শনিবার, ৮ আগস্ট, ২০২০

সৌমিত্র রায় -এর জন্য গদ্য ৯৬ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক বিভাগ

সৌমিত্র রায় -এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী


৯৬.
' এমন অনেককে আমি জানি , যারা তাদের স্বপ্নগুলোকে থাকে থাকে সাজিয়ে রাখতে ভালোবাসে ।ঠিক যেমন বই-এর থাকে বই , কাপড়ের থাকে কাপড়।তাদের এই সাজিয়ে রাখার একটা রিদম্ আছে '।
কবিতাটি প্রলয় মুখোপাধ্যায় -এর। বেলিয়াতোড় চ্যাপ্টারের কবি। নয়ের দশকের কবি। বাংলাভাষার কবি।
কবিতাটি প্রকাশিত হয়েছিল কবিতাপাক্ষিক ৪৮ -এ।প্রকাশ তারিখ : ২২ এপ্রিল , ১৯৯৫ ।
আজ ০৭ অগাস্ট ,২০২০ ।
মধ্যবর্তী ব্যাবধান ২৫ বছরের অধিক। 
মান্যবর পাঠক , ২৫ বছর পর্যন্ত একটি কবিতা যেভাবে বেঁচে থাকে , তা দ্যাখার জন্য যেকোনো চশমা ব্যবহার করা যেতে পারে। চশমার কাচের রঙের ওপর নির্ভরশীল নয় কোনো প্রকৃত কবিতা। আমি কি কবিতার সঙ্গে প্রকৃত-কবিতার কোনো বিভাজন ঘটাতে চাইছি।  না , তা চাইছি না। তবে একটা বিভাজন তো চাইছি। রক্ষণশীল কবিতা থেকে আপডেটেড কবিতাকে আলাদা করতে চাইছি।
আমি আরো কয়েক পা এগিয়ে যেতে চাইছি।গিয়ে যে কবিতার মুক্তাঞ্চলের দ্যাখা পাবো , সেখানে প্রলয় মুখোপাধ্যায় -এর লিখে যাওয়া কবিতার রত্নাবলির যে সন্ধান পাবো , তার গুটিকয় চিহ্ন উপস্থাপিত করছি আপনাদের জন্য। আপনারাই বিচার করে দেখুন রত্নগুলি ঝুটা না আসল !
১॥ আমাদের চোখময় আরশোলামূলক বাদামি
    আভা আর নিশানা বৃষ্টিভেজা অল্পবয়সী
     বটগাছ।
২॥ আমার প্রত্যেকটি দাঁত নিলাম হয়ে যায়
৩॥  একটি কাপুরুষ হাসপাতালের
      নিষ্প্রাণ বিছানায় শুয়ে বেঁচে থাকার
       স্বপ্ন দেখছে একুশটি সদ্যজাত শিশু
এত দূর থেকে প্রলয় কি দেখতে পেয়েছিল মৃত্যুকে। আমি জানি না।
আমিও এত দূর থেকে সবটা দেখতে পাচ্ছি না। ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। মাঝে মাঝেই সুব্রত চেল-কে ফোন করতে হচ্ছে।
[07/08, 11:38 am] Kobi Prabhat Chowdhury: ৯৬॥ শেষাংশ

কবিতাপাক্ষিক ৮৯ - এ প্রকাশিত হয়েছিল পরম শ্রদ্ধেয় কবি অরুণ মিত্র - ' ওড়াউড়িতে নয় ' কবিতাটি।আর ওই সংখ্যাতেই ছিল প্রলয়-এর ' অসুস্থ আত্মকথন ' তিন পর্বের নাতিদীর্ঘ কবিতাটি।
অসুস্থ আত্মকথন -কে কীভাবে বিভাজন করবো।
১॥ যে আত্মকথনটি অসুস্থ
নাকি
২॥ অসুস্থজনের আত্মকথন
যেভাবে ব্যাসবাক্য নির্ণয় করি না কেন , তা করার জন্য কবিতাটির কাছে যেতেই হবে। কবিতা কোন দিকে নির্দেশ দিচ্ছে তা দ্যাখা যাক :
১॥ চুরি করে রাখা কিছুটা সকালের
      রোদ উপচে পরতেই
       কারা যেন ব্যারিকেড করে দাঁড়িয়ে
       পড়ল তোমার চারপাশে।
২॥ আসলে জলরঙের একটা দিন ছিল আমার
     চুরি গেছে আর তার ওপরে লেখা ছিল
     আমার প্রথম প্রেমিকার সমস্ত
     কথোপকথনের কোরিওগ্রাফ।
৩॥ খুব সঙ্গত কারণেই আমাদের একদিন
      ফিরে আসতে হয় ব্যক্তিগত আবেশের
       তৈরি সূচিছিদ্র সুড়ঙ্গে
এই তিনটি উদ্ধৃতি থেকে কি জানতে পারলাম
আত্মকথনটি অসুস্থ না এটি অসুস্থজনের আত্মকথন।
জানাটা কি সত্যসত্যই একটি সিলেবাসের সঙ্গে যুক্ত !
সবকিছুর ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। পেতেই হবে এমন নির্দেশনামাও কোথাও ছাপা নেই।
,কপা ১১২ -তে ছিল  ' এই প্রজন্মের কবিতা ' , যার কথা গতকালের লেখাতে ছিল।ওই সংখ্যায় প্রলয়- এর ' হরিণডাঙা ' শিরোনামে ১১ পর্বের একটি দীর্ঘ কবিতা স্থান পেয়েছিল। এথেকে বলা যায় কবিতাপাক্ষিক প্রলয় মুখোপাধ্যায়-কে নতুন প্রজন্মের কবি হিসেবে সর্বান্তকরণে গ্রহণ করেছিল।
এখন ' হরিণডাঙা 'য় কী আছে তা অনুসন্ধান করে দ্যাখা যাক।
১॥ মাটি জানে তার অলসতার আড়াইশো কিমি
২॥ পাপের কথা আজ থেকে যাক
     রাশিফল থেকে সরেপড়ার প্রাকমুহূর্তে
৩॥  অনেক দূরে ট্রেনবাড়িটির শব্দে
৪॥ পৃথিবী মানেই হরিণডাঙা
৫॥ ওপারে যে নদী এপারে তার ভাসাবারান্দা
৬॥ আমার নদী আজ থেকে পৃথিবীর সবার হল
     তোমাদের সব আকাশ আজ থেকে আমি একা নিলাম / আজ থেকে শুধু হরিণডাঙাকে পিছিয়ে ফেলা
প্রলয় মুখোপাধ্যায় হরিণডাঙাকে পিছনে ফেলে কোথায় যে চলে গেল , জানি না। জানি যেখানে গেছে সেখান থেকে ফিরে আসার কোনো ফেরিসার্ভিস
নেই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...