ডোবা-ভাসা জলপিপি
উমাপদ কর
২
দু-দিকেই কাটে
দু-পাশেই রক্তে্র ছানা
ঘাসে, মাসে, সুতোয়
এমনকি চল-চল জলজীবনে
ফিনকি, মগ্নতা থেকে
কোলাহল থেকে ঘামতেল
প্লাজমা প্লাজমা…
কাটে, ছানা্র বুদ্বুদ্
কাটে, ফিনকি ঘোড়ার শফ
ধুলো ধ্বনি উড়তে উড়তে
কিছুটা সময় গিলে ফেলে…
কাটা থেকে রক্ত নয়, ঝরে পড়ে বেদানার রস
হুররে বলে যাকে নিলামে তুলে দেওয়া যায় না
৩
ভাসলে, ডুবে যাওয়ার ভয়কে নিয়ে দাবা খেলে খচ্চর
মুখে কাপড় সেঁটে গাধা
চাইছে আস্তাবলের ঘোড়াদের ধাড়াক্কা
কলম কি আরও নেবে দায়ভার বন্ধকির
কী দিয়েছ? একটা বোতামে টিপ। হুররে…
ফেরাতে গেলে দাবার ঘুঁটি
চালতে চালতে হাতের কালি চামড়া সমেত উধাও
নাঙ্গা রাজাকে রাজা, আর ডানপাশে বসা নুড-কুইনকে
কুইন ভাবতে ভাবতে চালখারাবি
বোড়ে কোথায়, বোড়ে!
ডুবলে ভাসার কথা ভাবা যেতেই পারে, ঘোড়া
টগবগটাকে ঝালিয়ে নেওয়ার এই তো মোসম
গাধা সংগমে খচ্চর অনেক তো হলো কেশর ঝলকে
দৌড়ে যা আস্তাবলে, রাজার কাপড়
আর কুইনের তাজ ধরে দে টান
খসে পড়ুক, পড়ুক কাদায়, তোর পেচ্ছাপে
৪
খুঁড়িয়ে চলা রাস্তা
সেফটিপিন লাগানো চপ্পলে পা গলিয়েছে
ইস্! বললে হেসে ওঠে রক,
ধোঁয়া, গাঁজা-সিগারেট
ঘোড়ার নাল পড়ে আছে এবড়োখেবড়োয়
এক্কাগাড়ি কোমায় গেছে বহুদিন
হাসপাতাল দূর থেকে আরও দূরের দিকে
দিগন্ত যেখান স্ট্রেচারের ভাঙা পা নিয়ে বেঁকেছে
হা-ডু-ডু খেলা বালিকার উনযোনি যোনি হবে
চুন-তামাক তেলোয় ঘষে মুখে পুরে দেওয়া লুঙ্গি
হাসি-খিল্লিতে এবারে ঠিক করে দেবে
বুক-কুঁড়ি আর রতিগৃহের আকার, শ্বাসরোধ
তাসপেটানো অ্যাম্বুলেন্স ওই এলো এলো
কেঁদো না বস্তি, কেঁদো না ছাপড়ার পুঁইডগা
কুঁজোর পিঠে চেপে খোলসে ঢুকে যাবে অচৈতন্য
কালো চাপকানে রামনাম লেখা…
পুড়তে চাইছে মোমগুলোতে যে হাত
মাচিস ধরাবে
নুলো পা তাকে আর কতদূর নিয়ে যাবে!
সেই তো জলকে জল বলি, আগুনকে বলি পোড়াও, পুড়তে পুড়তে…
৫
জ্বালানির দিকে তাকিয়ে দেখি বেশি আর নেই
ফুঁ দিলে শুধুই ধোঁয়া
অলস চাল ভাত হবে তো!
চোঙায় বারুদঠাসা শিশিরে ভিজে কেলিয়েছে
শলাইয়ের হরিণ স্থির
গোটা দিনের রোদ তাকে ছোটাবে কি!
পোকারা বেরিয়ে আসছে লাখে লাখে
হাইতোলা রেখে পতাকা ধরেছে হাতে
জাঠায় যেতে যেতে কী স্লোগান কী স্লোগান!
অসিদ্ধ চালের দিকে একটা চোখ রেখে বাকিটা ওদের দিকে
উচ্চারণে মিলুক না-মিলুক পোকাদের পায়ে পায়ে
ভাত পর্যন্ত জ্বালানির কাজ হয়তো সারবে অশুদ্ধ উচ্চারণ, প্রমিস!
প্রমিস।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন