কিছু বই কিছু কথা। নীলাঞ্জন কুমার
বৈকুন্ঠপুর হল্ট নয়, ইস্টিশান । অমিত কাশ্যপ । সারঙ্গ প্রকাশনী । চল্লিশ টাকা ।
সিরিজ কবিতা লেখা কি যে কঠিন, সে যিনি লেখেন তিনি বোঝেন । সিরিজের ভেতরে যে বিষয় থাকে তাকে ফোটানো ও কাব্যিক ব্যন্ঞ্জনা তুলে ধরা একজন জাত কবির কাছে আশা করা যায় । কবি অমিত কাশ্যপের তেরো নম্বর কাব্যগ্রন্থ ' বৈকুন্ঠপুর হল্ট নয়, ইস্টিশান ' - এর আঠাশটি শিরোনামহীন কবিতার মধ্যে কবি বৈকুন্ঠপুরের ভেতর দিয়ে তুলে ধরতে চেয়েছেন গ্রাম বাংলার মাটি, মানুষের মন, জীবনযাত্রা, পরিবেশ । যা ইট কাঠ বালি সিমেন্ট লোহালক্কড়ের শহরের থেকে অন্য কোথাও অন্য কোনখানে টেনে নিয়ে যায় । তাই তিনি লেখেন: ' গৃহস্থালির পাশে বিকেলের রোদ রোদের পাশে আচার/ বিকেল একটু একটু করে খামচে ধরছে ', ' ধারাপাত উড়ে চলে, মিঞার বাচ্চা পয়সা গোনে/ বেন্ঞ্চে বেন্ঞ্চে চা মুড়ি ঘুগনি, আগামী ভারতবর্ষ ' , ' হেমন্তের বিকেলকে নিয়ে যখন আসতেন বাবা/ তখন আরো নীরব, ক্রমশ শহর ঘেঁষা জনআরণ্যক ।'
বৈকুন্ঠপুরের প্রাত্যহিক রোজনামচা কবি কি অপূর্ব ভাবে ব্যক্ত করেছেন , যখন পাই এলাকার সুখ দুঃখ, চাহিদার অসামান্য রূপ তাঁর কবিতায় : ' জল চাই না, শস্য চাই / মা চাই না, মাটি চাই/ জল উৎসব থেকে গোটা গ্রাম লজ্জাবতী মা, মাটি শস্যের মুখে ,' সোজা সোনালী জীবন হেসে গড়িয়ে পড়ছে জান্হবীতে/ পুণ্যতোয়া জাহ্নবী ছুঁয়ে ছুঁয়ে মালিন্য খুঁজছে ঠারুরাণিঘাট '
বলা যায় এ কাব্যগ্রন্থ এক সফল প্রয়াস কবি অমিত কাশ্যপের । যারা গ্রাম থেকে শহরে বসবাস করছেন তাদের নস্টালজিয়া গ্রাস করবেই । এখানেই কবির জিৎ । মুক্তিরাম মাইতি বৈকুন্ঠপুরের হৃদয় চিনে যেন এঁকেছেন প্রচ্ছদ ।খুব সাধারণ তবু অসাধারণ এ প্রচ্ছদের জন্য তিনি ধন্যবাদার্হ ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন