মঙ্গলবার, ৪ জুলাই, ২০২৩

স্মৃতিকথা- ৩২ ।। এই আমি চরিত্র ।। নীলাঞ্জন কুমার ( গত মাসের পর ) Nilanjan Kumar

 স্মৃতিকথা- ৩২


                              এই আমি চরিত্র

                              নীলাঞ্জন কুমার

                              (  গত মাসের পর )


                                     ।। ৩২।।






ধীরে ধীরে কলেজের ফাইনাল পরীক্ষা এসে গেল, যেহেতু কবিতা লেখা ও কবিতার বিষয় পড়া ছাড়া আর একটি কাজ মন দিয়ে করেছিলাম তা হল নিয়মিত কলেজ করা ও নোটস্ নেওয়া । আমি বুঝতে পারতাম কোন কোন প্রশ্ন আসতে পারে । আমি প্রত্যেক পেপারে দশটা করে প্রশ্ন ঝরঝরে রেডি করে ছিলাম আর প্রাকট্রিকাল গুলো মন দিয়ে করার কারণে নিশ্চিত ছিলাম যেভাবে হোক পাস করবই ।
              ভাগ্য কিনা জানিনা, যে দশটা করে প্রশ্ন প্রত্যেক পেপারে করেছিলাম তার মধ্যে পাঁচটি ছ'টি করে কমন প্রশ্ন পেয়ে গেলাম । লিখে লিখে ইয়া মোটা করে ফেললাম উত্তরপত্র গুলো । বুঝতে পারলাম পৃথিবীর কেউ আমায় ফেল করাতে গেলেও পারবে না ।প্রাকট্রিকালেও তাই হল, প্রতিটি প্রাকট্রিকালেও নিখুঁত ভাবে উত্তর লিখলাম । এরপর আমি মুক্ত বিহঙ্গ । তখন টোটো কোম্পানী । সাইকেলে চোঁ চোঁ করে শহর মেদিনীপুর ঘোরা আর কবিতা কবিতা কবিতা গান গান গান । এই সব করে তিন মাস কেমন করে কেটে গেল । তার মধ্যে আমরা আমাদের নতুন বাড়িতে গৃহপ্রবেশ করেছি । ছাদ পলেস্তারা হয়েছে, তখনও রঙ হয়নি । প্রায় মাস তিনেক বিনে ইলেকট্রিকে ছিলাম ।
                যেদিন আমার পার্ট টুর রেজাল্ট আউট ঠিক তার পরের দিন ছিল সরস্বতী পূজা ।এক আশ্চর্য ঘটনা ঘটলো । আমি মোটামুটি ভাবে পাস করলাম। আমার বন্ধু সঞ্জয় চক্রবর্তীকে সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে গেলাম মা বাবা আর দিদিকে খবর দিতে । আমরা এসে পৌচেছি আর মা দেখি বড়বাজার থেকে রিকশো করে সরস্বতী ঠাকুর নিয়ে বাড়ি ঢুকছে । সঞ্জয় আর আমাদের সে কি আনন্দ! পরের দিন মহা ধুমধাম করে পুজো হল । নতুন ঘরে প্রথম ।
            পরীক্ষা পাসের পর সাপের পাঁচ পা দেখলাম । কবিতাকেন্দ্রিক পড়াশোনা বাদে বাকি পড়া থেকে আজীবন মুক্ত হলাম । তখন কবিতা আর গান একমাত্র সঙ্গী । এসময় নতুন বন্ধু হলো প্রয়াত চিত্রশিল্পী শ্যামল ঘোষ । এছাড়া প্রয়াত কবি অভিজিৎ সিংহ, সঞ্জয় চক্রবর্তী, মানস দে তো আছেই । সেই সঙ্গে আলাপ হলো সুসাথী পত্রিকার সম্পাদক ছড়াকবি প্রদীপ দেব বর্মনের সঙ্গে । প্রদীপ দেব বর্মন আমার থেকে বেশ বড়ই ছিল। বাড়ি মেদিনীপুর শহরে বাড় মানিকপুরে । সবাই সমচিন্তক তাই আমরা মিশে গেলাম । আমরা প্রথমের দিকে জমায়েত হতাম রবীন্দ্রনগরের রাজপ্রসাদ মাহাতোর প্রেসে । সেখানে আসতো উপরোক্ত কয়েকজন বাদে রবিবার সকালে অমৃতলোক পত্রিকার সম্পাদক প্রয়াত সমীরণ মজুমদার, কবি অচিন্ত্য নন্দী, কবি আশিস ত্রিপাঠি, কাগজের নৌকা পত্রিকার সম্পাদক বরুণ বিশ্বাস , শায়েরি লেখক লোকেশ গিরি, বর্ষিয়ান চিত্রশিল্পী গোষ্ঠ পাখিরা সহ আরো কয়েকজন আড্ডা কবিতা গান নিয়ে মশগুল থাকতাম । তখন আমার সিগারেট বিড়ি দুটোই চলতো । তা আমাকে সাপ্লাই দিতো প্রদীপ দেব বর্মন ।উনি মেদিনীপুর জেলার সদর হাসপাতালে কাজ করতেন । লোকেশের একটি শায়েরির বই কলকাতার বিশ্ববাণী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছিল । আমি পরে তা মেদিনীপুরের দৈনিক বিপ্লবী সব্যসাচী পত্রিকাতে বিস্তৃত সমালোচনা করেছিলাম।

                                                            ( চলবে)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...