মজদুরডাঙা
অভিজিৎ চৌধুরী।
শহরে কেটেছিল ছেলেবেলা।তারপর যেখানে এলাম শিল্পায়নের জোয়ার।কারখানার ভোঁ শুনে রাতের পড়া শেষ হতো।পোনে দশটা বাজল।এবার ভাত খাওয়ার ডাক।জনাকীর্ণ পাড়া।লোডশেডিং হলে কমন উঠোনে আড্ডা।ক্যুইজ,গানের লড়াই আর ভূতের গল্প।
ফলে সুজিত যখন বললো,ওদের গ্রামের বাড়ি যেতে।মন নেচে উঠল।হাওড়া থেকে বাস ঊরে পাত্রসায়ের হয়ে মজদুর ডাঙা।জমিদার জোতদার রয়েছে তখনও।অপারেশন বর্গা শুরু হয়েছে সবে। পালকি এলো আমাদের নিতে।সাত বেহারা জোয়ান তারা।আমি আর অনুপম তো হেসে অস্থির।আমরা হাঁটতে থাকলাম।দুপুরে গনগনে রোদ্দুরেও টের পেলাম সবুজ।শাল পিয়ালের অরণ্য।সে ছিল ফাগুন মাস।খেতে বসে তো অবাক।কতো পদ,মাছ মাংস।বললাম,সুজিতকে এতো কেন!সে বলল,বাগালদের কম তরকারি দিলে গ্রামে নিন্দে হবে।
অচেনা জীবন।কয়েকদিনে সাঁতারও শিখলাম।একদিন বেশী সাহস দেখিয়ে একা একা সাঁতার কাটছি।মনে হলো ডুবে যাচ্ছি।অকুতোভয় সে আমাকে অনায়াসে বাঁচাল।গায়ের রং তামাটে মুখটা সুন্দর।
আমি বললাম,জীবন দিলে আমায়।কিছু চাইবে আমার কাছে।সে তখন বলল।খুব কঠিন কাজ।
সিদ্ধি খেলাম সেদিন।ব্যাপক নেশা হল।খেতে বসে মনে হল থালা বাটি সব উড়ছে।কোনক্রমে খাওয়া সেরে ঘুম দিয়ে উঠতে উঠতে সন্ধে হয়ে গেল।
তখন সুজিতকে বললাম।সবটা। কে আমাকে বাঁচাল।তাকে আমি কি কথা দিয়েছি।জীবনে একবারই গুমঘর দেখলাম।খাজনা না দেওয়ায় আটক শীর্ণ এক মানুষ।সুজিত কথা রেখেছিল। মুক্তি দিয়েছিল।
ফিরে আসার সময় মেয়েটা এক ঝলক দেখি।চোখ দুটো ছলছল করছিল ওর।বিদায়ের হাত নাড়লাম।
সুজিতদের সেই জমিদারি আর নেই।ও আর বউ প্রাইমারি স্কুলে পড়ায়।নিমন্ত্রণ ছিল,যাওয়া হয়নি।একবার ওর সঙ্গে কলকাতায় দেখা হওয়ায় বলেছিল, তুই চিনিস আমার বউকে।
মজদুর ডাঙার সেই ছবিটা ধরে রাখব বলেই যাওয়া হয়নি আর।
অভিজিৎ চৌধুরী।
শহরে কেটেছিল ছেলেবেলা।তারপর যেখানে এলাম শিল্পায়নের জোয়ার।কারখানার ভোঁ শুনে রাতের পড়া শেষ হতো।পোনে দশটা বাজল।এবার ভাত খাওয়ার ডাক।জনাকীর্ণ পাড়া।লোডশেডিং হলে কমন উঠোনে আড্ডা।ক্যুইজ,গানের লড়াই আর ভূতের গল্প।
ফলে সুজিত যখন বললো,ওদের গ্রামের বাড়ি যেতে।মন নেচে উঠল।হাওড়া থেকে বাস ঊরে পাত্রসায়ের হয়ে মজদুর ডাঙা।জমিদার জোতদার রয়েছে তখনও।অপারেশন বর্গা শুরু হয়েছে সবে। পালকি এলো আমাদের নিতে।সাত বেহারা জোয়ান তারা।আমি আর অনুপম তো হেসে অস্থির।আমরা হাঁটতে থাকলাম।দুপুরে গনগনে রোদ্দুরেও টের পেলাম সবুজ।শাল পিয়ালের অরণ্য।সে ছিল ফাগুন মাস।খেতে বসে তো অবাক।কতো পদ,মাছ মাংস।বললাম,সুজিতকে এতো কেন!সে বলল,বাগালদের কম তরকারি দিলে গ্রামে নিন্দে হবে।
অচেনা জীবন।কয়েকদিনে সাঁতারও শিখলাম।একদিন বেশী সাহস দেখিয়ে একা একা সাঁতার কাটছি।মনে হলো ডুবে যাচ্ছি।অকুতোভয় সে আমাকে অনায়াসে বাঁচাল।গায়ের রং তামাটে মুখটা সুন্দর।
আমি বললাম,জীবন দিলে আমায়।কিছু চাইবে আমার কাছে।সে তখন বলল।খুব কঠিন কাজ।
সিদ্ধি খেলাম সেদিন।ব্যাপক নেশা হল।খেতে বসে মনে হল থালা বাটি সব উড়ছে।কোনক্রমে খাওয়া সেরে ঘুম দিয়ে উঠতে উঠতে সন্ধে হয়ে গেল।
তখন সুজিতকে বললাম।সবটা। কে আমাকে বাঁচাল।তাকে আমি কি কথা দিয়েছি।জীবনে একবারই গুমঘর দেখলাম।খাজনা না দেওয়ায় আটক শীর্ণ এক মানুষ।সুজিত কথা রেখেছিল। মুক্তি দিয়েছিল।
ফিরে আসার সময় মেয়েটা এক ঝলক দেখি।চোখ দুটো ছলছল করছিল ওর।বিদায়ের হাত নাড়লাম।
সুজিতদের সেই জমিদারি আর নেই।ও আর বউ প্রাইমারি স্কুলে পড়ায়।নিমন্ত্রণ ছিল,যাওয়া হয়নি।একবার ওর সঙ্গে কলকাতায় দেখা হওয়ায় বলেছিল, তুই চিনিস আমার বউকে।
মজদুর ডাঙার সেই ছবিটা ধরে রাখব বলেই যাওয়া হয়নি আর।
খুব সুন্দর।
উত্তরমুছুন