কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার
মানচিত্র ছিঁড়ে মধুমাস । অমিত কাশ্যপ । সারঙ্গ প্রকাশনী । পন্ঞ্চাশ টাকা ।
কখনো কখনো কোনো কোনো কবির কবিতায় অমোঘ ব্যন্জ্ঞনা উঠে আসে অজান্তে । সে ব্যন্জ্ঞনার ভেতরে জড়িয়ে থাকে অবধারিতভাবে কবিতা , তখন সে স্বাদ অত্যন্ত স্বাদু হয়ে ওঠে ভাবনায় মননে ও চেতনায় । কবি অমিত কাশ্যপের কবিতার সিগনেচার তেমনই, যেমন: ' ঘর রূপ নিতে থাকে অখন্ডমন্ডলাকার/ ঈশ্বর ঘুরে চলেন সাবলীল ' ( ' ঘুম- ৪), ' আমি রাই, ও কালা/ ও আর বাঁশি বাজায় না/ মোবাইলে ডেকে নেয় '। ( ' জল বিলাশ - ১৩') ।
কবির কবিতা দীর্ঘ দিন ধরে পড়ে চলার কল্যাণে বুঝতে পারি তাঁর ধীরে ধীরে কবিতার ভেতরে ঢুকে পড়ার গতিপ্রকৃতি । তাঁর কবিতা লেখার অনবরত অভ্যেসের কারণে যে কবিতার জন্য অনিবার্য তাগিদ ফুটে ওঠে তার যদি সুদিকটি দেখি তবে বুঝে নেব সেই কারণেই তিনি প্রাণবন্ত ও গতিশীল । ফলে সচেতন ভাবে কবিতায় কুশলী পরিবর্তন করতে পারেন , মোচড় দিতে পারেন ইচ্ছেমতো ।
কবির ' মানচিত্র ছিঁড়ে মধুমাস ' কার্যত সেই অভ্যেসের ফসল । তাঁর কবিতা জোর করে বুঝতে হয় না, আপনিই অনুরণিত হয় । তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ: ' হাত বাধ্য থাকলেও শরীর নয়/ শরীর ছুঁয়ে যায় কৃষ্ণ গহ্বর থেকে সমুদ্র মন্থন ' ( ' শরীর- ৪' ) , বিশ্বাসী শহর/ হাতে হাতে মানববন্ধনের ইস্তাহার ছড়িয়ে যাচ্ছে । ' ( ' ক্যানভাস- ৪')। না, কিছুতেই প্রচ্ছদকার সৈকত নায়ককে প্রশংসা করা গেল না প্রচ্ছদকর্মের জন্য । কাব্যগ্রন্থের ইমেজ টেনে আনে না ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন