শুক্রবার, ৫ জুন, ২০২০

প্রভাত চৌধুরী || সৌমিত্র রায়- এর জন্য গদ্য || ধারাবাহিক গদ্য

প্রভাত চৌধুরী || সৌমিত্র রায়- এর জন্য গদ্য || ধারাবাহিক গদ্য

৩৪.
গতকালের প্রতিশ্রুতি পালন করছি । অর্থাৎ শুরু করছি  ' অন্যকথা ' লেখা। এই লেখার জন্য প্রথমেই অন্যকথা-কে ঠিকভাবে বুঝে নিতে চাইছি। একটু গভীরে গিয়ে তুলে আনতে চাইছি ' অন্যকথা ' এই প্রকল্পে অন্যকথা-কে দুভাগে ভাগ করতে চাইছি। প্রথম ভাগে রাখছি  ' অন্য ' -কে। দ্বিতীয় ভাগে ' কথা '।
অর্থাৎ অন্যকথা = অন্য + কথা ।
এখন ' অন্য ' - কে ভালোভাবে দেখতে গিয়ে খোঁজে পেলাম দুটি অর্থ। অপর , ভিন্ন।
আর ' কথা ' -র অর্থ মোট ১৪ টি।
অন্য , এই বিশেষণটি আমার জন্য অপেক্ষা করছে  তার বিশেষ্যটি হল কথা।
এখন কথা-র ১৪ টি অর্থের কাছে যাওয়া যাক।
অর্থগুলি :  ১. বাক্ ,ভাষা  ২. ভাষাগত উচ্চারণ
৩. উক্তি , বাণী  ৪. আখ্যান , গল্প  ৫. প্রসঙ্গ ,বিষয়
৬. পূর্ব নির্ধারিত ব্যবস্থা  ৭. অঙ্গীকার  ৮. আদেশ, অনুরোধ , উপদেশ  ৯. প্রবাদ ১০. আলাপ-আলোচনা
১১. কটুবাক্য ,তিরস্কার  ১২. মনোভাব , মত
১৩. পরামর্শ  ১৪. নিন্দা , সমালোচনা ।
এখন এই ১৪ টি বিশেষ্য থেকে আমি গ্রহণ করতে চাইছি ৪ নম্বর অর্থটি।বা আখ্যান , গল্প- কে।
আর দুটি বিশেষণের প্রথমটি হল ' অপর ' । এই অপর-এর কাছে পৌঁছবার জন্য আমি তরুণ কবি- প্রাবন্ধিক রুদ্র কিংশুক-এর হাত ধরতে চাইছি।
রুদ্র কিংশুক পোস্টমডার্ন শব্দাভিধান গ্রন্থটিতে যা লিখেছে , তার সারমর্ম হল : ' সাহেবদের নকল নয় , নতুন ধরনের একটা সাহিত্য গড়ে তোলার প্রচেষ্টা যাঁদের মধ্যে পরিলক্ষিত হবে তাঁদের অপর -ভূক্ত করা হবে।
একারণেই আমি অপর-কে  সঞ্চিত করলাম শব্দ- ভল্টে। যখন প্রয়োজন হবে তখন বের করতে হবে। মনে রাখতে হবে যখন আমরা ' সাক্ষাৎকার ' থেকে মাত্র কয়েক ফার্লং দূরে। সাক্ষাৎকার - এর পর ফিরিয়ে আনবো ' অপর ' -কে।
এখন গ্রহণ করলাম ' ভিন্ন ' ।
বা বলতে হবে :
ভিন্নকথা । কেন ? আমি তো কথা-র সমার্থক রূপে গ্রহণ করেছি আখ্যান এবং গল্প-কে।
আখ্যান এবং গল্প-কে।
আখ্যান শব্দটির মধ্যে পৌরাণিক ধুলো লেগে আছে।বা তৎসম অনুভূতিমালা। কাজেই আখ্যান - এর ডানপাশে বসে আছে 'গল্প '। এই গল্প-কে গ্রহণ করলাম।
তবে জানিয়ে রাখি এই গল্প কোনো অর্থেই গপ্পো কিংবা গালগল্প নয়। সত্য গল্প।বা সত্যঘটনা অবলম্বনে রচিত কাহিনি।
আজ সেরকম একটি ভিন্নগল্প।
পবিত্রদা বা পবিত্র মুখোপাধ্যায় এবং আমি দুজনে বাঁকুড়া গিয়েছিলাম কবিতাপাক্ষিক-এর কোনো অনুষ্ঠানে। কথা ছিল অনুষ্ঠানের পর পাঞ্জাব হোটেলে চারণ কবি বৈদ্যনাথের আতিথ্য গ্রহণ করে মধ্যরাতে বাঁকুড়া  স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে কলকাতা ফিরব।তখনো কলকাতা স্টেশন গড়ে ওঠেনি। ফিরবো হাওড়া।
অনুষ্ঠানের পর পাঞ্জাব হোটেল।  আমাদের দুজনের আত্মজন চারণ কবি বৈদ্যনাথ অপেক্ষায় ছিলেন। তারপরের ঘটনাবলি তন্ত্রমতে পালিত হয়েছিল।অর্থাৎ টেবিলের ওপর রক্তবস্ত্র বা লালশালু। টেবিলে মন্ত্রসিদ্ধ কারণবারি। ওখানে মন্ত্র ছিল দু-রকমের।
সঙ্গে পঞ্চ ম-কার ছিল না। কিন্তু তড়কা-রুটির সঙ্গে মাংসও ছিল।
পূজাপাঠ সম্পন্ন হবার পর সাইকেল রিক্সা। দুজনে হাওয়া সেবন করতে করতে পৌঁছে গেলাম বাঁকুড়া স্টেশন। আমাদের জানানো হয়েছিল ট্রেনে উঠে পড়লেই বসার জায়গা পেয়ে যাবো।
যথাসময়ে ট্রেন এসে গেল। উঠে পড়লাম। বসার জায়গা কেন , ঠিকভাবে দাঁড়াবার জায়গাও নেই।জায়গা পেলাম দু-দিকে দুটি টয়লেট। মধ্যের জায়গাটুকু কিছুটা ফাঁকা ছিল। কাগজ পেতে বসে পড়লাম। চারণ কবি বৈদ্যনাথ-এর অশেষ কৃপায় আমার কোনো অসুবিধা হয়নি।কিন্তু পবিত্রদার ! আজ ভাবি  শবযাত্রা , আগুনের বাসিন্দা , ইবলিশের আত্মদর্শন- এর কবি বিন্দুমাত্র অভিযোগ না করে ওই ট্রেনযাত্রা করেছিলেন। কারণ অভিযোগ না করে ওই ট্রেনযাত্রা করেছিলেন। কারণ কবিতার প্রতি ভালোবাসা তৎসহ আমার প্রতি স্নেহ।
এরকম ভিন্ন গল্প আগামীকাল আবার হবেকবিতার প্রতি ভালোবাসা তৎসহ আমার প্রতি স্নেহ।
এরকম ভিন্ন গল্প আগামীকাল আবার হবে

1 টি মন্তব্য:

  1. কবিতার সঙ্গ যাপন আর গল্প জেনে আনন্দ পেলাম। প্রভাতবাবুকে শ্রদ্ধা জানাই।

    উত্তরমুছুন

Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...