শনিবার, ৮ আগস্ট, ২০২০

শেষ শিক্ষা || দেবাশিষ সরখেল || গল্প

শেষ শিক্ষা
দেবাশিষ সরখেল


অসিতকৃষ্ণের জাবতীয় দুর্বলতা ছেলের প্রতি। দু’দুটো সন্তান নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর এই মানিকচাঁদ। তাই সাধারণভাবে বাবারা ছেলের আব্দার মেটাতে মোবাইল, দুধ, ফল ইত্যাদি সরবরাহ করেন। অসিতকৃষ্ণ প্রয়োজনে মদের বোতল জোগান দিতেও দ্বিধাবোধ করেন না। তবু বেঁচে থাক, আনন্দে থাক। অসিতকৃষ্ণ নিজেও জানেন, তিনি ভালো নন, পথভ্রষ্ট। একজন কনফিউজড পার্সন।
ছেলে বলে বাবা তুমি তাড়ি, বাশি, রাম, হেইড়্যা, মহুল্যা, ঘাড় সরু কিছু বাদ দাও না, আর আমার বেলা শুধু ওয়াইন। মুখ পঁচে গেল।
কথায় বলে, ১৮ বছর পার হলে বাবা ছেলে ইয়ার দোস্ত। তারা এক টেবিলে বসে খায়।
পরে তাম্বুল সেবনে আর পানদোষ থাকে না।
একদা গলা পর্যন্ত গিলে ঠ্যাঙ, হাত, বাক্যবাণ কিছুই আর নিজের বশে নেই। ছেলে বায়না ধরে বার-এ বসে খাওয়ার মজাটাই আলাদা। আজ বারে যাই চলো।
-জনসমক্ষে?
নেশা এ্যাতোখানি চড়ে গেল যে সে ভেউ ভেউ করে কাঁদে। - শখের লাগিয়া যে ঘর বাঁধিনু অনলে পুড়িয়া গেল।
ছেলে টলতে টলতে বলে, তাহলে তুমি যাবে না ?
জেনে রেখো, মদ আমি খাই না, মদ আমাকে খায়।
ছেলে বোতল ছুঁড়ে মারে, নিশানা অব্যর্থ।
রক্তাক্ত অসিতকৃষ্ণ মাটিতে পড়ে কাতরাতে থাকে এবং দাড়িবাবার কবিতা মনে পড়ে যায়। রাত দুপুরে আবৃত্তি জুড়ে দ্যায়-
            এ্যাতোদিন হোল তোর বোধ
              অন্যায়ের কি করিয়া লয় প্রতিশোধ।
            শেষ শিক্ষা দিয়ে গেনু আজি শেষবার
              আশীর্বাদ করি তোরে হে পুত্র আমার।
এখানে নায়ক চতুরঙ্গ বল নয়, একটি সুরম্য মদের বোতল।

দেবাশিষ সরখেল
রঘুনাথপুর
পুরুলিয়া (পশ্চিমবঙ্গ), সূচক – ৭২৩১৩৩
ফোন – ৯৯৩২৬৬৭৮৮১

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...