কিছু বই কিছু কথা। নীলাঞ্জন কুমার
নারী । গৌতমকুমার দে । প্রোরেনাটা । কুড়ি টাকা ।
কোন পুরুষ কবি যখন নারীকেন্দ্রিক কবিতা লেখার জন্য তৈরি হন তখন তাঁর কলমে স্বভাবতই শরীরী প্রেম উঠে আসে । একজন পুরুষের কাছে নারী মানে প্রেম, এটাই যেন প্রকৃত সত্য । কিন্তু তা যে আপেক্ষিক সত্য তা তাঁরা বোঝেন না । তাই তাঁরা কিছু আলুলায়িত কবিতার ভেতর দিয়ে ভ্যাদভ্যাদে প্রেমের কবিতা লিখে ফেলেন । তারমধ্যে না থাকে প্রজ্ঞা , না থাকে শ্রদ্ধা । তাই অবলীলায় যখন কবি গৌতমকুমার দে লিখে চলেন: ' শুধু তুমি নাকি অন্য কেউ/ বুকের ভেতর তোলপাড় করে ঢেউ ' ( ' তুমি নারী তাই '), ' আমাদের রজনীগন্ধা শুকিয়েছে ভোরে/ আমাদের ভালোবাসা রাত্রি মনে রাখেনি ( ' অধরা ')যখন তাঁর ' নারী 'কাব্যগ্রন্থ টিতে লেখেন তখন তা প্রেমের কবিতা হতে পারে কিন্তু সম্পূর্ণতঃ নারীগত কি?
একজন পুরুষের যেমন নরীর সঙ্গে শরীরী প্রেম হতে পারে তেমনি কারোর পুরুষ কিংবা ট্রানজেন্ডারের সঙ্গে সেই প্রেম হতে পারে, তার বহু প্রমাণ আছে । তাই ' নারী তুমি পতঙ্গের মতো জ্বলে মরো হলুদ আগুনে ' ( 'ইচ্ছামৃত্যু ') লিখতে গিয়ে একটু ভাবা উচিত ছিল কাব্যগ্রন্থের নাম ' নারী ' । নারীর প্রধান কাজ শুধু কামিনী হওয়া নয় ।
যদিও কবিকে তার কাব্যকৃতির জন্য অস্বীকার করা যায় না । দীর্ঘদিনের কবিতা লেখা এই কবি কবিতার গুণে পরিণত তার প্রমাণ: ' মেয়েরা কবি হলে/ সমস্ত অসুখী বালক হেসে উঠবে হো হো করে । ( ' ভাগ্যিস ')-এর মতো ভালোলাগা উচ্চারণ । কবি যদিও কখনো সখনো অন্যভাবে নারী নিয়ে চিন্তা করেছেন তবু প্রেম অনেক বেশি আটকে থাকে দুই মলাটের ভেতরে । নির্মলেন্দু মন্ডলের প্রচ্ছদ খুবই সাধারণ মানের ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন