শনিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২০

সৌমিত্র রায় -এর জন্য গদ্য ১৫২ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক গদ্য

সৌমিত্র রায় -এর জন্য গদ্য

প্রভাত চৌধুরী



১৫২.

গতকাল লিখেছিলাম ৭০ জন কবির কবিতাপাঠের কথা। নাম-ধাম কিছুই দিতে পারিনি। আজও নাম দিতে পারলাম না। ধাম দিতে পারছি।

কলকাতা ছাড়াও কোচবিহার শিলিগুড়ি মালদা মুর্শিদাবাদ বীরভূম মেদিনীপুর বর্ধমান বাঁকুড়া নদিয়া হুগলি উত্তর ২৪ পরগণা দক্ষিণ ২৪ পরগণা প্রভৃতি জেলার এবং  নবদ্বীপ সোনারপুর দক্ষিণেশ্বর কাটোয়া ব্যান্ডেল বামনগাছি প্রভৃতি জায়গার কবিরা।বাংলাদেশ থেকে এসেছিলেন আসলাম সানি এবং দিলদার হোসেন , তাঁরাও কবিতা পড়েছিলেন।

কবিতাপাঠের মাঝে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়েছিল বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের ' রং নাম্বার '।সম্পাদনা : আনন্দ চট্টোপাধ্যায় তিমিরকান্তি সন্দীপকুমার দত্ত নভনীল চট্টোপাধ্যায় স্বরূপ চক্রবর্তী সুদীপ মণ্ডল।ওই সংখ্যাটি উৎসর্গ করা হয়েছিল অশোক মহান্তীকে।

আকাদেমি সভাঘরের বাইরে কবিতাপাক্ষিকের বইপত্র বিক্রির দায়িত্ব ছিল সৌমিত্র রায় এবং জয়ন্ত ঘোষের ওপর। বিক্রির রিপোর্ট খুব ভালো।


রবীন্দ্রসদন প্রাঙ্গণে অস্থায়ী মঞ্চটির নামকরণ হয়েছিল অরুণ মিত্র মঞ্চ। আর তার পাশেই ছিল দীপক মজুমদার প্রদর্শশালা। বিকেল ৪ টের সময় এ-দুটির উদ্বোধন করা হয়েছিল।

এবার ওই মঞ্চের অনুষ্ঠানের কিছুটা রূপরেখা আঁকার চেষ্টা করছি।

কাটোয়ার নিকটবর্তী জনপদ খাজুরডিহি থেকে  এসেছিলেন প্রধানপাড়া বোলান সম্প্রদায়ের বোলান শিল্পীরা। কবিতাপাক্ষিকের আত্মজনেরা ছাড়াও অসংখ্য শ্রোতা -দর্শক উপস্থিত ছিলেন এই মঞ্চের সুপরিকল্পিত অনুষ্ঠানগুলিতে।

বাঁকুড়া ছান্দারের ' অভিব্যক্তি ' শিল্পীরা পরিবেশন করেছিলেন টুসু-ভাদু এবং লৌকিকগান। অভিব্যক্তি- প্রধান উৎপল চক্রবর্তী স্বয়ং মঞ্চে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছিলেন। উৎপল চক্রবর্তী বা ছোটদা আমার খুব প্রিয় মানুষ। এবং কবিতাপাক্ষিকের আত্মজন। অভিব্যক্তি-তে আমাদের অসংখ্য ঘরোয়া অনুষ্ঠান বা আড্ডা । সেসব এবার লিখে রাখতে হবে। অবশ্য আগেও কিছু কিছু লিখেছি আত্মজীবনী-র দুটি পর্ব-তে। শৈশব এবং সুন্দরের দিকে বইদুটি কিন্তু সহজলভ্য ৷

 এরপর সহজ মা এবং উৎপল ফকিকের গান। আর গান হল সহজিয়া গান। বাউলগান। ওদের গানের আমি অনুরাগী। ওদের গানের সময় জনারণ্যে পরিণত হয়েছিল রবীন্দ্রসদন চত্বর।

নবকুমার দাসের বাংলাগান শুনে মুগ্ধ হয়েছিলাম আমরা। নবকুমার-এর নিজের লেখা এবং নিজের সুরারোপ এখনো ভুলে যাইনি।

এছাড়াও রবীন্দ্রগান পরিবেশন করেছিলেন ইন্দ্রাণী চট্টপাধ্যায় লীনা চৌধুরী এবং জপমালা ঘোষরায়। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি লীনা চৌধুরী হল কবিও গদ্যকার অভিজিৎ চৌধুরীর স্ত্রী। আর জপমালা তো আমাদের কপা পরিবারের কবি জপমালা ঘোষরায়।

এই মঞ্চের খুব কাছেই ছিল দীপক মজুমদার প্রদর্শশালা। ওখানে প্রদর্শিত হয়েছিল কবিতাপাক্ষিকের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আলোকচিত্র এবং বিবিধ ডকুমেন্ট অর্থাৎ পাণ্ডুলিপি , চিঠিপত্র ইত্যাদি। 

অনুষ্ঠানের পর সপরিবারে সকলে ফিরে এসেছিলাম শোভনালয়-এ। ওটিই ছিল আমাদের বেসক্যাম্প।সকালে ওখান থেকেই নাসের হোসেন এবং ধীমান চক্রবর্তী আনতে গিয়েছিল  শরৎদা এবং উৎপলদাকে। ধীমানের গাড়িতেই।

উৎসবের দু-সপ্তাহ আগে থেকেই আমন্ত্রণপত্র দিতে গিয়েছিলাম নাসের ঠাকুরদাস দেবাশিস এবং আমি।শোভনালয়-এ এসে খেয়াল হয়েছিল কিয়স্ক-এর যাবতীয় ফেলে এসেছি বাংলা আকাদেমির দোরগোড়ায়। পরদিন নাসের সেসব নিয়ে এসেছিল সঠিক সময়ে।

রাত্রে খাবার পর আমি বসেছিলাম তরুণ কবিদের সঙ্গে। আমাকে সাহায্যের জন্য পাশে ছিল দীপ সাউ নাসের হোসেন এবং মুরারি সিংহ। পরবর্তী কার্যক্রম এবং কবিতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে কিছু বলেছিলাম। এখনো যেসব কথাগুলি বলে থাকি , সেসব কথাই বলেছিলাম।

এরপর ছিল তরুণদের কবিতাপাঠ।

কয়েকজন ফিরে গিয়েছিল রাতের গাড়িতেই। বাকিরা পরদিন ভোরবেলায়।

অনুষ্ঠানের আগে একটা প্রেস কনফারেন্স হয়েছিল আগের মঙ্গলবার ২৮ অক্টোবরে।কলকাতা প্রেস ক্লাবে। এব্যাপারে আমাদের দীর্ঘদিনের বন্ধু কবি এবং সাংবাদিক প্রদীপ পালের সহযোগিতার জানিয়েছিলাম পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি এবং রবীন্দ্রসদন কর্তৃপক্ষ তথা ওই দুটি প্রতিষ্ঠানের সহৃদয় কর্মিবৃন্দকে ।

আর আমরা আমাদের অভিনন্দিত করেছিলাম পরিকল্পনা অনুযায়ী সমস্ত কাজ সম্পন্ন করার জন্য। এই ঐতিহাসিক কর্মযজ্ঞের কোনো উদাহরণ তখনো ছিল না , এখনো নেই।

আমরা গর্বিত।

1 টি মন্তব্য:


  1. সেসময় জীবনানন্দ সভাঘরে কবিরা কী কী বিপ্লব এনেছিলেন মূরারিদা নাসেরদা রবীন্দুদার প্রশ্রয়ে তাও লিখুন দয়া করে।

    উত্তরমুছুন

Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...