কিছু বই কিছু কথা ২৩৬ । নীলাঞ্জন কুমার
অনন্তজাতক । সোমক দাস । অমৃতলোক সাহিত্য পরিষদ । আঠারো টাকা ।
একুশ বছর আগে ' অনন্তজাতক ' কাব্যগ্রন্থের কবি সোমক দাস খোলামনে কিছু কথা বলতে চেয়েছেন, যা প্রকৃতার্থে কবিতায় রূপান্তরিত হয়েছে । সোমক সেই কবি যিনি শুধুমাত্র কথার ছলে কথা বলেন না । সোজাসাপ্টা একেবারে ' বাপি বাড়ি যা ' মার্কা শটে বল বাউন্ডারি পাঠাতে পারেন। যেমন : ' মানুষ নামের এই কিছুটা জন্তুর জন্য কি কবিতা/ লিখে যাবে তুমি? ' ( ' অবাস্তব- ২') , ' শুধু কবিতা বোঝানোর জন্য কত অধ্যাপক মাইনে পায়/ কবিতা ছাপবে বলে সম্পাদক কি যে পায় । ' ( ' অবাস্তব ') এর মতো কবিতা ।
এই ' কেয়ার করি না ' গোছের কবিতা লিখতে লিখতে কিছু পাঠকের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে গেছেনখ কবি সোমক । তাছাড়া তিনি অন্যভাবেও কথা বলতে পারেন, যেমন : ' যদি কেউ কাছে ডেকে কথা বলে স্বভাববশতঃ/ হাওয়া এসে বলবে তাকে : যাও ফিরে গাঢ় অবকাশে । ' ( ' পতনের পর ') সোমক দারুণভাবে কত স্বাভাবিক কথা বলে চলেন তা অনেককেই বেশ ঈর্ষান্বিত করে তুলতেই পারে তার উদাহরণ কাব্যগ্রন্থে অনেক ছড়ানো আছে । পাশাপাশি তাঁকে গোছানো শব্দের কথাও বলতে দেখি : ' খুলে রাখতে বলে পরিচ্ছদ । বলে/ উপকূলে নয়, অন্তত জানুসিক্ত অন্ধকারে এসো । ( ' সমুদ্রকে ' ) - র সঙ্গে শব্দপ্রেমকে প্রদক্ষিন করতে ইচ্ছে হয় ।
কবি এখনো লিখে চলেছেন দারুণভাবে । তাঁর আরো কাব্যগ্রন্থ পড়ে বুঝি, তিনি সত্যের সঙ্গে আছেন , অন্তত কবিতার ক্ষেত্রে তো বটেই । ঋতব্রত জোয়ারদারের প্রচ্ছদে চিন্তা আছে । ভালো লাগে পরিমিতি বোধ ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন