মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

স্মৃতিকথা- ২৭ ।। এই আমি চরিত্র ।। নীলাঞ্জন কুমার, Nilanjan Kumar

 

স্মৃতিকথা- ২৭


    এই আমি চরিত্র

    নীলাঞ্জন কুমার




                     ( গত মাসের পর)

   


                            ।। ২৭।।




সেকেন্ড ইয়ারে উঠে পড়ার কিছু চাপ পড়লেও সাহিত্য গান আর রাজনীতি করার বাধা ছিল না। এ সময় বিশেষ ভাবে পরিচিত হলাম তমাল বন্দ্যোপাধ্যায় (যে মুম্বাইতে একটি বিখ্যাত দৈনিক পত্রিকার সঙ্গে জড়িত) আর গুরুদাস দত্তের সঙ্গে । তমাল থাকতো কর্ণেলগোলায় আমাদের ভাড়া বাড়ির কাছে । আর গুরুদাস জগন্নাথ মন্দিরের কাছে । গুরুদাসের দাদার ভুষিমালের দোকান ছিল গোলকুঁয়া চকে ।সেটিও আমার বাড়ির কাছে । ওখানে গুরুদাস দোকানে বসতো ।আমাদের আড্ডা ছিল এই দোকান ঘিরে । বেশ কিছুদিন দোকানটি ছিল পরে বন্ধ হয়ে যায় ।তখন ওদের সঙ্গে জমাটি বন্ধুত্ব। তমালের আর গুরুদাসের সঙ্গে তখন জমাটি বন্ধুত্ব । ওদের বাড়িতে তখন নিত্যি আনাগোনা । তখন আমার বোহেমিয়ান অবস্থা । কখন বাড়িতে আছি কখন বাইরে যাচ্ছি কেউ তার খোঁজ রাখেনা বললেই চলে ।তবে তার যেখানে থাকি রাতে পড়াশোনা আর নিয়মিত ক্লাস করে যেতাম । সেই সঙ্গে দুপুরে কলা বিভাগের ক্লাস করতাম । আর ছিল লাইব্রেরি । এ সময় সিনেমা দেখার নেশা চড়ে গিয়েছিল । তখন মেদিনীপুরের মহুয়া সিনেমা ( এখন তা আর নেই) য় দুপুরে বিভিন্ন থার্ড ক্লাস হিন্দি সিনেমা দেখানো হত তার ইয়ত্তা নেই । আমি সপ্তাহে অন্তত একদিন সেই সব ছবি দেখতাম । কত যে তিন আনার ( ১৯পয়সা) সিটে বসে সেই সব সিনেমা দেখেছি!

        সেকেন্ড ইয়ারে এসে বুঝতে পারলাম কলেজে পাস করা কত জরুরি । সে সময় গুরুদাস মেদিনীপুর শহর থেকে চলে গেল খড়্গপুরের পুরাতন বাজারের এক ভাড়া বাড়িতে । ওর বাড়িটা তখন হয়ে উঠলো আমার দ্বিতীয় বাড়ি । তখন বাসভাড়া ছিল মেদিনীপুর থেকে খড়্গপুরের স্টুডেন্ট কনসেসনে কুড়ি পয়সা । কখনো সখনো রাত কাটিয়েছি ওদের বাড়িতে । ওর সঙ্গে সিনেমা দেখতে যেতাম পুরাতন বাজারের এক সিনেমা হলে । রাতে বাড়ি ফিরলাম । কখনো সখনো গুরুদাসের সঙ্গে পড়াশোনা করতাম । ও আমাকে বায়োলজি বইএর ইংরেজি থেকে বাংলা করে দিত । যাতে আমার সুবিধা হয় । আমার এক সহপাঠিনী আমাকে একটি বাংলা বায়োলজি প্রশ্ন উত্তরের বই দিয়েছিল । সেটা পরীক্ষার পড়ার ক্ষেত্রে দারুন উপকার দিয়েছিল ।

          ' জরাজীর্ণ বাড়ির দলে ' কবিতার মিনি পুস্তিকার পর শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ' ছিন্ন বিচ্ছিন্ন ' কাব্যগ্রন্থ থেকে উৎসাহিত হয়ে লিখে ফেললাম ' নিউক্লিআস' নামে আরো একটি মিনি কাব্য পুস্তিকা । এই পুস্তিকাটির কয়েকটি কবিতা এখনো মনে উজ্জ্বল হয়ে আছে । যেমন মাত্র দুটি লাইনের পুস্তিকার সব শেষের কবিতাটি

' জল ঝরিয়ে ফোটাস যুঁই/ কেন রে এমন বৃষ্টি তুই ।' এর মতো সে সময়ের লেখা যা আজও লোম খাড়া করে । পুস্তিকার দাম ছিল পঞ্চাশ পয়সা । কিছু বিক্রি হয়েছিল । এইভাবে চলতে চলতে কলেজের সেকেন্ড ইয়ারও উতরে গেলাম।

                                                 ( চলবে)

Show quoted text

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...