শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আটপৌরে ৩৫৭|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 357, by Sudip Biswas

 আটপৌরে ৩৫৭|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 357, by Sudip Biswas




৩৫৭.

মৃত্যুকবচ


অখণ্ড। মানবসত্তা। ততই। 


মরণশীল 


মানবিকতা বিবর্জিত মানুষের অবধি।

শব্দব্রাউজ ৬১০ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-610, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ ৬১০ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-610, Nilanjan Kumar



শব্দব্রাউজ- ৬১০ ।। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা । ২৯। ৯। ২২। সকাল- ৭ টা ৪০ মিনিট ।



শব্দসূত্র: প্রশ্ন করো না



কোন প্রশ্ন নয়

শুধু স্তব্ধতার মাঝে

নিজেকে খোঁজ ।



দ্বন্দ্বের কোন ব্যাখ্যা হয় না

সুতরাং

বোধের প্রাচুর্যে মেশো ।



না,গড়লাম উল্টো পথ

তাতে নতুনত্ব

জেগে উঠলো ।

বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আটপৌরে ৩৫৬|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 356, by Sudip Biswas

 আটপৌরে ৩৫৬|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 356, by Sudip Biswas




৩৫৬.

মোমবাতি 


মৃত্যুর। উলটপালট। অভিযোগ। 


প্লাবক 


নেমেছেন সমবেত শক্তির সন্ধ্যায়

শব্দব্রাউজ ৬০৯ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-609, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ ৬০৯ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-609, Nilanjan Kumar



শব্দব্রাউজ- ৬০৯ ।। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা । ২৮। ৯। ২০২২। সকাল আটটা পঁয়তাল্লিশ মিনিট ।



শব্দসূত্র: আকাশ তো বড়



আকাশ ডাকলে

মন খারাপ উধাও ।

বাতাস ডাকলে

নীরবে তাকে মাখি ।

স্বপ্ন ভাঙলে ছুটে আসে

কলুষ বাস্তব ।


তবু আকাশ তো আমাকে

ছাড়ে না ।

সারাদিন

শব্দসন্ধান ছোটায় ছোটায় ।


বড় জীবনের প্রত্যাশার

স্বাদ স্বাদু,

শুধু ধরা কঠিন ।

বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আটপৌরে ৩৫৫|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 355, by Sudip Biswas

 আটপৌরে ৩৫৫|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 355, by Sudip Biswas




৩৫৫.

প্রলেপ 


সোহাগের। পুরাতন। রতিপ্রাসাদ। 


রাখঢাকহীন


তীব্রতা জীবন আনন্দ গান।

শব্দব্রাউজ ৬০৮ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-608, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ ৬০৮ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-608, Nilanjan Kumar



শব্দব্রাউজ- ৬০৮ ।। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা । ২৭। ৯। ২০২২। সকাল ৭টা ৪৫ মিনিট ।



শব্দসূত্র: লগন বয়ে যায়



লগনে আছে শুভ

তাই

অমৃতযোগে গা ভাসাই ।



বয়ে বয়ে নিয়ে যাই

দিনরাত

কোথাও কোন ভার

মনে হয় না ।


যাবে বলে আসোনি

তবু

যেতে হয়


স্বাভাবিক তালে ।


মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

শব্দব্রাউজ ৬০৭ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-607, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ ৬০৭ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-607, Nilanjan Kumar



শব্দব্রাউজ- ৬০৭ ।। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা । ২৬। ৯। ২২। সকাল সাড়ে আটটা ।



শব্দসূত্র: যেমন বেণী তেমনি রবে


১। যেমন বেণী বাস্তবে

      থাকে না ।

      অধ্যাত্ম কি বাস্তবের বাইরে?


২। বেণী তে জল দিলে

       চুল ভেজে,

       তখন অনেক সাজগোজ!

     

        তখন বাস্তব ।


৩। বেণী বাঁধতে তেমন তেমন

       সময় দিতে হয়,

      যদি বাঁধন অজানা থাকে ।


৪। রইবে জগৎ রটবে পরিবেশ

       সুতরাং

       বেণী বাঁধলেও কি না বাঁধলেও কি!

আটপৌরে ৩৫৪|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 354, by Sudip Biswas

 আটপৌরে ৩৫৪|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 354, by Sudip Biswas





৩৫৪.

অধোরোষ্ঠ


ভিজিটিং-কার্ড। মুখোমুখি। নষ্টালজিক। 


মেঘস্বর 


সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ে মৎস্য মিথুন।

সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

কিছু বই কিছু কথা- ৩০২। নীলাঞ্জন কুমার শ্মশান দশমী । কৌশিক মিত্র । Koushik Mitra

কিছু বই কিছু কথা- ৩০২। নীলাঞ্জন কুমার




শ্মশান দশমী । কৌশিক মিত্র । ভাষালিপি,  কলকাতা- ৯। চল্লিশ টাকা ।


অতি সম্প্রতি প্রয়াত কবি কৌশিক মিত্র বলা যায় অকালে চলে গেলেন । মৃত্যুর আগে তিনি চারটি কাব্যগ্রন্থ লিখে গেছেন । ' শ্মশান দশমী ' তাঁর প্রয়ানের পর তাঁর স্মরণসভায় এই  ক্ষীণতনু কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয় । যার ভেতর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পংক্তি মগ্ন হওয়ার মতো । যেমন:  ' শোকজ্ঞাপনের কোন ভাষা আছে?  /  কোন দৃঢ়তা অটুট হয়ে থাকে? / দূর আকাশের কোনো পাখির উজানে?  ( ' তাপ') যা টাটকা শোককে জাগিয়ে তোলে ।
       সুনির্বাচিত এই কাব্য পুস্তিকায় ছড়িয়ে আছে সেই সব শব্দসমষ্টি যা অনেকাংশে আবেগী করে তোলে । যেমন ' যম' কবিতায় তিনি লিখেছেন:  ' এত যে আঁচলে  গিঁট,  রূপোর কেটলি আর সোনার চুড়িটি/  সব তাসের ঘরের মতো ভেঙে যেতে পারে । মনে হয় রোদ আর ছায়া/  সব শেষ হয়ে এলো/  এখন সন্ধ্যাকাল । '
        পুস্তিকার ১৫ টি কবিতার ভেতর পেয়ে যাই বেশির ভাগটাই মৃত্যুগন্ধ । ঘ্রাণ নিতে কষ্ট হয় । যেমন:  ' যখন একটা হু হু করা গঙ্গার পাড় ঝিম মেরে বসে থাকা শববাহকদের সাথে গভীর অন্ধকার চোরপুলিশ খেলে ।'( ' শ্মশান দশমী ')পাশাপাশি  তার বিপরীত দিকটিও আছে যা অনেক কম : ' খাঁচায় বন্দী এক বাঘিনীর বিষণ্ণ হুঙ্কারের কাছে পরাস্ত হয়েছিল আমার কৈশোর ।'('গারদ'), খুন্তির গুণে সব জল আলু মিলে মিশে থাক/  কিছুটা মাখনও তাতে নামানোর আগে যেন ফেলে দিও/ তবে লঙ্কার গুঁড়ো ঢালা বন্ধ করো না ।'
           সন্ঞ্জীব চৌধুরীর অতি সাদাসিধে প্রচ্ছদে এই 'শ্মশান দশমী ' যেন কবির মৃত্যু উপহার । পাঠকের জন্য । মানুষের জন্য । নিঃস্ব হওয়ার জন্য ।



আটপৌরে ৩৫৩|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 353, by Sudip Biswas

 আটপৌরে ৩৫৩|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 353, by Sudip Biswas





৩৫৩.


বরদাতা 


রিপুসুদন।রূপকথার। নিরংশ। 


ঘনান্ধকার


মাতৃগর্ভে সৃজনের করে আয়োজন।

শব্দব্রাউজ ৬০৬ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-606, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ ৬০৬ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-606, Nilanjan Kumar



শব্দব্রাউজ- ৬০৬ ।। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা । ২৫।৯। ২২। সকাল আটটা ।



শব্দসূত্র: পুণ্যতা মাখা দিন



পুণ্যতার সামনে তুচ্ছ

অশুদ্ধ, 

আয় স্বাদু দিন ।


শান্তি মাখা জীবন

এই সকালে, 

আরো হাজার মনের

মাধুরী মেশায় ।


বীরেন্দ্রকৃষ্ণর চণ্ডীপাঠ

দিনের রূপরেখা

বদলায় ।


প্রাণবন্ত হয়ে উঠি ।


রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

পাখিদের পাড়া পড়শি ।। পঙ্কজ গোবিন্দ মেধি ।। মূল অসমিয়া থেকে বাংলা অনুবাদ-বাসুদেব দাস, ।। Pankaj Gobinda Medhi, Pakhider para porshi

পাখিদের পাড়া পড়শি

পঙ্কজ গোবিন্দ মেধি   

মূল অসমিয়া থেকে বাংলা অনুবাদ-বাসুদেব দাস,  


Pankaj Gobinda Medhi, Pakhider para porshi



দ্বিতীয় অধ্যায়, 

(ছয়)

গাছ থেকে খসে পড়া শিশিরের ফোঁটার শব্দে পর্যটন নিবাসের ঘরটা ঝকঝকে সকালেই জেগে উঠল।

শীতের কুয়াশা চারপাশে ঘিরে রেখেছে। ঘরের দরজাটা খুলে দেবার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশার রাশি রাশি ধোঁয়া ঘরটিতে হুড়মুড় করে ঢুকে পড়ল। যেন উদয়শঙ্করের পুরোনো পরিচিত অতিথি। ঠান্ডা হলেও নিত্যকর্ম সমাধা করতেই হবে। কুয়াশা ভেদ করে সে পুকুরের পারে গেল। পুকুরের জলের ওপরেও কুয়াশার আচ্ছাদন। শরীর জলের স্পর্শের নামে শুনতে চায় না। বাইরে নিয়ে যাওয়া বালতিটা এনে পুকুরের জলে ডুবানো নিষেধ । যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তত তাড়াতাড়ি করে সে বাড়ির দিকে ফিরে চলল।

ফ্লাস্কে গরম জল ভরা আছে।গরম জলে মুখটা কুলকুলি করে সে কিছুটা আরাম পেল। উদয় শঙ্কর অনুভব করল হঠাৎ তার শরীরটা বেশি ঠান্ডা হয়ে পড়েছে । সে শরীরটাকে উষ্ণতা দানের জন্য পুনরায় কম্বলের ভেতরে ঢুকল। কিছুক্ষণের মধ্যেই শরীর গরম হয়ে উঠল। ফ্লাক্সের গরম জলে করা এক কাপ চা খেয়ে সে বিলম্ব না করে হাড়গিলার বাসস্থানের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ল।

বনভোজ খাবার সুবিধা করে রাখা থানের খোলা মাঠের মধ্য দিয়ে সে হাঁটতে লাগল। মাঠের ছোটো ছোটো ঘাসগুলি শিশিরে ভিজে নতুন প্রাণ পেয়েছে। উদয় শঙ্করের জুতো জোড়া ভিজে সেখানে শুকনো ঘাস বন লেপ্টে রয়েছে। সেসবের প্রতি উদয়শঙ্করের ভ্রুক্ষেপ নেই।

মুক্ত মাঠটা পার হয়ে মানুষ আসা যাওয়া করার সময় সৃষ্টি হওয়া ছোটো পথটি ধরে সে এগিয়ে চলেছে। রাস্তাটাকে ঘিরে ধরে জার্মানি বনগুলি সরানোর চেষ্টা না করে তার নিচ দিয়ে একাত সেকাত হয়ে উদয়শঙ্কর এগিয়ে চলেছে । সেইসব সরানোর চেষ্টা করা মানে শিশির অযথা ভিজিয়ে ফেলা। তার মধ্যে দুই একটি জার্মান বনে মাথাটা ধাক্কা খাওয়ায় খসে পরা শিশির উদয়শঙ্করকে ভেজাতে ভোলেনি। ছোটো পথটি দিয়ে কিছুটা এগিয়ে গিয়ে উদয়শঙ্কর ডানদিকে কিছুটা খালি জায়গা দেখতে পেল। খোলা জায়গাটার বাঁ পাশে গভীর অরণ্য। এই অরণ্যের একপাশ জলাশয়ে আর অন্য দিক নদীতে বিস্তৃত হয়ে আছে।

মুক্ত জায়গাটিতে উদয়শঙ্কর ভাত খাওয়া অবস্থায় পড়ে থাকা একটা জন্তুর শবদেহ দেখতে পেল। উৎসুকতা নিবারণ করার জন্য সেটা কী জন্তু দেখার জন্য উদয়শঙ্কর এগিয়ে গেল। সে দেখতে পেল জন্তুটা একটি পূর্ণবয়স্ক প্রাপ্ত ছাগলী। মুক্ত মাঠে চড়তে এসে এখানে পৌঁছে শিয়ালের শিকার হয়েছে। ছাগলীটির অর্ধেক অংশ ভক্ষণ করা থেকে অনুমান করা যায় ছাগলীটির শিয়ালের ঝাঁকের পরিবর্তে একটি বা দুটি শিয়ালের আক্রমণের বলি হয়েছে । নিশ্চিত যে রাতের দিকে ছাগলীটির বাকি অংশ খাবার জন্য শিয়াল গুলি পুনরায় এখানে আসবে ।

শিশিরের প্রকোপ বেশি না হলে উদয়শঙ্কর অরণ‍্যের মধ্য দিয়ে সোজাসুজি জলাশয়ে চলে যেত। অযথা ভেজার ইচ্ছা না থাকায় উদয়শঙ্কর কিছুটা ঘুরে ফিরে মরে পড়ে থাকা শিশু গাছটার গোড়ায় এসে পৌঁছালো। সাধারণত সে যে জায়গাটিতে মহা আয়াসের সঙ্গে বসে সেই জায়গায় অন্ধকারের মধ্যেই আগামী রাতের শিশির তখনও পড়ছে। রাতের শিশিরকে সরিয়ে বসার জন্য উদয়শঙ্কর ব‍্যাগ থেকে একটা প্লাস্টিক বের করে নিয়ে প্রাকৃতিক চেয়ারটিতে বসে পড়ল।

উদয়শঙ্কর সামনের উঁচু শিমুল গাছটার দিকে তাকাল। গাছটার ওপরের অংশ গাঢ় কুয়াশার মধ্যে ডুবে আছে। ডালে বসে থাকা হাড়গিলা চারটা অস্ফুটভাবে উদয় শঙ্করের চোখে পড়ল। লম্বা লম্বা ঠ্যাং দুটির উপর ভর দিয়ে হাড়গিলাগুলি স্থির হয়ে গাছের ডালে বসে আছে। সাধারণত পাখিদের গাছের ডালে বসে থাকা বলা হয়, দাঁড়িয়ে থাকা বলা হয় না। হাড়গিলা তার ঠেংগুলি ভাঁজ করতে পারে না বলে ডানায় মাথা গুঁজে দাঁড়িয়ে থেকে ঘুমোয়।

ফিরফির করে বইতে থাক ঠান্ডা বাতাস উদয়শঙ্করের হাড় পর্যন্ত কাঁপিয়ে দিল। ঠান্ডা থেকে পরিত্রাণ লাভের উপায় হিসেবে উদয়শঙ্কর গুটি-সুটি হয়ে নিজের ভেতরে ঢুকে যাওয়ার মতো হল। তার থেকে কিছুটা দূরে একটা গাছের শুকনো ডালে বসে একটা পেঁচা কিচিরমিচির করে চিৎকার শুরু করেছে। সকালবেলা এবং সন্ধ্যের সময় এভাবে চেঁচামেচি করাতো এই পাখিটার বৈশিষ্ট্য। ইংরেজিতে ব্ল্যাক ড্রোংগো বলে সম্বোধন করা পাখিটার বৈজ্ঞানিক নাম ডিক্রুরাছ মেক্রোচিরাছ। সামনে মানুষ দেখতে পেলেও পরোয়া না করে চিৎকার করতে থাকা পাখির প্রজাতির এই সদস্যকেও উদয়শঙ্কর পরোয়া করেনি। এভাবে চিৎকার করতে করতে পাখিটা মাঝেমধ্যে শূন্যে উড়ে যায় এবং পুনরায় এসে ডালটিতে বসে। উদয়শঙ্কর পাখিটা খেলতে থাকা সকালের খেলাটা আনন্দের সঙ্গে উপভোগ করতে লাগল।

বসে থাকা ডালটার চারপাশ থেকে কুয়াশার ঘন আচ্ছাদন ধীরে ধীরে সরে যাওয়ায় পাখি গুলিকে স্পষ্ট করে দেখতে পেল উদয়শঙ্কর। সে এক দৃষ্টে তাকিয়ে থাকার মধ্যে একটা পাখি বিস্তৃতভাবে ডানা মেলে জলাশয়টির ওপর দিয়ে উড়ে গেল। উচু একটা ছাতিম গাছের আড়াল নিয়ে উড়ে যাবার জন্য হাড়গিলাটা কোন দিকে গেল উদয় শঙ্কর বুঝতে পারল না। পাখিটা উদয়শঙ্করের দৃষ্টির আড়াল হওয়ার কিছুক্ষণ পরে একটি একটি করে বাকি পাখিগুলিও একই দিকে উড়ে গেল। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওদের একমাত্র লক্ষ্য আহারের সন্ধান।

হাড়গিলার ঝাঁকটা উড়ে যাওয়ার পরে উদয়শঙ্কর সেই জায়গাতেই বসে রইল। একটা মাছরাঙ্গা পাখি তার অগতানুগতিক চিৎকারের সঙ্গে এসে জলাশয়ের জলের মধ্য দিয়ে আকাশের দিকে বেরিয়ে থাকা শিশুর একটা শীর্ণ ডালে বসল। ডালটাতে বসে পাখিটা কিছুক্ষণ নীরব হয়ে রইল। তারপর সেই চিৎকারের পুনরাবৃত্তি করে পাখিটা অরন্যের মধ্যে ঢুকে পড়ল। পাখিটার ঠোঁটটা লাল। দেখতে হারগিলার ঠোঁটের মত বলে ইংরেজিতে পাখিটিকে স্টক বিল্ড কিংফিশার বলা হয়। বৈজ্ঞানিক নাম হেলিয়ন কেপেনছিছ‌। পাখিটার মাথা এবং বুক খয়েরী রংয়ের। পাখা এবং লেজ নীল। পা দুটি লাল। পাখিটা দেখতে অতি সুন্দর। অসমের কোনো কোনো জায়গায় এটাকে বরঠুটীয়া মাছরাঙ্গা অবলা হয়ে থাকে। কাজিরাঙ্গায় সকালবেলা তাকে খেপাতে আসা মাছরাঙ্গাটার কথা উদয়শঙ্করের মনে পড়ে গেল।

অসমের অরুণ্যে সাত প্রকারের মাছরাঙ্গা পাখি দেখতে পাওয়া যায়। আমরা সাধারণত দেখতে পাওয়া মাছরাঙ্গা গুলিকে ইংরেজিতে কমন কিংফিশার বলে জানা যায়। বৈজ্ঞানিক নাম এলিডো এথিছ। পাখিটার মাথা এবং পিঠ নীল সবুজ রঙের । বুকটা খয়েরী । এই মাছরাঙার পুচ্ছ্বাংশ ছোটো। অসমের কোন কোন জায়গায় নীল মাছরাঙ্গা বলে পরিচিত পাখিকে ইংরেজিতে বলা হয় ব্লু– ইয়ার্ড কিংফিশার। বৈজ্ঞানিক নাম এলিডো মেনিন টিং। এই মাছরাঙ্গার শরীর নীল, থুতনি সাদা, বুক খয়রি রংয়ের। পাখিটির ডানায় কালো কালো দাগ দেখতে পাওয়া যায়। ইংরেজিতে হোয়াইট থ্রোটেড কিংফিশার বলে যে মাছরাঙ্গা গুলি পরিচিত সেগুলিকে অসমিয়াতে সাদা- বুকের মাছরাঙ্গা বলা যেতে পারে। বুকটা সাদা বলে পাখিটার নাম হয়েছে হোয়াইট থ্রোটেড। এই ধরনের মাছরাঙ্গা ঠোট লাল, মাথার রং গাঢ় খয়েরী, পিঠের ডানা এবং লেজ নীল। কালো মাথার মাছরাঙ্গাকে ইংরেজিতে ব্ল্যাক-কেপড কিংফিশার বলা হয়। বৈজ্ঞানিক নামহেলিয়ন পিলিয়েটা। মাছরাঙ্গা গুলির মাথা কালো, গলার চারপাশে এবং থুতনি সাদা, ঠোঁটটা লাল এবং বুক খয়েরী ধরনের। ইংরেজি ক্রেস্টেড কিংফিশারকে ঝুটিওয়ালা মাছরাঙ্গা বলা হয়। এদের ঠোঁট কালো ছাই রঙের। ডানাগুলিতে সাদাকালো ছিট রয়েছে। মাথার দিকে ঠরঙা পাখির সমাহার দেখতে পাওয়া যায়। এইসব মাছরাঙ্গার বৈজ্ঞানিক নাম মেগাকেরাইল লুণ্ডব্রিজ। শেষের মাছরাঙ্গা হল চিত্রবিচিত্র মাছরাঙ্গা। পাইড কিংফিশার। বৈজ্ঞানিক নাম শ্রাইল রুডিছ। দেখতে মাছরাঙ্গার মতোই কালো– সাদা। ঠোঁট কালো এবং অন্য মাছরাঙ্গা থেকে স্পষ্টভাবে পৃথক করা যায়।

মাছরাঙ্গা পাখিটার কলরব উদয় সম্পর্কে মাছরাঙার পৃথিবীতে বিচরণ করার সুযোগ আর সুবিধা দিল। তার মনে এক এক করে প্রতিটি মাছরাঙ্গার প্রজাতির রং- রূপ এবং তাদের প্রাকৃতিক বিচরণ মনের মধ্যে ভেসে এল। সে দেখতে পেল একটা ক্রেস্টেড কিংফিশার এসে জলাশয়ের ওপরে উড়ে ডানা নাড়ছে এবং নিমেষের মধ্যে ওপর থেকে জলে খসে পড়ে পরের মুহূর্তেই ফুড়ুৎ করে উড়ে যাচ্ছে। পাখিটার ঠোঁটের মধ্যে একটি ছোটো আকারের মাছ। এই মাছরাঙ্গা গুলির শিকারের পদ্ধতি অতি মনোরম। অন্য কোনো পাখির সঙ্গে মিলে না। শিকারের লক্ষ্য স্থির করার জন্য পাখিগুলি জ্যামিতিক অংক করে।

উদয়শঙ্কর স্থির করল বড় কুড়িহা অঞ্চলের পাখিদের আবাসস্থলে দেখতে পাওয়া মাছরাঙ্গা পাখিদের প্রজাতির তথ্যাদি সংগ্রহ করার সে চেষ্টা করবে। এখানে সাতটি প্রজাতির মাছরাঙ্গা একসঙ্গে দেখতে পেলে তার ভালো লাগবে।

মাছরাঙ্গা প্রজাতির তথ‍্যাদি সংগ্রহের কথা ভাবতে ভাবতে উদয়শঙ্কর দেখতে পেল কিছুক্ষণ আগে দূরে বসে চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকা মাছরাঙ্গা পাখিটা তার অলক্ষিতে এসে সামনের শুকনো ডালটাতেতে বসে শিকারের জন্য অপেক্ষা করছে। সে পাখিটাকে পুনর্বার পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে লক্ষ্য করল। অত্যন্ত সুন্দর পাখি।

দূরে অদূরের কোনো কোণে সূর্য দেবতা রাতের বিছানা ত‍্যাগ করে আড়মোড়া ভাঙছে। আঙ্গুল বর্ণের আলোর কণা দিগন্ত ভেদ করে ধীরে ধীরে উকি দিতে শুরু করেছে। কুয়াশার সঙ্গে হওয়া সেই যুদ্ধটা অতিক্রম করে দুই একটি কণা রোড অরুণ্যের মধ্যে এসে ছিটকে পড়েছে। উদয় শঙ্করের ক্ষুধা পেয়েছে। সে ঘড়িটার দিকে তাকাল।

নটা বেজে ১৫ মিনিট।

উদয় শঙ্করের অলক্ষিতে তার হাতের ঘড়িটা থেকে দিনের প্রথম ভাগের সমরটা সরে গেল।

সকলের আহারের জন্য সে যখন হরিণের দোকানে পৌঁছাল, দোকানের সামনে কাকাবাবু অপেক্ষা করছিলেন।

–কী হে যুবক‌। কোথায় যাবে?

কী বলবে কী না বলবে ভেবে পায়না। উদয়শঙ্কর কিছুটা ইতস্তত বোধ করল। এখানে কিছু খেতে আসবে বলে বুঝতে পারলে বলবে তুমি আমাদের বাড়িতে যেতে পারতে!

– কাকাবাবু এই সময় আপনি এখানে। কোথাও যাবেন নাকি?

-– বৌমার সম্পর্কিত একজন অতিথি আসার কথা ছিল। আমি ভাবলাম তাকে এগিয়ে এসে নিয়ে যাই।

— ও তাই। আপনাকে দেখে আমি কিছুটা অবাকই হয়েছিলাম।

– তুমি এখানে?

— কাকাবাবু,একটু …

বাক্যটা সম্পূর্ণ না করে উদয়শঙ্কর চায়ের দোকানটার দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে দিল।

—হ‍্যাঁ, যাও ।ক্ষুধা থাকতে খাওয়া ভালো।

উদয়শঙ্কর হোটেলে খাওয়া দাওয়া করে বলে কাকুকে জানাতে চাইছিল না।

– আজ সন্ধ্যায় নিশ্চয় আমাদের বাড়ি আসছ?

– কাল তো গিয়েছিলাম। আজকে আবার যেতে হবে!

– কেন আসবে না? গতকাল গিয়েছিলে বলে আজ যেতে কোনো বাধা আছে নাকি?

উদয়শঙ্কর কী উত্তর দেবে? অনেক কঠিন প্রশ্নের উত্তর না থাকার মতো উদয়শঙ্করের হাতে এই সাধারণ প্রশ্নটিরও উত্তর নেই।

সে সাধারণভাবে কাকাবাবুকে সান্তনা দেবার জন্য বলল– চেষ্টা করব কাকাবাবু।

– উহু। চেষ্টা- টেষ্টা বুঝিনা। আসতে হবেই।

উদয়শঙ্কর ভাবল এখন হে পড়ল ফড়িংয়ের মরণের পালা। নতুন- বউ থাকা ঘর, সবসময় এভাবে আসা যাওয়া করলে প্রতিবেশীরা অন্য কিছু ভাবতে বেশি সময় লাগবে না। তাই নিজে থেকে সাবধান হওয়া ভালো। অবশ্য এসব তার নিজস্ব চিন্তা, তার বোধে সে এভাবে ভাবা উচিত ছিল না।

উদয়শঙ্করর মাথা নেড়ে কাকাবাবুর কথায় সায় দিয়ে বলল–' আপনি অতিথির সঙ্গে ব্যস্ত থাকবেন নাকি।'

– রাত পর্যন্ত থাকবে কি থাকবে না জানি না। থাকলেও আড্ডা জমবে। আমি তোমার কথা সবাইকে বলেছি।

– কেন কাকাবাবু?

– আমি জীবনে যত মানুষের সাক্ষাৎ পেয়েছি, তোমার চরিত্রের মানুষের সঙ্গে দেখা হয়নি। অন্তত পাখি দেখে ঘুরে বেড়ানো মানুষ।

কথার প্রসঙ্গ পরিবর্তন করার জন্য উদয়শঙ্কর কাকাবাবু কে জিজ্ঞেস করলেন– এক কাপ চা?

-– সাধারণত আমি হোটেলে কিছু খাই না, কিন্তু তুমি বলছ যখন–

– সেরকম কোনো কথা নেই কাকাবাবু। আপনার ইচ্ছার বিপরীতে আমি আপনাকে বাধ্য করতে চাই না।

– একটু বেশি কঠোরভাবে বললে নাকি?

উদয়শঙ্কর কাকুর হাত খামচে ধরে কাকাবাবুকে হোটেলের ভেতরে নিয়ে গেল এবং একটা চেয়ার টেনে এনে সেখানে বসতে ইঙ্গিত করল। বিনা বাক‍্যব‍্যয়ে কাকাবাবু চেয়ারটাতে বসলেন এবং উদয়শঙ্করের দিকে তাকিয়ে রইলেন।

চা দেওয়া ছেলেটি এগিয়ে এসে উদয়শঙ্করকে ডাকল– দাদা।

উদয়শঙ্কর ছেলেটি করা সম্বোধন থেকে তার সঠিক প্রশ্নটি বুঝতে পারল। সেই কাকাবাবু কে জিজ্ঞেস করল– কাকাবাবু পুরি খাবেন?

মানুষটা ইতস্তত করে বলল– বোধহয় চায়ের দোকানে এসব খাওয়ার কথা মনে পড়েনা।

– একবার মনে করে দেখতে পারেন।

– দুই প্লেট পুরি এনো। একটু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে এনো।

প্রত্যেকেই পুষ্কর বলে খ্যাপানো ছেলেটি উদয় শঙ্কর ডাকলই হাসতে হাসতে কাছে চলে আসে এবং উদয় শঙ্কর কিছু চাইলেই ফায়ার ব্রিগেডে কাজ করা মানুষের মতো দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেয় । উদয়শঙ্কর জানে না সেই আত্মিক আতিথেয়তার ঠিকানা কি । উদয় শঙ্কর ছেলেটিকে একবারের জন্য ও পুষ্কর বলে ডাকেনি। সেভাবে ডাকলে হয়তো ছেলেটি কখন ও তার কাছাকাছি আসত না।

ছেলেটি রেখে যাওয়া পুরি দুটো কাকাবাবুকে অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে খেতে দেখে উদয়শঙ্করের ভালো লাগল। উদয়শঙ্কর জানে এই আন্তরিকতার নাম অথবা পরিপূরক উত্তর হল বৃদ্ধাবস্থায় লাভ করা নিঃসঙ্গতার সান্নিধ্য। বৃদ্ধ অবস্থায় মানুষ এমন এক একাকীত্বতায় ভোগে যা থেকে বন্ধুত্বের সান্নিধ্যে পরিত্রাণ পেতে ইচ্ছা করে । অথচ বয়সের পার্থক্য চিন্তার দূরত্ব আদির জন্য স্থিতি লওয়া শূন্যতা তাদের সর্বস্তরের বন্ধুত্ব থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। কাকাবাবু ভেবেছেন উদয়শঙ্কর তার সেই শূন্যতা পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে।

প্লেটটিতে সাধারণ একটা টুকরোও না রেখে কাকাবাবু পুরিদুটো খেলেন।

– কাকাবাবু আর ও একটি পুরি!

– না না লাগবে না। পুরি খাওয়ার আমার অভ্যাস নেই।

– তাহলে কেন খেলেন?

মাঝেমধ্যে কাকাবাবুকে ক্ষেপিয়ে উদয়শঙ্করের ভালো লাগে। সেই জন্যই উদয়শঙ্কর কাকাবাবু কে এভাবে বলল।

– একমাত্র তোমার জন্য।

উদয়শঙ্করের মুখ দিয়ে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল। মানুষের সম্পর্কের বন্ধন মানুষকে কীভাবে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধায় জড়িয়ে ধরতে পারে তার জ্বলন্ত মুহূর্তের সাক্ষী হল উদয়শঙ্কর।

– দু কাপ চা দেবে। কাকাবাবু একটা মিষ্টি খাবেন নাকি?

– খাব না।

কাকাবাবু ইতস্তত করে বলল। উদয়শঙ্কর বুঝতে পারল, কাকাবাবু একটা মিষ্টি পেলেও খুব একটা আপত্তি করবে না।

— ভাইটি, একটা মিষ্টিও দেবে।

— লাগবেনা, লাগবেনা।

— কিছুই হবে না কাকাবাবু। একটাই মিষ্টিমাত্র।

ছেলেটিকে উদয়শঙ্কর দু কাপ চায়ের ফরমায়েশ দেওয়ার আগে দুজনের জন্য দু কাপ চা নিয়ে এসেছিল। সে গ্লাসে আনা দুই কাপ চা দুজনের সামনে রাখল এবং একটা মিষ্টি আনতে গেল। চায়ের গ্লাস থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখে উদয়শঙ্কর ভাবল মানুষের জীবনটাও এক একটি ধোঁয়া থাকা চা। নির্দিষ্ট সময়ে ঠান্ডা হওয়া এক কাপ চায়ের মতো মানুষের চলন্ত জীবন একসময়ে ধোঁয়াহীন, উত্তাপহীন এবং অবশেষে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। আর এই ধরনের এক একটি গরম চা সময়ে মানুষের জন্য সম্পর্কের সারথি হয়ে জীবন অতিবাহিত করার জন্য প্রেরণা হয়ে উঠতে পারে।

আজকের মতোই। অনবরত সামরিক কায়দায় জীবন উদযাপন করা কাকাবাবু উদয় সংকর ভাবার বিপরীতে তার সঙ্গে আজ হোটেলের টেবিলে চায়ের গ্লাসে চুমুক দিয়েছে।

চায়ের গ্লাসে শেষ চুমুক দিতে যেতেই কাকাবাবুর পকেটে থাকা মোবাইলটা বেজে উঠল।

– এসে গেছে বোধহয়।

কাকাবাবু উদয় শঙ্করকে উদ্দেশ্য করে ফোনটা পকেট থেকে বের করে রিসিভ করল।

– হ্যালো– হ্যালো। এক মিনিট। লাগবেনা। লাগবেনা। আপনি এক কাজ করুন। সামনের তুলিকা মিঠাই দোকানটিতে চলে আসুন।

ফোনটার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে কাকাবাবু মোবাইলটা টেবিলের ওপরে রাখলেন।

– মানুষটা এখনই চলে আসবেন। বাইরে বেরিয়ে যাব নাকি?

– আপনি তো মানুষটাকে এখানে আসতে বললেন। তিনি আপনাকে অনর্থক খোঁজার চেয়ে আপনি কিছুক্ষণের জন্য এখানেই অপেক্ষা করুন, তিনি নিজেই এসে উপস্থিত হবেন।

উঠতে গিয়েও কাকাবাবু পুনরায় বসলেন। টেবিলের উপরে থাকা জলের গ্লাসটা এপাশে- ওপাশে কাত করে তিনি চুপ করে থেকে উদয়শঙ্করের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। উদয়শঙ্কর সেদিনের খবরের কাগজের প্রকৃতি বিষয়ক পৃষ্ঠাটা মেলে কিশোর চৌধুরীর একটা লেখা দেখতে পেয়ে পড়তে লাগলেন। ছোটো লেখা। পাঠশালার কোথাও বৃক্ষরোপনের অভিজ্ঞতার কাহিনি। নিচে ফোন নাম্বারটাও দিয়েছে। উদয় শঙ্কর 'পড়ে ভালো লাগল' বলে একটা মেসেজ পাঠালেন।

হোটেলটাতে প্রবেশ করা প্রায় আধবয়সী মানুষটিকে দেখে কাকাবাবু উঠে দাঁড়ালেন এবং বললেন —

— আসুন আসুন। রাস্তায় কোনো অসুবিধা হয়নি তো?

– না না ।কোনো অসুবিধা হয়নি।

– উদয়শঙ্কর, ইনি আমার বৌমার কাকাবাবু।

উদয়শঙ্করর মানুষটিকে নমস্কার জানাতেই মানুষ টিও উদয় শঙ্করকে প্রতি নমস্কার জানালেন।

– চল। আমাদের বাড়িতে যাই।

পকাকাবাবু অতিথির সঙ্গে উদয়শঙ্করকেও তাদের বাড়িতে যাবার জন্য অনুরোধ করলেন।

– একটু সময় বসুন, নতুন মানুষ একজন এসেছেন। খালি মুখে কীভাবে পাঠাই।

কাকাবাবু কিছুটা ইতস্তত করলেন।

– তুমি যেভাবে বলছ, এটা যেন তোমার ঘর।

  – কী যে বলেন কাকাবাবু, সংসার না থাকা মানুষের জন্য হোটেলটাই নিজের ঘর।

বৌমার কাকাবাবু দুজনের কথাবার্তা বুঝতে পারছে না। মানুষটার বোধহয় ক্লান্তিবোধ হচ্ছিল, তিনি বসলেন।

– আমার মেয়ের বাড়িতে এসেছিলাম, গুয়াহাটিতে থাকে। ভাবলাম একটু এগিয়ে এসে ভাইঝির সঙ্গেও একবার দেখা করে যাই। দেহের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়, পরে কখন ও আসতে পারব কিনা কে জানে।

– না, না। ঠিকই করেছেন। এভাবে খবরাখবর করলে বৌমাও খুশি হবে।

উদয়শঙ্কর বৌমার কাকুকে জিজ্ঞেস করলেন– কাকাবাবু আপনিও কিন্তু আমার কাকাবাবুই হবেন– আপনি মিষ্টি খান তো?

– মিষ্টি, কেন জিজ্ঞেস করলেন? অবশ্য চিনি বা মিষ্টি খাওয়ার ক্ষেত্রে আমার কোনো বাধা নিষেধ নেই।

– কাকাবাবু– উদয়শঙ্কর বলল – আজকের দিনে এটা বজায় রাখা সবচেয়ে কঠিন কাজ। আপনি যে পেরেছেন।

উদয়শঙ্কর ছেলেটিকে মিষ্টি এবং পুরি বৌমার কাকাবাবুও আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহণ করায় উদয়পুশঙ্করের মনটা পরিতৃপ্ত হয়ে পড়ল। দুজন জ্যৈষ্ঠ ব্যক্তিকে সকালবেলা আপ্যায়ন করার সুযোগ পাওয়াটাকে বোধহয় লোকে বলে– সৌভাগ্য।

‐- তোমার নামটা যেন কী ছিল?

‐– উদয়শঙ্কর, কাকাবাবু‐-

‐- ও উদয়শঙ্কর‐- কত বছর পরে যে এভাবে হোটেলে চা–পুরির স্বাদ নিলাম আমার মনে পড়ছে না‐- কাকাবাবু বলা কথাটাই বৌমার কাকা ও বললেন। হয়তো বলে 'জেনারেশন গ্যাপ ফেক্টর' বা হয়তো বয়ঃসন্ধির কারক। এই কারকের জন্য ইচ্ছা থাকলেও তারা জীবনের কোনো মাদকতা গ্রহণ করতে পারেনা। অন্য অর্থাৎ হয়তো বা স্বাস্থ্যের প্রতি সচেতনতা। কথাগুলি এতটা বিশ্লেষণ করে দেখতে উদয়শঙ্করের ইচ্ছা হল না।

 দুজনের অনুরোধকে উপেক্ষা করে উদয়শঙ্কর পর্যটন আবাসের দিকে এগিয়ে চলল। তারা চেয়েছিল তাদের সঙ্গে উদয়শঙ্কর কাকাবাবুর বাড়িতে যাক।' যাচ্ছি 'বলে উদয়শঙ্কর দুজনকেই প্রত্যাখ্যান করল।

তাঁরা তাঁদের সময়টুকু নিজেদের মতো করে কাটাক।


আটপৌরে ৩৫২|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 352, by Sudip Biswas

 আটপৌরে ৩৫২|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 352, by Sudip Biswas





৩৫২.

শরন্ময়ী


শিহরণ। জাগায়। ডিনারের। 


টেবিল-কথা


অযথা কলহ বিবাদ বিচ্ছেদ।

শব্দব্রাউজ ৬০৫ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-605, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ ৬০৫ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-605, Nilanjan Kumar



শব্দব্রাউজ- ৬০৫ ।। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা । ২৪। ৯। ২২। সকাল সাতটা ।



শব্দসূত্র: পান্ঞ্চজন্য বাজে ওই



যুদ্ধ কি তবে শুধু?

পাঞ্চজন্য বাজে ওই ।

একটু একটু করে এগিয়ে

দখলের লোভ

জাগ্রত করা ।



নিষ্ঠাভরে যে বাজায়

পান্ঞ্চজন্য

সে জানে যুদ্ধের ভেতর দিয়ে

বাঁচার সুখ ।



ওই দেখো ছুটছে ছুটছে

সকলে

বাস্তবের দুঃখ হারাতে ।


শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আটপৌরে ৩৫১|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 351, by Sudip Biswas

 আটপৌরে ৩৫১|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 351, by Sudip Biswas





৩৫১.

সত্ত্বগুণ 


তত্ত্বাবধানে। মাইল-ফলক। সফলতা। 


তুর্কীনাচন


 সৈনিকদের অভিযান চালানো প্রণালি।

শব্দব্রাউজ ৬০৪ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-604, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ ৬০৪ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-604, Nilanjan Kumar





শব্দব্রাউজ- ৬০৪ ।। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা । ২৩। ৯। ২২। সকাল আটটা ।



শব্দসূত্র: পুজোর গন্ধ এসেছে



পুজোর দেখনদারি সয়ে গেছে

এখন

ভক্তিশ্রদ্ধা ভুলতে ভুলতে

তলানিতে ।


পুজোর গন্ধ অন্যরকম

অনুভবে

সুখ স্বাদ ।



এসেছিল এসেছে আসবে

এভাবে

গড়িয়ে চলবে পৃথিবী ।

শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আটপৌরে ৩৫০|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 350, by Sudip Biswas

 আটপৌরে ৩৫০|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 350, by Sudip Biswas



৩৫০.

প্রাণময়ী 


ধরণী। যেহেতু। আমাদের। 


দশপ্রহরণধারিণী


অভয়পদে অজরা অতুলা জননী।

শব্দব্রাউজ ৬০৩ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-603, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ ৬০৩ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-603, Nilanjan Kumar



শব্দব্রাউজ- ৬০৩ ।। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা । ২২। ৯। ২২। সকাল আটটা পনেরো মিনিট ।



শব্দসূত্র: পালাবার পথ নেই



পালানো মানে নিরুদ্দেশ নয়

পালানো মানে বাস্তবতা থেকে

চলে যাওয়া নয় ।

সত্য ছেড়ে পালানো যায় না ।

শুধু মিথ্যে থেকে পালাতে চাই ।



পথ কোথা মিথ্যের বাইরে

পাপী মন হাত তুলে

প্রেজেন্ট প্লিজ বলে ।



ফেরার পথ কি নেই?

ভাবতে ভাবতে ভাবনার কেন্দ্রে

কখন পৌছোই!

বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

নীল ধারাপাত ।। অরুণ দাস ।। কবিতা, Arun Das

নীল ধারাপাত

অরুণ দাস 





ঠেক দি নষ্ট গ্লাসে

হিমেল জিজ্ঞাসা রাখে বাঁশীর বাঁক 

অলস ঝিঁঝিঁদের কামনা ফেরত 

ব্যাকুলতা ফেরত

অবাক,তুমিও উত্তাল হচ্ছো জ্যোৎস্না ছুঁয়ে ৷ 


শিশিরের শব্দে থমকে যায় পাতারা

শূণ্য শেখায় বৃষ্টির রং

মূর্ছনা ফেলে ঘামের শব্দে ৷

সূর্য ফেরত চোখের ঢলে পড়া

দেখ, কেমন আমিও টপকে যাচ্ছি ছাউনির নিষেধ৷


গুম হই ইশারায়

পতন বাঁচাই অস্বচ্ছ শিকড়ে

উদ্ভ্রান্ত সোহাগের 

              কাঁপন চেনে চিবুক

কষ্ট নয় মিশে যাওয়া....

দেমাগ সন্ধ্যায়,মস্তি ফেরত মেয়েদের৷

আটপৌরে ৩৪৯|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 349, by Sudip Biswas

 আটপৌরে ৩৪৯|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 349, by Sudip Biswas



৩৪৯.

আগম


প্রসিদ্ধি। আদিশক্তি।মূর্তিধারণ। 


কাত্যায়নী 


পূজিত অগ্নি প্রাকৃতিক সারথি।

শব্দব্রাউজ ৬০২ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-602, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ ৬০২ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-602, Nilanjan Kumar



শব্দব্রাউজ- ৬০২ ।। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা । ২১।৯। ২২। সময় সকাল আটটা ।



শব্দসূত্র: মেঘলা মেয়ের হাসিকান্না



মেঘলা সময়

আমার নয় ।

চাই আলো

চাই শান্তি

চাই আনন্দ ।


মেয়ে মানে উজ্জ্বলতা

মেয়ে মানেই সৌন্দর্য ।


হাসি কান্না হীরা পান্না

আছে বলে

পৃথিবী এতো মধুর ।

বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

শব্দব্রাউজ ৬০১ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-601, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ ৬০১ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-601, Nilanjan Kumar



শব্দব্রাউজ- ৬০১ ।। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা । ২০। ৯। ২০২২। সময় সকাল সাতটা চল্লিশ মিনিট ।



শব্দসূত্র: জড়িয়ে আছে আনন্দ



যত দুঃখ থাক

জড়িয়ে থাকে

শুধু জড়িয়ে থাকে

আনন্দ ।



আছে সুউজ্জ্বল দিন

আছে সুমধুর তান

প্রকৃতি জুড়ে ।



সব শুভ শুভ ভাবতে ভাবতে

মন আনন্দে ভাসে ।

কে তাকে রোধ করবে? 

মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২২

শব্দব্রাউজ ৬০০ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-600, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ ৬০০ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-600, Nilanjan Kumar



শব্দব্রাউজ- ৬০০ ।। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা । ১৯। ৯ । ২২। সময় সকাল আটটা পনেরো মিনিট ।



শব্দসূত্র: ভালো মন্দের দ্বন্দ্ব



ভালো জীবন কাম্য

সকলের, 

তাই কি ঈশ্বর বিশ্বাস ?


মন্দের প্রতি মুহূর্ত

আতঙ্কে, 

কিছু প্রকাশ্য কিছু গোপন ।


ভালো মন্দের দ্বন্দ্ব

আজীবন নিত্য সহচর ।

সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২

শব্দব্রাউজ ৫৯৯ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-599, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ ৫৯৯ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-599, Nilanjan Kumar



শব্দব্রাউজ- ৫৯৯ ।। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা । ১৯। ৯। ২২। সময় সকাল সাতটা চল্লিশ মিনিট ।



শব্দসূত্র: তুমি সে এবং নীলাঞ্জন



তুমি শব্দে আমিও আছি

গোপনে ।


সে শব্দে কিছু দুরত্ব

কিছু ব্যবধান ।


এবং নীলাঞ্জন সে সব শব্দ

গেঁথে গেঁথে

বিনে সুতোর মালা গাঁথে ।

রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২

কিছু বই কিছু কথা- ৩০১। নীলাঞ্জন কুমার সপ্তসুর । হাবিবুর রহমান

কিছু বই কিছু কথা- ৩০১। নীলাঞ্জন কুমার




সপ্তসুর । হাবিবুর রহমান ।কবিতা কুটির সাহিত্য পত্রিকা । কোচবিহার । বিনিময় দেড়শো টাকা ।


জ্ঞানতই হোক বা অজ্ঞানতই হোক কবিতা লেখক হাবিবুর রহমান তাঁর অতি সম্প্রতি প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থ ' সপ্তসুর '-এর অবতরণিকায় একটি অকাট্য সত্যি লিখে ফেলেছেন তা হল:  ' আমি কবি নই কিন্তু অবশ্যই এক প্রেমী ' এখানে প্রেমী অর্থে কবিতা প্রেমী যদি ধরে নিই তবে কোচবিহারের এক অনুষ্ঠানে অতি স্বল্প আলাপে ও তার কবিতা শুনে বুঝেছি তিনি সত্যি কবিতাপ্রেমী ও বিনয়ী । একথা সত্যি কবি হয়তো সবাই হন না কিন্তু কবিতাপ্রেমীও অঙ্গুলিমেয় । তাই কবিতাপ্রেমী হিসেবে এই সত্য উচ্চারণে তাঁকে ধন্যবাদ জানাতেই হয় ।
              হাবিবুর কবিতার ক্ষেত্রে পড়ে আছেন আজ থেকে প্রায় একশো বছর আগে । তিনি এখনো কবিতাতে '  বেদনা বিধুর ' , ' খরতাপ ' ,' নাকো ' , 'পেয়ালা ' ' কৃষ্ণ শরীর ' ইত্যাদি ইত্যাদি শব্দের ছড়াছড়ি । আসলে অন্তত আজকের কবিতা হয়ে উঠতে গেলে কবিকে তাঁর শব্দ চিন্তা পাল্টাতে হবে । নাহলে ' সপ্তসুর ' -এর মতো ব্যর্থ কাব্যগ্রন্থের জন্ম হবে । এসব বলার একটাই কারণ হাবিবুর যা লিখুন তার মধ্যে চেষ্টা আছে । শুধু অভাব আছে অনুশীলন ও পাঠের । সে কারণে সামান্য হলেও রেখাপাত করে ' তোমার কন্ঠস্বর হাওয়াতে ভাসে নিশুতি রাতে,  / আমি ছুঁতে পারি না একটিবার ভালোবেসে । '  ( ' ছুঁতে পারিনি ')। তাছাড়া দু-একটি শিরোনাম স্পর্শ করে যেমন তার ভেতর একটি ' খিদের কোন রং হয় না ' । আসলে তরুণ হাবিবুর সফল হোক এই কাম্য । কারণ কবিতার প্রকৃত কবিতাপ্রেমী  তারুণ্যের আজ বড্ড অভাব । সবাই প্রতিষ্ঠা,  খ্যাতি,  মোহ, কবি সম্মেলন,  ফেসবুক , লাইক,  কমেন্টস,  নিজস্বীর পেছনে ছুটছে । প্রকৃত কবিতার পেছনে ছুটছে দেখতে গেলে দূরবীন লাগবে ।দিপালী চক্রবর্তীর কবিতার প্রচ্ছদ বিষয়ে কিৎসুই বোঝেন না । মন খারাপ করে দেয় ।

শব্দব্রাউজ ৫৯৮ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-598, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ ৫৯৮ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-598, Nilanjan Kumar



শব্দব্রাউজ- ৫৯৮ ।। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা । ১০। ৯। ২২। সময় সকাল আটটা ।






শব্দসূত্র: লাল নীল সবুজের মেলা






১। লাল মানেই কি বিপদের বার্তা?


     ছুটে আসে বিনাশ?






২। নীলাকাশ মানেই কি ওড়ার ইচ্ছে?


      গাঙচিল হতে চাওয়া তখন সহজ ।






৩। সবুজ মানেই কি হাহাকার বাদ? 


     অগুনতি ফসল শুধু দেখি আর দেখি ।






৪। লাল নীল সবুজের মেলা সারাক্ষণ


     সুর আসে । গান বানাই । শব্দ সাজাই ।


     



শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

শব্দব্রাউজ ৫৯৭ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-597, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ ৫৯৭ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-597, Nilanjan Kumar



শব্দব্রাউজ- ৫৯৭ ।। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা । ১৮। ৯। ২২। সময় সকাল দশটা পনেরো মিনিট ।



শব্দসূত্র: প্রতিদিনের পরাজয় জীবন



প্রতিদিন সুবিচার প্রত্যাশা করে

চোখ মেলি;

তবু নিঃস্ব দিন ছুটে আসে ।




পরাজয় আমার রক্তে আমার

প্রতি মুহূর্তে,

মহাকাশ জয় নিয়ে তবু হাজারো ভাবনা!




জীবন এরকম অহৈতুকী অবুঝ

কেউ আমাকে বলে দেয় না

নিখুঁত জীবনচর্যা ।

শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

হে আমার স্বদেশ- ২১ ।। সন্তোষ কুমার কর্মকার ।। মূল অসমিয়া থেকে বাংলা অনুবাদ– বাসুদেব দাস, He Amar Swadesh

হে আমার স্বদেশ- ২১

সন্তোষ কুমার কর্মকার

মূল অসমিয়া থেকে বাংলা অনুবাদ– বাসুদেব দাস







  লেখক পরিচিতি-- সন্তোষ কুমার কর্মকার একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, শিশু সাহিত্যিক এবং অনুবাদক।বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলায় ১৯৫৩ সনে শ্রীকর্মকারের জন্ম হয়।পিতা কানাইলাল কর্মকার। ভারত স্বাধীন হওয়ার পরে সপরিবারে ভারতে চলে আসেন। প্রাথমিক শিক্ষা অসমের বরপেটায়।গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত  বিভাগে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। রচিত উপন্যাস গুলি যথাক্রমে গৃহভূমি, শঙ্খ ধ্বনি, পদাতিক, সুবর্ণরেখা,অ  মোর আপোনার দেশ, কালান্তরর কথকতা, শিপার সন্ধানত, ইত্যাদি। ছোটগল্প,বেশ কিছু শিশু উপন্যাস এবং অনুবাদ গ্রন্থ রচনা করেন।২০২১ সনের এপ্রিল মাসে এই মহান লেখকের মৃত্যু হয়।১৯৯৬ সনে ভারতীয় ভাষা পরিষদ পুরস্কার, ১৯৯৮ সনে অসম সাহিত্য সভার সীতানাথ ব্রহ্ম  পুরস্কার এবং ২০২০ সনে সাহিত‍্যাচার্য সৈয়দ আব্দুল মালিক উপন্যাসশ্রী পুরস্কার লাভ করেন ।


   আলোচ্য উপন্যাস ' হে আমার স্বদেশ' (অ’ মোর আপোনার দেশ) অসমের অন্যতম সাহিত্যিক, ঠাকুর পরিবারের জামাই, সাহিত্যরথী লক্ষ্মীনাথ বেজবরুয়ার জীবনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে।এই উপন্যাসে বেজবরুয়ার চেতনায় কীভাবে জাতীয়তাবাদ অঙ্কুরিত হয়েছিল, বেজবরুয়ার জাতীয়তাবাদের স্বরূপ, রবীন্দ্রনাথের জাতীয়তাবাদের সঙ্গে  বেজবরুয়ার জাতীয়তাবাদের তুলনা, ইউরোপীয় নবজাগরণের প্রেক্ষাপটে ভারত তথা অসমের নবজাগরণের উন্মেষ, জাতীয়তাবাদী বেজবরুয়ার  সংগ্রাম, অসম বাংলার সাংস্কৃতিক সমন্বয় আলোচিত হয়েছে।এই উপন্যাসের চরিত্র রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে ঠাকুরবাড়ির মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ, বলেন্দ্রনাথ,প্রজ্ঞাসুন্দরী ,অন‍্যদিকে অসমের হেমচন্দ্র গোস্বামী, গুণাভিরাম বরুয়া,চন্দ্রকুমার আগরওয়ালা -উনবিংশ শতকের অসম বাংলার অনেক স্বনামধন্য পুরুষই উপন্যাসের পাতায় জীবন্ত হয়ে উঠেছে।

প্রসঙ্গত বলে রাখি শ্রীমতী কর্মকার উপন্যাসটির প্রায় আড়াইশো পাতার মতো অনুবাদ করেছিলেন।তবে আমি প্ৰয়োজন অনুসারে উপন্যাসটিকে আবার নতুন করে একেবারে প্রথম থেকে অনুবাদ করেছি। বলাবাহুল্য শ্রীমতী কর্মকারের  অনুবাদ আমাকে অনেকটাই সাহায্য করেছে। এই সুযোগে আমি তার কাছে আমার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। পরিশেষে দৈনিক বাংলা পত্রিকা(অন লাইন)উপন্যাসটি ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ করতে আগ্ৰহী হওয়ায় তাদেরকে আমার কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

(

(২১)

মৃত্যু অমোঘ, চিরন্তন এবং শাশ্বত। কিন্তু পরম আত্মীয়ের মৃত্যু প্রাজ্ঞ বুদ্ধি সম্পন্ন ব্যক্তির পক্ষেও নির্মম, হৃদয়বিদারক।

অবশেষে ১৮৯৫ সনের ২৭ মে সোমবার শুক্লা তৃতীয়ার দিন দীননাথ বেজবরুয়া সজ্ঞানে পুণ‍্যভূমি মাজুলীর বৈকুণ্ঠসম কমলাবারী সত্রে দেহত্যাগ করলেন।পরের দিন গোবিন্দচন্দ্র পাঠানো টেলিগ্রাম থেকে লক্ষ্মীনাথ দুঃসংবাদটা জানতে পারলেন। বাড়িতে শোক- মন খারাপের ছায়া নেমে এল। অন্তরাত্মায় বিচ্ছিন্নতার তীব্র যন্ত্রণা অনুভূত হল। কিন্তু আত্মিক এই বিয়োগের জন্য লক্ষ্মীনাথ মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়েই ছিলেন। তথাপি মন মানতে চায় না, আত্মার বিয়োগ ব্যথাটা ক্ষণে ক্ষণে তীব্র হয়ে উঠে। মনের আকাশে ভেসে বেড়ায় পিতার চলা-ফেরা, কথা-বার্তা। মনে পড়ে তাকে নিয়ে পিতার ক্ষোভ বেদনার শাসন- অনুশাসন। অনুভব করেন ক্ষমাশীল পিতার স্নেহ-ভালোবাসা। তবে তিনি আর ইহ সংসারে নেই।তাঁর দেহটা ইতিমধ্যে মাজুলীর পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে গেছে।তাঁর বৈকুন্ঠবাসী আত্মা শান্তি লাভ করেছে।

তখন ডাক্তার গোলাপচন্দ্র বেজবরুয়া এস এস করমন্ডলে ছিলেন। লক্ষ্মীনাথ তাকে নিয়ে এলেন। বিধি অনুসরণ করে শিব সাগরে গিয়ে সব পুত্রকে একসঙ্গে পরলোকগত পিতার পারলৌকিক ক্রিয়াকর্ম সম্পাদন করতে হবে। কিন্তু কিছুদিন আগে লক্ষ্মীনাথ অসম থেকে এসেছেন। এখনই আবার ফিরে গেলে ব্যবসার বিস্তর লোকসান হবে। এদিকে গর্ভবতী প্রজ্ঞার সন্তান প্রসবের দিন এগিয়ে আসছে।অন্যদিকে গোপালচন্দ্র খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করা মানুষ। পিতার শ্রাদ্ধে তাঁর উপস্থিতি বিঘ্ন ঘটাতে পারে । গোপালচন্দ্রের সঙ্গে এসব বিবেচনা করে অসমে না গিয়ে লক্ষ্মীনাথ কলকাতায় শ্রাদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন।

লক্ষ্মীনাথের শাশুড়ি মা খবরটা জানতে পারলেন। তিনি ঠাকুর বাড়ির সরকারের মাধ্যমে জামাতার পিতৃ শ্রাদ্ধের জন্য শ্রদ্ধা সহকারে ১০০ টাকা, হবিষ্যের সামগ্রী এবং লক্ষীনাথের জন্য ধুতি গামছা পাঠিয়ে দিলেন । শাশুড়ি মা পাঠানো টাকার সঙ্গে আরও একশ টাকা যোগ করে লক্ষ্মীনাথ গোবিন্দচন্দ্রের নামে শিব সাগরের ঠিকানায় টেলিগ্রাম মানি অর্ডার করলেন।

বি বরুয়া কোম্পানির কাঠের ব্যবসা বেড়েছে।অশৌচের দিন কয়টি বাড়িতে থেকে লেখালেখি করবেন বলে ভেবেছিলেন যদিও লক্ষ্মীনাথকে বাইরে বের হতে হল। গুণাভিরামের বিধবা কন্যা স্বর্ণ লতার সঙ্গে দেখা করে তাঁর বিয়ের কথা আলোচনা করলেন। তার মাঝখানেই নিমতলায় গিয়ে গিরিশচন্দ্র বসুর মধ্যস্থতায় কলকাতার রঙ্গলাল লক্ষ্মীনারায়ণ এবং ভিকরাজ বগলা অ্যান্ড কোম্পানির সঙ্গে বি বরুয়া কোম্পানির ব্যবসায়িক একটা চুক্তিপত্র তৈরি করলেন। এদিকে প্রজ্ঞার মেজ দাদা ক্ষিতীন্দ্রনাথ জানাল যে পিতৃ বিয়োগের কথা জানতে পেরে 'কর্তামশাই' মানে ঋষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর লক্ষ্মীনাথের সঙ্গে দেখা করতে চাইছেন। বার্ধক্য জনিত কারণে তিনি বাড়ি থেকে বেরোতে পারেন না। লক্ষ্মীনাথ ক্ষিতীন্দ্রনাথের সঙ্গে কর্তামশাই থাকা বিজিতলা রোডের বাড়িতে এলেন। অন্যান্য দিনের মতো এবারও লক্ষ্মীনাথ তাকে প্রণাম করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু কর্তামশাই অশৌচ ব্রতে থাকা লক্ষ্মীনাথের প্রণাম গ্রহণ করলেন না । তিনি লক্ষ্মীনাথের পরলোকগত পিতার কথা বলে মৃতের বিদেহী আত্মার সদ্গতি কামনা করে পরমেশ্বরের কাছে প্রার্থনা জানালেন ।

পরিবেশটা শোক জনিত কারণে ভারী হয়ে পড়েছে লক্ষ্য করে কর্তামশাই তারপরে বললেন,' লক্ষ্মীনাথ ,বিয়ের পর প্রজ্ঞাকে সঙ্গে নিয়ে তুমি আমার কাছে আশীর্বাদ নিতে এসেছিলে, আশীর্বাদ করে তোমাকে একটি সোনার কলম উপহার দিয়ে কি বলেছিলুম, মনে পড়ে ?'

সেকি আর ভুলতে পারি ,কর্তামশাই?সবিনয়ে লক্ষ্মীনাথ বললেন,আপনার সেই উপহার তো আমার জীবনের অতুলনীয় এক সম্পদ,অফুরন্ত এক প্রেরণা ।'

' কিন্তু যা শুনতে পেলুম, তুমি এখন লক্ষ্মীর পেছনে ছুটছ। আসলে আমি তোমাকে যতটুকু চিনতে পেরেছি, তুমিতো বাপু সরস্বতীর সাধক। সেই সাধনায় বিঘ্ন ঘটছে নাকি?'

'কর্তামশাই আপনি তো জানেন, আমাদের এখানে জমিদারি বা অন্য কোনো আয়ের উপায় নেই। বিয়ের পরে সংসার যখন হয়েছে, অর্থ উপার্জনের জন্য লক্ষ্মী দেবীর পূজা তো করতেই হবে।'

'দেখ ভায়া, লক্ষীর সঙ্গে সরস্বতীর কিন্তু সর্বদাই ঝগড়া। সেই ঝগড়া সামলে চলতে পারাটা বড়ো শক্ত।'

' সেটা আমিও জানি। তবে আপনার আশীর্বাদে তার মধ্যেই আমি সরস্বতীর সাধনা করে চলেছি।'

ঋষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রকৃতার্থেই একজন উদারমনা জ্ঞানী পুরুষ। যখনই তাঁর সান্নিধ্যে আসে, ক্ষণিকের জন্য কথাবার্তা হয় যদিও তাঁর প্রতিটি কথাই লক্ষ্মীনাথের কাছে অনুপ্রেরণামূলক। তিনি লক্ষীনাথের চেতনায় থাকা সাংস্কৃতিক বোধটাকে উৎসাহিত করে তোলেন। এমনিতেও এটা সত্যি যে কাঠের ব্যবসায় যোগ দিয়ে ভোলানাথ করতে দেওয়া কাজের চাপে লক্ষ্মীনাথ এতই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন যে বাড়িতে ফিরে আগের মতো বই পড়া এবং লেখালেখির কাজে মগ্ন হতে পারেন না। এটা তাঁর সৃষ্টি সত্তাটা বিকাশ করার ক্ষেত্রে কিছু প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার কথাটা মিথ্যা নয়। কর্তামশাইয়ের সতর্কবাণীতে লক্ষ্মীনাথ সচেতন হলেন। পুনরায় আগের মতো লেখালেখির কাজে লেগে পড়বেন বলে শপথ নিলেন।

৬ জুন গোপীকৃষ্ণ পাল লেনের বাড়িতে বিধি অনুসরণ করে শ্রাদ্ধের আয়োজন করে লক্ষ্মীনাথ পিতৃবিয়োগের অশৌচ থেকে মুক্ত হলেন।

শ্রাদ্ধের পরে একনাগরে তিন দিন পরিশ্রম করে ' অসমীয়া ভাষা' প্রবন্ধটি শেষ করলেন। মাঝখানে একদিন দাদা গোলাপ চন্দ্রের সঙ্গে মিনার্ভায় গিয়ে থিয়েটার দেখলেন। তারপরে প্রসবকাল এগিয়ে আসায় প্রজ্ঞাকে জোড়াসাঁকোতে রেখে ব্যবসায়ের কাজ নিয়ে ভোলানাথের সঙ্গে আসানসোলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন।

আসানসোলে একদিন থেকে পরের দিন মনোহরপুরে এলেন। কিন্তু সারাদিন বৃষ্টি হওয়ার ফলে বাইরে বেরোতে পারলেন না। হোটেলে থেকে 'লাইফ অফ কুইন ভিক্টোরিয়া' পড়লেন। পরদিনও ধারাসার বৃষ্টি। কয়েকটি ব্যবসায়িক পত্র লেখা ছাড়া অন্য কোনো কাজই হল না। মনোহরপুরের এক বেলার কাজ শেষ করে চক্রধরপুরে গেলেন। রাত একটার সময় উজানমুখী মেইল ট্রেনে নাগপুর যাত্রা করলেন। পরের দিন বিকেলে নাগপুরে এসে পৌঁছলেন। নাগপুরে থাকতেই লক্ষ্মীনাথ খবর পেলেন যে প্রজ্ঞা একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছে( ২৬ জুন বুধবার, ১৮৯৫)। তৎক্ষণাৎ লক্ষ্মীনাথের মানসপটে অপূর্ব সুন্দরী দেবকন‍্যার একটি মুখ ভেসে উঠল। মনটি কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির উদ্দেশ্যে ভেসে চলল । শিশু কন্যাটিকে দেখতে ইচ্ছে হল। কিন্তু সঙ্গে রয়েছে ভোলানাথ বরুয়া। এরকম একটি ইচ্ছা প্রকাশ করলে ভোলানাথের ধমক খেতে হবে ভেবে লক্ষ্মীনাথ চুপ করে রইলেন।

ব্যবসায়ের কাজে একনাগাড়ে ২৫ দিন বাইরে থেকে কলকাতায় ফিরে এলেন। প্রজ্ঞা একটি শিশুকন্যা উপহার দিল। ঠাকুরবাড়ি এসে পিতৃত্বের গৌরবে গৌরবান্বিত লক্ষ্মীনাথ সবাইকে মিষ্টি খাওয়ালেন । পদ্মের পাপড়ির মতো স্বর্গীয় এক আভায় শিশু কন্যাটিকে নিয়ে ঠাকুরবাড়ির সবাই আনন্দিত হয়ে উঠেছে। শ্বশুর বাড়িতে আত্মীয় কুটুম্বের সঙ্গে লক্ষ্মীনাথের দিন চারেক থাকার ইচ্ছা। কিন্তু ভোলানাথ ডেকে পাঠাল। এমনি তো ব্যবসা সম্প্রসারিত হয়েছে এবং ব্যবসার টাকা পয়সা লেনদেন গুলি লক্ষীনাথের মাধ্যমে হয়। তাই শ্বশুর বাড়িতে থেকে আনন্দ করার উপায় নেই। অনিচ্ছা সত্ত্বেও গোপিকৃষ্ণ লেনের বাড়িতে এলেন।

ব্যবসায়ের কাজ ছাড়া মনে মনে সংকল্প করা অনুসরণ করে অধ্যয়ন এবং সাহিত্য সাধনার কাজও অব্যাহত রেখেছেন। ইতিমধ্যে লেখা 'অসমীয়া ভাষা' শীর্ষক প্রবন্ধটি

অ.ভা.উ.সা সভায় পাঠ করলেন এবং সদস্যদের দ্বারা প্রবন্ধটি উচ্চ প্রশংসিত হল। তারপরে প্রবন্ধটি ' জোনাকী'তে খন্ড খন্ড করে প্রকাশ পেতে লাগল। কিছুদিন আগে 'স্বর্গারোহণ' নামে একটি গল্প লিখেছিলেন । সাম্প্রতিক বিষয়ের ওপরে ছদ্মনামে লেখা রম‍্য রচনা 'কৃপাবর বরুয়ার কাগজের পুঁটলি' শীর্ষ লেখাগুলি লিখছেন।

সকালে নিজের পড়ার ঘরে বসে ' কাগজের পুটুলি' শীর্ষক লেখাগুলির একটি লেখা শুরু করেছেন, তখনই ভোজপুরি দারোয়ান এসে বলল,' বাবু একঠো লেড়কা আপকো সালাম করনা মাঙতা–।'

'একঠো লেড়কা ! বোলাও উনকো!'

কিছুক্ষণ পরেই ধীরে ধীরে সন্ত্রস্ত পদক্ষেপে সামনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করল, উনিশ-কুড়ি বছর বয়সের এক যুবক। মাথা তুলে যুবকটির দিকে তাকিয়েই লক্ষ্মীনাথ চিনতে পারল,' তুমি– লক্ষ্মীমপুরের কুশল দুয়ারা। সেই অসম থেকে কলকাতা আসার সময় স্টিমারে তোমার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল।'

এগিয়ে এসে কুশল লক্ষ্মীনাথের পা ছুঁয়ে সেবা করে বলল,' স্যার আপনি তাহলে আমাকে সঙ্গে সঙ্গে চিনতে পেরেছেন। আমি আরও ভেবেছিলাম, আপনি হয়তো এত দিনে আমাকে ভুলেই গেছেন।'

' অসমিয়া অসমের ছেলেকে ভুলে গেলে কীভাবে হবে, বলতো? তারপরে খবর কি? কোন কলেজে নাম লেখালে?'

' সিটি কলেজে।'

' আমিও সেই কলেজে পড়েছিলাম। কোথায় থাক?'

' ৫৩ কলেজ স্ট্রিটের একটি মেসে।'

' বাঃ তোমার সঙ্গে আমার অনেক মিল দেখছি! আমিও কলেজ স্ট্রিটের সেই মেসটিতে ছিলাম।' লক্ষ্মীনাথ উচ্ছসিত হয়ে পড়লেন,' মেসে কোনো অসুবিধা হচ্ছে নাকি?'

কুশলের মুখে মন খারাপের একটা কালো ছায়া নেমে এল।

' স্যার আপনাকে যে বলেছিলাম– খুবই কম টাকা নিয়ে আমি কলকাতায় এসেছিলাম। এতদিনে টাকা শেষ হয়ে গেছে। গত মাসের মেসের খরচ দিতে পারিনি। সঙ্গীরা মেসের মালিককে অনুরোধ করায় এই মাসটা আমাকে থাকতে দিয়েছে। এরপরে আমাকে বের করে দেবে। তাহলে পরীক্ষা না দিয়েই আমাকে বাড়ি চলে যেতে হবে।'

লক্ষ্মীনাথের খারাপ লাগল। করুণভাবে কুশলের শুকনো মুখটার দিকে তাকিয়ে রইলেন।

' স্যার আপনার কাছে আমি টাকা পয়সা চাইতে আসিনি। কণ্ঠস্বর যদিও করুণ কুশল স্পষ্টভাবে বলল,' আমি খবর পেয়েছি, আপনি আমাদের অসমের ভোলানাথ বরুয়ার সঙ্গে যুক্ত ভাবে কাঠের ব্যবসা করেন। আপনাদের বিজনেসটা বড়ো। এই বিজনেসে কয়েকজন কর্মচারী কাজ করে। আপনাদের বিজনেসে আমার করার মতো যদি কোনো কাজের সুযোগ করে দেন–।'

' তারমানে চাকরি! পড়াশোনা করতে এসে পড়া বাদ দিয়ে চাকরি করবে!'

' চাকরি করব। সঙ্গে পড়াশোনা করব। পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্যই চাকরি করব।'

'বাঃ সুন্দর! তোমার এই স্পিরিটটা ভালো লাগল। তবে আমাদের এই বিজনেসে তোমার পক্ষে কাজ করাটা কষ্টকর হবে। তবু এত করে বলছ যখন কলেজের ছুটির দিনগুলি, শনিবার বিকেল বেলা এবং রবিবার গুলি তুমি আমাকে সাহায্য করতে পার।'

' হবে, আমি আসব।'বড়ো কিছু একটা পাওয়ার আনন্দে কুশলের মুখে হাসি ফুটে উঠল,'স‍্যার, আপনি তো জানেনই– আমাদের অসমে একটা কলেজ স্থাপন করার জন্য যে লেখালেখি চলছিল, কলেজটা নাকি হবে না।'

' ব্যবসায়ের কাজের জন্য মাঝখানে আমি একমাস বাইরে ছিলাম। অসমে কী হচ্ছে না হচ্ছে খবরই পাইনি। তবে আমি তো গুয়াহাটিতে কলেজ হবে বলেই শুনেছিলাম।'

' হবে না।অসমে নতুন করে নিযুক্ত কমিশনার সাহেব নাকি এই বলে রিপোর্ট দিয়েছে যে এখন কলেজ স্থাপনের কোনো আবশ্যকতা নেই।'

' তুমি কার কাছ থেকে জানতে পারলে?'

' গত সপ্তাহ থেকে আমাদের মেসের সিনিয়র ছাত্রদের মধ্যে এই নিয়ে আলোচনা চলছে।'

' না না, অসমে একটা কলেজ লাগবেই। আচ্ছা আমি খবর নেব। তুমি আগামী সপ্তাহ থেকে আসবে–।'

কুশল বেরিয়ে যাবার পরে লক্ষ্মীনাথ অস্থির হয়ে পড়লেন। গুয়াহাটিতে একটি সরকারি কলেজ স্থাপন করা হলে অসমের মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য কলকাতা আসতে হবে না। দুঃখী ছাত্ররা কলেজের শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে। সেটাতে কী এমন অসুবিধা হল যে নব নিযুক্ত কমিশনার সাহেব অসমে কলেজ স্থাপন করতে হবে না বলে প্রতিবেদন দিলেন? লক্ষ্মীনাথ তক্ষুনি গুয়াহাটির চীফ কমিশনার অফিসে কর্মরত বন্ধু হেমচন্দ্র গোস্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করলেন।

অ.ভা.উ.সা সভার যে কয়েকজন মাতৃভাষার জন্য নিবেদিত প্রাণ' জোনাকী' প্রকাশের ভেতরে বাইরে থেকে অসমিয়া ভাষা সাহিত্যের সাধনা আরম্ভ করেছিল, তার মধ্যে অন্যতম পুরোধা ছিল হেমচন্দ্র গোস্বামী।এখনও সে লক্ষ্মীনাথের কাছে আদরের 'গোঁসাই'। কোমল সুরে কথা বলা, সাহিত্য এবং জাতির ইতিহাসের প্রতি অনুরাগ থাকা, পরিশ্রমী হেমচন্দ্র 'জোনাকী' প্রকাশনার জন্য উদয়াস্ত শ্রম করার জন্যই বি এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি।অবশেষে বি এ ডিগ্রী না নিয়েই সে অসমে ফিরে গিয়ে একটি প্রাইভেট স্কুলের হেডমাস্টার হয়েছিল।কিন্তু স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা সোনারাম উকিলের সঙ্গে মতবিরোধ হওয়ায় ইস্তফা দিয়ে হেমচন্দ্র অসমের ইতিহাস লিখতে আরম্ভ করা কৃষি এবং রাজস্ব বিভাগের অফিসার এবং জাতি তত্ত্ব বিভাগেরই ডাইরেক্টর এডওয়ার্ড গেইটের সঙ্গে দেখা করে। তিনি সংগ্রহ করা ১৭ টি ইতিহাসের এগারোটি অসমিয়া ভাষায় ।গেইটে হেমচন্দ্রকে এই এগারোটি ইতিহাস ইংরেজিতে অনুবাদ করার দায়িত্ব দিলেন। হেমচন্দ্র দক্ষতার সঙ্গে সেগুলি অনুবাদ করে নির্দিষ্ট তারিখের ভেতরে জমা দেয় এবং তার জন্য ৯০ টাকা পারিতোষিক পায় ।

হেমচন্দ্র যে ভাষা সাহিত্যের অনুরাগী ,তাঁর নির্ভুল অনুবাদ এবং মুক্তোর মতো হস্তলিপি দেখে এডওয়ার্ড গেইট এবং অন্যান্য ইংরেজ অফিসাররা তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হন । তারপরই চীফ কমিশনার অফিসে ৭৫ টাকা বেতনে তাকে কাজ করার সুযোগ দান করেন ।

হেমচন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে লক্ষ্মীনাথ জানতে পারল, হ্যাঁ কুশল ঠিকই বলেছে। কলেজ প্রতিষ্ঠা করার বিপক্ষে রিপোর্ট দেওয়াটা অসমের জন্য, একটি বড়ো প্রবঞ্চনা। প্রয়োজনীয় তথ্যের সঙ্গে কমিশনারের রিপোর্টের প্রতিলিপি সংগ্রহ করে লক্ষ্মীনাথ আর ও বেশি অস্থির হয়ে পড়লেন। তিনি অ.ভা.উ.সা সভার সম্পাদককে সভা আহবান করতে বললেন।

তখনই সভা আহবান করা হল। সভার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হতেই উপস্থিত সদস্যদের সামনে লক্ষ্মীনাথ নিজের বক্তব্য তুলে ধরলেন–' শ্রদ্ধাভাজন সভাপতি মহোদয় এবং উপস্থিত মাননীয় সদস্যরা, আপনারা জানেন যে ১৮২৬ সনে ব্রিটিশ রাজশক্তি অসমের শাসনভার নিয়ে অসমিয়া বাংলা ভাষার উপভাষা বলে ১৮৩৬ সনে অসমের স্কুল কাছারিতে বাংলা ভাষা প্রবর্তন করে অসমিয়া ভাষা সাহিত্যের গলা চেপে ধরেছিল। তখন আমাদের জাতিটার এতই শোচনীয় অবস্থা ছিল যে প্রতিবাদ তো দূরের কথা, সেই অন্যায় নীতি উঠিয়ে নেবার জন্য আমাদের কেউ সাধারণভাবে কোনো আবেদন নিবেদন ও করেনি। তারপরে আমেরিকান ব্যাপ্টিস্ট মিশনারিরা কীভাবে পুনরায় অসমিয়া ভাষা প্রবর্তন করল, আপনারা জানেন। তারপরেও কোনো কোনো বঙ্গভাষী আমাদের ভাষার স্বতন্ত্রতার উপরে প্রশ্ন তুলে আক্রমণ করে থাকে। আমরা সেসবের প্রতিবাদ করেছি বা ' অকাজের কথা' বলে উড়িয়ে দিয়েছি। কিন্তু এবারের কথাটা উড়িয়ে দেবার মতো সাধারণ লোকের কাছ থেকে আসেনি। কথাটা অসম প্রদেশের রাজধানী শিলং পর্বতের চৃড়ায় বসবাস করা আমাদের রাজার সোনা রুপোর মুখ থেকে বেরিয়েছে । মিস্টার হেনরি কটন সাহেব আমাদের উঠে আসা যুবকদের গায়ে দোষ দিয়ে বলেছেন যে তারা অসমকে নিঃসঙ্গ করার চেষ্টা করে অসমের উন্নতির পথে বাধার সৃষ্টি করছে ।'

'বেজবরুয়া মহাশয় আপনার বাক্যগুলি রসাল।' বয়োজ্যেষ্ঠ করুণা গোহাঁই বললেন,' তথাপি বলছি –আমাকে ক্ষমা করবেন , ভূমিকা দীর্ঘ হয়েছে ,অনুগ্রহ করে মূল কথাটিতে আসুন।'

লক্ষ্মীনাথ গম্ভীর ভাবে বললেন,' মূল কথাটি হল, সম্প্রতি নিযুক্ত হওয়া অসমের কমিশনার হেনরি কটন সাহেব অসমের ছাত্রদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন । ইতিমধ্যে একটা নির্দেশের মাধ্যমে সরকার গুয়াহাটি থেকে এফ এ শ্রেণিটা তুলে দিয়েছে। এখন প্রস্তাবিত কলেজটি গুয়াহাটিতে স্থাপন করতে হবে না বলে সাহেব অভিমত ব্যক্ত করেছেন।'

পেছন থেকে একজন যুবক সদস্য উঠে বলল,' কটন সাহেবের রিপোর্টটা পড়ে দিন।'

' গোটা রিপোর্টটা পড়তে সময় লাগবে। আমি রিপোর্টের বিশেষ অংশটুকু আপনাদের সামনে পাঠ করব। আপনারা শুনুন, কটন সাহেব এক জায়গায় লিখেছেন–'I am not anxious to give any encouragement to the feeling of provincialism which I find to be unfortunately too ripe in the Assam valley districts and would rather impress upon the educated Assamese of the present generation that they can't be independent of Bengal in their language or association .They are dependent of Bengal as Welshmen are dependent on English.And I attribute the slowness of its progress in large measure to the unwise feeling by the Assamese among themselves of a policy of national exclusiveness ….'

লক্ষীনাথ থামলেন।

সামনে বসে থাকা সদস্যদের চোখ মুখে ক্ষোভ উত্তেজনা ফুটে উঠল।

সিটি কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রুদ্র বরুয়া উত্তেজিত কণ্ঠে বলে উঠল এর প্রতিবাদ হওয়া উচিত । জোর প্রতিবাদ করা দরকার ।'

' প্রতিবাদ করব। প্রতিবাদ করতেই হবে। পরিকল্পিতভাবে প্রতিবাদ করার জন্যই এই সভার আহবান করা হয়েছে। কিন্তু তার আগে কথাগুলি ভালোভাবে বুঝে নিন।' লক্ষ্মীনাথ বলতে লাগলেন, উক্ত স্তবকটিতে অসমিয়ার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রথমটি হল'to give any encouragement to the feeling of provincialism', অর্থাৎ গুয়াহাটিতে একটি কলেজ স্থাপন করলে আঞ্চলিকতাবাদকে উৎসাহ দেওয়া হবে। দ্বিতীয়ত,'they cannot be independent of Bengal in their language'. অর্থাৎ 'দে' মানে অসমিয়ারা ভাষার ক্ষেত্রে বঙ্গের চেয়ে স্বতন্ত্র হতে পারে না। তৃতীয়ত,' They are dependent of Bengal as Welshmen are dependent on English.' তার মানে ওয়েলসের মানুষ যেমন ইংরেজদের উপরে নির্ভরশীল ঠিক একই ভাবে অসমিয়ারা বাঙালিদের উপর নির্ভরশীল। বাঙালিদের গায়ে ভর না দিয়ে সোজাভাবে দাঁড়ানো সম্ভব নয় ।'

শ্রোতাদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ল। রুদ্র বরুয়া পুনরায় বলে উঠল –' না প্রতিবাদ পাওয়া দরকার । খুব শীঘ্রই প্রতিবাদ করা দরকার ।'

এই রিপোর্টটা পড়ে আমার এরকম ধারণা হয়েছিল যে কটন সাহেবের অধীনে কাজ করা কোনো বাঙালি কেরানি উচ্চশিক্ষা বিষয়ের নোটটা লিখে অন্যান্য চিঠিপত্রের সঙ্গে সই করার জন্য তার কাছে রেখে দিয়েছিল এবং তিনি মানে এইচ জে এ কটন সাহেব একের পর এক সই করে থাকার সময় সেই নোটটিতেও সই করে দিয়েছেন। কিন্তু কটন সাহেবের জানা উচিত, তিনি যাকে প্রভিনসিয়ালিজম বলেছেন অসমিয়ারা তাকে পেট্রিয়টিজম বলে । তিনি যাকে সংকীর্ণতা বলেছেন অসমিয়রা তাকে আত্মমর্যাদা আত্ম গৌরব এবং মাতৃভূমির প্রতি নিবিড় ভালোবাসা বলে । তারপর কটন সাহেব বলেছেন যে আমাদের অসমিয়া ভাষা কখনও স্বতন্ত্র হতে পারে না। কিন্তু কটন সাহেবের জানা উচিত যে অসমিয়া একটি স্বতন্ত্র ভাষা ,বাংলার অপভ্রংশ নয়। আর এই কথা সরকার ইতিমধ্যে স্বীকার করে নিয়েছেন। অসমে অসমিয়া ভাষার বিজয়দুন্দুভি বেজে উঠেছে , অসমিয়া ভাষার সৌরভ ধুবড়ি থেকে সদিয়া পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে, অসমিয়া ভাষার উন্নতি সাধিনী সভা গুলির পবিত্র মন্দিরের নিশানে' অসমিয়া ভাষার জয়'এর নিশান আনন্দে উড়তে শুরু করেছে। তৃতীয় অভিযোগটা হল–।'

লক্ষ্মীনাথ থামলেন। ক্ষণিকের জন্য চুপ করে থেকে একটা নিঃশ্বাস ফেলে পুনরায় বলতে লাগলেন,' ইংরেজ চীফ কমিশনার কটন সাহেবের মুখ থেকে নির্গত হয়েছে যে ওয়েলসমেনের রাজার জাতি ইংরেজের যে সম্পর্ক অসমিয়ার সঙ্গে বাঙালির সেই সম্পর্ক! এটা আবার কী ধরনের কথা! ইংরেজরা ওয়েলসের রাজা , ইংরেজি রাজ ভাষা , ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ভাষা । ওয়লসের কোনো সদস্য পার্লামেন্টে নিজের এলাকার দুঃখ দুর্দশা, অভাব অভিযোগের কথা বলার জন্য ইংরেজিতে বলতে হবে। ওয়েলস মেনে জ্ঞানের তৃষ্ণা মেটানোর জন্য স্পেলিং বুক থেকে আরম্ভ করে জনসন,বার্ক, হান্সলে,টিন্ডল, হাবার্ট স্পেন্সারের ইংরেজি ভাষার বই পড়তে হবে । ব্যবসা-বাণিজ্য চাকরি ও ইংরেজি ভাষার সাহায্য না নিয়ে করতে পারেনা। এরকম ভাষা এবং এরকম একটি জাতির সঙ্গে কটন সাহেব অসমিয়া এবং বাঙালির সঙ্গে তুলনা করছেন !

কিন্তু এখানে কটন সাহেবকে জিজ্ঞেস করছি – অসমিয়ারা বাংলা না শিখলে বাংলার কোন পার্লামেন্টে নিজের দেশের দুঃখ দূর্গতির জন্য কথা বলতে না পেরে বোবা হয়ে থাকতে হবে ? কটন সাহেবের কাছ থেকে জানতে ইচ্ছে করে , বাংলা না জানার জন্য কোন বড়ো ব্যবসায়ী ধনী মহাজনের সঙ্গে অসমিয়া মনের ভাব প্রকাশ করতে না পেরে ব্যবসায় লোকসান করতে হবে । প্রশ্ন করতে ইচ্ছা করে অসমিয়ারা বাংলা না জানার জন্য অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা, ব্রাজিল ,ইত্যাদি কোন দেশ থেকে বিফল মনোরথ হয়ে চলে আসতে হবে? বাংলা ভাষায় ব্যুৎপত্তি লাভ না করে ইংরেজি শিক্ষিত অসমিয়া কোন প্রাচ্য বা পাশ্চাত্য জ্ঞানের তৃষ্ণা মেটাতে না পেরে চিরকাল মূর্খ হয়ে থাকবে?'

লক্ষ্মীনাথের শ্লেষপূর্ণ বিশ্লেষণাত্মক বক্তৃতা শুনে উপস্থিত সদস্যরা জাতীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে উঠল। তারা বুঝতে পারলেন যে চীফ কমিশনার কটন সাহেবের রিপোর্টটির কোন মূল্য নেই এবং এটি কাঁচা ভিতের উপরে দাঁড়িয়ে থাকা। সঙ্গে ভয় শঙ্কা কাটিয়ে উঠে প্রত্যেকেই আন্তরিকভাবে উপলব্ধি করলেন যে উক্ত রিপোর্টটির প্রতিবাদ হতেই হবে।

সভায় উপবিষ্ট বয়োজ‍্যেষ্ঠ করুণা গোহাঁই এতক্ষণ আগ্রহের সঙ্গে লক্ষ্মীনাথের তেজোদীপ্ত ভাষণ শুনছিলেন। তিনি উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,' মাননীয় বেজবরুয়া মহাশয়, আপনার বক্তৃতার ভাব-ভাষা আপনার বিশ্লেষণ শক্তি, স্বদেশ স্বজাতির প্রতি আপনার দায়িত্ববোধের তুলনা হয় না। বক্তৃতার শুরুতে আপনি বললেন, বাংলা ভাষা প্রবর্তন করায় আমাদের তখনকার বড়ো মানুষ কোনো প্রতিবাদ করেনি। সেটা যে আমাদের জাতির অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় তা দ্বিতীয়বার বলার প্রয়োজন রাখে না । কিন্তু আজ অসমিয়াদের মনে নতুন এক চেতনার সৃষ্টি হয়েছে । এখন অসমিয়া আপনার মতো পুরুষের নেতৃত্বে প্রতিবাদের ভাষা খুঁজে পেয়েছে । ইংরেজের এই অন্যায়ের প্রতিবাদ হতেই হবে। তার জন্য আপনাকেই নেতৃত্বের ভার নিতে হবে।'

' কিন্তু প্রতিবাদ জানানোর পদ্ধতিটা কী হবে ?'

করুণা গোহাঁই বললেন,' আপনার হাতে কটন সাহেবের রিপোর্টটা রয়েছে যখন আপনি তার প্রতিবাদ লিখুন । সমস্ত কথা বিস্তৃতভাবে লিখে পুস্তিকার আকারে ছাপানোর বন্দোবস্ত করুন। তারপরে আমরা অ.ভা.উ.সা সভার তরফ থেকে সরকার এবং সরকারি শাসন বিভাগে অধিষ্ঠিত সমস্ত অফিসারকে পাঠিয়ে দেব ।'


শব্দব্রাউজ ৫৯৬ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-596, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ ৫৯৬ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-596, Nilanjan Kumar



শব্দব্রাউজ- ৫৯৬ ।। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা । ২৪। ৮। ২২। সময়- ৭টা ১০মিনিট ।


শব্দসূত্র: যে কথায় ঘোড়াও হাসে


যে শব্দে মানুষের সঙ্গে ঘোড়াও হেসে ওঠে, তাকে ছুঁতে ইচ্ছে হয় । হাস্যকর জীবনের ভেতরের লজ্জা ও অবহেলা উপভোগ করতে করতে মজায় থাকতে চাই ।


যে কথা শুনতে অপেক্ষা করি, তাকে খুঁজে পেলে যে আনন্দ তাকে কি নামে ডাকবো ?


ঘোড়া কি সত্যি হাসে ? অথচ উপমায় কত সুন্দর!


হাসি তুমি থেকে যাও আজীবন । শেষ মুহূর্তেও তোমার শব্দ শুনতে চাই ।

বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

শব্দব্রাউজ ৫৯৫ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-595, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ ৫৯৫ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-595, Nilanjan Kumar



শব্দব্রাউজ- ৫৯৫ ।। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা । ১৬। ৯। ২২। সময় সকাল আটটা চল্লিশ মিনিট ।



শব্দসূত্র: আরো কি তোমার চাই



আরো কত নেবে তুমি ,

অফুরন্ত ভাণ্ডার জুড়ে

সমস্ত স্বপ্ন

একান্ত তোমার ।



কি আর হবে নিয়ে নিলে

সব দৌলত, 

তখন বুঝে যাব প্রকৃত মানুষ

হৃদয় ভরে ।



তোমার অহং বৈভব আঁকড়ে বাঁচে

বৈভব হারালে ....



চাই তো এক ব্রম্ভ্রান্ড বাস্তব

আর মনে মনে

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশ দেহি ....


বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২

শব্দব্রাউজ ৫৯৪ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-594, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ ৫৯৪ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-594, Nilanjan Kumar



শব্দব্রাউজ- ৫৯৪ ।। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা । ১৫। ৯। ২২।সময় ৮ টা ১৫মিনিট ।


শব্দসূত্র: আমাকে বাদ দিয়ে



আমাকে ' আমি ' থেকে বাদ দিলে

হাজারো শব্দ জড়ো হয়ে যায় ।



বাদ দিতে দিতে নিঃস্ব হলাম

এখন আমার মজা

আকাশচুম্বি ।



সবাই- এর ভেতর নিজেকে মেনে নিয়ে

ঘরে ঘরে জননী ভাই ভগিনী পেলাম ।

মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২

শব্দব্রাউজ ৫৯৩।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-593, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ ৫৯৩।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-593, Nilanjan Kumar



শব্দব্রাউজ- ৫৯৩। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা । ১৪। ৯। ২২। সময় সকাল আটটা চল্লিশ মিনিট ।


শব্দসূত্র : ল্যাজেগোবরে হওয়ার সময়



ল্যাজেগোবরে করার মতো দিন

আমার সঙ্গে ছায়ার মত থাকে

হুট করে কখন যে নাস্তানাবুদ করবে

দেবতাও জানে না ।



বড় বেশি ব্যস্ত হওয়ার মতো

কিছু নেই, 

লক্ষ্য ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে ।



সময় শেখায় ন্যায় অন্যায়

পাপ তাপ

মূল্যবোধ জড়িয়ে যায় ।

সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আটপৌরে ৩৪৯|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 349, by Sudip Biswas

 আটপৌরে ৩৪৯|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 349, by Sudip Biswas



৩৪৯.

শব্দব্রাউজ ৫৯২।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-592, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ ৫৯২।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-592, Nilanjan Kumar



শব্দব্রাউজ- ৫৯২। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা । ১২। ৯। ২২। সময় সকাল সাতটা পন্ঞ্চাশ মিনিট ।



শব্দসূত্র: এগিয়ে গিয়ে পাবো তোমায়



এগিয়ে গিয়েই না হয় কাছে এলাম

ভালোবাসা কুড়িয়ে কোচরে ভরলাম।



এগিয়ে গেলে কি অহংকার নাশ, 

না কি ব্যক্তিত্ব লাঘব? 



তবু পাবো আলিঙ্গন শরীরী তাপে

মন পাব কিছু পরে সেতো ভবিতব্য ।



স্বপ্ন রমন স্বাদ বড় ক্লিশে

তোমাকে চাই রাতের সুখে নয়

অবিরাম রক্তপ্রবাহে ।


রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

শব্দব্রাউজ ৫৯১।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-591, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ ৫৯১।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-591, Nilanjan Kumar



শব্দব্রাউজ- ৫৯১। নীলাঞ্জন কুমার


বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা । ১১।৯। ২২। সময় সকাল সাড়ে ন ' টা ।



শব্দসূত্র: কুমির জলে নেমেছি



কুমিরের কাছে জলে নামলেই সেতো ছুটে আসবে । তার লোভ জীবন তখন তুঙ্গে ।



খুব জলে ডুব সাঁতারে আলাদা মজা । সে সময় সব স্তব্ধতা আমার জন্য । আবার ভেসে উঠলেই বাস্তব তাড়িয়ে বেড়ায় ।



জলে নেমেছি বলে শিখে নিয়েছি কুমির থেকে বাঁচার পন্থা। না নামলে কি জয় হয় ।



আটপৌরে ৩৪৮|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 348, by Sudip Biswas

 আটপৌরে ৩৪৮|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 348, by Sudip Biswas



৩৪৮.

মহামান্য 


তমোগুণ। বণিক। সমিতি। 


অপারেশন


 জরুরি বিভাগের সকল তুরীয়বর্ণ।

শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আটপৌরে ৩৪৭|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 347, by Sudip Biswas

 আটপৌরে ৩৪৭|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 347, by Sudip Biswas



৩৪৭.

আয়োজন


জীবনপাত্র। পরাণখানি। উপহার।


আলোছায়া


 মায়াবী জাল মরণের দ্বার।

শব্দব্রাউজ ৫৯০।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-590, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ ৫৯০।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-590, Nilanjan Kumar



শব্দব্রাউজ- ৫৯০

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা । ১০। ৯। ২২। সময় সকাল আটটা ।



শব্দসূত্র: লাল নীল সবুজের মেলা



১। লাল মানেই কি বিপদের বার্তা?

     ছুটে আসে বিনাশ?



২। নীলাকাশ মানেই কি ওড়ার ইচ্ছে?

      গাঙচিল হতে চাওয়া তখন সহজ ।



৩। সবুজ মানেই কি হাহাকার বাদ? 

     অগুনতি ফসল শুধু দেখি আর দেখি ।



৪। লাল নীল সবুজের মেলা সারাক্ষণ

     সুর আসে । গান বানাই । শব্দ সাজাই ।

     


শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আটপৌরে ৩৪৬|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 346, by Sudip Biswas

 আটপৌরে ৩৪৬|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 346, by Sudip Biswas



৩৪৬.

তন্ত্রী


সন্ধ্যাগগনে। বীণারমন্ত্র।রমণীমোহন।


উপবাসে 


প্রাণ গাঁথেনি পুজার গান।

শব্দব্রাউজ ৫৮৯।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-589, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ ৫৮৯।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-589, Nilanjan Kumar



শব্দব্রাউজ- ৫৮৯

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা । ৯। ৯।২২। সময় সকাল আটটা ।



শব্দসূত্র: বজ্রগুণনে মেতে আছি



বজ্রগুণনের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে যাবতীয় স্বপ্ন সৌন্দর্য । দিনের হিসেব পেরিয়ে প্রিয় সত্য আমার সঙ্গে । বজ্রগুণনের ভেতরে মিশে থাকে সংখ্যা ।



মেতে আছি শব্দ যাপনে । সেখানেও অবিরত সংখ্যার বার্তা ।



আছি সুখে দুঃখে । দিনের অংক জড়িয়ে ।

কিছু বই কিছু কথা- ৩০০। নীলাঞ্জন কুমার আইল্যা পায়াস । নীহার জয়ধর, Nihar Joydhor

কিছু বই কিছু কথা- ৩০০। নীলাঞ্জন কুমার




আইল্যা পায়াস । নীহার জয়ধর ।
সুতরাং,  বাণীপুর , চব্বিশ পরগনা  ( উত্তর) । একশো ত্রিশ টাকা ।


' তারপর একদিন বিক্রি হয়ে যাই লপ্তে/ উঁচু থান নিচু মাথা / মার্কেটে,  আমার অর্জিত ইমারত ' (' উচ্চতার')
মতো কবিতা যখন কোন কবির প্রথম কবিতা গ্রন্থে পাওয়া যায় তখন তার প্রতি আকর্ষণ বাড়ে বৈকি । নীহার জয়ধরের প্রথম কাব্যগ্রন্থ  ' আইল্যা পায়াস ' -এ
ছড়িয়ে আছে এ ধরনের অনেক পংক্তি যার ভেতরে থেকে  তাঁর কবিতার প্রতি ভালো লাগা গড়ে ওঠে । তবে এ কথা বলতেই হয় কবির কবিতায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে অতিশয়োক্তি লক্ষ্য করা যায় যা কারো প্রথম কাব্যগ্রন্থে
যে কোন  কবির থাকতে পারে । কিন্তু যখন এই কবির 'কিছু  ফাটা মানুষেরা দরদাম করে নিয়ে যান ' ( ফাটা ডাল ও কপাল)  নয়তো 'অচেনা পুরুষ/  পেঁয়াজের খোসার মতো অন্তর্বাস খোলার/  অধিকার কিনে নিলে/  ভাষা,  তুমি সেই ' না ' এ লেখা অর্জিত সভ্যতা ' ( যেভাবে তোমাকে পাই)  পড়তে পড়তে সেই সব ত্রুটি বিচ্যুতি কখন যে ভুলে যাই!
                  এক কথায় বলা যায় এই কবি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় । তরুণ কবির পরবর্তী কাব্যগ্রন্থের দিকে তাকিয়ে রইলাম । কাব্যগ্রন্থের তুষার কান্তি সাহা কৃত প্রচ্ছদটি এক সাধারণ আঙ্গিকে বইটির মেজাজ ফোটাতে চেয়েছেন ।পরিশেষে নীহারের কাব্যগ্রন্থ কোনভাবে ' আইল্যা পায়াস ' ( নুনহীন পায়েস' )হয়নি ।

বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আটপৌরে ৩৪৫|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 345, by Sudip Biswas

 আটপৌরে ৩৪৫|| সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 345, by Sudip Biswas



৩৪৫.

দেউল 


স্মারকচিত্র। পুজারঅর্ঘ্য। ভাঙামন্দিরে।


আরতি-বারতা


জনহীন ভ্রমে স্থিরগম্ভীর চরাচরে।

শব্দব্রাউজ ৫৮৮।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-588, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ ৫৮৮।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-588, Nilanjan Kumar



শব্দব্রাউজ- ৫৮৮

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা । ৮। ৯। ২২। সময় সকাল সাতটা পাঁচ মিনিট ।


শব্দসূত্র: আ চৈ চৈ


স্নেহের চোটে যখন আয় কে আ হয়ে যায়, তখন বুঝতে পারি প্রকৃত স্নেহস্পর্শ । তখন আর কোন হিসেব থাকে না, বাস্তব অবাস্তব মিলেমিশে অন্য জগৎ । আহা!


চৈ চৈ করে ডাক দিলে যেমন পাখি ছুটে আসে, ঠিক তেমন রক্ত সংবহনে অবুঝ উল্লাস অনুভূতিতে হানা দেয় ।


আ চৈ চৈ দিন প্রতিদিন আমার সঙ্গে থাক ।


Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...