড়ির সবাইকে মারধর করে - মা, বোন, ছোটো ভাই সবাইকে, এমনকি বয়স্ক দাদু ও বাদ যায় না। তাই পড়া করতে পারি নি।"

‌      বিষয়টা বুঝলেন মাষ্টারমশাই তাঁর দরদী মন দিয়ে। না এভাবে হবে না। ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনোর জন্য চাই উপযুক্ত পরিবেশ। সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করলেন না। শুরু করলেন এক অসম যুদ্ধ ছাত্রছাত্রীদের কথা ভেবে। স্কুল ছুটির পর ছুটলেন হত দরিদ্র অশিক্ষিত আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম গুলিতে।বোঝাতে শুরু করলেন পুরুষদের। বললেন চোলাই এর কুফলের কথা। নিজের খরচায় তৈরি করলেন পোস্টার। বাড়ী বাড়ী ঘুরে নিজে চেটালেন পোস্টার। পোস্টারে একটাই বার্তা -। "সমাজ ও পরিবারকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে আজই আসুন মদ ও চোলাই থেকে দূরে থাকি"।  গ্রামের মহিলাদের  একজোট করলেন। স্কুল পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলি যেমন নারায়নপুর, রামপুরা, নতুনডিহি, ডোমপাড়া, পানিপুখুরিয়া, ডুলুং নদীর ওপারে কইমা, মুচিনালা সহ অন্যান্য গ্রামগুলির পরিস্থিতি এতটাই খারাপ ছিল যে ঘরের পুরুষেরা সে ছোটো হোক বা বড়ো সবাই ঘুম থেকে উঠেই বসে যেত চোলাই নিয়ে। নেশায় বুদ হয়ে থাকতো। মৃত্যুও ঘটতো প্রতি পরিবার থেকে। এটাই ছিল নিয়ম। এই সময়ই যেন দেবদূতের মতো হাজির হলেন বেলিয়াবেড়া কৃষ্ণ চন্দ্র স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর সহকারী প্রধান শিক্ষক শ্রী সুব্রত মহাপাত্র।ভালোবেসে বুঝিয়ে কখনও বা বকাঝকা করে আস্তে আস্তে প্রান্তিক মানুষগুলোর মনে নেশামুক্তির সুফলের বার্তা পুরে দিলেন। এরই সঙ্গে গ্রামের মা, বোন, বউদের করলেন একজোট। তারাও আশার আলো দেখতে পেলো। আস্তে আস্তে সুফল মিলতে শুরু করলো। 

‌ এই বিষয়টা দু চার লাইনে পড়তে যত সহজ মনে হলো ততটা কিন্তু মোটেই সহজ নয়। এর পেছনে রয়েছে একজন আদর্শ শিক্ষকের আপ্রাণ চেষ্টা আর মরিয়া লড়াই। পেয়েছেন যথেচ্ছ হুমকি আর শাসানি ।কারণ আমরা প্রত্যেকেই জানি যে চোলাই এর পেছনে রয়েছে অনেক লম্বা হাত। অকুতোভয় এই মানুষটি তবুও কোন ভাবে পিছিয়ে আসেন নি।বরং এর বিরুদ্ধে প্রচার ও প্রসার চালিয়ে গেছেন। এমনই অদম্য মনোবল এই মানুষটির। এরপর পাশে পেয়েছেন পুলিশ o প্রশাসনকে ।এরপরে যখন দিনমজুর অভিভাবকেরা এসে বলে "মাস্টারবাবু নেশার আনন্দ অল্প সময়ের, এতে পরিবারের ক্ষতি হয়"।প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর এই উপলব্ধিই মাস্টারমশাই এর জীবনের পরম প্রাপ্তি।

‌শুধু নেশাই নয়।নাবালিকার বিয়ে গ্রামের একটি বড়ো সমস্যা। এর বিরুদ্ধেও ছুটে গিয়েছেন সুব্রতবাবু। নাবালিকার বিয়ে বন্ধের জন্য এক অভিনব পন্থা চালু করেছেন। পঞ্চম ও একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির সময়(মেয়েদের) অভিভাবকদের মুচলেকা দিতে হবে এই মর্মে - "আঠেরো বছরের আগে আমার কন্যার বিবাহ দেবো না এবং তাকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ প্রদান করিব।" স্কুলে " কন্যাশ্রী ব্রিগেড" তৈরি করেছেন। স্কুলের ছাত্রীদের মনে এমন বীজমন্ত্র প্রদান করেছেন যে কোথাও নাবালিকার বিয়ে হচ্ছে শুনলে ছাত্রীরাই স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে খবর দিচ্ছে।এমন তিন - তিনটে নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করে আবার স্কুলের আঙিনায় ফিরিয়ে নিয়ে এসেছেন মাস্টার মশাই। স্কুলছুটের সংখ্যা যেমন কমাতে পেরেছেন তেমনি নাবালিকার বিয়ের হারও যথেষ্ট নিম্নমুখী।

‌ গোপীবল্লভপুর ২ নম্বর ব্লকে" সরকারী ডিগ্রি কলেজ" স্থাপনের অন্যতম প্রধান কারিগর হলেন এই সুব্রত বাবু। এর জন্য সারা ব্লকের আপামর জনসধারণের মনে এক" শ্রদ্ধার আসনে"আসীন। এছাড়াও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও আর্থিক দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের জন্য এই ব্লকে তৈরি হওয়া পশ্চিমবঙ্গের সর্বপ্রথম "কন্যাশ্রী পাঠাগার ও রিডিং রুম" এর প্রধান পরামর্শদাতা ও কনভেনর সুব্রত বাবু।

‌এই করোনা কালে ৮০ কিমি বাইকে পাড়ি দিয়ে যেসব প্রত্যন্ত গ্রামে অনলাইন পরিসেবার সুবিধা নেই সেই সব গ্রামের ফুলমণি, কানুরাম, সত্যানন্দ, পিন্টুদের এক ডাকেই হাজির তিনি।সামাজিক সুরক্ষবিধি মেনে ওদেরই উঠোনে বসে পড়া বুঝিয়ে দেন। প্রয়োজনে দুদিন থেকেও যান।এতটাই মানবিক তিনি। 

‌"কোনো কাজটাই ছোটো নয়" এই বার্তা স্কুলের ছেলে - মেয়েদের দেওয়ার জন্য নিজে হাতে  স্কুলের সমস্ত টয়লেট ও বাথরুম পরিষ্কার করেন।

‌আবার এই লকডাউন এর সময় মানবতার জয়গান গাইতে ত্রান সামগ্রী নিয়ে হাজির "কুষ্ঠ কলোনী "তে। ক্লাসে প্রথাগত শিক্ষার বাইরে নৈতিকতার ক্লাস নেন যাতে আগামী দিনে কোনো বৃদ্ধাশ্রম না থাকে, মা বাবা ই হলেন আসল ভগবান।

‌এই সমস্ত কাজকর্মের জন্য বিভিন্ন সংস্থা বা বিশিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে সামাজিক স্বীকৃতিও পেয়েছেন। বিশিষ্ট লেখক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, লেখিকা মীরাতুন নাহার,প্রাক্তন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অশোক কুমার গাঙ্গুলি, গায়ক রামকুমার চট্টোপাধ্যায়,ছোটো ও বড়ো পর্দার বিশিষ্ট অভিনেত্রী মিতা চ্যাটার্জী র হাত থেকে সম্মাননা গ্রহণ করেছেন।

‌এই আত্মসর্বস্ব পৃথিবীতে সর্বগ্রাসী লোভ, কপটতা আর মিথ্যাচারের জগতে; এমন আত্মকেন্দ্রিক সময়ে দাঁড়িয়ে এমন মানুষ সত্যিই দুর্লভ।নির্লোভ, সহজ জীবন যাপনে  বিশ্বাসী মানবতার জয়গান গাওয়া ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর দু নম্বর ব্লকের বেলিয়াবেড়া কৃষ্ণ চন্দ্র স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর সহকারী প্রধান শিক্ষক শ্রী সুব্রত মহাপাত্র আক্ষরিক অর্থেই এক আদর্শ মানুষ গড়ার কারিগর। উনার কাছে ছাত্রছাত্রীরাই অমূল্য সম্পদ। এদের শিক্ষাদানই শুধু নয়, ঘণ্টার পর ঘণ্টা এদের সুযোগ সুবিধার আর উন্নতির জন্য সন্তানস্নেহে বুকে আগলে রাখার নিরলস চেষ্টা করে চলেছেন।

‌আমরা ভুলে যাই" শিক্ষক" শব্দ টার গায়ে লেগে থাকে অনন্ত শ্রদ্ধা, সমীহ, সম্মান আর বিশ্বাস। এটা গড়ে তোলা এত সহজ নয়।তবে একজন প্রকৃত শিক্ষক নিজ গুণেই তা লাভ করে থাকেন। সুব্রত বাবু তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০

ব্যক্তিত্ব || এক ভিন্ন আঙ্গিকের শিল্পী নরসিংহ দাস || নিজস্ব কলম

ব্যক্তিত্ব || এক ভিন্ন আঙ্গিকের শিল্পী নরসিংহ দাস || নিজস্ব কলম




মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা, ভূগোল শিক্ষক, মহিষাগেড়্যা এ. এম. এ. হাই মাদ্রাসা (উঃ মাঃ), কেশপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর। ভূগোল বিষয়ক শিক্ষক হ‌ওয়ার কারনে কমবেশি ছবি আঁকতে হয়। তাছাড়া ছোটবেলা থেকেই আঁকার প্রতি একটু দুর্বলতা রয়েছে। শুধু ছবি আঁকা নয়, নিত্য প্রয়োজনীয় বা ফেলে দেওয়া কোন জিনিস দিয়ে নানান মূর্তি ও নক্সা তৈরি করে ফেলেন। যেমন কালো জিরা, মসুর ডাল, কলার খোসা দিয়ে নানান অবয়ব সাদা কাগজে ফুটিয়ে তোলেন। পাতা কেটেও নানান ছবি ফুটিয়ে তোলেন। ত্রিমাত্রিক ছবিও আঁকেন মাঝে মাঝে। তবে বেশীরভাগ ছবি কালো বলপেনে আঁকা। ইতিমধ্যে কয়েকজনের ছবি এঁকে ফ্রেমবন্দি করে উপহার হিসেবে তুলে দিয়েছেন। ঐ তালিকায় রয়েছেন গায়ক সোনু নিগম, পন্ডিত কৈবল্য কুমার গৌরব,  শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়, পি.সি. সরকার জুনিয়র, গায়ক সিদ্ধার্থ রায় প্রমুখ। শিক্ষকতা ও আঁকার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজসেবা মূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত। সময় পেলে পূর্ব-পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান, ভগ্ন রাজবাড়ী, প্রাচীন স্থাপত্য ও মন্দির ঘুরে দেখেন‌ ও ঐ বিষয়ক তথ্য তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে চলে সাংবাদিকতা। আনন্দবাজার পত্রিকা, বর্তমান, সংবাদ প্রতিদিন, এই সময়, আজকাল পত্রিকায় ইতিমধ্যেই অনেক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ছবি তোলার প্রতিও রয়েছে টান। স্মার্টফোন এর ক্যামেরায় কখন‌ও ধরা পড়ে সূর্যকে বটগাছের ঝুরিতে ঝুলতে,  ফুলের পাপড়ির মধ্যে সূর্যকে বসানো ছবি। এই  কাজের জন্য 'বীরপুরুষ', 'মানবরত্ন', 'শিল্পীরত্ন' সম্মাননা পেয়েছেন।



কিছু বই কিছু কথা। নীলাঞ্জন কুমার অপ্রেমে আজানে । অমিত সরকার

 কিছু বই কিছু কথা। নীলাঞ্জন কুমার 



অপ্রেমে আজানে । অমিত সরকার । পাঠক । একশো টাকা ।


যিনি ভালো লেখেন তাঁর কবিতা দু-একটি পাঠ করলেই বোঝা যায় তিনি কি স্বাদের কবিতা পাঠকের কাছে দিয়ে যেতে চান । সুতরাং তাঁর লেখার একটা হেতু থাকে । অমিত সরকারের কাব্যগ্রন্থ ' অপ্রেমে আজানে ' -র স্বাদ গ্রহণ করতে করতে বোঝা যায় তিনি অহেতুক কবিতায়  আসেননি , ভেতরে ঘুরপাক খাচ্ছে কাব্যিকতা । তার জন্য তিনি স্বাদু উচ্চারণ করেন:  ' আমার কবন্ধ শরীর গেঁথে রেখে কাকজ্যোৎস্না ডাক দেয়/  ' চলো মেয়ে,  গায়ে হলুদের থেকে আরেকবারশুরু করি সব । '

( ' কাক ' ) এর মতো আকর্ষক পংক্তি ।

                কবিকে আকর্ষণ করে রিপু তাড়না , তাই তিনি তাকে অনুভব করতে করতে অনিবার্য কাব্যগুণে সমৃদ্ধ করেন তাঁর কবিতা:  ' যৌন হাতছানি নিয়ে খুব বৃষ্টি নেমেছে আজ/  আঙুল ভেজানো জলে তুমি কি ভেজাবে আজ ঢেউ ভেঙে ফের । '  ( ' অপ্রেমে আজানে- ১ ' ) , তুমি সেই আগুন জ্বালিয়ে রেখেছো গর্ভের আগুনে/  পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছি আমি ।' ( ' অপ্রেমে আজানে -২' ) ।

       রিপু তাড়নার কবিতা পড়তে পড়তে এক সময় মনে হয় তিনি কি শুধুমাত্র  এই অনুভবই লিখতে চেয়েছেন?  ভুল ভাঙে যখন পড়ি:  ' আজ তবে কোন আড়বাঁশিতে বাজাব সেই সব মৃত্যু গান/  যে আজান রাত্রিদিন মিশে যাচ্ছে,  বোধের মধ্যে বোধি ....'  ( ' দিনলিপি ') , ' পুড়ে যায় সারাৎসার,  ঘুর্ণিজলে ডুবে মরে নাও/  আমিতো কারোরই নই,  মিথ্যে মিথ্যে ডোবাও ভাসাও'( ' সঙ্গিনী ')-র গভীর বোধের অন্য মাত্রার উচ্চারণগুলি । 

         কবি অমিতের কবিতায় পাওয়া যায় এক চন্ঞ্চলতা,  যা স্থানু কবিতার ভীড়ে আলাদা করে চিন্হিত করা যায় । দেবাশিস সাহা র বিমূর্ত প্রচ্ছদ মগ্ন করতে চায় ।

সৌমিত্র রায় -এর জন্য গদ্য ১৪৬ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক বিভাগ

 সৌমিত্র রায় -এর জন্য গদ্য

প্রভাত চৌধুরী




১৪৬.

দেখতে দেখতে কলকাতায় কেন্দ্রীয় উৎসবের দিকে এগিয়ে চলেছি। মনে রাখতে হবে তখন মোবাইল হাতে আসেনি আমাদের। মূলত ল্যান্ডফোন এবং চিঠিপত্র-র ওপর নির্ভর করতে হত সকলকে। আমিও এই সকল থেকে আলাদা ছিলাম না। আমাকে এই কেন্দ্রীয় উৎসবের জন্য নির্ভর করতে হয়েছিল 

2455 6325 এই নম্বরটির ওপর। আর এই নম্বরটি চালু রাখার জন্য ল্যান্সডাউনের ক্যালকাটা  টেলিফোনের আঞ্চলিক অফিসে যে কতবার যূথিকাকে ধরনা দিতে হয়েছে , সেটাও মনে রাখার জন্য লিখে রাখলাম।

এবার কীর্ণাহার-যাত্রা।

১৩ সেপ্টেম্বর ২০০৩ শনিবার , দুপুর ২টোয় ছিল অনুষ্ঠান। সকালে গণদেবতাতে। বোলপুর। তখন বাসস্ট্যান্ড এতটা দূরে সরে যায়নি। বোলপুর থেকে বাসে কীর্ণাহার।

আয়োজক : রহিম রাজা । কবিতা বারোমাস ।

অনুষ্ঠান-স্থল : টাউন লাইব্রেরি সভাঘর।

তখন শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় বোলপুরে। থাকত অদ্বৈত লজে। কর্মস্থল সিয়েন। কাজেই সেসময় বোলপুরের সঙ্গে যোগাযোগ খুবই নিবিড় ছিল। তাছাড়া রুদ্র কিংশুক তো ছিলই।

কীর্ণাহারের টাউন লাইব্রেরি তখন বেশ জমজমাট। তখনো মানুষজন প্রিয় বই-কে প্রিয় সঙ্গী মনে করত। আর কীর্ণাহার এবং আশেপাশের অঞ্চলের সমস্ত গুণীজন সেই উৎসব-কে নিজেদের উৎসব মনে করেছিলেন। বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব অরুণ রায়-এর পূর্ণ সহযোগিতার কথা এখনো মনে আছে।মনে আছে অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় প্রভাকর বন্দ্যোপাধ্যায় নাসিম এ আলম এবং আমিরুল কাজি-র সমর্থনের কথা।

আর আমাদের আত্মজনেরা , অর্থাৎ রহিম রাজা বিষ্ণু চক্রবর্তী শান্তনু রায়চৌধুরী নীলাদ্রি ভট্টাচার্য  সন্তোষ দাস-রা তো ছিলই।আমিনুল ইসলাম তখন সম্ভবত প্রবাসে , কাজে এবং কর্মে। 

রাত্রিবাস ছিল বোলপুরে। তেমনই নির্ঘণ্ট ।

কীর্ণাহার থেকে বোলপুর। মিলনতীর্থ অনুষ্ঠান ভবনেই রাত্রিবাস।

এই অনুষ্ঠানের আয়োজক : প্রবীর দাস মলয় ঘোষ রুদ্র কিংশুক বা আজকের কবিতা ইলোরা দ্য পেরি-ফেরাল উইন্ডো।

আর শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সক্রিয়তা এই অনুষ্ঠান-কে সর্বাঙ্গসুন্দর করেছিল।

কবিতা এবং রবীন্দ্রগানে মুখরিত ছিল এই উৎসব।এই অনুষ্ঠান বা উৎসব শান্তিনিকেতন বা বিশ্বভারতীর সঙ্গে কবিতাপাক্ষিকের ঘনিষ্টতা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছিল , এটা বেশ মনে আছে। প্রবীর দাস তখন অনেকটাই অ্যাকটিভ ছিল কপা-র বিষয়ে। এমনকী একবার ওর বাড়ির ছাদে বেশ বড়ো অনুষ্ঠান করেছিলাম আমরা। সেই অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট শিল্পী সনজিতা খাতুন উপস্থিত ছিলেন। এমনকী গানও শুনিয়েছিলেন।

পরের কথা পরের দিন।সবই অপর -এর প্রাধান্যকথা।

আটপৌরে কবিতা ৮৩১-৮৩৫ || নীলাঞ্জন কুমার || ধারাবাহিক বিভাগ

আটপৌরে কবিতা

নীলাঞ্জন কুমার

৮৩১

সংবাদ/  সৌজন্য/  খোঁজ
         ) খবরাখবর  (
শুভার্থী হলে রাখতে হয় ।

৮৩২

শুদ্ধি/  প্রস্তুতি/  পূজা
         ) আচমন  (
না করলে পূজন অশুদ্ধ ।

৮৩৩

বদমাইশ/  পাকামো/  তুলকালাম
         ) দুষ্টুমি  (
বাচ্চারা করলে ভালোই লাগে ।

৮৩৪

দাম্পত্য/  বিবাহিত/  সংসার
      ) জীবনসঙ্গী  (
বড় কাছের হয়ে ওঠে !

৮৩৫

কলকাতা/  মুম্বাই/  দিল্লি
        ) মহানগর  (
চারদিকে ক্রমশ বাড়ছে বাড়ছে ।

কবিতা *উইল॥ দীপক মজুমদার ॥*

 কবিতা

*উইল॥ দীপক মজুমদার ॥* 



মৃত্যুর পর__

আমার চোখ খুলে নিক কোনো আইব্যাংক ,

যদি কখনো ঘোর অন্ধকার গ্রাস করে আমায়,

দু'চোখ ঝাপসা হয়ে আসে , 

যদি বুঝি নিরর্থক এজীবন___


কথা দিচ্ছি মৃত্যুর আগেই দেব !


চাই ,আমার সমস্ত শরীর কেটেকুটে ছিন্নভিন্ন হোক 

কোনো অ্যানাটমি ক্লাসে ,

আমার সমস্ত ভিসেরা ছিঁড়ে-খুঁড়ে খাক্ অসংখ্য ডাক্তার-ছাত্র ,


যদি পুড়ে মৃত্যু না হয়__


আমার নরকঙ্কাল পাবে ভারতীয় যাদুঘর।


যদি মৃত্যুর আগে আমার কিডনী নস্ট হয় ,

যদি মৃত্যুর আগে আমার সিরোসিস্ হয় ,


আমার দেহাঙ্গ যাবে কোনো রিসার্স সেন্টারে ।


 


     

অণুগল্প || লকডাউনের ডাক্তার || অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়

অণুগল্প ||  লকডাউনের ডাক্তার 

অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় 




মনে হচ্ছে প্রত্যেকের এক বা একাধিক স্পেশাল ডিগ্রি আছে। কারুর মুখের সামনে  দাঁড়ানো যাচ্ছেনা। একজন দু-তিনটে পদ্ধতি বা ঔষধের কথা  বললে, অন্যজন বাড়তি আরো কয়েকটা গড়গড় করে বলে  দিচ্ছে । প্রত্যেকে তার  জ্ঞান ভাণ্ডার উন্মোচন করতে চায় । এমন সুযোগ হাতছাড়া করতে অনেকেই  চায় না। যদি  একজন বলেন, ভাই, যদি মাস্ক, স্যানিটাইজার আর সোসাল ডিসট্যান্সিং সঙ্গে নিয়ে ঘোরেন ; তাহলে আপনি ফোরেনও যেতে পারেন। তখন আরেকজন বলেন -- ওগুলোতে কিস্যু হবেনা। যদি না আপনার ইমিউনিটি  গ্রো না করে। তার জন্য পুষ্টিমূল্যের খাবার চাই পাতে। নইলে পাততাড়ি গুটোতে হবে। সঙ্গে আরেকজন থাকলে তিনিও খুব স্বাভাবিকভাবেই কিছু  বলবেন। হয়ত বলবেন, আরে ঐ বাবার বটিকা কিংবা মায়ের মহামারী কবচ না থাকলে লড়াই করার শক্তি থাকবে !  এটা হল অন্তর্নিহিত শক্তি । আর গ্যাং টা বড় হলে, কেউ না কেউ সাতান্ন ইঞ্চির ছাতি ফুলিয়ে বলবেন-- দেখুন, আসল ব্যাপার হল সাহস । শত্রুর সঙ্গে চোখে  চোখ রেখে  মোকাবিলা । আমি তো নিরস্ত্র হয়েও সর্বত্র ঘুরে বেড়াচ্ছি। আবার রাজনীতির ভক্তরা থাকলে খামোকা তারা ময়দান খালি রাখবেন কেন !  হাঁটু ভাঁজ  নাকি  কনুই  ভাঁজ,  কোনটা বেশি ফলপ্রসু -- এ তর্কে বাকী সব কিছু কে  পেছনে ফেলে দেবেন। 

           পাবলিকের মত এত ইনফরমেশন বোধহয় ডাক্তারের কাছেও  নেই... । আবার তাঁরা তো খুব বেশী কথা বলেন না। হতে পারে, করে দেখুন, দেখা যাক্, করতে পারেন কিন্তু দেখে শুনে, খেতে পারেন যদি সহ্য হয়-- এ ধরনের ক্রমাগত বদলে যাওয়া প্রেসক্রিপশন । বক্তব্যগুলো বেশীরভাগই বেঁটে খাটো, সরু লিকলিকে কিংবা ভেন্টিলেশনের পথে  ইত্যাদি । সেরকম কোন বেয়াড়া বিশেষজ্ঞ থাকলে হয়ত বলে দেবেন,  আসলে অনেককিছুই  'স্ক্রিপ্ট' দেখে বলেন তো ! 


------------+++-----------+++-------------

ডুয়ার্স ভূমির কথন।। নিলয় মিত্র।। পর্ব।। তিন

 ডুয়ার্স ভূমির কথন।। নিলয় মিত্র।। পর্ব।। তিন



    এখনও সর্বত্র সাঁওলরা নিজেদের "হর"বা "হোরো" বলে পরিচয় দেয়। ভাষাচার্জ

সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায়  এর মতে সাঁওতাল শব্দটি সম্ভবত"শাওনতার'" শব্দের থেকে এসেছে। স্যার জি এ 

গ্রীযারসন তাঁর Linguistic

Survey of India গ্রন্থে সাঁওতাল ভাষাকে "খেরওয়ারী"ভাষা বলে উল্লেখ

করেছেন। সাঁওতালরা ডুয়ার্স

এলাকায় আসার সময় তাঁরা

তাঁদের ভাষা,ধর্ম,সংস্কৃতি ও 

একান্ত নিজস্ব জীবনায়ন নিয়েই আসেন।সাঁওতালরা ১২টি গোত্রে বিভক্ত।

গোত্রের নাম।    ধর্মীয় প্রতীক

-------------------    ------------------

হাঁসদা।               হাঁস

কিসকু।              শঙ্খচিল

মুর্মু                     নিলগাই

মানডি।              মেরদা(ঘাস)

হেমরম               সুপারি

সরেন।                সপ্তর্ষি

বাস্কে।                পান্ত ভাত

বেসরা।              বাজ পাখি

চঁড়ে।                 গিরগিটি

পাউরিয়া।          পায়রা

টুডু।             (মূল প্রতীকের 

                  সন্ধান পাওয়া 

                  যায়নি।উপ গোত্র

                  'সোনা'

বেদেয়া।       সন্ধান পাওয়া 

                   যায়নি।

    সাঁওতালদের গ্রামীন পঞ্চায়েত ব্যবস্থ্যার যিনি প্রধান তাকে বলাহয় মাঝি।(Headman.) তিনি সর্বময় কর্তা। গ্রাম সংগঠন হলো ১.মাঝি ২.পারণিক (মাঝির সহকারী)৩.জগ মাঝি-ইনি গ্রামের যুবক যুবতী দের পরিচালক।৪.জগ পারণিক ৫.গডেত(মাঝির বার্তাবাহক) 

৬.নায়কে- গ্রামের পূজারী।,৭.

