বুড়ো শিকড়ের আত্মকথন
রাহুল গঙ্গোপাধ্যায়
২
ধুপধাপ শব্দে ঘুম ভেঙে যায় তার।হয়তো তার অংশ থেকে, তারই মতো আরেকবার ভ্রূণ তৈরি করার প্রস্তুতি।ভ্রূণ কিভাবে সৃষ্টি হয়? সৃষ্টিশীল সৃজনশক্তি ছাড়া ভ্রূণ একথা জানেনা।ভ্রূণ ক্রমশঃ সময়ের সাথে বিক্রিয়াকারী জারন ফসলে, এক আগামীর রূপক শিকড়।জটিলতা বাড়ে তখনই, যখন সে ভাবে ~ কেনোই বা এতোসব ভাবছে সে।কিন্তু ছেদচিহ্ন ওই ধুপধাপ চারপেয়ে শব্দগুলো।এতদিন, সে দেখে এসেছে জল → জলতরী ← তড়িৎ → তড়িৎকোষ → কোষীয় → কোষীজনন → অববাহিকা → অ্যামাইনো অ্যাসিড → অ্যামিবা → সরীসৃপ → উভচর।কিন্তু চারপেয়ে?নিরামিষ ও মাংসাশী যতদিন ছিল, সে শুধু সাক্ষ্য দিয়ে গেছে খাদ্যচক্রের, কিন্তু খাদ্যচক্রের দশাও কি পাল্টায়?সে উত্তর খুঁজতে খুঁজতে আরো উঁচু হয়, চেষ্টা করে আস্ত একটা পাহাড় প্রসব করার।কিন্তু সূর্যপিরামিড, সেই ডানা, সেই মেঘছানা, শীতশীত টুপটাপ ~ এরা মানবে কেন।সে সংযত হতে শেখে, আর তখনই তার ফুসফুসে ঢুকে পড়ে নিষিদ্ধ নিষেকের তরল "যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই।রাগ নয়, ভালোবাসা চাই"।সে তখনও শেখে নি ভালোবাসার শব্দগুলো ঠিক কিরকম ও কি কি?
যখন বুঝতে পারে, তখন চারপেয়েরা তার আশেপাশে পরস্পর ভালোবাসায় মত্ত।তারা বসত চায়, সে আশ্রয় দেয়।এই গ্রহে, এটাই হয়তো সেই প্রকৃত মহৎ কাজ।চারপেয়ে ছানাগুলোকে, সে হাত বাড়িয়ে মেঘ পেড়ে দেয়।কখনো জল দেয়, আলো ও আগুনকে নিয়ন্ত্রণ করে, নদীকে বলে ঝর্ণা হয়ে রঙিন ম্যাজিক দেখাতে।বাছা আমার সাত রাজার ধন, এক মাণিক / আয় সোনা কোলে আয় ~ কোলে থেকেই তুই বড়ো হয়ে ওঠ, রোদছায়ার জাদুকর হ।
@
সময়-পথিক হাঁটতে থাকে, পক্ষীরাজ চড়ে পাখপাখালি পাল্কিপালক, গল্পদাদুর ঘরে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন