কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার
সম্পর্ক । কুমারেশ চক্রবর্তী । দি সী বুক এজেন্সি । আশি টাকা ।
সম্পর্কের আসল রূপ সোজাসুজি তুলে ধরতে গিয়ে যখন কবি কুমারেশ চক্রবর্তী তাঁর ' সম্পর্ক' কাব্যগ্রন্থের সম্পর্ক কবিতায় লেখেন : ' সম্পর্ক- /হাঁটু জলে কাদায় ঘুমহারা, এক বিপন্ন ভগীরথ- /শেকড়ের প্রত্ন ধুয়ে পুঁছে বহতা গঙ্গার মতো তাকে/ সর্বজনীন করে রাখে ....' তখন বোঝা যায় কুমারেশের ভেতরে সম্পর্কগত সুতীব্র চিন্তার দিকগুলি । যার বিস্তার তিনি করে গেছেন এই চার ফর্মার কাব্যগ্রন্থে। এই বিস্তারে ডানা মেলে তার প্রতিবাদ, প্রেম, জীবন চর্যা ইত্যাদি । তাই পেয়ে যাই:
' ডান বাম সবই সুযোগ সুবিধে মতো কিছু থামিয়ে রেখেছে/ কিছু ক্ষেপিয়েও দিচ্ছে লিফলেটে, ভোটের ময়দানে- / স্রেফ দলের স্বার্থে ....' ( ' বৃষ্টি ' ), ' নিরপেক্ষ বলে কিছু নেই, হয়ও না - / কেউই নিরপেক্ষ নয়, / তোমাকে মৃত্যুর দলে, অথবা জীবনের দিকে/ চলে যেতেই হবে ...' ( ' নিরপেক্ষতা ' ) , ' নিরীহ পাখিদের ডানার ভেতরে আগুন! / বিশ্বাস করো কেউ আত্মহত্যা করবে না- / যুদ্ধ করবে ....' ( 'রণক্ষেত্রে' ) এর মতো পংক্তিগুলোতে । কবিকে পড়ে নিতে অসুবিধে হয় না তাঁর সহজতার গুণে ।
অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ থেকে এই কাব্যগ্রন্থে কাব্যভাষার দিক থেকে না পাল্টানোর কারণে কিছুটা হলেও তা প্যাটার্নে পরিণত হয়েছে। মনে করি নতুন কাব্যগ্রন্থে পুরনো কাব্যগ্রন্থে কিছু আলাদা আশা করা অন্যায় নয় । তবু মাঠে মারা যায় না তাঁর অসাধারণ পংক্তিগুলি: ' পিপাসা নেই, ক্ষিদে নেই, জানার ইচ্ছে নেই- / স্বপাকে নিজের মাংস ভোজনই কেবল সুস্বাদু বলে মনে হয় ।'( সময়) ' অতএব আত্মার কাছে নয়, কবিতার কাছে অন্তত কিছুটা সৎ হতে চেয়ে/ আজকের প্রথম প্রভাতে নিজেকে ধুয়ে কেচে পরিস্কার করে নিলাম....' ( প্রতিবেশী ')।
কুমারেশ নিঃস্বার্থভাবে কবিতায় আছেন বলে তিনি আজও কবিতায় সজীব ।এ সজীবতা প্রতিটি কবির কাম্য । পলাশ পালের প্রচ্ছদ রেখাপাত করে না ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন