সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী
৮৩.
বাপন চক্রবর্তী-র আসল নাম সুব্রত চক্রবর্তী। সুব্রত চক্রবর্তী ছয়ের দশকের একজন বিশিষ্ট কবি। বাপন সুব্রত-র প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য নিজের সার্টিফিকেটের নামটিকে নির্বাসিত করে ডাকনামটিকে বসিয়ে দিল লেখার নামের শীর্ষে। এ ঘটনার কথা খুব বেশি লোকজানাজানি হয়নি। এই লেখার সঙ্গে সুব্রত নামটির কোনো সম্পর্ক নেই। এখন কেবল বাপনের কথা। বাপন চক্রবর্তী-র কথা। যার নিবাস বারাসত।
বাপনের প্রথম কপা -তে প্রকাশিত কবিতা ' আকাশের দিকে ।১২১ সংখ্যায়।
' আকাশের দিকে উড়িয়ে দাও ছড়িয়ে দাও দরজা জানলা আর /তোমার সবগুলো হৃৎপিণ্ড '
এই বাক্যটির সঙ্গে যুক্ত আছে বাপনের কণ্ঠস্বর। এটুকুই সংযোজন করছি। লেখার সঙ্গে গলা।
এরপর কপা ১২৩ -এ ।এই পক্ষের কবি : মুরারি সিংহ চিরঞ্জীব বসু অংশুমান কর বাপন চক্রবর্তী এবং বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।
ওই সংখ্যায় মুরারি সিংহ -র ' লৌকিক বাসভূমি ' - র দশ নম্বর কবিতাটির শুরুটা কেমন ছিল একবার দেখে নিতে চাইছি।
' অটোগ্রাফের খাতা এগিয়ে দিয়েছি , তুমুল বৃষ্টিপাতের দিকে ,রাতভর জলসার দিকে , টিয়ার গ্যাসের না ফাটা সেলের দিকে। '
বাপনের কবিতার সঙ্গে মুরারির কবিতার দু-লাইন পড়িয়ে নিলাম , কারণ ষষ্ঠ বছরের শুরুতেই আমরা আমাদের মূল লক্ষ্যকে স্থির করে নিয়েছিলাম। আধুনিকতাকে বাদ দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আর আধুনিকতা যে একটা ক্লোজড চ্যাপ্টার এটাও হ্যামার করে যেতে হবে ক্রমাগত।
এই সংখ্যায় বাপনের রূপকথা কবিতাটিও ছিল। কেমন ছিল কবিতাটি। পড়া যাক :
একদিন আমরা সবাই কোনো রূপকথার কাছে হেরে যাবো /একদিন মাছ শিকারের জাল সমুদ্রের কাছে হেরে যাবে
.... ... ... ...
একদিন চায়ের কাপের কাছে চায়ের কাপেরা হেরে যায় / একদিন সবচেয়ে উঁচু গাছ রোদ্দুরের কাছে হেরে যায় ...
আবার পড়ুন। পড়তে পড়তে জেনে নিন :
আমরা হেরে যাবো রূপকথার কাছে।
মাছশিকারের জাল হেরে যাবে সমুদ্রের কাছে।
চায়ের কাপের কাছে।
উঁচু একটা গাছ হেরে যাবে রোদ্দুরের কাছে।
সবগুলিই তো রূপকথা। অরূপকথাও।
ওই ১২৩ সংখ্যাতেই বাপনের আরো দুটি কবিতা ছিল। ওই দুটি কবিতার অংশ :
সাবানের শরীরে কোনো আকাশ ছিল না।
তবু , সাবান জলের চেয়ে অনেক সবুজ ...
সন্ধের একটু পরে পাঠ্যবই দ্রুত উল্টে যায় উত্তরমালার দিকে ...
মাননীয় পাঠক আপনি বিচার করে দেখুন
সাবান জলের থেকে অনেক সবুজ --- এই ইনফরমেশন আপনি আগে আগে জানতেন না।
আবার সন্ধের পর পাঠ্যবই বা প্রশ্নপত্র চলে যায় উত্তরমালার দিকে। এটাও নতুন সিলেবাস। আমরা যে কবিতার নতুন পাঠ্যসূচি তৈরি করতে চাইছিলাম , এসবই তার চিহ্ন।
এই ফাঁকে আমরা কিন্তু আরো একটা মাইলফলকের কাছে পৌঁছে গেছি।
কবিতাপাক্ষিক ১৫০
১৯ জুন ,১৯৯৯।তারিখটাও মনে রাখুন। ওই সংখ্যার প্রচ্ছদটা একবার পড়ে নিতে চাইছি।
প্রিয় কবিতাপাঠক
আপনি আপনার টুপিটি খুলে রাখুন
প্রিয় কবিতাপাঠক
আপনি চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ান
কবিতাপাক্ষিক-কে আপনি
আপনার অভিনন্দন জ্ঞাপন করুন
কবিতাপাক্ষিক
এই প্রত্যাশা করতেই পারে
অন্তত আপনার কাছে
এটা ছিল বহিরঙ্গ। আর ভেতরে লিখেছিলাম :
আমরা জেনে গেছি আধুনিক লেখালেখির দিন শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু আধুনিকদের করণীয় কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। ... ... ...
ঠিক তেমনি মডার্নিস্টদের অসমাপ্ত কাজগুলিকে শেষ করার দায়িত্বও পোস্টমডার্নিস্টদেরই গ্রহণ করতে হবে।
প্রভাত চৌধুরী
৮৩.
বাপন চক্রবর্তী-র আসল নাম সুব্রত চক্রবর্তী। সুব্রত চক্রবর্তী ছয়ের দশকের একজন বিশিষ্ট কবি। বাপন সুব্রত-র প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য নিজের সার্টিফিকেটের নামটিকে নির্বাসিত করে ডাকনামটিকে বসিয়ে দিল লেখার নামের শীর্ষে। এ ঘটনার কথা খুব বেশি লোকজানাজানি হয়নি। এই লেখার সঙ্গে সুব্রত নামটির কোনো সম্পর্ক নেই। এখন কেবল বাপনের কথা। বাপন চক্রবর্তী-র কথা। যার নিবাস বারাসত।
বাপনের প্রথম কপা -তে প্রকাশিত কবিতা ' আকাশের দিকে ।১২১ সংখ্যায়।
' আকাশের দিকে উড়িয়ে দাও ছড়িয়ে দাও দরজা জানলা আর /তোমার সবগুলো হৃৎপিণ্ড '
এই বাক্যটির সঙ্গে যুক্ত আছে বাপনের কণ্ঠস্বর। এটুকুই সংযোজন করছি। লেখার সঙ্গে গলা।
এরপর কপা ১২৩ -এ ।এই পক্ষের কবি : মুরারি সিংহ চিরঞ্জীব বসু অংশুমান কর বাপন চক্রবর্তী এবং বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।
ওই সংখ্যায় মুরারি সিংহ -র ' লৌকিক বাসভূমি ' - র দশ নম্বর কবিতাটির শুরুটা কেমন ছিল একবার দেখে নিতে চাইছি।
' অটোগ্রাফের খাতা এগিয়ে দিয়েছি , তুমুল বৃষ্টিপাতের দিকে ,রাতভর জলসার দিকে , টিয়ার গ্যাসের না ফাটা সেলের দিকে। '
বাপনের কবিতার সঙ্গে মুরারির কবিতার দু-লাইন পড়িয়ে নিলাম , কারণ ষষ্ঠ বছরের শুরুতেই আমরা আমাদের মূল লক্ষ্যকে স্থির করে নিয়েছিলাম। আধুনিকতাকে বাদ দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আর আধুনিকতা যে একটা ক্লোজড চ্যাপ্টার এটাও হ্যামার করে যেতে হবে ক্রমাগত।
এই সংখ্যায় বাপনের রূপকথা কবিতাটিও ছিল। কেমন ছিল কবিতাটি। পড়া যাক :
একদিন আমরা সবাই কোনো রূপকথার কাছে হেরে যাবো /একদিন মাছ শিকারের জাল সমুদ্রের কাছে হেরে যাবে
.... ... ... ...
একদিন চায়ের কাপের কাছে চায়ের কাপেরা হেরে যায় / একদিন সবচেয়ে উঁচু গাছ রোদ্দুরের কাছে হেরে যায় ...
আবার পড়ুন। পড়তে পড়তে জেনে নিন :
আমরা হেরে যাবো রূপকথার কাছে।
মাছশিকারের জাল হেরে যাবে সমুদ্রের কাছে।
চায়ের কাপের কাছে।
উঁচু একটা গাছ হেরে যাবে রোদ্দুরের কাছে।
সবগুলিই তো রূপকথা। অরূপকথাও।
ওই ১২৩ সংখ্যাতেই বাপনের আরো দুটি কবিতা ছিল। ওই দুটি কবিতার অংশ :
সাবানের শরীরে কোনো আকাশ ছিল না।
তবু , সাবান জলের চেয়ে অনেক সবুজ ...
সন্ধের একটু পরে পাঠ্যবই দ্রুত উল্টে যায় উত্তরমালার দিকে ...
মাননীয় পাঠক আপনি বিচার করে দেখুন
সাবান জলের থেকে অনেক সবুজ --- এই ইনফরমেশন আপনি আগে আগে জানতেন না।
আবার সন্ধের পর পাঠ্যবই বা প্রশ্নপত্র চলে যায় উত্তরমালার দিকে। এটাও নতুন সিলেবাস। আমরা যে কবিতার নতুন পাঠ্যসূচি তৈরি করতে চাইছিলাম , এসবই তার চিহ্ন।
এই ফাঁকে আমরা কিন্তু আরো একটা মাইলফলকের কাছে পৌঁছে গেছি।
কবিতাপাক্ষিক ১৫০
১৯ জুন ,১৯৯৯।তারিখটাও মনে রাখুন। ওই সংখ্যার প্রচ্ছদটা একবার পড়ে নিতে চাইছি।
প্রিয় কবিতাপাঠক
আপনি আপনার টুপিটি খুলে রাখুন
প্রিয় কবিতাপাঠক
আপনি চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ান
কবিতাপাক্ষিক-কে আপনি
আপনার অভিনন্দন জ্ঞাপন করুন
কবিতাপাক্ষিক
এই প্রত্যাশা করতেই পারে
অন্তত আপনার কাছে
এটা ছিল বহিরঙ্গ। আর ভেতরে লিখেছিলাম :
আমরা জেনে গেছি আধুনিক লেখালেখির দিন শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু আধুনিকদের করণীয় কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। ... ... ...
ঠিক তেমনি মডার্নিস্টদের অসমাপ্ত কাজগুলিকে শেষ করার দায়িত্বও পোস্টমডার্নিস্টদেরই গ্রহণ করতে হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন