সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী
৭৩.
সব্যসাচী ভৌমিক এই নামটি এখন আর কবিতাপত্রগুলিতে ঘোরাফেরা করে না। আমার সঙ্গেও দীর্ঘদিন সব্যসাচী-র কোনো দ্যাখা-সাক্ষাৎ নেই। যোগাযোগও নেই। শুনেছি কোনো কলেজে চাকরি করে। ইংরেজিসাহিত্য পড়ায়। যখন ও হরিশ চ্যাটার্জির কপা দপ্তরে আসত , তখন ও ছাত্র। সম্ভবত ইংরেজি-র। কেননা সব্যসাচী ভৌমিক নামটির সঙ্গে কবি -প্রাবন্ধিক সুজিত সরকার নামটির একটা যোগসূত্র দেখতে পাচ্ছি। এবং বাড়িও হাওড়ায়। তবে কদমতলা থেকে গোলমোহর এভিন্যু-র সঠিক দূরত্ব জানি না। যতদূর জানি , সব্যসাচী তখন গোলমোহরে থাকত। আর সুজিত যে কদমতলার এটা বীজগণিতের সূত্র ধরলেই জানা যাবে। এর জন্য সময় ও দূরত্বের চ্যাপ্টার অবধি যেতে হবে না। কপা ১৩ সংখ্যাটি বের করলেই জানা যাবে , সব্যসাচী ওই সংখ্যায় যে কবিতাটি লিখেছিল তার নাম ' একজন অসুখী কবিতা '।
মাননীয় পাঠক, আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আরো একবার কবিতার শিরোনামটি পড়তে অনুরোধ করছি। একটি অসুখী কবিতা না লিখে লিখেছিল 'একজন অসুখী কবিতা '। কবিতাটির মধ্যে জীবন আরোপ করতে চেয়েছিল সব্যসাচী। শুধুমাত্র একারণেই সব্যসাচী আমাদের পরিবারে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছিল।
এর ঠিক পরেই বা কপা ২৩ - এ সব্যসাচী ছিল ' এই পক্ষের কবি '। প্রকাশিত হয়েছিল ৫ টি কবিতা। ওই ৫ টি কবিতা থেকে পড়তে বলছি গুটিকয় পঙ্ ক্তি।
১ ॥ তারপর আকাশপারে কোনরকম উপকরণ ছাড়াই চাঁদ উঠেছিলো।
২ ॥ শরীর জুড়ে অজস্র ফসলচিহ্ন ,
৩ ॥ শীত আসে জোনাকির হাত ধরে।
৪ ॥ ঘোড়ার খুরের আঘাতে টলমল করে / যুবকের ছায়াপথ।
পড়ে দেখুন ৯ এপ্রিল ১৯৯৪ -এ প্রকাশিত কবিতাগুলি এখনো পড়া যাচ্ছে কিনা ! পড়ার পর প্রাপ্তি-র ঘরের হিসেব নিন। তাহলেই সার্থকতা।
সব্যসাচী-র সূত্র ধরে আমি কবিতাপাক্ষিক -এর ৪০ সংখ্যাটির সূচিপত্রের কিছুটা দ্যাখাতে চাইছি। দেখুন:
দীর্ঘকবিতা : আবীর সিংহ প্রবালকুমার বসু
গুচ্ছ কবিতা : রমা ঘোষ সুদীপ বসু সব্যসাচী ভৌমিক।এখন পড়া যাক সব্যসাচীর কবিতা তিনটি। আর প্রথা মতো কবিতা তিনটি থেকে তিনটি চুম্বক লাইন :
১ ॥ এখনই শিকারের সময়, তবু দুপুরের স্রোতে ভেসে যাচ্ছে / তিল তিল আগুন ...
২ ॥ মুগ্ধ আঙুল ছুঁতেই বাঁ চোখের তারা নেচে উঠল আবার
৩ ॥ ভ্রুকুটি এড়িয়ে / মোমবাতির মধ্যে ঢুকে পড়ছে গোটা শরৎকাল
এইসব কবিতাই সব্যসাচী ভৌমিক-কে আমরা কবিতার পাঠকেরা গ্রহণ করেছিলাম অন্তঃকরণ থেকে।
কবিতাপাক্ষিক ৫৩ -তে পেলাম পাতা জুড়ে সব্যসাচীর একটি কবিতা।জলজ ।
জলজ শব্দটির অর্থ আমরা সকলেই জানি। তবু আরো একবার অভিধানের কাছে গেলাম। অভিধান জানিয়ে দিল :
জলজ = জলে জন্মায় এমন।
অভিধানে উদাহরণ আছে : পদ্ম।
এখন সব্যসাচী ভৌমিক-এর জলজ কবিতাটির কাছে যাবার অনুমতি পেলাম। আর দেখতে পেলাম তথৃ জানতেও পারলাম ডুবসাঁতারের কথা।
' এক জল থেকে অন্য জলের মধ্যে আমাদের ডুব সাঁতার / যার উপরেই যত অশ্লীল আলো / নীচে শুধু অন্ধকার , উজ্জ্বল ভয় ...
কপা ৬৪ - তে সব্যসাচীর তিনটি কবিতা ।
কুশপুতুল কবিতায় ও জানিয়েছিল :
ডিস অ্যান্টেনায় ধরা পড়ুক মেঘেদের , তারাদের কুশপুতুল । '
তখন কি পথেঘাটে কুশপুতুল পোড়াবার ধুম লেগেছিল খুব। হতেও পারে । তবে কেউই কিন্তু ডিস অ্যান্টেনার সাহায্যে মেঘেদের কিংবা তারাদের কুশপুতুল ধরার কথা বলেনি। ভাবেওনি। সব্যসাচী ভেবেছিল বলেই এখনো ওকে মনে রেখেছি । মনে রেখেছি বলেই ওর কথা লিখছি।
প্রভাত চৌধুরী
৭৩.
সব্যসাচী ভৌমিক এই নামটি এখন আর কবিতাপত্রগুলিতে ঘোরাফেরা করে না। আমার সঙ্গেও দীর্ঘদিন সব্যসাচী-র কোনো দ্যাখা-সাক্ষাৎ নেই। যোগাযোগও নেই। শুনেছি কোনো কলেজে চাকরি করে। ইংরেজিসাহিত্য পড়ায়। যখন ও হরিশ চ্যাটার্জির কপা দপ্তরে আসত , তখন ও ছাত্র। সম্ভবত ইংরেজি-র। কেননা সব্যসাচী ভৌমিক নামটির সঙ্গে কবি -প্রাবন্ধিক সুজিত সরকার নামটির একটা যোগসূত্র দেখতে পাচ্ছি। এবং বাড়িও হাওড়ায়। তবে কদমতলা থেকে গোলমোহর এভিন্যু-র সঠিক দূরত্ব জানি না। যতদূর জানি , সব্যসাচী তখন গোলমোহরে থাকত। আর সুজিত যে কদমতলার এটা বীজগণিতের সূত্র ধরলেই জানা যাবে। এর জন্য সময় ও দূরত্বের চ্যাপ্টার অবধি যেতে হবে না। কপা ১৩ সংখ্যাটি বের করলেই জানা যাবে , সব্যসাচী ওই সংখ্যায় যে কবিতাটি লিখেছিল তার নাম ' একজন অসুখী কবিতা '।
মাননীয় পাঠক, আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আরো একবার কবিতার শিরোনামটি পড়তে অনুরোধ করছি। একটি অসুখী কবিতা না লিখে লিখেছিল 'একজন অসুখী কবিতা '। কবিতাটির মধ্যে জীবন আরোপ করতে চেয়েছিল সব্যসাচী। শুধুমাত্র একারণেই সব্যসাচী আমাদের পরিবারে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছিল।
এর ঠিক পরেই বা কপা ২৩ - এ সব্যসাচী ছিল ' এই পক্ষের কবি '। প্রকাশিত হয়েছিল ৫ টি কবিতা। ওই ৫ টি কবিতা থেকে পড়তে বলছি গুটিকয় পঙ্ ক্তি।
১ ॥ তারপর আকাশপারে কোনরকম উপকরণ ছাড়াই চাঁদ উঠেছিলো।
২ ॥ শরীর জুড়ে অজস্র ফসলচিহ্ন ,
৩ ॥ শীত আসে জোনাকির হাত ধরে।
৪ ॥ ঘোড়ার খুরের আঘাতে টলমল করে / যুবকের ছায়াপথ।
পড়ে দেখুন ৯ এপ্রিল ১৯৯৪ -এ প্রকাশিত কবিতাগুলি এখনো পড়া যাচ্ছে কিনা ! পড়ার পর প্রাপ্তি-র ঘরের হিসেব নিন। তাহলেই সার্থকতা।
সব্যসাচী-র সূত্র ধরে আমি কবিতাপাক্ষিক -এর ৪০ সংখ্যাটির সূচিপত্রের কিছুটা দ্যাখাতে চাইছি। দেখুন:
দীর্ঘকবিতা : আবীর সিংহ প্রবালকুমার বসু
গুচ্ছ কবিতা : রমা ঘোষ সুদীপ বসু সব্যসাচী ভৌমিক।এখন পড়া যাক সব্যসাচীর কবিতা তিনটি। আর প্রথা মতো কবিতা তিনটি থেকে তিনটি চুম্বক লাইন :
১ ॥ এখনই শিকারের সময়, তবু দুপুরের স্রোতে ভেসে যাচ্ছে / তিল তিল আগুন ...
২ ॥ মুগ্ধ আঙুল ছুঁতেই বাঁ চোখের তারা নেচে উঠল আবার
৩ ॥ ভ্রুকুটি এড়িয়ে / মোমবাতির মধ্যে ঢুকে পড়ছে গোটা শরৎকাল
এইসব কবিতাই সব্যসাচী ভৌমিক-কে আমরা কবিতার পাঠকেরা গ্রহণ করেছিলাম অন্তঃকরণ থেকে।
কবিতাপাক্ষিক ৫৩ -তে পেলাম পাতা জুড়ে সব্যসাচীর একটি কবিতা।জলজ ।
জলজ শব্দটির অর্থ আমরা সকলেই জানি। তবু আরো একবার অভিধানের কাছে গেলাম। অভিধান জানিয়ে দিল :
জলজ = জলে জন্মায় এমন।
অভিধানে উদাহরণ আছে : পদ্ম।
এখন সব্যসাচী ভৌমিক-এর জলজ কবিতাটির কাছে যাবার অনুমতি পেলাম। আর দেখতে পেলাম তথৃ জানতেও পারলাম ডুবসাঁতারের কথা।
' এক জল থেকে অন্য জলের মধ্যে আমাদের ডুব সাঁতার / যার উপরেই যত অশ্লীল আলো / নীচে শুধু অন্ধকার , উজ্জ্বল ভয় ...
কপা ৬৪ - তে সব্যসাচীর তিনটি কবিতা ।
কুশপুতুল কবিতায় ও জানিয়েছিল :
ডিস অ্যান্টেনায় ধরা পড়ুক মেঘেদের , তারাদের কুশপুতুল । '
তখন কি পথেঘাটে কুশপুতুল পোড়াবার ধুম লেগেছিল খুব। হতেও পারে । তবে কেউই কিন্তু ডিস অ্যান্টেনার সাহায্যে মেঘেদের কিংবা তারাদের কুশপুতুল ধরার কথা বলেনি। ভাবেওনি। সব্যসাচী ভেবেছিল বলেই এখনো ওকে মনে রেখেছি । মনে রেখেছি বলেই ওর কথা লিখছি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন