মঙ্গলবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৮

দুর্গাপূজার লোকাচার সুগত পাইন । বাংলা-৬৫০। ১৬-১০-২০১৮


দুর্গাপূজার লোকাচার
সুগত পাইন





 (৩)
শারদীয়া  দুর্গাপূজার  একটি  অত্যাবশ্যকীয়  আচার হল বোধন।  প্রচলিত  মত হল  রাব ণ বধের  জন্য শ্রীরামচন্দ্র  অকালে  (দক্ষিনায়ন কালে) দেবীর  বোধন করেছিলেন। মূল বাল্মীকি  রামায়ণে রামচন্দ্র কর্তৃক  দেবী  দূর্গার পূজার কথা নেই। সেখানে রাবণের  সঙ্গে যুদ্ধজয়ের  জন্য  অগ্যস্তমুনির নির্দেশে শ্রীরাম  ‘হৃদ্যাদিত্যস্তব’ করেছিলেন;  যা ছিল  প্রকৃতপক্ষে সুর্যের বন্দনা।  ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় বোধনের  মন্ত্র হিসাবে  ‘কালিকাপুরাণের একটি শ্লোক  আজও  ব্যবহৃত  হয় -- 
‘রামস্য অনুগ্রহার্থায় রাবণস্য বধায় চ।
রাত্রাবেবমহাদেব  ব্রহ্মন্য বোধিতা পুরু।।‘
অর্থাৎ রাবণ ব্ধার্থে ও রামচন্দ্রকে  অনুগ্রহার্থে ব্রহ্মা পুরাকালে  দেবীর বোধন করেছিলেন।  বোধন কথার অর্থ হল জাগরণ বা  জাগ্রত করা। কিন্তু  প্রশ্নজাগে বোধন করা হয় কেন?  পুরান  কারদের অভিমত হল শ্রাবণ  থেকে পৌষ  এই ছয় মাস কালে  দক্ষিনায়ন হওয়ায়  তা দেবতাদের রাত্রি  বা নিদ্রার কাল।তাই  দেবীকে  জাগরিত  করতেই  বোধনের ব্যবস্থা।
অর্থাৎ রাবণ  বধার্থে  ও রামচন্দ্রকে  অনুগ্রহার্থে  ব্রহ্মা পুরাকালে  দেবীর  বোধন করেছিলেন। ‘বোধন’  কথার অর্থ হল জাগরণ বা জাগ্রত  করা। কিন্তু  প্রশ্নজাগে  বোধন করা হয় কেন?  পুরাণ  কারদের  অভিমত  হল – শ্রাবণ থেকে পৌষ -  এই ছয়  মাস কাল  দক্ষিণায়ন হওয়ায়  তা দেবতাদের রাত্রি  বা নিদ্রার কাল।  তাই দেবীকে জাগরিত  করতেই  বোধনের ব্যবস্থা।
বোধনের আচারটি  ভালোভাবে  লক্ষ্য করলে দেখা যাবে  যে বোধন মণ্ডপে  অনুষ্ঠিত  হয় না।  বিল্ববৃক্ষমুলে  এটি অনুষ্ঠিত  হয়।  বিল্ববৃক্ষের  তলায়  শরকাঠী  পুঁতে  সূত্র দিয়ে বেষ্টন করে এক  বস্ত্রগৃহ  নির্মিত  হয়। এর  অভ্যন্তরস্থিত  বেদীতে  আলক্তক,  সূত্র,  যুগ্ম শ্রীফল,  ছুরিকা ইত্যাদি রাখা হয়।  এই সমস্ত  উপাচারের  উপস্থিতি আমাদের সুতিকাগারের  কথা স্মরণ করায়।  যুগ্ম  শ্রীফল মাতা ও সন্তানের প্রতীক।  নাড়ী  ছেদনের জন্য ছুরিকর্ণ  ও নারী বন্ধনের জন্য সূত্র। আলতা  শোণিতের  দ্যোতক।   আরো  উল্লেখ্য বোধন  কখনোই  দিবাভাগে অনুষ্ঠিত হয় না।  হয় সাংয়কালে বৈদিক  যুগ থেকেই  রাত্রিকাল  সন্তান প্রসবের জন্য স্বীকৃত।  এখন প্রশ্ন জাগাই  স্বাভাবিক  কার জন্মের জন্য এই আচার?  আর যার হোক দেবীর  জন্ম কখনোই হতে পারে না।  দেবী স্বয়ং বিশ্বপ্রসবিনী।   আসলে  এই জন্ম  অগ্নির।  কাঠে  অগ্নি  সুপ্ত থাকে তাই তাকে জাগ্রত  করার প্রয়াস।  কারণ  দুর্গাপূজার  সঙ্গে  শরৎকালীন রুদ্রযজ্ঞের সাদৃশ্য আছে।  পরবর্তীকালে দেবী  দুর্গাকে  অগ্নিস্বরুপা  কল্পনা করা হয়েছে।  উদ্দেশ্য   বোধনকে  শাস্ত্রীয় মর্যাদাদান।  তা সত্ত্বেও  এই ব্যাখ্যা  খুব একটা যুক্তিগ্রাহ্য হয় নি।  যদি  দেবতারা  নিদ্রিতই  থাকতেন তবে  কাজাগরী লক্ষ্মী,  দিপান্বিতা শ্যামা ও  জগদ্ধাত্রী পূজায় বোধন করা হয় না কেন সে প্রশ্ন জাগে।  সুতরাং বোধন  যে মূলত লোকাচার  সে স ম্প র্কে  সন্দেহের  অবকাশ  নেই। তবে  মূলের  কারণটি  আজ বিস্মৃত।
চলছে ...

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...