পূরবী~৪৩
অভিজিৎ চৌধুরী।।
বেদনাহত রবীন্দ্রনাথ ফিরে আসছেন ঘোড়ার গাড়িতে।বেলা আর নেই।বরপণও দিিয়েছিলেন।মৃণালিনীর দেবীর সায় ছিল না।কাবুলিওয়ালার মিনি সুদূরে চলে গেল আজ।
বিহারীলাল চক্রবর্তীর ছেলে শরৎ।বিশ্ববিখ্যাত শ্বশুর মশাইয়ের জামাই।বেলার যক্ষার যাবতীয় খরচা রবীন্দ্রনাথ বহন করেন।তখন তিনি নোবেল পেয়েছেন।জোড়াসাঁকোর বাড়িতে বেলাকে রাখতে পারেননি।সেই থেকে মনান্তরের শুরু।
সাধারণ মানুষ বিশ্বখ্যাত দেখলে আর বেশী অপমান করে যেমন করেছিলেন শরৎ ও তাঁর মা।সহ্য করতে হয়েছিল তাঁকে।শোনা যায় কবির প্রয়াণের দিন খুব কেঁদেছিলেন শরৎ। শুধু নিজের অভিমান সরিয়ে গ্রহণ করতে পারেননি।
তীর্থেরও ইদানীং ভয় করে অপমানিত হওয়ার।সে নিজেকে আড়ালে রাখতে চেয়েছে বরাবর।ডেকে দাঁড়িয়ে দূরবীন হাতে আকাশ দেখবে এই ছিল তার স্বপ্ন।
আলোকবর্ষ যেতে যেতে সে ক্রমশ দেখল জীবন গুটিয়ে এলো।কিছুই হল না তার।
ক্লান্তি ভয়ংকর ভাবে গ্রাস করছে।এই দিনলিপিটুকু ছাড়া কিছুই হয় নি আজ।
এক আতংকের অজগর তাকে প্রায়ই তাড়া করে।সে বলে,গহ্বরে প্রবেশ করো।উদরে প্রবিষ্ট হও।
তীর্থ বলে,কে তুমি
বলে,মৃত্যু।
মৃত্যু এক নিরাবয়ব ধ্যান।তার কাছে যাওয়া সহজ নয়।রবীন্দ্রনাথ মৃত্যুকে ভয়ই পেয়েছিলেন।মরণ রে তুহুঁ মম শ্যাম সমান।ভেবেছেন কিন্তু গ্রহণ করতে পারেননি।
আমি যে বর্জিতের তালিকায় রইলেম,সেই সত্যি ছোঁয়া যায় না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন