Purabi লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
Purabi লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

রবিবার, ৬ মার্চ, ২০২২

পূরবী- ৮৬ ।। অভিজিৎ চৌধুরী ।। Purabi- 86

পূরবী- ৮৬

অভিজিৎ চৌধুরী 




রবীন্দ্রনাথের তিরোধানের পর ঠাকুর বাড়িতে পড়ে রইলেন মহর্ষির দুই বিকৃতমস্তিষ্ক পুত্রের পরিবার।জমিদারির আয় অনেক আগেই চলে গেছিল।শুধুমাত্র লেখা দিয়ে ও অক্লান্ত পরিশ্রম করে রবীন্দ্রনাথ ৬ নম্বর জোড়াসাঁকোর বাড়িটিকে রক্ষা করেছিলেন।

তাঁর মৃত্যুর পর সবই মুহূর্তের কালের অক্ষরে ইতিহাস হয়ে গেল।সেই নাটমঞ্চ সেই খাজাঞ্চিখানা বুড়ো বটগাছ কেয়ারি করা বাগানের বদলে পড়ে রইল একরাশ হতাশা।হয়তো চিলেকোঠার ঘরে নতুন বউঠান অপেক্ষা করতেন রবির জন্য।রবি যে নোবেল পেয়েছেন সেই লোকে গিয়েও তিনি হয়তো হেসেছেনও।বলেছেন,তুমি বড্ডো খ্যাতির কাঙাল।

আজকের ভাষায় তীর্থ বলল,অ্যাওয়ার্ড। 

রথী অনেক আগেই চলে গেছিলেন সব কিছু ছেড়ে।

৫ নম্বর জোড়াসাঁকোর বাড়িটিকে রক্ষা করতে পারেননি অবন ঠাকুর।তাঁর কোন রকম বৈষয়িক বুদ্ধি ছিল না।অনেক আগেই ৫ জোড়াসাঁকোর বাড়ি বিক্রি করে তিনি উাঠেছিলেন ভাড়াবাড়িতে।

জোড়াসাঁকোর বাড়িগুলির দিকে তাকিয়ে খুব কান্না পাচ্ছিল তীর্থের।মনে হচ্ছিল,হে ছলনাময়ী, তোমার সৃষ্টির পথে শুধুই কি বাসন্তীর দীর্ঘশ্বাস!

একবার সে সকলের সঙ্গে বউঠানের কাছে এলো।

তিনি যেন বললেন,তুমি কে!

তীর্থ বলল কোমল স্বরে, আমি তীর্থ।

তিনি ফিসফিস করে বলে উঠলেন,তুমি রবি।ছদ্মবেশে আমায় ঠকাতে এসেছ!

আকাশে তখন এক ঝলক রামধনু দেখা দিয়েছে।

দিনের আলো গভীরে গেলে রাত হয়,আবার বসে সাহিত্য বাসর।

রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

পূরবী- ৮৫ ।। অভিজিৎ চৌধুরী ।।Purabi- 85

পূরবী- ৮৫

অভিজিৎ চৌধুরী


 

এই নে আমার বীণা দিনু তোরে উপহার,/ যে গান গাহিতে সাধ, ধ্বনিবে ইহার তার।

বারবার বলতেন আমার গান থাকবে।

কতো রাত তীর্থের কেটেছে গহন অন্ধকারে রবিবাবুর গানু শুনে।

ঘুম না হলে স্বাস্থ্য ভাল থাকে না।আইনস্টাইন দশ ঘন্টা ঘুমের কথা  বলতেন।নেপোলিিয়ন নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী ঘুমিয়ে নিতেন।কখনও কখনও তিনি নাকি ঘোড়ার ওপর শুইয়ে পড়তেন।

সেন্ট হেলেনা বা এলবা দ্বীপে তাঁর কি ঘুম আসতো! প্রতিদিন তাঁর শরীরে চলছে বিষক্রিয়া। অবশ্য তিল তিল মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়েও পড়াশুনাটা ছাড়েননি।বলেন নি আমার সময় নেই বা মন খারাপ।

কাল সারা রাত আপনি

 তো ঘুমোন নি! 

হাসলেন রবীন্দ্রনাথ। বললেন, হ্যা।পারিবারিক একটা বিবাদে মন ভারাক্রান্ত ছিল।

ভোরে দেখলাম গান গাইছেন।

গানের সুর, ভোরের আলো মনটাকে পরিশ্রুত করল।তাই তো এসেছি উপাসনা গৃহে।

তোর গানে গলে যাবে সহস্র পাষাণ- প্রাণ।

বেথুন সোসাইটির ডাকে মেডিকেল কলেজ হলে প্রবন পাঠের কথা ছিল।বিষয় ছিল সংগীত।রেভারেণ্ড কৃষ্ণমোহন এসেছিলেন।

মেডিকেল কলেজ হলে তারা বাংলার লেখক সন্মাননা পেয়েছিল তীর্থ আর অনেকের সঙ্গে।

তখন বারবার মনে হয়েছিল,রবীন্দ্রনাথ এসেছিলেন।বিষয় ছিল সংগীত।

রবিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

পূরবী - ৮৪ ।। অভিজিৎ চৌধুরী ।। Purabi- 84

পূরবী - ৮৪

অভিজিৎ চৌধুরী 





তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা মাঘ ১৩০১ ও ১৮১৬ শকাব্দ লেখা হল - সর্বপ্রথমে ঘন্টারব হইল।তখন সকলে ব্রহ্মোপসনার জন্য প্রস্তুত হইলেন এবং শ্রদ্ধাস্পদ বাবু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে অগ্রবর্তী করিয়া মঙ্গল গীত গাহিতে গাহিতে মন্দির প্রদক্ষিণ করিলেন।পরে আচার্যেরা বেদী গ্রহণ করিলে শ্রদ্ধাস্পদ বাবু ক্ষিতীন্দ্রনাথ ঠাকুর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে অগ্রবর্তী করিয়া মঙ্গলগীত গাহিতে গাহিতে মন্দির প্রদক্ষিণ করিলেন।

প্রশ্ন হচ্ছে এই ব্রহ্ম উপাসনা যে শুরু হল তার একদম উল্টোদিকে সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতীয়দের মধ্যে প্রথম আই সি এস হলেন ১৮৬৪ সালে।ইংল্যান্ড গিয়ে তখন পরীক্ষা দিতে হতো।কংগ্রেস তখনও গঠিত হয়নি স্বাধীনতার ভাবনা দূর অস্ত।সিভিল সার্ভেন্ট হতে পারাকে একটা মাইলস্টোন হিসেবে ধরা হল প্রতীচ্য সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার।

রবীন্দ্রনাথ জন্মগ্রহণ করেছেন ১৮৬১।

একদিকে উপাসনা অন্যদিকে ইউরোপীয় সংস্কৃতির চর্চা এই দুইয়ের মেলবন্ধনে তিনি বেড়ে উঠছেন।

ইউরোপ যাত্রার ডাইরিতে তিনি লিখেছিলেন,সেই সভ্যতার মাঝখানে ঝাঁপ দিয়ে তিনি আঘাত আবর্ত সবকিছু অনুভব করতে চেয়ে ছিলেন।

তারপর শিলাইদহে গিয়ে এক অন্য রবীন্দ্রনাথের যাত্রা।

জীবন যদি বহুমাত্রিক না হয় তবে তা আন্তর্জাতিক তো দূরের কথা এই দেশেরও হতে পারে না।

তীর্থ অপেক্ষা করছে এক অনাবিল মুক্তির যেখানে সে অনুভব করতে পারব সামগ্রিক মানব সত্তার।

ব্রাহ্ম সংস্কৃতি বা ধর্ম তাও কি ধরে রাখতে পেরেছে রবিবাবুকে।সরস্বতী বন্দনাও রয়েছে তাঁর গানে।পৌত্তিলকতাও সৃষ্টির কারণে গ্রহণীয়। শেষ অবধি পূরবীর বেলা অবসানেও তাইই ছিলেন।

রবিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২২

পূরবী -৮১ ।। অভিজিৎ চৌধুরী ।। Purabi-81

পূরবী -৮১ 

অভিজিৎ চৌধুরী, Purabi-81



তীর্থের কখনও কখনও মনে হয় রবীন্দ্রনাথ কি রাজভক্ত ছিলেন।
পথের দাবীর লেখককে রবীন্দ্রনাথ এই ধরনের সরাসরি রাজনৈতিক উপন্যাস লেখার জন্য  অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলন।
শরতবাবু হাওড়া জেলা কংগ্রেসের সভাপতি হলেও বিপ্লবীদের সাহায্য করতেন।সূর্য সেনকে ৫০০০/ টাকা পাঠিয়েছিলেন।পথের দাবী ইংরেজ সরকার নিষিদ্ধ করেন।
রবীন্দ্রনাথের রাশিয়ার চিঠি সম্পর্কেও এরকম শোনা যায়।রাশিয়া ভ্রমণ কবির মধ্যে কিছু বদল এনেছিল।হয়তো গুপ্ত হত্যা তিনি মেনে নিতে পারতেন না।তাই বলে সুভাষচন্দ্র ও আজাদ হিন্দ ফৌজের কর্মকাণ্ড নিয়ে তিনি আগ্রহ দেখাতেন কিনা বোঝা গেল না।কবি চলে গেলেন ১৯৩৯ এ।
বিপ্লবীদের কাছে বিবেকানন্দ ছিলেন আদর্শ।ুকজন অ্যাক্টিভিস্টও।
রবীন্দ্রনাথ সেই ভাবে সহিংস আন্দোলনে তাঁর গানে কবিতায় আলোড়ন তুলতে পেরেছিলেন কি!
ব্যতিক্রম জালিওয়ানাবাগ।

রবিবার, ৯ জানুয়ারী, ২০২২

পূরবী -৮০ ।। অভিজিৎ চৌধুরী ।। Purabi-80

পূরবী -৮০

অভিজিৎ চৌধুরী 







মেজ বউঠান ঠিক করিলেন বালক বাহির কটিবেন।

উদ্দেশ্য ছিল ঠাকুর বাড়ির বালকেরা নিজেদের রচনা এখানে প্রকাশ করবে।অচিরেই লেখার অভাব পড়ল, ডাক পড়ল রবীন্দ্রনাথের। 

এই সময় রবীন্দ্রনাথ কিছুদিনের জন্য দেওঘরে রাজনারায়ণবাবুর কাছে গেছিলেন।

ফেরার সময় ট্রেনে ঘুম আসছিল না বলে ভাবলেন বালক পত্রিকার জন্য গল্প লিখবেন।গল্প লেখা হল না।শেষমেশ ঘুমিয়ে গেলেন আর দেখলেন স্বপ্ন।

লেখা হল রাজর্ষি।বালকে ধারাবাহিক ভাবে বের হতে লাগল।

তীর্থকেও এরকম পাতা ভরানোর লেখা লিখতে হয়।যা কিছু একটা হবে লিখতে গিয়ে অনেক সময় খানিকটা পুরোনো লেখারও মার্জনা হয়েছে।

রবিবার, ২ জানুয়ারী, ২০২২

পূরবী- ৭৯ ।। অভিজিৎ চৌধুরী ।। Purabi

পূরবী- ৭৯

অভিজিৎ চৌধুরী 



বর্ষশেষের পূরবীর রাগে কেমন বেসুরে বীণা বাজে।কোথায় সেই রোদনভরা বসন্ত।সখীর কুসুম কোমল হৃদয় আছে কি! ই ইংরেজি পয়লা তো নিজের নয়।

চার্চে নতুন বছরের ঘন্টা।ইংল্যান্ড। রবীন্দ্রনাথ লিখলেন,পুরোনো সেই দিনের কথা।

জোড়াসাঁকো। অধ্যাপিকা নিয়ে গেলেন সেই ছাদে।উড়ে এলো কি সেই সুবাস!

নতুন বউঠানের মৃতদেহ,ঝুলে পড়া চুল ওপারে ৫ জোড়াসাঁকোর বাসিন্দারা দেখতে পান।সেই খোলা ছাূে আর একটি ঘর যক্ষা হওয়ার পর রেণুকা থাকতেন।

পেরুর একটি প্রতারিত আমন্ত্রণপত্রে পথভুলে বুয়েনাস আয়ার্স।প্লাতা নদী ও কবির বিজয়া।বয়স তখন ৬৩।চিত্রকরের  ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর কবির জীবদ্দশায় আর এলেন না।

রবিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১

পূরবী -৭৮,অভিজিৎ চৌধুরী ।। Purabi- 78

পূরবী- ৭৮

অভিজিৎ চৌধুরী



আমার পিতা সেই শিখ উপাসকদের  মাঝখানে বসিয়া সহসা এক সময় সুর করিয়া তাহাদের ভজনায় যোগ দিতেন।

রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন,ফিরিবার সময় মিছরির খণ্ড ও হালুয়া লইয়া আসিতেন।

জালিয়ানা হত্যাকাণ্ডের পর যখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বুদ্ধিজীবীরা যখন নীরব ছিলেন,তখন রবীন্দ্রনাথ একমাত্র প্রতিবাদ করেছিলেন।সেই প্রতিবাদের সাহসী চিঠি, নাইটহুডকে প্রত্যাখান আজকের সময়ের নিরিখেও অনন্য। আজও শুনেছি অমৃতসরে শোকজ্ঞাপনের সঙ্গে সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিও উঠে আসে বিনম্রতায়।

এক নিতান্ত বালকের সেই স্মৃতি, যেন এক উজ্বল পরম্পরা হয়তো সহিষ্ণুতার স্মারক। শুধু ইউরোপ নয় ভারতীয় রাগ সংগীতও রবীন্দ্রনাথ  নিজের মতন করে আত্মস্থ করেছিলেন।

এই যে ছড়িয়ে যাওয়া নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে আটকে না থাকা তা হয়তো ঠাকুরবাড়ির সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলও সহায়ক হয়েছিল।

তবুও তীর্থ মনে করে ব্যক্তি যখন বিবস্বানের দীপ্তিতে প্রতিভাত হন তখন তিনি আবহমসনকালের মন্ত্রে নিজেকে দীক্ষিত করেন।তাঁর পরিবার,আত্মজনদের পক্ষেও বিপুলা ধরিত্রীর মানসপুত্রকে ক্রমশ অচেনা লাগে।

রবিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২১

পূরবী- ৭৫ ।। অভিজিৎ চৌধুরী,Purabi- 75

পূরবী- ৭৫

অভিজিৎ চৌধুরী




আই ডাই অ্যান্ড ইয়েট নট ডাইস অন মি।

আমায় নইলে তোমার প্রেম হতো যে মিছে।

কখনও কখনও প্রেম ও পুজো মিশে যাচ্ছে।আমি চলে যাব কিন্তু আমার যাবতীয় কিছু  যদি তোমার ইচ্ছের সঙ্গে মিশে যায়, তবে ঈশ্বরের আরাধনায় সত্যি হবে কিন্ত ভালোবাসায় কি একই রকমের সত্যি হবে! 

বউঠান বলতেন,তুমি বড় খ্যাতির কাঙাল।তুমি ভালোবাসার কাঙাল হতে পার না! মুক্ত কণ্ঠে বলতে পার না আমি ভালোবাসি।

বহু বছর পরে যখন লিখলেন ভালোবেসেছিনু এই ধরণীরে,ভালোবেসেছিনু।

সেকি শুধু কল্পমায়া!

আর আসেননি ওকাম্পোর।আড়ালে থেকে প্যারিসে প্রবীণ রবীন্দ্রনাথের চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন।

যখন বিজয়া নাম দিলেন তখন আর দেখা নেই।

চির বিচ্ছেদ থেকে মুক্তির সন্ধান।

কোন সমুদ্রে আপনি অবগাহন করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ!  ভালোবাসা না ঈশ্বরীয় প্রেমের!  

উত্তর হবে মানব মানবীর প্রেমের।

কিন্তু ভয় পেয়েছেন কবি।নিজের রক্ষণশীলতার কাছে বারবার হার হয়েছে!

নাকি কোন দ্বিধা!

রবিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২১

পূরবী- ৭৪ ।। অভিজিৎ চৌধুরী ।। Purabi- 74

পূরবী- ৭৪

অভিজিৎ চৌধুরী



রবীন্দ্রনাথ তখন লন্ডন ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছেন।ইংরেজি পড়াতেন হেনরি মরলি।রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন,তিনি কোন শব্দের অর্থ বলতেন না কিন্তু এমন ভাবে আবৃত্তি করতেন সবটা কল্পনায় স্পষ্ট হয়ে যেত।

সপ্তাহান্তের ছুটির আগের দিন ছাত্ররা তাঁর ডেস্কে নিজেদের নাম না লিখে প্রবন্ধ গুঁজে দিয়ে আসত। আর পরের সপ্তাহে স্যর হেনরি মরলি সমালোচনা করতেন।

রবীন্দ্রনাথ একবার  করলেন কি ইংরেজদের নিন্দে করে একটা প্রবন্ধ  হেনরি মরলির ডেস্কে রেখে এলেন।যদিন সমালোচনা হওয়ার কথা পালিয়ে এসে নির্জনে বসে রইলেন।হয়তো কপালে অশেষ দুঃখ আছে।

এই সময় সহপাঠী লোকেন পালিত এসে পীঠ চাপড়ে দিলেন।

কি লিখেছ রবি,আজ তো তোমার জয় জয়কার।

রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন,প্রশংসা বরাবরই আমার ভাগ্যে জোটেনি।সেদিনযেন নতুন সূর্যোদয় হল।

তীর্থ ভাবছিল,সেদিনের যুবকের জীবনে সূর্যোদয় বড্ডো বিলম্বিত ছিল।

কিন্তু যেদিন তা এলো নোবেল প্রাইজের বাহক হয়ে, তিনি ছিলেন অন্যমনে।চাঁদের আলোয় যাচ্ছিলেন বনভোজনে।তা কিন্তু বাাতিল হল না।

শান্তিনিকেতন থেকে ১৯১২ তে ইংল্যান্ড যাওয়ার প্রাক্কালে যখন   Songs Offerings  শুরু করেছিলেন,মনে হয়েছিল এ যেন অন্য কোন আহ্বান।অশ্রুত।

শেষ জন্মদিনের আগে লিখেছিলেন,হে নূতন দেখা দিক আরবার.... 

সেই  নব উন্মেষ  চিরকাল প্রবহমান রইল।

জীবন তো তাই।প্রতিটি ক্ষণ নতুন করে দেখা।


রবিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২১

পূরবী - ৭৩ ।। অভিজিৎ চৌধুরী ।। Purabi- 73

পূরবী-৭৩

অভিজিৎ চৌধুরী


 


 শান্তিনিকেতনে নোবেল প্রাইজ প্রাপ্তির সম্বর্ধনা সভায় কবি বলেন,দেশবাসী এতোদিন ধরে যে অপমান ও অপযশ দিয়ে এসেছেন,তার পরিমাণ কম নয়।আর আমার কবিতায় কখনও রৌদ্র,কখনও বা মেঘের ছায়া।ফলে এই ভালবাসাও সাময়িক।আর নোবেল প্রাইজ সাহিত্যর মাপক হতে পারে না।আমি পূর্বের উপাসক, কেন পশ্চিম আমায় গ্রহণ করল জানি না।তবুও আমার কৃতজ্ঞতা রইল।

আর আমি কোন জননেতস নই, কোন লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের অধিকারীও নই,ফলে আমি সামগ্রিক জনসংখ্যার প্রতিনিধিত্বও করি না।

ফলে আপনাদের মদিরা ওষ্ঠ স্পর্শ করল কিন্তু গলাধঃকরণ করতে পারল না।

তীর্থ আরেকবার তাকাল কবির প্রতিকৃতির দিকে।নভেম্বর মাসে তিনি নোবেল প্রাপ্তির সংবাদ পান।সেদিন হয়তো আনন্দের সঙ্গে সংমিশ্রিত ছিল দীর্ঘ দিনের অপমান।আজও রবীন্দ্রনাথ কারণে অকারণে লাঞ্ছিত হন।

ওপরের তাঁর প্রতিক্রিয়া তীর্থ নিজের মতোন করে লিখেছে।রবীন্দ্রনাথ অনুমতি দিয়েছেন,সে টের পেলো ছাতিম ফুলের গন্ধে।

রবিবার, ৭ নভেম্বর, ২০২১

পূরবী- ৭২ ।। অভিজিৎ চৌধুরী ।।Purabi- 72

পূরবী- ৭২

অভিজিৎ চৌধুরী



 

আমি প্রকৃতির সন্তান,আমাকে প্রকৃতির বুকে ঝরে পড়তে দাও।পুত্র রথীন্দ্রনাথকে তিনি এরকমটাই বলেছিলেন।

চিরকাল বাবার ভাস্বরে রথীকে খুব ছোট মনে হয়েছে।নিজের সত্তার অনেকটাই বিসর্জন দিয়েছিলেন তিনি।আক্ষেপ দেখাননি কখনও।পিতৃস্মৃতিতেও কি অনন্য অনুভব তাঁর এমন এক মহাজীবনকে কাছ থেকে দেখায়।

তীর্থ ভাবছিল অতিরিক্ত স্তাবকতা কবিকে শেষ জীবনে কিং লিয়রের মতোন করে তুলেছিল।মানুষ চিনতে ভুল করতেন।কিছুটা ব্যতিক্রম রথী।আর বারবার ফিরে যাচ্ছেন নতুন বউঠানের কাছে।সেই প্রথম দিকের সাহিত্য সঙ্গী।এক অসমাপ্ত জীবনে কিছু রেখাপাত রেখে মানুষের চলে যাওয়া।বউঠান বলতেন,রবি, তুমি বড় খ্যাতির কাঙাল।

তবুও তিনি যে সংমিশ্রন পৃথিবীর যাবতীয় সংস্কৃতির, ধর্মের হয়তো ভূগোলেরও।

আর গোপনে নতুন বউঠানকে ডেকে বলা,তুমি কি চাও না আমার লেখা সকলে পড়বে!

না,চাই না।এই লেখাগুলি শুধু তোমার আর আমার।

রবিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২১

পূরবী- ৭১ ।। অভিজিৎ চৌধুরী ।। Purabi- 71

পূরবী- ৭১

অভিজিৎ চৌধুরী 



অনেক বছর আগে একটু অপরিচিত এক কাকুর বিয়ে হচ্ছে।যিনি বর তিনিই দেখিয়ে দিচ্ছেন কলাপাতা কেমন করে টেবিলে সাজাতে হবে।তীর্থ একটু অবাক হয়েছিল,বউকে ফেলে বিশেষ করে যখন নতুন এরকম কেউ খাওয়ার টেবিলের তদারকি করতে পারেন! পরে জেনেছে একে বলে কাল রাত্রি।

বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানের প্রতি তরুণ প্রজন্মের বিশ্বাস চলে যাচ্ছে।কেউ কেউ ভাবছে, উটকো ঝামেলা।দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটিং যেমন অচল,সম্পর্কও তাই।অস্থায়ী।

রবীন্দ্রনাথের জন্য পাত্রী পাওয়া যাচ্ছিল না।শেষমেশ হল।তিনি নিজেই বিয়ের চিঠি লিখলেন।একজন চলে গেলেন পরে পরেই।নতুন বৌঠান।কেন গেলেন চিরঘুমের দেশে।হয়তো ভোলেননি কখনও তাঁর সেই সাহিত্য সঙ্গীর কথা,যাঁকে কিছুতেই লিখে চমকে দেওয়া যেত না।

রবিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২১

পূরবী- ৭১ ।। অভিজিৎ চৌধুরী ।। Purabi-71

 পূরবী- ৭১ 

অভিজিৎ চৌধুরী 


 (৭১)

  রবীন্দ্রনাথ কি অতিমানব ছিলেন! অন্তত মৃত্যু তো উত্তীর্ণ করেছেন বরং মৃত্যুশোক থেকে উত্তোরিত হয়েছেন বারবার।মরকতকুজ্ঞে এক সময় ক্লাস করত তীর্থ। কখনও বেদনা,কখনও উল্লাস আজও যেমন থাকে সেদিনও ছিল।তফাৎ একটাই আজ একটা ঘর আছে।আছে সেখানে লুপ্ত মরকতকুজ্ঞের বাতায়ন।

  জীবন এরকমই।গোধূলির আলোয় দিবা অবসান ঠিকই কিন্তু নতুনের সূত্রপাত।

   যেতেই হবে বাইশে শ্রাবণের কাছে।খুব একা ছিলেন বোধহয় তিনি।তীর্থও অনুভব শিল্পী কখনও কারুর বন্ধু হতে পারে না।চোখের আলোয় যে দেখা বিভ্রম হয় যাঁরা দেখেন চোখের সীমানার ভিতর থেকে।



রবিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২১

পূরবী~ ৬৮ || অভিজিৎ চৌধুরী || Purabi- 68

পূরবী~ ৬৮

অভিজিৎ চৌধুরী



রবীন্দ্রনাথ পাহাড় ভালোবাসতেন না।বলতেন আমার দৃষ্টি আটকে যায়।যদিও বালকবেলায় হিমালয় ভ্রমণে গেছিলেন পিতৃদেবের সঙ্গে, গেছেন মংপু।এছাড়াও শিলং পাহাড়ের পটভূমিতে একাত্তর বছরের রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন প্রেমের উপন্যাস শেষের কবিতা।

তবু পদ্মা গঙ্গার সঙ্গে তাঁর আজন্ম সখ্য।
তীর্থ এসেছে কালিম্পং। হিল টপের হোটেলে ভালোই লাগে কিন্তু অনিবার্য সত্যিটাও অনুভব করছে,দৃষ্টি আটকে য়ায়।রাতে পাহাড়ের গায়ে বাড়িঘরগুলি খেলাঘরের মতোন জেগে ছিল।পাহাড়ে এরকমই কি খেলাঘর হয় আর ভেঙে যায়।জানে না তীর্থ। 
তবে তারও প্রিয় নদী।যদিও তীর্থ জলরাশি নয়।আর জলরাশি হলেই যে চঞ্চল হবে কোন ভুয়ো গনৎকার বলেছে!
আমি চঞ্চল হে, আমি সুদূরের পিয়াসি। নদীকে দেখে মনে হয়,সে কোথায় টেনে নিয়ে যাবে।যদিও বললেই হবে জলরাশি মানেই মন অশান্ত!

রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১

পূরবী~ ৬৭ || অভিজিৎ চৌধুরী, Purabi- 67

পূরবী~ ৬৭

অভিজিৎ চৌধুরী



লিপিকায়ও গদ্য কবিতা আর পুনশ্চের কবিতাগুলিতে এসে রবীন্দ্রনাথ নিজেকে বিনির্মাণ করলেন।তখন তিনি এলিয়েটও পড়ছেন।Worlds revolve like ancient women, gathering fuel in vacant lots.দেখো জগতটা ঘুঁটে কুড়ানি বুড়ির মতোন।

তীর্থ এক সময় কবিতা লিখত।ছাপাও হত বিস্তর।তবে সেই কবিতাগুলির মধ্যে আত্মপ্রকাশের সত্যি ছিল না।এখনও কবিতা লিখলে নিজেকে বেশ দুর্বোধ্য লাগে।কবিতা লিখলে বহু বন্ধু হয়। চায়ের আড্ডায় তুফান তোলা যায়।
গদ্য তীর্থের কাছে গাছপালা পশুপাখিকে গল্প শোনানোর মতোন।শুধু তারা কেন! সকালবেলার বিবস্বানও তো হাঁ মুখ করে থাকেন তীর্থের গল্প শুনবে বলে।

রবিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২১

পূরবী~ ৬৩ || অভিজিৎ চৌধুরী || Purabi- 63,

 পূরবী~ ৬৩

অভিজিৎ চৌধুরী




একটা শ্লেট লইয়া কবিতা লিখিতাম।সেটাও বোধহয় মুক্তির লক্ষণ।

জীবন স্মৃতিতে এরকমই লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। 
একবার বিদ্যাসগর মহাশয়কে ম্যাকবেথের তর্জমা শোনাতে নিয়ে গেলেন রামসর্বস্ব পণ্ডিতমশাই।কিছুটা শোনালে হলে সেখানে উপস্থিত রাজকৃষ্ণবাবু বলেছিলেন,ডাকিনীর উক্তিগুলির ভাষা ও ছন্দের বিশেষত্ব থাকছে  এমনটা করলে ভাল হতো।
তীর্থ অনুবাদ করতে তেমন চাইত না।তার কাছে অজানা শব্দগুলি আভিধানিক অর্থের বাইরে গিয়ে নিজের মতন কিছু একটা হয়ে যেত।
১৭ বছর বয়সে লনডন কেমন দেখেছিলেন লিখলেন;এমন বিষণ্ণ অন্ধকার পুরী আর কখনও দেখিনি।ধোঁয়া মেঘ বৃষ্টি কুয়াশা ব্যস্তসমস্ত লোকজন - তাঁর হয়তো প্রথম দর্শনে ভাল লাগেনি।
ব্রাইটন পাবলিক স্কুলেও ভর্তি হলেন।নবাগত প্রবাসীর তখন কি মনে পড়ত স্বদেশে ফেলে আসা নতুন বউঠানের কথা! জ্যোতিদাদার তেতলার আসর!

রবিবার, ২২ আগস্ট, ২০২১

পূরবী~ ৬২ || অভিজিৎ চৌধুরী || Purabi- 62

পূরবী~ ৬২

অভিজিৎ চৌধুরী




নীল চৈতকের মতোন ছুটত যে ঘোড়া,সে আজ খজ্যোতি। বাম পা বেঁকিয়ে বেঁকিয়ে চলে।প্রচুর দমের সেই কিশোরের আর পুনর্জাগরণ হবে না।অবশ্য তার রাণা প্রতাপ স্মৃতি। সে তো যাওয়ার নয়।

স্মৃতিগুলি কিছুতেই পিছু হটে না।আমার দিন কাটে না,আমার রাত কাটে না।
রবীন্দ্রনাথের পর নজরুল।নজরুল গীতি।আরব দেশ থেকে মক্কা মদিনা হয়ে আমার শ্যামা মায়ের কোলে চেপে তাঁর বর্ণমেলার মতোন গান আর গান।এক ঝাঁক ভীমরুল তার নাম নজরুল।নজরুল অনশনে রয়েছেন,রবীন্দ্রনাথ চিঠি লিখলেন অনুরোধ করলেন।
রাজপুরুষদের টনক নড়ল,ইনি তো সাধারণ বন্দী নন।
আজ রাখী পূর্ণিমা।ভাই বোনের বন্ধন অটুট থাকুক।ঠাকুরবাড়ির অর্গল ভেঙে নগ্ন পায়ে হাঁটছেন রবীন্দ্রনাথ। গাইছেন।আর নাখোদা মসজিদে এসে ইমামকে রাখী বন্ধনে জড়িয়ে নিলেন।
তীর্থও অনুগমন করেছিলেন রবীন্দ্রনাথকে পলাশিপাড়ায় ইমাম সাহেবকে রাগীবন্ধনে আবদ্ধ করে।
জয় হোক মানবতার।দুটি বৃন্তের দুটি কুসুম আরো কাছাকাছি আসুক।

রবিবার, ৮ আগস্ট, ২০২১

পূরবী~ ৬০ || অভিজিৎ চৌধুরী || Purabi~ 60

 পূরবী~ ৬০ 

অভিজিৎ চৌধুরী : Purabi~ 60





আজ বাইশে শ্রাবণের সন্ধেয় তীর্থ নোটবুক খুললো।প্রতিটি বাইশে শ্রাবণে সে যেন নিজের মৃত্যুর ছায়া দেখতে পায়।অফিসে সামান্য বিতর্ক হচ্ছিল পঞ্চম জর্জ আসাকে ঘিরে তিনি লিখেছিলেন,জনগণমন অধিনায়ক জয় হে।ভূষিত করেছিলেন ভারতভাগ্যবিধাতা হিসেবে।আর তাঁর নোবেল প্রাইজ ব্রিটিশ তোষণে প্রাপ্ত।
বউঠান বলতেন,রবি তুমি খুব খ্যাতির কাঙাল।মানুষ ডাকলেই গাইতে হবে।
সুদূরপারে ওকাম্পোর হয়তো ভালোবেসেছিলেন তাঁকে।তখন বয়স ৬৩।সৃষ্টির ছলনা জাল আর প্রেম থেকে চিরবিদায় নেওয়া।
হাত কাঁপছিল।তবুও হে ছলনাময়ী, আরেকবার হয়তো শেষবার লিখবেন তিনি।পারলেন না।কাঁপা কাঁপা গলায় বললেন।লিখে নিলেন হেড নার্স, যাঁকে তিনি পরিহাস করে তাই ডাকতেন।
তীর্থ একবার নিজের গলা টিপে দেখল মরতে কেমন লাগে! না,মৃত্যুর কোন ট্রায়াল হয় না।
অদ্ভুত সংযম দেখিয়েছেন যতোবার তাঁকে আঘাত করা হয়েছে।নীরব থেকেছেন।রানীকে ডেকে বলেছেন রাজা, আমার তো আর কিছু নেই শুধু আছে বীণা।আমার বীণা তোমায় ডাকবে।অবসর পেলে সাড়া দিও।না হলে ভুলে যেও।আমার কোন জোর নেই যে তোমায় আমার কাছে বেঁধে রাখতে পারি।
চললেন তিনি গহন পথে। শান্তিনিকেতনের রাঙা পথে নয়,কলকাতার জনসমুদ্রে।
জয় বিশ্বকবির জয়।
নতুন বউঠান হাসছিলেন নীহারিকাপুঞ্জ থেকে,রবি - প্রতারিত হলে তো!বোকার গল্প বিশ্বাস করে কেন ডেকেছিলে রাণীকে!
কি বলবে তীর্থ!  অগণ্য  বিস্মৃতির স্তরে তিনি কি চলে যাবেন! তাঁকে কি ক্ষমা করবে মহাকাল!
নাকি তিনি আবার চললেন চব্বিশ বছরের সেই স্থায়ী মৃত্যুস্মৃতির কাছে! রথী কি দেখতে পাচ্ছেন,সেই জলি বোট।সেই পদ্মা।শুনতে পাচ্ছেন,মহাশূন্যযান! যেতে যেতে তাঁর গান।
Songs Offerings হারিয়ে ফেলে রথী যখন পিতৃদেবের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী, তিনি বললেন,খ্যাতি বড় বিষম বস্তু।যতো কম হয় ততোই ভালো।তুমি যদি খুঁজে পাও ভালো,না হলেও দুঃখ নেই রথী।আবার লিখব।

রবিবার, ২৫ জুলাই, ২০২১

পূরবী~ ৫৮, অভিজিৎ চৌধুরী || Purabi- 58

 

পূরবী~ ৫৮
অভিজিৎ চৌধুরী



তীর্থের আজকে ম্যাজিস্ট্রেট ডিউটি।ইনকোয়েস্ট বা সুরত হাল।এই বসুন্ধরায় থাকতে না পেরে কারুর অকালে চলে যাওয়া।আত্মহনন বা খুন।
মৃত্যু কখনও অভিপ্রেত নয় তবে সে এক অপ্রতিরোধ্য শাসক।স্বাভাবিক নিয়মে চলে গেলে শরীর একটু আধটু জানান দেয়।ট্যাক্সিডার্মি করতে আর কিছুই হয় না।
বাইশে শ্রাবণ এগিয়ে আসছে।হাওয়ায় ভাসছে আমি যে গান গেয়েছিলেম জীর্ণ পাতার ঝরার বেলায়।
পাতা জীর্ণ হলে ঝরে পড়ে।গাছে আবার নতুন পাতা আসে! মানুষের কি তেমন হয়! পুরোনো হাঁটু বিদায় নিয়ে নতুন হাঁটু।চিকিৎসা শাস্ত্র বলছে হয়ইতো।জীবক ভদ্র তো কতো অঙ্গ প্রত্যঙ্গ লতা পাতা দিয়েও প্রতিস্থাপন করতেন।তখন গৌতম বুদ্ধ জরায় আক্রান্ত।জীবক বললেন,মহাত্মন্, আপনি চাইলে আরো কয়েক বছর আপনাকে রেখে দিতে পারি।থাকবেন!
তথাগত বললেন,না।আমি ফেলে আসা অযুত জন্ম দেখতে পাচ্ছি।আর নয়।
রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন,আমি প্রকৃতির সন্তান।আমাকে গাছের পাতার মতোন ঝরে পড়তে দাও।
অস্ত্রোপচারে লাগছে তাঁর।ডাক্তার বললেন,ওঁর এসব মনের রোগ।লাগতে পারে না।
অবন ঠাকুর ফিরে গেলেন।রবিককাকা নিশ্চল শুয়ে রয়েছেন, এ তিনি সহ্য করতে পারবেন না।
তারপর কি বলতে পেরেছিলেন- মনেরে আজ কহো যে,/ ভালো মন্দ যাহাই আসুক/ সত্যেরে লও সহজে।
কখন যেন লিখেছিলেন,জীবনকন্টকপথে যেতে হবে নীরবে একাকী/সুখে দুঃখে ধৈর্য ধরি,বিরলে মুছিয়া অশ্রু আঁখি.....
তারপর ছিন্নপত্র আসে একালের কবির কাছে।মনে পড়ে যখন বোটে বসে লিখতুম,চারিদিকে জল বয়ে চলেছে মৃদু কলধ্বনিতে,দূরে দেখা যায়বালির চর ধূধূ করছে,আমি লিখেই চলেছি... 

রবিবার, ১৮ জুলাই, ২০২১

পূরবী~ ৫৭ || অভিজিৎ চৌধুরী || Purabi- 57

 পূরবী~ ৫৭ || অভিজিৎ চৌধুরী




তীর্থ ভাবছিল, কোনটা অপরূপ! এই এখন বেঁচে থাকাটা নাকি মৃত্যুর পর অসীমলোকে হারিয়ে যাওয়া! তার আগে মরতে হবেই।কেমন হবে মৃত্যু!ফোটন- কণা হয়ে যাওয়া যেত যদি তাঁদের কাছে! মৃত্যুর স্বাদ যাঁরা পেয়েছেন।হয়  কিচ্ছুটি নেই,না হয় লয় হয়ে গেছে সব কিছু।দেহের কোনটা আগে স্তব্ধ হবে! নানা মুনির নানান মত।চোখে রোদচশমা।শান্তিনিকেতন ছাড়ছেন রবীন্দ্রনাথ। চোখের জল আড়াল করছেন।হিয়ার মাঝে লুকিয়ে রইল পৃথিবীর আলপথ।বিপুল তরঙ্গের মধ্য দিয়ে তিনি পার করলেন বাইশে শ্রাবণ।

 তীর্থের মৃত্যু হবে অনাড়ম্বর। আই সোসাইটি এক মিনিটের নীরবতা পালন করবে।

 আকাশ পার করে অন্য আকাশ! মা থাকবে! ডাকবে কি, মনু এলি! 
মনে হবে বা-রে।এতো নতুন করে শুরু।দেওঘরে বাজার করতে যাওয়া।রায় লজ।ছোট্র ঘর।কি মমতায় মা অপরূপা করে তুলেছে ছোট্ট ঘরটি।বিকেলে টমটমে চেপে অদূরের পাহাড়।বাবা কাশছে।খানিকটা রক্ত পড়েছে পাথরের গায়ে।মা বলছে,ফিরে যাই চল।

 সেই ফিরে যাওয়া কতো সুন্দর। ঘোড়াগুলির গলায় ঘন্টিবাঁধা।বাজছে।
হেমন্ত আসছে।কুয়াশার ঢেউ উচ্চাবচ পথ জুড়ে।

 গাছগুলি বৃষ্টির তোড়ে নুইয়ে পড়ছে।রবীন্দ্রনাথ চলেছেন একা।

Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...