কুজম নায়কে-নায়কের সহকারী,বন জংগল ও প্রকৃতির পূজারী। ইনি শিকারের নিশ্চয়তার জন্য 

পার্গানা-দেবতা ও সীমা দেবতার পূজা করেন।

শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০

ঈশ্বর || ইয়াসিন খান || কবিতা

 ঈশ্বর 

ইয়াসিন খান



একটা  বোধ কাজ করে

মানুষের কাছে যাই

একটা স্বপ্ন দেখি 

আমার ঈশ্বর সাধনা 


বাংলা মায়ের কোলে 

গ্রাম আর নগর জীবন জুড়ে 

অক্ষর আর ভাষা পরিচয় 

আমার ঈশ্বর সাগর


বিদ্যা অর্জন ও জাগরণ 

সেবায় মানবিক মন

অনুবাদ অনুভবে

আমার ঈশ্বর মগ্ন সারাক্ষণ 


ভারত আত্মার পতাকা

স্বপ্নের রং সমাজ ও রাষ্ট্র সেবা 

চিকিৎসা ও দৃঢ়তায়

আমার ঈশ্বর মহীয়ান 


ভারত বোধ ও নতুন সৃজনে 

আমরা আছি স্বপ্ন ভুবনে 

ছুঁয়ে যাই সংস্কার পথ

আমার ঈশ্বর  জাগরিত হোক্ 


ঈশ্বর চেতনায় ছুঁয়ে সময় 

হোক আলোকিত মন

ভারত মায়ের রত্ন সন্তান 

রাখবে বাঙালি সংস্কৃতির মান


 ঈশ্বর পথে করি সন্ধান 

আমার গর্বের  হিন্দুস্থান 

ভারত মায়ের স্নেহে আজ 

অতীত ও আধুনিকতার সহাবস্থান

সঙ্গিনী || ফটিক চৌধুরী || কবিতা

 সঙ্গিনী

ফটিক চৌধুরী



আমি একটি সঙ্গী চেয়েছিলাম

যার নির্মানে থাকবে কাঁথাশিল্পের আবেদন

যার আবেদনে থাকবে ভ্রূপল্লবের ভঙ্গি

আকাশও নেচে উঠবে

বাতাসও মৃদুমন্দে ও ছন্দে

দোলাবে অবিন্যস্ত চুল।

জীবন সম্পর্কে পাঠ নিতে গিয়ে

দূরত্ব কমে এল যার সঙ্গে

ভ্রূপল্লবের ভঙ্গিতে ভুলিয়ে দিয়ে

আমার সঙ্গিনী হয়ে উঠল একদিন।

কিছু বই কিছু কথা। নীলাঞ্জন কুমার

 কিছু বই কিছু কথা।  নীলাঞ্জন কুমার 



ভাঙা চোখে বাংলা । বিশ্বজিৎ রায় । রূপকথা প্রকাশনী । পঁচিশ টাকা ।



বাংলার রূপমাধুর্য ও চিত্ররূপময়তার ভিত্তিতে জীবনানন্দ ' রূপসী বাংলা ' -র মতো অবিস্মরণীয় কবিতাকর্মটি করে গিয়েছিলেন বলে আমরা বাংলার রূপ অনেক নতুন ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পেরেছি । আজ থেকে নয় বছর আগে বিশ্বজিৎ রায়ের  ' ভাঙা চোখে বাংলা ' কাব্য পুস্তিকার ভেতর দিয়ে বাংলার সুন্দর কদর্য দুটি রূপ খোলাখুলিভাবে পর্যবেক্ষণ করি,  এ কম পাওনা নয় । তিনি যখন লেখেন:  ' সে মাটিতেই আবার সে বীজ বোনে,  স্বপ্ন দেখে নবান্নের । ' ( ' বাংলার চাষী '),' মাস্টার মশাই,  আমি ডাকি,  আবার ঘরে ঘরে / বিবেক হতে পারবেন কি?  ' ( 'বাংলার মাস্টার মশাই ' ) - এর মতো উচ্চারণ স্রেফ ভ্যাদভ্যাদে মেলোড্রামাটিক হয়ে ওঠে না,  শব্দ চিন্তা ব্যন্জ্ঞনার গুণে  কবিতা হয়ে ওঠে । 

             বলতে পারা যায় কবি বাংলা সিরিজের কবিতা গুলোতে আঁতিপাতি করে খুঁজে বেড়িয়েছেন প্রকৃত সত্যের দিকগুলো । যা সাধারণের চোখের সামনে থাকলেও তাকে নিয়ে ভাবনা করা তাদের কাজ নয় । একজন কবিই পারেন ফুটিয়ে তুলতে বাংলার ভাষা ঘরবাড়ি চাষী কুকুর সাপ মাঠ ইত্যাদির মতো তেইশ রকমের বিষয়ের ওপর জবরদস্ত কবিতা লিখতে ।

          বইটি পুনঃপাঠ করে বুঝতে পারি একদিন বইটির সমাদর করে ভুল কাজ হয়নি । কারণ,  ' আমি সঙ্গে দেব আমার/  দুঃখভরা ঘরবাড়ি আর শতছিন্ন একটা মা,  / বলো  , সবাই মিলে একটা সংসার তৈরি কি খুব কঠিন হবে? ' ( ' বাংলার শাকপাতা ')-র মতো সহজবোধ্য অথচ কত কঠিন আর্তি রক্তে সংবহিত হয়! 

 ভালো প্রচ্ছদের এই আকালের দিনে পুস্তিকাটিতে  স্রেফ সাদা কাগজে কাব্যগ্রন্থের শিরোনাম ও কবির নাম লিখে প্রচ্ছদদূষনের হাত থেকে বইটি ও পাঠকবর্গকে বাঁচানোর জন্য প্রকাশককে ধন্যবাদ ।

সৌমিত্র রায় -র জন্য গদ্য ১৪৫ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক বিভাগ

সৌমিত্র রায় -র জন্য গদ্য

প্রভাত চৌধুরী





১৪৫. 

গতকালের লেখার শেষে কলকাতায় কেন্দ্রীয় কবিতাউৎসব - প্রস্তুতির কথা শুনিয়ে রেখেছিলাম। প্রস্তুতির বিশদে যেতে পারছি না। পরিকল্পনার কথাটি জানিয়ে রাখতে চাইছি। এখনো অনেক প্রান্তের খবর পৌঁছে দেওয়া বাকি আছে। পরিকল্পনা-র সবটা বলছি না। শুরু করছি কবিতাপাক্ষিক ২৬০ -এ প্রকাশিত ব্যাককভারের বিজ্ঞাপনটি দিয়ে। প্রকাশ ৬ সেপ্টেম্বর ২০০৩ ।

কবিতাপাক্ষিক-এর ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে

কলকাতায় কেন্দ্রীয় কবিতাউৎসব

২ নভেম্বর,২০০৩□ বাংলা আকাদেমি সভাগৃহ

সুভাষ মুখোপাধ্যায় মঞ্চ

অগ্রজ কবিদের শ্রদ্ধার্ঘ্য □ কবিতাপাক্ষিক সম্মান 

সনাতন দে স্মৃতি পুরস্কার □কমলেশ চক্রবর্তী স্মারক সম্মান

সেমিনার : বিষয়: ৩০-এর দশক থেকেই পাঠকদের কবিতা- বিমুখতা শুরু

সম্মানপ্রাপক এবং উপস্থিত কবিদের কবিতাপাঠ।

প্রদর্শনী এবং কিয়স্ক : দীপক মজুমদার প্রদর্শশালা

মুক্তমঞ্চ □ অরুণ মিত্র মঞ্চ

অরুণ মিত্র স্মারক সম্মান প্রদান

বোলানগান, রণপা-নাচ , বাউলগান , টুসু-ভাদু গান , গম্ভীরা ,ভাওইয়া , মুসলিম বিবাহের গান

প্রবেশ অবাধ

আমন্ত্রণপত্রের জন্য কবিতাপাক্ষিক দপ্তরে যোগাযোগ করুন।

এই ব্যাপক অনুষ্ঠানসূচির যাবতীয় দায়িত্ব পালন করেছিল আমাদের কপা পরিবারের সদস্যরাই। বহিরাগতদের কোনো ভূমিকা ছিল না।

১৯ সেপ্টেম্বর ২০০৩ দুপুর ৩টেয় বামনগাছি-র অনুষ্ঠানটি হয়েছিল মতিয়ার রহমান মঞ্চে। মনসুর আহমেদ মেমোরিয়াল স্কুলের হলঘরে অনুষ্ঠানটির নামকরণ করা হয়েছিল প্রয়াত কবি মতিয়ার রহমানের নামে। আমরা উঠেছিলাম স্থানীয় লাইব্রেরিতে। তখনো সম্ভবত গৌরাঙ্গ মিত্র-র দেশের বাড়ির সঙ্গে পরিচিত ছিলাম না ততটা।  

তবে অনুষ্ঠান বেশ জমজমাট হয়েছিল তার কিছু কিছু ছবি এবং শব্দ উঠে আসছে । 

অনুষ্ঠানটির উদ্যোক্তা ছিলেন : বীরেশ রায় , মনীষা, বামনগাছি।

 ২০ সেপ্টেম্বর ২০০৩  বিকেল ৫টায় কবিতাউৎসব হয়েছিল খড়গপুরের কবিতাবাগানে। কবি মানসকুমার চিনি-র বাড়িটির নাম ছিল কবিতাবাগান।  এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল এই অঞ্চলের প্রায় সকল কবিলেখকেরা। প্রফুল্ল পাল দেবব্রত চট্টোপাধ্যায় সহ আরো অনেকেই সেদিন কবিতাবাগানে এসেছিলেন।

মানসের বাড়িতে রাত্রিবাস করে পরদিন সকালে জামশেদপুর।

২১ সেপ্টেম্বর রবিবার বিকেল ৫ টায়  জামশেদপুরের অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিলেন : প্রভাত মিত্র , অমরেশ ভট্টাচার্য এবং শ্যামল শীল। অনুষ্ঠান হয়েছিল বিবেকানন্দ মিলন সংঘ, প্রমথনগর , টাটানগর , জামশেদপুর।

আমি ট্রেন থেকে নেমে প্রভাত মিত্র-র হাত ধরে ওনার বাড়িতে গিয়েছিলাম।  প্রমথনগরের শান্তিনিকেতন অ্যাপার্টমেন্টে । ওখানেই দুপুরের খাওয়া এবং বিশ্রাম। ওই অঞ্চলটি তখন বাংলাভাষী মানুষজনের প্রাধান্য ছিল। 

কাজেই ওখানকার সকলেই কবিতাপাক্ষিকের উৎসব -কে নিজেদের উৎসবে পরিণত করেছিল।

রাত্রে থাকার ব্যবস্থা ছিল স্টেশনের কাছাকাছি একটা হোটেলে। যাতে ভোরের ট্রেন ধরতে অসুবিধা না হয়। পরদিন হাওড়া স্টেশন থেকে সোজা অফিস।

২৮ সেপ্টেম্বর ২০০৩ রবিবার দুপুর ১টায় অনুষ্ঠান হয়েছিল কৃষ্ণনগর পৌরপ্রতিষ্ঠান সভাগৃহে। পুরো অনুষ্ঠানটি দেবাশিস চাকী- র একক প্রদর্শনী রূপেও দ্যাখা যেতে পারে।  আমরা রাত্রে কৃষ্ণনগরে ছিলাম এটা বেশ মনে আছে। আরো মনে আছে কবি দেবদাস আচার্য  দেবাশিস-কে পূর্ণ তথা আন্তরিক সহযোগিতা করেছিল।

আটপৌরে কবিতা ৮২৬-৮৩০ || নীলাঞ্জন কুমার || ধারাবাহিক বিভাগ

 আটপৌরে কবিতা

নীলাঞ্জন কুমার

৮২৬

গতানুগতিক/  অভ্যাস/  স্থিরতা
        ) সংসারী  (
    কে আর ব্যতিক্রম চায় ।

৮২৭

সন্দেহ/  নজর/  যুক্তিহীন
         ) অবিশ্বাস  (
অজান্তে মনে উঁকি দেয় ।

৮২৮

পাল্টাপাল্টি/  উলটপুরাণ/  দুর্বিপাক
               ) অদলবদল  (
               কি করে যে ঘটে!

৮২৯

সত্যি/  স্বীকার/  জবানবন্দি
       )   হলফ  (
একবার  করলে  পাল্টানো কঠিন ।

৮৩০

ঘটনা/  নিয়তি/  প্রত্যহ
       ) ঘটমান  (
যা তাতো ঘটতেই থাকবে ।



সবাই মিলে সিনেমা হলে (১৫) || কান্তিরঞ্জন দে || সিনেমা দেখুন মগজ দিয়ে ।

 সবাই মিলে সিনেমা হলে  (১৫)

কান্তিরঞ্জন দে



সিনেমা দেখুন মগজ দিয়ে ।


       সিনেমা দেখতে গেলে চক্ষুষ্মান তো হতেই হবে।  কিন্তু , শুধু একজোড়া চোখ থাকলেই ঠিকঠাক সিনেমা দেখা যায় না । তার জন্যে চাই অন্তর্দৃষ্টি । এই অন্তর্দৃষ্টি তৈরি হয় মগজ আর হৃদয়ের ঠিকঠাক মেলবন্ধনে । 


        বিশ্ব  , ভারত   এবং বাংলা  সিনেমার আদিযুগ থেকে তৈরি সিনেমাগুলি  ধারাবাহিক ভাবে আপনার দেখা আছে ? তাহলে আপনি সিনেমার শিল্পরূপের রসগ্রহণে অনেকটা তৈরিই আছেন , বলা চলে । যে সব ছবিগুলি আপনার ইতিমধ্যেই ভালো লেগেছে , সেগুলো বারবার দেখুন । কম্পিউটারে কিংবা স্মার্টফোনে ফ্রেম থামিয়ে থামিয়ে দেখুন । কোনও একটি নির্দিষ্ট দৃশ্য , কেন আপনার ভালো লেগেছে ও লাগছে , সেটা অনুভব করবার চেষ্টা করুন । মগজ  অর্থাৎ , বুদ্ধি দিয়ে বিশ্লেষণ করবার চেষ্টা করুন । এই  মুঠোবন্দি সিনেমার যুগে  এইভাবে খণ্ড খণ্ড করে সিনেমা দেখা অসম্ভব বা কঠিন কিছু নয় । চল্লিশের দশকের গোড়ায় চ‌লচ্চিত্র- উৎসাহী সত্যজিৎ রায় তার অফিসের টিফিন টাইমে, ম্যাটিনি শো শুরুর অনেক আগে , ধর্মতলা পাড়ার সিনেমা হলগুলোতে গিয়ে ( মূলত , লাইটহাউস সিনেমা হলে ) প্রোজেক্টরম্যানকে " খুশি " করে একেকদিন একেকটা রিল বারবার চালিয়ে চালিয়ে দেখতেন ।


         সিরিয়াসলি যদি সিনেমা দেখতে চান, তাহলে আপনার পছন্দমতো , অথবা কোনও অভিজ্ঞ- সিনেমা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো আগাম একটি লিস্টি বানিয়ে নিন । মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ জীবনে চলচ্চিত্রে উৎসাহী মৃণাল সেন , তার দৈনন্দিন ডায়েরিতে এ রকম একটা তালিকা তৈরি করে রাখতেন । কাজের ফাঁকে ফাঁকে সময় বার করে এই ভাবে তালিকা মিলিয়ে সিনেমা দেখতেন ।


        ১৯৪৭/ ৪৮ সাল বা তার পরবর্তী বেশ কিছু বছরে ক্যালকাটা ফিল্ম সোসাইটির সদস্য হিসেবে সত্যজিৎ-ঋত্বিক-মৃণাল, চিদানন্দ দাসগুপ্ত, বংশী চন্দ্রগুপ্তেরা তাদের সোসাইটির শো-তে একটি ছবি একবার দেখে ভালো লাগলে , নির্দিষ্ট দৃশ্যের রীলগুলো বারবার বারবার চালিয়ে চালিয়ে দেখতেন ।

          সেই ৭০ /৭২ বছর আগে কোথায় ভিডিও ক্যাসেট ? কোথায় সিডি ? কোথায় ডেস্কটপ- ল্যাপটপ আর কোথায়ই বা মুঠোফোনে ইউ টিউব ?? কি অদম্য উৎসাহ  আর তীব্র আগ্রহ একবার ভাবুন ।

     এদের মধ্যে পরবর্তী কালে সবাই তো আর পরিচালক হন নি । কিন্তু অনেকেই বিখ্যাত চলচ্চিত্র গবেষক , তাত্ত্বিক, প্রাবন্ধিক হয়েছেন । যারা তা হন নি , তাদের   মধ্যেও অনেকেই পরবর্তী কালে ফিল্ম সোসাইটি আন্দোলনের গুণী সংগঠক অথবা সরকারের বিভিন্ন চলচ্চিত্র কেন্দ্রের প্রশাসক হিসেবে  প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন । যারা সে-সবও হন নি, তারা খাঁটি গুণী চলচ্চিত্র-রসিক দর্শক হয়েছেন ।


       আপনি সিনেমা মাধ্যমের সিরিয়াস দর্শক হতে চাইলেও আপনাকে মন-হৃদয়-মনন দিয়েই  সিনেমা দেখতে শিখতে হবে।


         কিন্তু প্রিয় সিনেমাটি ফ্রেম থামিয়ে থামিয়ে ( ফ্রিজ বা স্টিল করে ) আপনি কি দেখবেন ? সেটা আগে ঠিক করে রাখবেন । কোনওদিন শুধু চিত্রনাট্যের চলনের দিকে মনোযোগ দিলেন । পর্দায় গল্পটা কিভাবে বলা হচ্ছে , সেটা খেয়াল করতে করতে গেলেন ।

       এইভাবে , কোনওদিন দেখলেন শুধু ক্যামেরার কাজের দিকটা । কোনওদিন দেখলেন শুধু দৃশ্য কাটাছেঁড়া , অর্থাৎ সম্পাদনা-র  দিকটা । কোনওদিন শুধু অভিনয় । কোনওদিন শুধু সংগীতের  বা পোশাক-আশাক কিংবা লোকেশনের ব্যবহার । প্রথম প্রথম আপনার একটু অসুবিধে হবে, সম্পূর্ণ মনসংযোগর । বিশেষত , ছবিটি যদি চিরায়ত ক্লাসিক ফিল্ম হয় , তাহলে তো হবেই । কিন্তু কিছুদিন পর দেখবেন ,আপনি অভ্যস্ত হয়ে গেছেন । আপনার নেশা লেগে যাবে ।

      সিনেমার সব ক'টি বিভাগ আলাদা করে দেখতে দেখতে আপনি পরিচালকের  গুণপনা এবং বিশেষত্ব ও নিজস্বতা সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠবেন । তখন আপনি হয়তো টাইটেল কার্ড না দেখেও ,  এটি কার তৈরি সিনেমা, সেটা ধরতে পারবেন । যেমন গলা শুনেই আপনি ধরতে পারেন, এই গানটা কোন শিল্পীর গাওয়া । কিংবা ভাষা এবং গদ্যভঙ্গি দেখেই বুঝতে পারেন, এই গল্প বা উপন্যাসটি কোন সাহিত্যিকের লেখা ।


       প্রতিটি বিভাগ খুঁটিয়ে দেখতে দেখতে আপনি পরিচালককে যেমন চিনতে পারবেন , তেমনি শিল্প মাধ্যম হিসেবে সিনেমা-র সঙ্গেও আপনার নিবিড় পরিচয় হবে ।

      

     আমাদের দেশে গত ১১৫ বছর  যাবৎ প্রতি বছর সিনেমা তৈরি হয় প্রচুর । হাজার হাজার । নানান ভাষায় । কিন্তু , খুব দুঃখের হলেও এটা নির্মম সত্যি যে , আমাদের দেশ চলচ্চিত্র সাক্ষরতায় পৃথিবীর বহু ছোট ছোট দেশের তুলনায় আজও অনেক অনেক পেছিয়ে । এ দেশে প্রতি বছর স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে " শিক্ষিত " যুবক-যুবতী   হয়তো বেরোচ্ছে প্রচুর । কিন্তু , সত্যিকারের সিনেমা রসিকের জন্ম হচ্ছে কই ??

    নইলে , ভাবুন না , শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ পশ্চিমবঙ্গে আজও শিক্ষিত সম্প্রদায় সিনেমাকে " বই" বলে ?


      হায় !! এ অন্ধকার কাটবে কবে ? কিভাবে ??

শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০

চরিত্র || সায়ন বক্স || কবিতা

 চরিত্র

সায়ন বক্স



সূর্য ডুবে যাচ্ছে 
গৃহপালিত বাতাস ছুটে চলে যায় তীরের বেগে
যেখানে চলে প্রেমিকের দেহের আনাগোনা

একটি রাঙামামনি হেঁটে যায় মেঠোপথ ধরে

একটা রাত আরও বেড়ে গেল...
তুমি সুযোগ পেলেই খুঁজে বেড়াও শঙ্খ-সাদা নগ্ন দেহ

তোমার চোখ থেকে আতসকাঁচটি সরিয়ে দেখ
সব বট চরিত্রহীন নয়,


কিছু বই কিছু কথা || নীলাঞ্জন কুমার || বজ্রবিদ্যুৎ ঘুড়ি || মৃণালেন্দু দাশ ।

 কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার 



বজ্রবিদ্যুৎ ঘুড়ি । মৃণালেন্দু দাশ । আলো পৃথিবী । ত্রিশ টাকা ।


১৯৮৬ সালের ' অহল্যা কণ্যা আমার ' কাব্যগ্রন্থের পর ২০১৮ সাল অর্থাৎ ৩২ বছরের এক দীর্ঘ ব্যবধানের ফসল মৃণালেন্দু দাশের দ্বিতীয় কাব্য পুস্তিকা 'বজ্রবিদ্যুৎ

ঘুড়ি  ' তে স্বাভাবিকভাবেই তাঁর আরো পরিণত অবস্থান লক্ষ্য করি । 'অহল্যা... ' র ভেতরে সামান্য হলেও যে অমার্জিতের সন্ধান পেয়েছিলাম তা এ কাব্যগ্রন্থে প্রায় নির্মূল । সে কারণে তাঁর বেশিরভাগ পংক্তিতে সন্ধান পাই সেই বিন্দুতে সিন্ধুর , যা তৃপ্তি দেয় । সেই রকম পংক্তি : ' আগুনে পোড়ালে যা,  সে তো কাঠামো এক/  এর বেশি আর কিছু নয়,  / আগুন রহিত তুমি,  অবিনাশী বীজ/  শুধু মাত্র  ধ্বনি ' ( ' আগুন রহিত ') কিংবা  , ' আমার মাথার চারপাশে এত চক্কর মারছে/  বজ্রবিদ্যুৎ ঘুড়ি,  মাটিতে বসে যাচ্ছি/  যেন কর্ণের রথের চাকা- '( ' রথের চাকা ')।

                কবির কবিতার ভেতর তাঁর সত্য সন্ধান    , যৌক্তিকতা  নিয়ে আসে এই পুস্তিকায়  । মাত্র ১৬ পৃষ্ঠার ১২টি কবিতার ভেতরে তা বিশেষভাবেই  ছুঁয়ে যায় ।  কলেবর বেশি হয়নি বলে পুস্তিকাটি টানটান হয়ে উঠেছে। নাহলে ' বজ্রবিদ্যুৎঘুড়ি'র সিরিজমাধুর্য লঙ্ঘিত হতো । 

               তবে বিষয় ও যৌক্তিক দিকটি বিশেষভাবে লক্ষ্য করতে গিয়ে শব্দচয়নের ক্ষেত্রে কোন কোন সময় 

পুস্তিকার চিন্তনের ভারের সঙ্গে মেলেনা । ' যতই লাঠি খেলা হোক , চৌচির বায়ু/  মাথা যাক ফেটে,  নড়ছি না ' - র মতো পংক্তি এ পুস্তিকায়  মানায় না।  ভবিষ্যৎ বলবে তিনি এর থেকে  নিজেকে পরিশিলিত করবেন । অর্কদীপ দাশের প্রচ্ছদে বইটির মেজাজের সমাচার নির্দেশ করে । কবির ভবিষ্যৎ কাব্যগ্রন্থের দিকে তাকিয়ে রইলাম ।

সৌমিত্র রায় -এর জন্য গদ্য ১৪৪ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক গদ্য

সৌমিত্র রায় -এর জন্য গদ্য

প্রভাত চৌধুরী



১৪৪.

কলকাতা এবং শহরতলি পর্বে যে-কটি অনুষ্ঠান হয়েছিল তার বিবরণ লিপিবদ্ধ রাখছি ।

১৩ জুলাই ২০০৩ , রবিবার দুপুর তিনটেয় দেবাশিস চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে আমরা পরমানন্দে ১০ বর্ষ পূর্তি পালন করেছিলাম। ৩৫ কাষ্ঠডাঙা রোড , শিবরামপুর , সরশুনা। আয়োজক  : দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় সবিতা চট্টোপাধ্যায় বিশাল ভদ্র, কানাকড়ি।

ওই অনুষ্ঠানে যার উপস্থিতি এখনো মনে আছে , সেটি হল একটি গৃহপালিত কোকিল।

অনেক কিছুই স্মৃতি  থেকে মুছে গেছে তথা যাচ্ছে । তবে যতটুকু এখনো মনে আছে সেগুলিকে একত্রে গুছিয়ে রাখতে চেষ্টা করছি।

১৬ জুলাই  ২০০৩ বুধবার সন্ধে ৬ টায় বিশাল ভদ্র-র কানাকড়ি পত্রিকার উদ্যোগে অনুষ্ঠানটি হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি সভাঘরে। এবং এটা বলা বাহুল্য যে আমাদের পরিবারের সকলেই অংশগ্রহণ করেছিল।

২ আগস্ট দক্ষিণেশ্বরের অনুষ্ঠানের কথা আগেই লিখেছি। সেই লেখায় একটা সংশোধন জরুরি।ওই অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা ছিলেন ড: মণিকুন্তলা দে , লেডিস ক্লাব, আড়িয়াদহ।

এই সুযোগে আরো একটা সংযোজন করতে চাইছি।

২৭ জুলাই বাঁকুড়ার অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিলেন অনিন্দ্য রায় সত্যজিৎ সেন গৌতমকুমার মল্লিক এবং বিকাশরঞ্জন ভূঁই।

সংশোধন পর্বের পর আবার ফিরে আসি অনুষ্ঠানে।

৩ আগস্ট ২০০৩ রবিবার  বিকেল ৩ টেয় যে ঘরোয়া অনুষ্ঠানটি হয়েছিল সেটি জয়দীপ চক্রবর্তীর বাড়িতে। আয়োজক হিসেবে নাম ছিল জয়দীপ এবং সুমি চক্রবর্তীর। এই অনুষ্ঠানের কথা আগেই লেখা হয়ে গেছে।

৩০ আগস্ট  ২০০৩  বিকেল ৪টেয় আমাদের আরো একটা ঘরোয়া অনুষ্ঠান ছিল গড়িয়া স্টেশন রোডের বিজলি অ্যাপার্টমেন্টে। আয়োজক ছিলেন গোপাল আচার্য।

আমাদের কবিতাপাক্ষিক পরিবারের সিনিয়র মোস্ট। এবং পরিবারের দায়িত্বশীল সদস্য। অবিবাহিত ।কাজের মানুষ। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কাজকর্ম নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছেন। এক সময় সিনেমা-শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কলকাতায় এখনো গোপাল আচার্য-র তৈরি বাড়ি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।

কবিতাকে ভালোবেসে কবিতাপাক্ষিকের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। যতটা সম্ভব সমস্ত রকম কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত থাকতেন সাধ্য মতো।আর কবিতাকে আপডেট করাটাকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলে মনে করতেন। ওঁনার কবিতার ভেতর কারো কোনো ছায়াও দেখা যায়নি। সম্পূর্ণ নিজের মতো লিখতেন। কবিতাপাক্ষিক ছাড়া অন্য কোনো পত্রিকাতে লেখা দেননি কখনো। আমাদের কবিতা উৎসবের কথা প্রসঙ্গে গোপাল আচার্য-র কথা লেখার সুযোগ পেলাম , এজন্য নিজেকে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।

উৎসব তার নিজস্ব মেজাজে এগিয়ে চলছিল। আমরা প্রস্তুত হচ্ছিলাম কলকাতার কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানটির জন্য।

আটপৌরে কবিতা ৮২১-৮২৫ || নীলাঞ্জন কুমার || ধারাবাহিক বিভাগ

আটপৌরে কবিতা

নীলাঞ্জন কুমার




৮২১

সংকীর্তন/  শেষযাত্রা/  অষ্টপ্রহর
         ) হরিবোল  (
      কেন মন উতাল হয় !

৮২২

প্রচ্ছদ/  আবরণ/  যত্ন
     )  মলাট  (
মোড়কের আড়ালে থাকে কৌতুহল !

৮২৩

সিদ্ধান্ত/  উদ্যোগ/  গতি
        ) পদক্ষেপ  (
না থাকলে বিকাশ নেই ।

৮২৪

তাপ্পি/  নিয়মহীন/  ভ্রান্তি
       ) গোঁজামিল  (
থাকলে ফল খারাপ হয় ।

৮২৫

বখাটে/  অপগন্ড/  হতভাগা
        ) আহাম্মক  (
সে হল তাচ্ছিল্যের পাত্র ।


পূরবী~ ৩৮ || অভিজিৎ চৌধুরী || ধারাবাহিক উপন্যাস

পূরবী~ ৩৮

অভিজিৎ চৌধুরী।




 রাণু যখন শান্তিনিকেতনে এলো প্রথম  বয়স ১১।এখনকার হিসেবে নাবালিকা কিন্তু তখনকার দিনে তো ওরকমটা নয়।

নতুন বউঠান তো জ্যোতিদাদা আর রবির ওপর গিন্নিপনা করেছেন এরকমই কোন বয়সে।

 তীর্থের সঙ্গে শিশুদের বরাবরই ভাব।সে কখন বালিকা হয়ে যায় তীর্থ টের পায় না।তার কাছে সে তখনও গলায় আঁকড়ে ধরে থাকা সেই ছোট্ট মেয়েটা।বয়স বাড়ে,কলেবর বাড়ে - তীর্থ টের পায় না।

ইন্দিরা ছিল রবির চিত্রকলার সঙ্গিনী।কখনও নতুন বউঠানের কথা মনে পড়ায়।তবে রাণুর উচ্ছলতা বউঠানের ছিল না।রাণুকে ভানু চিঠি লিখেছেন।ফিরে এসেছে ভানুসিংহের পদাবলী।গহন কুসুম  কুঞ্জে ইন্দিরা যেন রাইকিশোরী।

প্রতিমা আর রাণু দুজনেই কবির শেষ জীবনের সখী।বিসর্জনে জয়সিংহ সাজলেন রবীন্দ্রনাথ। বয়স তখন ৬৩।যৌবন যেন ফিরে এল।

তার বিয়ে হল।কিন্তু ডাকলেই সে আসে।ছবিতে ছবিতে সেই মুখমণ্ডল যেন ঘুরেফিরে আসে।

কবিতা খুব কম লেখা হয়।সবচেয়ে বেশী সংশোধন হল পূরবী কাব্যগ্রন্থে।নানা বিমূর্ত ছবি আড়ালে থাকে।তাই রেখায় রূপ পেলো।

মৃত্যু জীবনে এক নবায়ন ঘটায়।যিনি ছিলেন,যিনি রইলেন না- এক অখণ্ড সত্তার হয়তো বয়ে যাওয়া।তাঁর সঙ্গে আর দেখা হয় না।এই জীবনের মতোন ইতি হয়।সম্ভাবনাও থাকে আর দেখা হয় না।এটাও সম্পর্কের সম্পূর্ণতা।যে নদী চলে গেল সে তো হারিয়ে যায় না বরং বইতে থাকে মনের মন্দিরে।

তাই ভালোবেসে সখীর নাম লেখা রইল।

বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০

কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার এইটুকু । তাপস সরদার

 কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার 



এইটুকু । তাপস সরদার । মৌহারি । পন্ঞ্চাশ টাকা ।


কখনো কখনো কোনো কোনো কবি তেমন উল্লেখযোগ্য কবিতা না লিখতে পারলেও মাঝে মধ্যে অবাক করা কবিতা  লেখেন,  যেমন কবি তাপস সরদার তাঁর  'এইটুকু ' কাব্যগ্রন্থে একগাদা একঘেয়ে কবিতার মাঝে কিছু কিছু অনাস্বাদিত কবিতা আমাদের দেন । তাই তাঁর কাছ থেকে পাই : ' ও নিয়তি!  ও পণ্য সময়! ও পথঘাট!  / সারারাত খোলা শরীরে আবিলতায় । ভেসে যায় মধ্যরাত! ' ( ' মধ্যরাত ' ), ' যে পাখি রাত্রির আকাশে খড়ি দিয়ে উড়ে যায়/  তাকে চেনা হয় না '( ' তাকে চেনা হয় না ') -র মতো উজ্জ্বল পংক্তি ।

           কবি তাপস সরদারের দোষের দিক,  তিনি কবিতা নিয়ে কম ভাবনা চিন্তা করেন । তার লক্ষণ বইটির পরতে পরতে । গুণের দিক,  অজান্তে অসাধারণ পংক্তি তাঁর ভেতরে ছুটে এলে যা দিয়ে তিনি কবিতা লেখেন । তাই তাঁর অবাঞ্ছিত উচ্চারণ : ' এখানে নদীর ভেতর স্রোতের মধ্যে/ দাঁড়িয়ে থাকে সময় ' - এর পাশাপাশি : ' কই এখন তো আর গোরুর পায়ে/ ধুলো উড়তে উড়তে আকাশটা কৃষ্ণচূড়ার মতো দুলে ওঠে না/  ওসব ভেসে ওঠে এখন স্ক্রিনে , ডিস্ক থেকে নেমে আসে নদী । ' ( ' ডিস্ক ')-র মতো পংক্তি অবাক করে ।

                একথা সত্যি,  একজন কবিকে  পন্ডিত বা সর্বজ্ঞাণী হতেই হবে এমন কথা নেই কিন্তু কবিতা নামক শীর্ষশিল্পের চর্চা যাঁরা করেন তাঁদের অবস্থান গভীরতার দিকে যেতে হবেই । না হলে পাঠকমন থেকে সরে যেতে হবে । ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দায়সারা প্রচ্ছদের বদলে সাদা কাগজে কাব্যগ্রন্থ ও কবির নাম লেখা থাকলে আনন্দ পেতাম ।

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য ১৪৩ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক গদ্য

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য

প্রভাত চৌধুরী



১৪৩.

দু-বারের উত্তরবঙ্গ সফরের মধ্যবর্তী বেশ কয়েকটি শনি-রবিবার ছিল যেগুলি আমরা নিকটের কয়েকটি পয়েন্টে আমাদের কর্মসূচি পালন করেছিলাম। তার কিছু কিছু খবরও লেখা থাকুক এই দীর্ঘ লেখাটিতে। না-হলে নিকট-কে দূরে সরিয়ে দিলাম মনে হবে। সেটা আমার অভিপ্রায় নয়।

এখন হুগলি জেলার কয়েকটি প্রান্তের টুকরো খবর। 

১৫ জুন ২০০৩ , রবিবার বিকেল ৫ টায় শ্রীরামপুরে কবি- নজরুল বিশেষজ্ঞ বুদ্ধদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে এক অন্তরঙ্গ অনুষ্ঠানের স্মৃতি এখনো মনে আছে।

মূলত বুদ্ধদেবের প্রচেষ্টায় এই অনুষ্ঠানে গান-কবিতাপাঠ-আলোচনা সবই হয়েছিল খুবই পারিবারিক পরিবেশে। 

আজ সকালে বুদ্ধদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনায় উপস্থিতির একটা আদল পেলাম। গর্বিত হলাম সেই আসরে উপস্থিত ছিলেন মৃদুল দাশগুপ্ত সোমনাথ মুখোপাধ্যায় সমর মুখোপাধ্যায় রমা ঘোষ প্রমূখ বিশিষ্ট কবিজনেরা। জানতে পেরে।

১২ জুলাই ২০০৩ শনিবার বিকেল ৫ টায় হুগলি বালিকা মহাবিদ্যালয় সভাগৃহে একটি অনুষ্ঠান হয়েছিল। আয়োজক ছিলেন মিলন প্রামাণিক , অতিরিক্ত জেলাশাসক ও জেলা ভূমি ও ভূমিসংস্কার আধিকারিক।

এই অনুষ্ঠানের সম্পর্কে কোনো তথ্য কারো জানা থাকলে জানাবেন। পরে যুক্ত করে নেব।

১৯ জুলাই২০০৩ শনিবার বিকেল ৫ টায়  কালীমাতা ব্যায়ামাগার , চাঁপদানি , বৈদ্যবাটিতে যে অনুষ্ঠানটি হয়েছিল তার আয়োজক ' সেই সন্দীপন ' - এর সম্পাদক কাশীনাথ ঘোষ। সেই অনুষ্ঠানের ছবি পুরো মুছে যায়নি। বুদ্ধদেবের সাহায্যে জানতে পারলাম   অমর ঘোষ চন্দ্রশেখর ঘোষ তারক ভড় প্রমূখ কবিদের সহযোগিতায় এটি স্মরণযোগ্য হয়েছিল। আমার মনে হচ্ছে এই অনুষ্ঠানে কবি কানাইলাল ঘোষও উপস্থিত ছিলেন।

উত্তরবঙ্গের দুই সফরের মধ্যবর্তী ছিল না  গুড়াপের উৎসবটি। 

৭ সেপ্টেম্বর ২০০৩ রবিবার দুপুর ৩ টেয় গুড়াপের শীতলকুমার বালিকা বিদ্যালয়ের এই অনুষ্ঠানটি নানাকারণে মনে রেখেছি।

যাদের উদ্যোগে এটি হয়েছিল তারা হল সন্দীপ লাহা আফজল আলি এবং সঞ্জয় লাহা । প্রতিষ্ঠানগুলির নাম : কথাকলি , সুচেতনা , মিড় এবং খ ।

হাওড়া - বর্ধমান কর্ড লাইনের একটি উল্লেখযোগ্য স্টেশন গুড়াপ। পশ্চিমবঙ্গের একটি উন্নত তথা অভিজাত অঞ্চল হল গুড়াপ। দীর্ঘদিন গুড়াপের ওপর দিয়ে গেছি। তা শান্তিনিকেতন হোক বা দেশের বাড়ি , প্রায় প্রতিবারই গুড়াপ আসলেই মনটা চঞ্চল হয়ে ওঠে। ট্রেনের জানলা দিয়ে দেখি গুড়াপ অটোমোবাইল , যূথিকার মামা-র বড়ো মেয়ে ঘাগর বা আশিসকণা-র বিয়ে হয়েছে গুড়াপ অটোমোবাইলের মালিক অসিত ঘোষের সঙ্গে।

সেদিন অর্থাৎ ৭ সেপ্টেম্বর ২০০৩ যখন তখন স্টেশনে উপস্থিত ছিল অসিত। প্রথমে ওদের বাড়ি । তারপর অনুষ্ঠানস্থল , সবটাই অসিতের ঠান্ডা গাড়িতে। যূথিকা এবং ঘাগরের দ্যাখা হওয়াটাও উৎসবের অঙ্গ ধরে নিয়েছিলাম।

আরো একটি বৃহত্তর মিলনের কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল গুড়াপের উৎসব।

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করতে এসেছিল শ্যামাশ্রী , কবিতাপাঠ ছিল কল্যাণের , কল্যাণ চট্টোপাধ্যায়ের।

কল্যাণের পছন্দ হয়েছিল শ্যামাশ্রী-র গান। আর শ্যামাশ্রী-র ভালো লেগেছিল কল্যাণের কবিতা।

কিছুদিন পর  লোকজানাজানি হয়েছিল কল্যাণের পছন্দ হয়েছে শ্যামাশ্রীকে। আর শ্যামাশ্রীরও পছন্দ কল্যাণ-কে। অতএব শুভদিনক্ষণ টুকু নির্ধারণ করাটা ছিল সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

কাজেই গুড়াপের জয়গান করতেই থাকব। চিরকাল।

বাকি যাঁরা কবিতা পড়েছিলেন কিংবা গান গেয়েছিলেন , তাঁরা সকলেই  আমাদের আত্মজন , তাঁদের হাসিমুখ দ্যাখাটাও আমার একটি অন্যতম প্রধান কাজ।

আটপৌরে কবিতা ৮১৬-৮২০ || নীলাঞ্জন কুমার || ধারাবাহিক বিভাগ

আটপৌরে কবিতা

নীলাঞ্জন কুমার


৮১৬

স্নেহ/  প্রশ্রয়/  ভালবাসা
         ) আহ্লাদী(
মাথায় চড়লে সামলানো দায় !

৮১৭

কাহিনি/  ঘটনা/  আকর্ষণ
       ) গল্প  (
কি জাদু বাংলা গল্পে !

৮১৮

খ্যাতি/  পসার  / সাফল্য
        ) হাতযশ  (
পেতে গেলে পরিশ্রম লাগে ।

৮১৯

জিজ্ঞাসা/  অলৌকিক/  নিষিদ্ধ
         ) কৌতুহল  (
      তখন বড় হয়ে ওঠে ।

৮২০

নজর/  মোহ/  নেশা
       ) মুখোমুখি  (
     না হলে জমে না ।

Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...