কামিনীকেতন
দেবাশিষ সরখেল
কাজলকৃষ্ণকে কেষ্টঠাকুর বলেও চালিয়ে দেওয়া যায়।
তবে তার সাথেদ ললিতা, বিশাখা, ইন্দুলেখা। সুদেবী, তুঙ্গা কেউ নেই। ঈষিতা বলে, মনে রেখো আমি তোমার বিবাহিত স্ত্রী, শ্রীরাধা নই। সে এক টিয়ারাজাকে খাঁচায় রেখেছে। মাঝে-মধ্যে নীলাকাশে হারিয়ে গেলেও আবার শূন্য খাঁচায় ফিরে আসে।
মাদী ছাগলটাও তিনখানা বাচ্চা দিয়েছে।
তবু ঈষিতা বায়না ধরে, একখানা পুরুষ ছাগল নিয়ে এসো, এর যা গায়ের গন্ধ বাড়িতে টিকে থাকা দায়।
কাজল বলে, শিঙ দিয়ে ঢুঁ মারলে বাপের নাম ভুলে যাবে।
ঈষিতা রেগে যায়। যেমনি কথার ছিরি, তেমনি লাইফ স্টাইল। এনিম্যাল ফার্মের ম্যানেজার একটা।
মাদী কুকুরটা মাঝে মাঝে বিছানায় শুয়ে পড়ে। চোখ মুখ লাল হয়ে যায় ঈষিতার।
বলে, এদের নিয়েই তো দিব্যি থাকতে পারতে, কেন খামোখা আমায় শাঁখা – সিঁদুর দিয়ে আনতে গেলে।
মাদী কুকুরটা বাচ্চা পাড়লো চারখানা। তাদের ছেঁড়াকম্বল, সেঁক তাপ দেখে গা - পিত্তি জ্বলে যায়।
আবার নোংরাটাকে বিছানায় তুলে আদর। ছ্যা ছ্যা।
এক লাঠি দিতেই ঝাঁঝিয়ে উঠলো। ঈষিতার স্তনে ঊরুসাজিতে সজোরে কামড়।
শুশ্রুষায় ঝাঁপিয়ে পড়লো কাজলকৃষ্ণ। বল্লে, কোনো ভয় নেই ডার্লিং। ওকে ইনজেকশন দেওয়া আছে। কোনো ক্ষতি হবে না তোমার।
বাচ্চাগুলো একটু বড় হোক তাড়িয়ে দেবো।
এদিকে স্নানঘরে, জলের গেলাসে হঠাৎ হঠাৎ মাদীকুকুরটার বাচ্চাগুলোকে দেখে আঁতকে ওঠে ঈষিকা।
কামিনীকেতন শোক ও সন্তাপের ছায়ায় ভারী হয়ে রইলো কয়েকমাস।
ঈষিকা চলে যাওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই অর্ধোন্মাদ কাজলকৃষ্ণ মাদীকুকুরটাকেও খুন করলো। তাকেও সিঁদুর – আলতা পরিয়ে ঈষিতার পাশেই দাহ করে এলো। সে এখন তিনখানা সারমেয় সন্তানের পিতা।
এখন মাদী খরিস, ঢেমনা, হরিণী দুখানা ময়ূরী সহ বহু কামবাহিত কামিনীরা কাজলকৃষ্ণকে ভীড় করে পরমার্থ খুঁজে বেড়ায়।
যে কেউ ভিজিট করতে পারেন।
প্রতিদিন মনময়ূরের অচিনপাখি সংগ্রহ শালার বাঁদিকে কামিনীকেতন। প্রত্যহ বিকেল তিনটে থেকে পাঁচটা খোলা। রবিবার রেষ্ট ডে।
দেবাশিস সরখেল *** রঘুনাথপুর *** পুরুলিয়া (পশ্চিমবঙ্গ), সূচক – ৭২৩১৩৩
ফোন – ৯৯৩২৬৬৭৮৮১
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন