নস্টালজিয়া ৪০
পৃথা চট্টোপাধ্যায়
আমাদের জীবনের যে মুহূর্তটি চলে যায়, তা আর কখনোই ফিরে আসে না। কিশোরীবেলার কত ছোট ছোট মুহূর্ত এইভাবেই আমার হারিয়ে গেছে। আজকাল কেন যে একটা শূন্যতাবোধ ক্রমশ ঘিরে ধরে মনকে। আবার এক অসম্ভব ভালবাসাকে আঁকড়ে বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে সেই মুহূর্তেই । কোনো ফাঁক না রেখে তোমাকে পরিপূর্ণ করে পেতে চেয়েছিলাম। আমারও দিতে কোনো কার্পণ্য ছিল না । কিন্তু সে সুযোগ আসে নি কখনো। এখন নিজেকে বড্ড নির্বোধ মনে হয়। অবশ্য কড়া গন্ডি ছাড়িয়ে বের হবার সাহস ছিল না আমার সেদিন। আজ তাই হয়তো এইসব ভাবলে এক অনন্ত সুন্দর সমস্ত বিষাদকে মুছে দেয়। আমার এই ভাবনা কোনো ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি দিতে পারে নি কখনোই। আমি ছিলাম আমার গন্ডিতে, সে তার প্রিয়জনের বেষ্টনীতে আবদ্ধ। সেখানে কারো নিবিড়তার ফাঁকি ছিল না, তবু আমাদের মন কোন এক ফাঁক ফোকর গলে মুহূর্তের জন্য এক নির্জন বনস্থলীতে চলে আসত। তখন ফোন বা মোবাইল ছিল না আমাদের। সে এক অদ্ভুত টেলিপ্যাথি। ঠিক দেখা হয়ে যেত তার সঙ্গে। এক অন্তর্মুখিনতার সঙ্গে বাহির আমাকে বরাবর ডাকে। কোনো এক মুহূর্তের নির্জনতায় সে আর আমি মুখোমুখি হয়েছি কতবার। সেটা যে প্রেম বুঝতেই পারি নি।কিন্তু একটা টান। এক প্রতিশ্রুতিহীন ভালবাসার মুহূর্তে আমি তোমাকে চাই একথা মুখ ফুটে বলতে পারি নি। তার মধ্যে যে সুন্দরের সন্ধান আমি পেয়েছিলাম তাকে অস্বীকার করার সাধ্য আমার আজও নেই। এক নিজস্ব গহনলোক এতদিন আমার অগোচরে ছিল। নিজেকে ফাঁকি দিয়ে ভুলিয়ে রেখেছিলাম কি? আজ আবার সে এক বিস্ময় চিহ্ন হয়ে এসেছে আমার কাছে। আজকের এইসব কথা লেখার মুহূর্তটি এক নিজস্ব বিন্যাসে ধরা দেয়। মনে হয় সেখানে আর কেউ নেই শুধু সে আমি মুখোমুখি বসে আছি অনন্ত স্তব্ধতায়। ভালবাসা এক অন্তহীন যাত্রা। কোনো পাত্রে আবদ্ধ করতে চাওয়া বৃথা। সত্যিকারের ভালবাসা হৃদয় উপচে পড়ে। তাকে অপচয় না করে অন্য পাত্রে ঢালতে তো কোনো ক্ষতি কিছু নেই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন