সোমবার, ২৪ আগস্ট, ২০২০

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য ১১২ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক গদ্য

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী

১১২ .
গতসংখ্যায় লিখেছিলাম , আজকের লেখার বিষয় হবে : কীর্ণাহার এবং রহিম রাজা। শিরোনামটিতে একটি মারাত্মক ভুল ছিল। গতকালই লক্ষ করেছিলাম।আজ সেই ভুল সংশোধন করে নিচ্ছি। শিরোনামটি হবে : কীর্ণাহার , রহিম রাজা এবং কবিতাপাক্ষিক। অর্থাৎ রহিম রাজা-কে মধ্যে রেখে একদিকে রাখলাম কীর্ণাহার , অপরদিকে কবিতাপাক্ষিক। এবার বিষয়টি বোধগম্য হল । বা আমি যা বলতে চাইছিলাম তা স্পষ্টভাবে বলতে সমর্থ হলাম। অর্থাৎ রহিম রাজা-ই নিজ উদ্যোগে গোটা কীর্ণাহারকে পৌঁছে দিয়েছিল কবিতাপাক্ষিক পরিবারে।
এর আগে কীর্ণাহার থেকে নাসিম এ আলমের কবিতা কবিতা-পাক্ষিক-এ ছাপা হয়েছিল। সেটা ছিল একক প্রদর্শনী । কিন্তু রহিমের চরিত্রে কখনোই একক প্রদর্শন দ্যাখা যায় না। রহিম একা হাঁটতে  জানে না । শেখেওনি।
রহিম রাজা একসময় ' কবিতা বারোমাস ' নামে পত্রিকা বের করত। পরে সেটাই ' গুপিযন্ত্র ' হয়ে যায়। কবিতা বারোমাস থেকে গুপিযন্ত্র এই দীর্ঘ যাত্রাপথে সবসময় আমি রহিমের সঙ্গী ছিলাম। রহিম কখনোই গ্রাম্য-পত্রিকা করতে চায়নি। চেয়েছে রুচিশীল একটি পত্রিকা বের করতে। এজন্য বিজ্ঞাপনদাতাদের দরজায় দরজায় হত্যে দিয়ে বসে থেকেছে।কবিবন্ধুদের কাছে হাত পেতেছে। অনেকেই অবশ্য সাহায্য করেছে নিজ-উদ্যোগে।
রহিমের বাড়ি কীর্ণাহার লাগোয়া নিমড়া গ্রামে। কবিতার জন্য বিষয়-সম্পত্তির দিকে নজর দিতে পারেনি। কেউ কেউ রহিমকে ঠকিয়ে জমিজায়গা বেদখল করে নিয়েছে। কিন্তু রহিমকে সম্পত্তি রক্ষায় তৎপর হতে দেখিনি। অনেকদিন আগে থেকেই রহিম কীর্ণাহারের হাটতলায় বসে থেকেছে। পরে দোকানও করেছে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সামগ্রী উপস্থিত করেছে। ক্রেতাদের জন্য। ভুল বললাম কবিতার আড্ডাটাকে টিকিয়ে রাখতে চেয়েছে।

আমার মনে হয় ওর জীবনবিমা-র এজেন্সিটাও কবিতা-প্রচারের একটা মাধ্যম। ওই কাজটাও যদি মনোযোগ দিয়ে করত তাহলে হুশ করে আসত , হাশ করে ফিরে যেত ।
এতক্ষণ যা লিখলাম সেটা কীর্ণাহার এবং রহিম রাজা  পর্বের। এখানে কবিতাপাক্ষিক ততটা প্রকটিত নয়। এবার কবিতাপাক্ষিক এবং রহিম রাজা অধ্যায়। এই অধ্যায়টি মাত্র একটি বাক্য-প্রয়োগের মাধ্যমে প্রকাশ করা যেতে পারে। সেই অনিবার্য বাক্যটি হল : যেখানে কবিতাপাক্ষিক সেখানেই রহিম রাজা। একটু ডিটেইলে যেতে চাইছি। শান্তিনিকেতন পৌষমেলা , কাটোয়া ,বহরমপুর , কলকাতা বইমেলা সর্বত্রই রহিমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। প্রায় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিজেকে জাহির না করে ঠিক সময়ে ঠিক কাজটি করে গেছে রহিম , কোনো প্রশ্নচিহ্নকে উপস্থিত না করে।
রহিম রাজার নাম কি কখনোই কবিতাপাক্ষিক-এর এডিটোরিয়াল টিমে দেখা গেছে ! কই মনে পড়ছে না তো। আজ বলতে দ্বিধা নেই , আমার উচিত ছিল রহিমকে এডিটোরিয়াল টিমে রাখা। এই ত্রুটি আমার একার।
রহিম রাজার কবিতা নিয়ে একটি সহজ কথা সহজভাবে বলতে চাইছি। রহিম কবিতা বানাতে পারে না।  রহিমের যাতায়াত-চালচলন থেকে কবিতা উঠে আসে। স্বতঃস্ফূর্ততাই রহিমের কবিতার অহংকার। আমি এখন সেরকম কয়েকটি চিহ্ন উপস্থিত করছি আপনাদের সামনে :
১॥  টেলিফোন তারে বসে আছে কাক , টেলিফোন তারে কথা ভেসে যাচ্ছে।
২॥ অবশেষে জল কমলে পচা শেকড় মাছেদের খাদ্য এবং পাতিঘাস/ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয় আর ঠিক তখনই আমার / আদিম যুগের কথা মনে পড়ে যায়।
৩॥  আমাদের খাদ্যতালিকায় উঠে এল অসম্ভব দুটি শব্দ / অসম্ভব বললাম এই কারণে প্রথমত পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ/ যদিই বা পাওয়া যায় রহিম ও শান্তনু খিদে পেটেই ফিরে যাবে/ শুয়োর এবং গোরুর গল্প করতে করতে , অন্যদিকে নীলু ও বিষ্ণু/ কী পরম চেটে যাচ্ছে প্লেট সুদ্ধ/ এবার বলুন তো অসম্ভব সেই শব্দদুটি কী কী?
এই পর্বটির নামকরণের এই পর্বটির নামকরণ নিয়ে কিছু ব্যাখ্যা করা বাকি থাকল কি ?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...