কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার
নকশি গল্প । নীলিমা সাহা । কবিতা পাক্ষিক । দশ টাকা।
পোস্টমডার্ন কবিতার চিহ্ন বহনকারী কবিতা এখনো অনেকেই লিখে চলেন, যদিও তা আজকের তরুণ কবিদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে । ' আই যুগ ' আন্দোলনে যেসব কবিতা নিয়ে ভাবনা চলেছে তাতে অনেকেই যে এর বিষোদ্গার করেছেন তার প্রমাণ ও আছে । কিন্তু ২০০২ সালে অর্থাৎ কবি নীলিমা সাহার এই বইটি যখন প্রকাশিত হয়েছিল, তখন পোস্টমডার্ন নিয়ে কবি ও পাঠকদের বিশেষ আকর্ষণ দেখা গিয়েছিল । দীর্ঘ ১৮ বছর পর আবার যখন বইটি পড়ছি তখন বোঝা যায় পোস্টমডার্ন চিহ্নগুলো থেকে কেন আজকের কবিতা বেরিয়ে এসেছে । যাই হোক এই কবি তখন লিখেছিলেন: ' মানব পোশাকে দেখি ভোর ওঠে শূন্যের গভীরতা থেকে ....' ( ' জিরো আওয়ার ' ) 'পূর্ব পশ্চিমের ভিত আগলে তবু আঁকি টেরাকোটা হর্ম্যতল ' (' সার্ভে সংক্রান্ত কিছু তথ্য- ৩')এর মতো লাইন জ্যাক দেরিদা র বিনির্মাণকে সহজভাবে বুঝিয়ে দেয় আর কবি নিজের চেতনার সঙ্গে কবিতা লিখলেও তার ভেতর বিনির্মাণ কৌশল খেলা করে ।
কার্যত এই কবি কবিতা লিখতে এসেছেন, যখন বাংলা কবিতার ক্লিশে অবস্থান থেকে সরে আসার জন্য কিছু কবি প্রচেষ্টা নিচ্ছেন । তাই আলুথালু দেশ- এর অহংকারী ঠোঁট তবু বেসুরো হতে দেয় না । ' ( ' আলো ও সুর বিষয়ক কবিতা '), ' ক্লান্ত চোখের পাতার তবু অপেক্ষা যদি কেউ নয়নে চুম্বক রেখে/ স্বপ্ন বুনতে আসে ।' ( ' ক্লান্ত চোখের পাতা ' ) পংক্তির ভেতরে কবির সে সম্ভাবনা প্রকাশ পায় , তবে নয়নের মতো শব্দের ব্যবহার নিয়ে একটু ভাবনার দরকার ছিল ।
কবি অবশ্যই তাঁর মতো করে কবিতা লেখার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু তার ভেতরে অতৃপ্তি আছে । আজও তিনি লিখছেন, অবশ্যই ভালো । রজতেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের প্রচ্ছদ বিমূর্ত মেজাজে কবিতার দিকগুলোর কথা চিহ্নিত করে। যদিও অপূর্ণতা রয়ে গেছে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন