কিছু বই কিছু কথা। নীলাঞ্জন কুমার
চাঁদের বুড়ি । পঙ্কজ মন্ডল । নীলাক্ষর প্রকাশনী । চল্লিশ টাকা ।
কবি পঙ্কজ মন্ডলের বহু বহু কবিতা পড়ে ফেলার জন্য এ কবির ভাষা কোন ভাবে আমার কাছে অপরিচিত নয় । আগেও বলেছি তাঁর কবিতা একবার পড়ার পর আবার কিছুদিন পরে পুণঃপাঠ করলে তবে তাঁকে ধরা সহজ হবে । নাহলে যে যত বড়ই সমালোচক হন না কেন তাঁকে প্রকৃত মূল্যায়ন করা অসম্ভব । পঙ্কজের প্রতিটি কবিতা গঠনগত দিক দিয়ে একইরকম, কিন্তু শুধু গঠন প্রক্রিয়ার দিকে তাকিয়ে তাঁকে বিচার করি তা ভুল হবে । তাঁর কবিতার মূল চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে ব্যন্ঞ্জনার ভেতরে, যার জন্য গভীর গভীরতর মগ্নতা প্রয়োজন । তাই: ' খর রোদ্দুরে সূক্ষ্ম শরীর কষ্টকে মারো পিষে/ ক্লান্ত ডানায় মেঘ ভাঙা চাঁদ দুদন্ড কথা বলো । ' ( ' ভষ্মাহত ') আপাত দিক দিয়ে উপেক্ষা করার মতো পংক্তি মনে হলেও মূল সত্য লুকিয়ে এখানে ই। যা তাঁর কাব্যগ্রন্থ ' চাঁদের বুড়ি ' র ভেতর লুকিয়ে আছে ।
এই কবিকে বুঝতে গেলে বহুপথ হাঁটতে হবে, তারপর যা পাওয়া যাবে আজীবন ধরে রাখতে ইচ্ছে হবে । সে কারণে তিনি সাধারণের কবি হয়ে উঠবেন না অবশ্যই, তবে প্রকৃত সমঝদার, কবি আখ্যা দেবেন : ' ভাঙা লেনদেন গুলি দেয়না যখন কোন তাপ/ ভিতরের তারগুলি পুড়ে পুড়ে নির্বাক সন্ন্যাসী । ' ( ' বিচ্ছেদ ') , ' মুগ্ধ সাদা মুখ আসে চোখে নিয়ে গুপ্ত প্রাণ মন্ত্র/ বুক ভরে নিই স্পর্শ, ফুলে ফুলে ছড়াই পরাগ ।' (' নবজন্ম ') - এর পংক্তিগুলির গুণে বলতেই পারি ।
কবির উৎকট অভ্যাস কবিতায় অযাচিত তৎসম শব্দের প্রয়োগ । সে কারণে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাঁর কবিতা ক্লান্তি আনে । তা শুধরে না নিলে কবি সঠিক মর্যাদা থেকে বন্ঞ্চিত হবেন । কবিকৃত প্রচ্ছদ দাগ কাটে না । ব্যাকগ্রাউন্ড বড় ফাঁকা ফাঁকা ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন