"যুগ সাগ্নিক" সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক মুখপত্র
পৃথা চট্টোপাধ্যায়
সুস্থ সাংস্কৃতিক চেতনা ও সুন্দর ভবিষ্যতের পথ চলায় বুক বেঁধে ২০২০র অতিমারীকে জয় করে প্রকাশিত হয়েছে "যুগ সাগ্নিক" নবম বর্ষ শারদ সংখ্যা ২০২০ । এই সংখ্যাটি বৈশাখ-শ্রাবণ-শারদীয়া
একত্রে তিনটি সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ। করোনার কারনে ২০২০র মার্চের শেষদিকে সমগ্র বিশ্বের সঙ্গে আমাদের দেশেও আচমকাই লকডাউন ঘোষণা করা হয়। লক এবং আনলকের প্রক্রিয়া চলতে থাকে। সেই পরিস্থিতিতে অন্যান্য পত্রিকার মত যুগ "সাগ্নিক পত্রিকা"পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশ করা সম্ভব হয় নি। অনেক পত্রিকা পি ডি এফ ফর্মে প্রকাশ করা হলেও "যুগ সাগ্নিক" পত্রিকা তাদের লেখক ও পাঠকের ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে চিরাচরিত ভাবে মুদ্রিত পত্রিকা প্রকাশ করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল। "যুগ সাগ্নিক" পত্রিকাটি খুব সমৃদ্ধ একটি সাহিত্য পত্রিকা। এই পত্রিকার সম্পাদক শ্রী প্রদীপ গুপ্ত মহাশয় সারা বছর নানান রকম সামাজিক গঠন মূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও অত্যন্ত যত্ন সহকারে এই পত্রিকাটি করেন। "যুগ সাগ্নিক" একটি সম্মিলিত প্রয়াস বলে আমার মনে হয়েছে। এই পত্রিকার সহ- সম্পাদক হলেন নন্দিনী সেনগুপ্ত, জয়তী বসু,মমতা ভৌমিক, সুজিত সরকার এবং শুভাশিস সরকার। এ ছাড়াও পত্রিকাটির সম্পাদক মন্ডলী, বার্তা সম্পাদক এবং সদস্য বৃন্দে অনেক কবি সাহিত্যিক আছেন। " যুগ সাগ্নিক" পত্রিকার মুখ্য উপদেষ্টা হলেন কবি কৃষ্ণা বসু ও কবি রত্নেশ্বর হাজরা। পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত সকলের নাম উল্লেখ করে আমার লেখার মূল বিষয় থেকে সরে গিয়ে পাঠকের ধৈর্যচ্যুতি ঘটাতে পারি না। সবার নাম বলতে পারলাম বলে মার্জনা করবেন। তবে এই পত্রিকা আরো অন্যান্য লিটিল ম্যাগাজিনের মতোই একটি সমষ্টিগত প্রয়াস একথা অনস্বীকার্য।
"যুগ সাগ্নিক" পত্রিকায় অনেক বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিক যেমন লেখেন তেমনি অনেক তরুণ কবি ও লেখকদেরও লেখার সুযোগ দেওয়া হয়। এই পত্রিকাটিতে কবিতাকে বিশেষ গুরুত্ব সহকারে স্থান দেওয়া হয়েছে। কবিতা লিখেছেন পবিত্র মুখোপাধ্যায়,মৃণাল বসু চৌধুরী, কৃষ্ণা বসু, ব্রত চক্রবর্তী, অজিত বাইরী, অজিতেশ নাগ, দুর্গাদাস মিদ্দা, তাপস মহাপাত্র,শ্রী সদ্যোজাত,দয়াময় পোদ্দার, পিয়াংকী, অমৃতা রায় চৌধুরী ,অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়,অংশুমান চক্রবর্তী, সাহাবুদ্দিন ফিরোজ, কৌশিক চক্রবর্তী, জারা সোমা,মৈত্রেয়ী ঘোষ,সফিকুজ্জামান,চিরঞ্জীব হালদার, অতীশ দীপঙ্কর,দীপশিখা পোদ্দার, কাকলি মুখার্জি প্রমুখ অসংখ্য কবি।
গল্প লিখেছেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী, রিয়া ভট্টাচার্য, হেমন্ত সরখেল, অর্পিতা বোস,সুজিত চট্টোপাধ্যায়, দীপঙ্কর বেরা, সুব্রত মুখোপাধ্যায়,শ্যামশ্রী চাকী, প্রমুখ আরো অনেক লেখক।
যুগ সাগ্নিক পত্রিকাটি সাহিত্যের প্রতিটি বিষয়কে পত্রিকার অন্তর্ভুক্ত করেছে। তাই এখানে আছে গদ্য, প্রবন্ধ, রম্য রচনা, ভ্রমণ বিষয়ক লেখা, অনুবাদ সাহিত্য এবং পুজোর রান্না। মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কারকে নিয়ে সুন্দর প্রবন্ধ লিখেছেন ড.অশোক কুমার ভট্টাচার্য,"শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় ও কয়লাকুঠির দেশ" প্রবন্ধ লিখেছেন ইন্দ্রাণী বিশ্বাস মন্ডল।রয়েছে করোনা পরিস্থিতি ও দেবী দুর্গা বিষয়ে লেখা। এই পত্রিকার সব কবি ও লেখকের নাম উল্লেখ করতে পারলাম না বলে মার্জনা করবেন। সবার লেখা ও মিলিত প্রয়াস পত্রিকাটিকে সমৃদ্ধ করেছে বলে আমি মনে করি।
ভ্রমণ কাহিনিগুলি খুব সুন্দর। যুগ সাগ্নিক পত্রিকাটি নামেই লিটিল ম্যাগাজিন, কলেবরে যথেষ্ট ওজনদার এবং অধিকাংশ লেখাই খুব ভালো লেগেছে। অবসর সময় অনায়াসে সুন্দর ভাবে কেটে যায় এই পত্রিকাটি পড়ে। সুন্দর প্রচ্ছদ করেছেন অসিত পোদ্দার,তানিশা সাহা ও তপবর্ণা ভট্টাচার্য। আপনারা সংগ্রহ করে পড়লে নিশ্চয় ভালো লাগবে এই পত্রিকাটি।
পত্রিকা -যুগ সাগ্নিক
সম্পাদক- প্রদীপ গুপ্ত
বিনিময়-১৮০টাকা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন