শনিবার, ২৫ জুলাই, ২০২০

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য ৮২ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক গদ্য

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী


৮২.
মুহম্মদ মতিউল্লাহ্ সম্পর্কে হয়ত অনেক আগেই বলতে হত। কিন্তু একটা কথা খুব স্পষ্ট করে জানিয়ে রাখতে চাই মতি কোনো অর্থেই ' কবিতাপাক্ষিক ' প্রোডাক্ট নয়। মতিউল্লাহ্ কবিতাপাক্ষিকের একজন আমন্ত্রিত কবি বা লেখক নয়। বহু ক্ষেত্র আমাদের পরামর্শদাতা। সর্বোপরি কাটোয়া নামক প্রাচীন জনপদটির সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতার মূল সূত্রধর মুহম্মদ মতিউল্লাহ্।
মতি-র মাধ্যমেই বিশিষ্ট কবি-কথাকার দীপংকর ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ। মতি-র জন্যই কাটোয়ার সংস্কৃতি জগতের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা তুষার পণ্ডিত সহ তার সাঙ্গোপাঙ্গদের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলাম। এমনকী জপমালা ঘোষরায় - এর সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলাম মতি-র সৌজন্যেই।
সবথেকে বড়ো কথা কাটোয়ার যেকোনো অনুষ্ঠানে কবিতাপাক্ষিক তথা প্রভাত চৌধুরী-র একটা স্থায়ী আসন পাতা থাকত।
আরো একটা কথা কাটোয়ার ছোটো-বড়ো- মাঝারি সব কবিই কবিতা  কবিতাপাক্ষিক পরম যত্নে সঙ্গে প্রকাশ করে ধন্য হয়েছে।
এমনকী সর্বশেষ সংযোজন শুভজিৎ সেনশর্মাদের লিটল ম্যাগাজিন মেলায় গিয়েছিলাম মতি-র আমন্ত্রণেই।
এবার  বলতে হবে ' শতভিষা ' সংকলন সম্পাদনা করেছিল মতি। মতির একটি বিশিষ্ট বই ' মেধাবী বন্ধুত্ব ' ।এইসব নিয়েই আষ্টেপৃষ্ঠে যুক্ত আছি মতির সঙ্গে। সেই  1993 থেকে। আধুনিকতার ধারক-বাহকরা মতি-কে আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে পারেনি। এতটাই অটুট বন্ধন। বরং মুখে পোস্টমডার্নিজমের কথা বলে আর আঁতাত করে আধুনিকদের সঙ্গে , এরকম ছবিই বেশি দেখতে পাই।
মতি-প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে পারিপার্শ্বিক বহু কু-কথা বলে ফেললাম। আমাকে মার্জনা করবে মতি।
 কপা-র ১ সংখ্যায় মতির কবিতা থাকাটাই স্বাভাবিক। কেননা মতি - নিয়াজুল দুজনে বর্ধমান তিনকোণিয়া বাস স্টান্ড থেকে আমাকে নিয়ে গিয়েছিল ৩৭ নম্বর কানলা রোডে। শ্যামলবরণ-সঞ্চয়িতার বাড়ি। তার আগে ওদের সঙ্গে পরিচিত ছিলাম না।
মতি-র প্রথম সংখ্যার কবিতাটির নাম : দরজা। আমার অজানা নয় , দরজার মুখের সংখ্যা দুই। একটা ভেতরে ঢোকার। অন্যটা বাইরে যাবার।
দরজা। আমার অজানা নয় , দরজার মুখের সংখ্যা দুই। একটা ভেতরে ঢোকার। অন্যটা বাইরে যাবার।
আমি তো আমার মতো করে আমাকে দেখলাম। আমার দরজা-র সঙ্গে মতির দরজার মিল-অমিল খুঁজতে যাবো কেন ! এক একজনের দরজা -জানলা- আকাশ - সমুদ্র -র সঙ্গে অপর একজনের পার্থক্যের কথা তো সেই কোন ভোরবেলা থেকে বলে আসছি।
এখন দ্যাখা যাক মতি-র দরজাটা ঠিক কেমন !
' একাধিক দরজার মাথায় পালটেছে নামের ফলক '
এই নামের ফলক বা নেমপ্লেটের পরিবর্তন দেখতে পাওয়াটাই আমার কাছে বিরাট প্রাপ্তি ছিল।এবং ঠিক এই কারণেই কাটোয়ায় আমার হাঁটার সঙ্গী থেকে গেছে মতি।
কপা ২০ -তে ' যুবকের প্রতি '। রানঅন বা টানা গদ্যে লেখা।  মাঝামাঝি জায়গা থেকে কিছুটা :
' একদিন আমার সমস্ত হৃদয় হইতে আমার অশ্রুবিন্দুর অহংকার হইতে তোমাকে ছুড়িয়া ফেলিয়াছিলাম  তোমার হইতে ফিরিয়া রইলাম ছবি আঁকার রং-তুলি কবিতার খাতা। '
আমিও তো এর থেকে একবিন্দু বেশি কিছু চাইনি।
১৯৯৩ থেকে ২০২০। কত বছর ! তার জন্য ক্যালকুলেটরের আবশ্যক নেই। কাগজ-কলমও লাগবে না। এই এতগুলো বছরের জন্য  কত লাইন ! এভাবে হয় না। একটা বড়ো লাফ দিলাম।
' ২০১৫ র ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর জীবনমৃত্যুর মধ্যবর্তী এক অস্তিত্বে থাকতে হয়েছিল বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে , আই সি ইউ- তে। '
সেই অভিজ্ঞতা হল :
মুহম্মদ মতিউল্লাহ্ - র হাসপাতাল লেখা কবিতাগুচ্ছ।
তাও নিজের লেখা নয়। কয়েকজন নার্স এগিয়ে নিয়ে গেছেন কবিতাকে।
আমরা ভাগ্যবান : কলকাতা বইমেলা ২০১৬ -তে প্রকাশ করেছিলাম এই  ছোটো কবিতার বড়ো বইটি।এই বইটি কাছে রাখার বই। একারণে এখনো কাছেই আছে। এই বইটি থেকে খুব বেশি দূরে যাওয়া যায় না। এটুকুই জানি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...