রম্যরচনা
এই বিষয়টি নিয়ে কিছু বলবার আগে অনেক ভেবেচিন্তে পা ফেলতে হচ্ছে। আপনারা বুদ্ধিজীবী জনগণ, নিশ্চয় বুঝিয়ে বলতে হবে না, আমার এই অতি সতর্কতার কারণটা কি! আসলে আমরা পুরুষেরা যতো বড়ো বীরপুরুষই হই না কেন বউয়ের চেয়ে বীরাঙ্গনা কেউ নই। আমাদের বাহান্ন বা ছাপ্পান্ন ইঞ্চি যে মাপেরই ছাতি থাকুক না কেন সব ঢিলে হয়ে যায় বউয়ের সামনে দাঁড়ালে। তাই একটু বাড়তি সতর্কতা। শত্রুর তো অভাব নেই। কে কখন গিন্নীর কানে চুপিচুপি ফুসমন্তর ঢেলে দেবে। তখন আমি কাশীনাথ থেকে মুহূর্তেই অনাথ।
বউ কি? বউ মানে Wife. Wife হলো - without information fight everyone.
তাহলে বিবাহ কি? Marriage is a agreement of permanent disagreement.
একই ছাদের তলায় দু'জন আজীবন বক্সিং লড়ে যাব।দুজনেই ঝগড়া চালিয়ে যাব, তবুও বিবাহ করে বউ নিয়ে আনতে হয়। না আনলে চরিত্রের বারোটা বেজে যাবে। প্রতিবেশীরাই আপনার চরিত্রের বারোটা বাজিয়ে দেবে!
আমি যতোই কর্তা সেজে মাতব্বরি করি না কেন, গিন্নিই আসলি চীজ। তু চীজ বড়ি হ্যায় মস্ত মস্ত... তু চীজ বড়ি হ্যায় মস্ত...
আমি যদি মাথা হই বউ হলো ঘাড়। আমার নামেই উপরে অবস্থান। বউ মানে ঘাড় মাথার নিচে থাকলেও ঘাড় যেদিকে ঘোরাবে মাথা সেদিকেই ঘুরবে! সংসারে ওরাই প্রবল পরাক্রমশালী।
ছেলেবেলায় মাথায় কারও দুটা টিকি থাকলে বলতাম তাঁর ভাগ্যে দুটো বিয়ে আছে। তবে এখন এতোদিন সংসার ধর্ম পালন করে হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছি, বিয়ে করলে দুটো বিয়েই করা উচিত। একটা বউ থাকলে সবসময়ই স্বামীর সাথেই ঝগড়া করবে, কিন্তু দুটো বউ থাকলে দুই সতীনের ঝগড়ার মাঝখান থেকে আপনি বেঁচে যাবেন। যুক্তিটা সংবিধান বিরোধী হলেও ভাবতে পারেন!
এক বিজ্ঞানী মহাকাশ নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করতে করতে ভাবলেন নারী নিয়ে একটু গবেষণা করা দরকার। নারী নিয়ে গবেষণা করতে হলে নারী চাই। সেজন্য একটা বিয়েও করে ফেললেন। পরে তাঁর সমস্যা হলো বিয়ের পরে তিনি বিজ্ঞানটা কি সেটাই বেমালুম ভুলে গেছেন।
অনেক পুরুষ মানুষ আছেন যাঁরা খুব বেশী বয়সে বিয়ে করেন।সেই এরকমই একজন ধনী ব্যক্তি প্রায় বিরাশি বছর বয়সে একটি খুবই কম বয়সী মেয়েকে বিয়ে করলেন। যথারীতি বিয়ে ভাল ভাবেই হলো। অতিথি সেবাও দারুন জম্পেশ করে হলো। অবশেষে ফুলশয্যা। কিন্তু সমস্যা হলো ওই বয়সে বৃদ্ধ মানুষটি আর কিছুতেই মনে করতে পারছেন না ফুলশয্যায় কি করতে হয়। আর মেয়েটি এতোই নাবালিকা যে সে জানেই না এই রাতে কি করতে হয়। তাই বলি যদি বিয়ে করতেই হয় সময়ে করুন। দুঃসময়ে নয়!
একটা কথা প্রায়ই ভাবি। মনে মনে ভাবি। সামান্যতমও প্রকাশ করি না। আচ্ছা ভাবুন তো,কৃষ্ণ রাধার জন্য কদমতলায় বাঁশি বাজিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতো। শাজাহান বিবির জন্য তাজমহল বানিয়ে ছিল। রাজা মহারাজা,জমিদারেরা বউয়ের জন্য কতো স্মৃতিসৌধ বানিয়েছেন। ইতিহাসে তার ভুরি ভুরি প্রমাণ আছে। কিন্তু স্বামীর জন্য কোন বউ কিছু বানিয়েছে আজ পর্যন্ত শুনিনি। বানিয়েছে, সেটা এঁচোড়ের তরকারি নয়তো ভালবেসে বড়জোর মুড়িঘণ্ট। এজন্য সাবধানবাণী করে যাচ্ছি। যদি নিজের স্মৃতিতে কিছু বানাতে হয় নিজেই তৈরী করে যাবেন বউয়ের ভরসায় থাকবেন না।
স্বামী স্ত্রী র বিবাহ বিচ্ছেদ মামলার রায় বের হলো। বিচারক রায় দিলেন, স্ত্রী র ভরণপোষণের জন্য স্বামীর বেতনের অর্ধেক স্ত্রী কে দিয়ে দিতে হবে। স্বামী বেজায় খুশি। খুশিতে পাড়াপ্রতিবেশিকে মিষ্টি বিতরণ করতে লাগলো। এক প্রতিবেশী আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করলেন কি ব্যাপার দাদা এতো ফূর্তি কিসের? মাস ফুরোলে বেতনের অর্ধেক তো দিয়ে দিতে হবে। স্বামী হাসতে হাসতে বললো,ওটাই তো খুশির কারণ ভায়া। আগে তো বেতনের পুরো টাকাটাই বউয়ের হাতে তুলে দিতে হতো৷ তাহলে বুঝুন লাভটা কার হলো!
বউকে নিয়ে কাপড় দোকানে নিশ্চয়ই গেছেন! আমিও গেছি । পকেট ভর্তি টাকা নিয়ে বউকে নিয়ে গেছলাম পুজোর মার্কেটিং করতে। প্রথম প্রথম বিয়ে বুকে কলকল করছে আনন্দ। সন্ধ্যা ছটায় দোকানে ঢুকেছিলাম। ঝাড়াইবাছাই করে বউ কেনাকাটা করে যখন বের হলো তখন রাত সাড়ে নটা। দশ হাজার ফিনিস। বউ ঘরে এনে সব কিছু খাটে ঢেলে দিল। আমি বড় আশা করে ছিলাম আমার জামা প্যান্টও নিশ্চিত ওখানে আছে। কিচ্ছু নেই । শুধু একটা লুঙ্গি আমার জন্য বরাদ্দ। ভারতবর্ষের মানচিত্রের নিচে শ্রীলঙ্কার অবস্থানের মতো আমার দৈনদশা। এ পর্যন্ত তবুও ঠিক ছিল । পরদিন ভোরবেলা তখনও ঘুম ভাঙেনি। মিসেস বললো, এ্যাই এই শাড়ির রঙগুলো কেমন যেন ওল্ড, প্রিন্টটাও সেকেলে এগুলো আজ পাল্টে অন্য শাড়ি নেব। তুমি সাথে যাবে।
বউকে ধার দিন ঠিক আছে কিন্তু ভুল করেও বউয়ের কাছে টাকা ধার নিবেন না। নিয়েছেন তো গাড্ডায় পড়েছেন। আমি চার বছর আগে বউয়ের কাছে দুহাজার টাকা ধার নিয়ে চারবার শোধ করেছি। কিন্তু বউ এখনও আমার কাছে আড়াই হাজার টাকা পায়। কোন ধারাপাতের কোন অংক সেটা আজও সমঝে উঠতে পারলাম না!
বউ নিয়ে আমরা স্বামীরা যতো আদিখ্যেতা দেখাই না কেন, আমরা কিন্তু কম শয়তান নই। সবসময়ই আমাদের নিজের বউয়ের চাইতে পরের বউকেই বেশী সুন্দরী মনে হয়। এই তো সেদিন সন্ধ্যার সময় বাড়ি ফিরছি, দেখি আমার বাড়ির সামনে এক অপরূপ সুন্দরী মহিলা দাঁড়িয়ে আছে। ঠিক যেন মাধুরী দিক্ষীত। আহা কোন সৌভাগ্যবানের বউ কে জানে! ভগবান কেন যে সব সুন্দরী মহিলাকেই পরের বউ করে দেয় কে জানে। ঈশ্বরের এ বহুৎ পক্ষপাতিত্বের ব্যাপার। মহিলার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকতে থাকতে জিজ্ঞেস করলাম, দিদিভাই আপনি কি কাউকে খুঁজছেন? মহিলা তীব্র কটাক্ষ করে বললো, আ মরণ নিজের বউকে দিদিভাই বলছো কেন! মাথা খারাপ হয়নি তো? বুঝলাম বাউন্ডারি মারতে গিয়ে হিট উইকেট করে ফেলেছি। গিন্নি পার্লার থেকে মাঞ্জা দিয়ে এসেছে। তাই চেনা চেনা লাগলেও চিনতে পারছিলাম না।
ভুলটা বুঝতে পেরে ঢোঁক গিললাম, নাগো একটু রসিকতা করছিলাম।
সংসার সুখের হয় রমণীর গুনে। তবে পরের লাইনটা সর্বদা স্মরণে রাখবেন। স্বামী যদি নতমস্তকে বউয়ের কথা শুনে। এই দ্বিতীয় লাইনটার থেকে বেলাইনে হেঁটেছেন তো সংসার দাবানল!
বউদের কক্ষনো কোন যুক্তিতেই হারাতে পারবেন না। ওরা কোন ব্যাপারেই নিজের ভুল স্বীকার করবে না। উল্টে ওদের ভুল আপনার ঘাড়ে চাপিয়ে দিবে। দিবেই। সেদিন একটা নিমন্ত্রণ বাড়ি থেকে রাতে বাড়ি ফিরলাম। আমি টর্চ ধরে আছি বউ চাবি নিয়ে তালা খুলতে লাগলো, বহুক্ষণ চেষ্টা করেও যখন তালা খুলতে পারছে না দেখে বললাম, তুমি চাবিটা আমাকে দিয়ে টর্চটা দেখাও। বউ টর্চ ধরে থাকলো আমি চাবিকাঠিটা নিয়ে একবার ঘুরাতেই তালা খুলে গেল। বউ সাথে সাথে বললো, তুমি টর্চটাও ভালো করে ধরতে জানো না। দেখলে তো কি ভাবে টর্চ ধরতে হয়!
বউদের নিয়ে এসব বলছি বলে ভাববেন না আমি বউ বিরোধী। আমি মশায় ছা পোষা গৃহপালিত স্বামী। বউ ছাড়া দুদিনও চলে না। এই তো সেদিন বউ বাপের বাড়িতে গেল। ভাবলাম এবার আমি মুক্ত পুরুষ। পনেরই অগাস্টের স্বাধীনতা দিবসের মতো বেশ একটি ফুরফুরে ভাব এসে গেল মনে। গলা ছেড়ে গান ধরলাম, আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে..... ।পরের লাইনগুলো আর মনে নেই। তাই ওই এক লাইনই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে চললো ঘন্টা খানেক । কিন্তু ওই দুদিন। তারপরই বউয়ের বিরহে মন ডানা ঝাপটাতে লাগলো । নিজের বউয়ের সাথে ঝগড়া করবার জন্য বউকে বাড়ী ফিরিয়ে এনে তবে শান্তি।
বউ
কাশীনাথ সাহা
এই বিষয়টি নিয়ে কিছু বলবার আগে অনেক ভেবেচিন্তে পা ফেলতে হচ্ছে। আপনারা বুদ্ধিজীবী জনগণ, নিশ্চয় বুঝিয়ে বলতে হবে না, আমার এই অতি সতর্কতার কারণটা কি! আসলে আমরা পুরুষেরা যতো বড়ো বীরপুরুষই হই না কেন বউয়ের চেয়ে বীরাঙ্গনা কেউ নই। আমাদের বাহান্ন বা ছাপ্পান্ন ইঞ্চি যে মাপেরই ছাতি থাকুক না কেন সব ঢিলে হয়ে যায় বউয়ের সামনে দাঁড়ালে। তাই একটু বাড়তি সতর্কতা। শত্রুর তো অভাব নেই। কে কখন গিন্নীর কানে চুপিচুপি ফুসমন্তর ঢেলে দেবে। তখন আমি কাশীনাথ থেকে মুহূর্তেই অনাথ।
বউ কি? বউ মানে Wife. Wife হলো - without information fight everyone.
তাহলে বিবাহ কি? Marriage is a agreement of permanent disagreement.
একই ছাদের তলায় দু'জন আজীবন বক্সিং লড়ে যাব।দুজনেই ঝগড়া চালিয়ে যাব, তবুও বিবাহ করে বউ নিয়ে আনতে হয়। না আনলে চরিত্রের বারোটা বেজে যাবে। প্রতিবেশীরাই আপনার চরিত্রের বারোটা বাজিয়ে দেবে!
আমি যতোই কর্তা সেজে মাতব্বরি করি না কেন, গিন্নিই আসলি চীজ। তু চীজ বড়ি হ্যায় মস্ত মস্ত... তু চীজ বড়ি হ্যায় মস্ত...
আমি যদি মাথা হই বউ হলো ঘাড়। আমার নামেই উপরে অবস্থান। বউ মানে ঘাড় মাথার নিচে থাকলেও ঘাড় যেদিকে ঘোরাবে মাথা সেদিকেই ঘুরবে! সংসারে ওরাই প্রবল পরাক্রমশালী।
ছেলেবেলায় মাথায় কারও দুটা টিকি থাকলে বলতাম তাঁর ভাগ্যে দুটো বিয়ে আছে। তবে এখন এতোদিন সংসার ধর্ম পালন করে হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছি, বিয়ে করলে দুটো বিয়েই করা উচিত। একটা বউ থাকলে সবসময়ই স্বামীর সাথেই ঝগড়া করবে, কিন্তু দুটো বউ থাকলে দুই সতীনের ঝগড়ার মাঝখান থেকে আপনি বেঁচে যাবেন। যুক্তিটা সংবিধান বিরোধী হলেও ভাবতে পারেন!
এক বিজ্ঞানী মহাকাশ নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করতে করতে ভাবলেন নারী নিয়ে একটু গবেষণা করা দরকার। নারী নিয়ে গবেষণা করতে হলে নারী চাই। সেজন্য একটা বিয়েও করে ফেললেন। পরে তাঁর সমস্যা হলো বিয়ের পরে তিনি বিজ্ঞানটা কি সেটাই বেমালুম ভুলে গেছেন।
অনেক পুরুষ মানুষ আছেন যাঁরা খুব বেশী বয়সে বিয়ে করেন।সেই এরকমই একজন ধনী ব্যক্তি প্রায় বিরাশি বছর বয়সে একটি খুবই কম বয়সী মেয়েকে বিয়ে করলেন। যথারীতি বিয়ে ভাল ভাবেই হলো। অতিথি সেবাও দারুন জম্পেশ করে হলো। অবশেষে ফুলশয্যা। কিন্তু সমস্যা হলো ওই বয়সে বৃদ্ধ মানুষটি আর কিছুতেই মনে করতে পারছেন না ফুলশয্যায় কি করতে হয়। আর মেয়েটি এতোই নাবালিকা যে সে জানেই না এই রাতে কি করতে হয়। তাই বলি যদি বিয়ে করতেই হয় সময়ে করুন। দুঃসময়ে নয়!
একটা কথা প্রায়ই ভাবি। মনে মনে ভাবি। সামান্যতমও প্রকাশ করি না। আচ্ছা ভাবুন তো,কৃষ্ণ রাধার জন্য কদমতলায় বাঁশি বাজিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতো। শাজাহান বিবির জন্য তাজমহল বানিয়ে ছিল। রাজা মহারাজা,জমিদারেরা বউয়ের জন্য কতো স্মৃতিসৌধ বানিয়েছেন। ইতিহাসে তার ভুরি ভুরি প্রমাণ আছে। কিন্তু স্বামীর জন্য কোন বউ কিছু বানিয়েছে আজ পর্যন্ত শুনিনি। বানিয়েছে, সেটা এঁচোড়ের তরকারি নয়তো ভালবেসে বড়জোর মুড়িঘণ্ট। এজন্য সাবধানবাণী করে যাচ্ছি। যদি নিজের স্মৃতিতে কিছু বানাতে হয় নিজেই তৈরী করে যাবেন বউয়ের ভরসায় থাকবেন না।
স্বামী স্ত্রী র বিবাহ বিচ্ছেদ মামলার রায় বের হলো। বিচারক রায় দিলেন, স্ত্রী র ভরণপোষণের জন্য স্বামীর বেতনের অর্ধেক স্ত্রী কে দিয়ে দিতে হবে। স্বামী বেজায় খুশি। খুশিতে পাড়াপ্রতিবেশিকে মিষ্টি বিতরণ করতে লাগলো। এক প্রতিবেশী আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করলেন কি ব্যাপার দাদা এতো ফূর্তি কিসের? মাস ফুরোলে বেতনের অর্ধেক তো দিয়ে দিতে হবে। স্বামী হাসতে হাসতে বললো,ওটাই তো খুশির কারণ ভায়া। আগে তো বেতনের পুরো টাকাটাই বউয়ের হাতে তুলে দিতে হতো৷ তাহলে বুঝুন লাভটা কার হলো!
বউকে নিয়ে কাপড় দোকানে নিশ্চয়ই গেছেন! আমিও গেছি । পকেট ভর্তি টাকা নিয়ে বউকে নিয়ে গেছলাম পুজোর মার্কেটিং করতে। প্রথম প্রথম বিয়ে বুকে কলকল করছে আনন্দ। সন্ধ্যা ছটায় দোকানে ঢুকেছিলাম। ঝাড়াইবাছাই করে বউ কেনাকাটা করে যখন বের হলো তখন রাত সাড়ে নটা। দশ হাজার ফিনিস। বউ ঘরে এনে সব কিছু খাটে ঢেলে দিল। আমি বড় আশা করে ছিলাম আমার জামা প্যান্টও নিশ্চিত ওখানে আছে। কিচ্ছু নেই । শুধু একটা লুঙ্গি আমার জন্য বরাদ্দ। ভারতবর্ষের মানচিত্রের নিচে শ্রীলঙ্কার অবস্থানের মতো আমার দৈনদশা। এ পর্যন্ত তবুও ঠিক ছিল । পরদিন ভোরবেলা তখনও ঘুম ভাঙেনি। মিসেস বললো, এ্যাই এই শাড়ির রঙগুলো কেমন যেন ওল্ড, প্রিন্টটাও সেকেলে এগুলো আজ পাল্টে অন্য শাড়ি নেব। তুমি সাথে যাবে।
বউকে ধার দিন ঠিক আছে কিন্তু ভুল করেও বউয়ের কাছে টাকা ধার নিবেন না। নিয়েছেন তো গাড্ডায় পড়েছেন। আমি চার বছর আগে বউয়ের কাছে দুহাজার টাকা ধার নিয়ে চারবার শোধ করেছি। কিন্তু বউ এখনও আমার কাছে আড়াই হাজার টাকা পায়। কোন ধারাপাতের কোন অংক সেটা আজও সমঝে উঠতে পারলাম না!
বউ নিয়ে আমরা স্বামীরা যতো আদিখ্যেতা দেখাই না কেন, আমরা কিন্তু কম শয়তান নই। সবসময়ই আমাদের নিজের বউয়ের চাইতে পরের বউকেই বেশী সুন্দরী মনে হয়। এই তো সেদিন সন্ধ্যার সময় বাড়ি ফিরছি, দেখি আমার বাড়ির সামনে এক অপরূপ সুন্দরী মহিলা দাঁড়িয়ে আছে। ঠিক যেন মাধুরী দিক্ষীত। আহা কোন সৌভাগ্যবানের বউ কে জানে! ভগবান কেন যে সব সুন্দরী মহিলাকেই পরের বউ করে দেয় কে জানে। ঈশ্বরের এ বহুৎ পক্ষপাতিত্বের ব্যাপার। মহিলার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকতে থাকতে জিজ্ঞেস করলাম, দিদিভাই আপনি কি কাউকে খুঁজছেন? মহিলা তীব্র কটাক্ষ করে বললো, আ মরণ নিজের বউকে দিদিভাই বলছো কেন! মাথা খারাপ হয়নি তো? বুঝলাম বাউন্ডারি মারতে গিয়ে হিট উইকেট করে ফেলেছি। গিন্নি পার্লার থেকে মাঞ্জা দিয়ে এসেছে। তাই চেনা চেনা লাগলেও চিনতে পারছিলাম না।
ভুলটা বুঝতে পেরে ঢোঁক গিললাম, নাগো একটু রসিকতা করছিলাম।
সংসার সুখের হয় রমণীর গুনে। তবে পরের লাইনটা সর্বদা স্মরণে রাখবেন। স্বামী যদি নতমস্তকে বউয়ের কথা শুনে। এই দ্বিতীয় লাইনটার থেকে বেলাইনে হেঁটেছেন তো সংসার দাবানল!
বউদের কক্ষনো কোন যুক্তিতেই হারাতে পারবেন না। ওরা কোন ব্যাপারেই নিজের ভুল স্বীকার করবে না। উল্টে ওদের ভুল আপনার ঘাড়ে চাপিয়ে দিবে। দিবেই। সেদিন একটা নিমন্ত্রণ বাড়ি থেকে রাতে বাড়ি ফিরলাম। আমি টর্চ ধরে আছি বউ চাবি নিয়ে তালা খুলতে লাগলো, বহুক্ষণ চেষ্টা করেও যখন তালা খুলতে পারছে না দেখে বললাম, তুমি চাবিটা আমাকে দিয়ে টর্চটা দেখাও। বউ টর্চ ধরে থাকলো আমি চাবিকাঠিটা নিয়ে একবার ঘুরাতেই তালা খুলে গেল। বউ সাথে সাথে বললো, তুমি টর্চটাও ভালো করে ধরতে জানো না। দেখলে তো কি ভাবে টর্চ ধরতে হয়!
বউদের নিয়ে এসব বলছি বলে ভাববেন না আমি বউ বিরোধী। আমি মশায় ছা পোষা গৃহপালিত স্বামী। বউ ছাড়া দুদিনও চলে না। এই তো সেদিন বউ বাপের বাড়িতে গেল। ভাবলাম এবার আমি মুক্ত পুরুষ। পনেরই অগাস্টের স্বাধীনতা দিবসের মতো বেশ একটি ফুরফুরে ভাব এসে গেল মনে। গলা ছেড়ে গান ধরলাম, আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে..... ।পরের লাইনগুলো আর মনে নেই। তাই ওই এক লাইনই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে চললো ঘন্টা খানেক । কিন্তু ওই দুদিন। তারপরই বউয়ের বিরহে মন ডানা ঝাপটাতে লাগলো । নিজের বউয়ের সাথে ঝগড়া করবার জন্য বউকে বাড়ী ফিরিয়ে এনে তবে শান্তি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন