বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

মঙ্গলবার, ২১ জুলাই, ২০২০

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা || রুদ্র কিংশুক || ভালেরিয়া রুজো-র কবিতা

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা 
রুদ্র কিংশুক 
ভালেরিয়া রুজো-র কবিতা


ভালেরিয়া রুজো(Valeria Rouzeau, 1967)-র জন্ম ফ্রান্সে। ১৯৮৯- তে প্রকাশিত  তাঁর প্রথম কবিতার।  ১৯৯৯-তে প্রকাশিত তাঁর কবিতা বই ' পা রুভোয়ার' (Pas Revoir) ফরাসি কবিতা জগতে একটি বিশেষ সংযোজন। নিরীক্ষামূলক ও নতুন চিন্তাচেতনার চেতনার অভিসারী তাঁর কবিতা। ভালেরির পড়াশোনার বিষয় সাহিত্য অনুবাদ। অনুবাদশাস্ত্রে তিনি মাস্টার ডিগ্রী লাভ করেছেন। ফরাসি কবিতায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০১২ সালে তিনি পেয়েছেন প্রি গিয়ম আপোলিন‍্যার (Prix Guillaume Apollinaire) পুরস্কার।

১.
আমি লিখছিলাম

 আমি তোমাকে লিখতাম পোস্টকার্ড
 প্রত্যেক দিনের জন্য
শুক্রবারে দুটো রবিবারের জন্য ।
নীল ফুলগুলো রঙিন হতে পারত
 তুষারে
 শেষ যেটা তুমি দেখেছিলে।

 তোমার আঙ্গুল নিশ্চয়ই কেঁপেছিল
  যখন তুমি ধরেছিলে
 রুটি, কয়েকটা টুকরো নিশ্চয়ই
পড়বে
তুষারের ওপর ।

কিন্তু সোমবারের কার্ড রয়েছে
তার
খামে, তোমার পকেটে কফিনে
ভল্টে
মাটিতে, বাবা ভিত‍রে জড়ানো।

২.
ইডেন

 সকাল চারটেয় চাঁদের আলোয় সে যায়
আদমের বেশে আমার প্রেমিক গোলাপের গন্ধ নিতে যায়
যে গোলাপ ফুটেছে উঠানের ধূসরে
 সকাল চারটের চাঁদের আলোয় খোলা গোটা শহর তাকে দেখছে গোলাপসহ
আমি তখন উঠলাম তার গলায়
 আইভিলতার মতো,
গোলাপ

সোমবার, ১৩ জুলাই, ২০২০

অনন্য দ্রাঘিমা: অন্য ভাষার কবিতা || রুদ্র কিংশুক || ইভ বনফোয়া-র কবিতা

অনন্য দ্রাঘিমা: অন্য ভাষার কবিতা 
রুদ্র কিংশুক
ইভ বনফোয়া-র কবিতা

রুদ্র কিংশুক




 ইভ বনফোয়া-র কবিতা
ইভ বনফোয়া (Yves Bonnefoy, 1923--2016) কবি ও শিল্প সমালোচক। তিনি একজন দক্ষ অনুবাদকও। শেক্সপিয়ারের অনেকগুলি নাটক তিনি ইংরেজি থেকে ফরাসি ভাষায় অনুবাদ করেছেন। গণিতশাস্ত্র ও দর্শনে  বিশেষ ব্যুৎপত্তি থাকার কারণে তাঁর কবিতায় বহু বিচিত্র বিষয় এবং বিচিত্র কৌণিকতার সমাবেশ।

১.
আয়ন

গতকাল আবার
মেঘেরা ভেসে যাচ্ছিল
ঘরের দূর অন্ধকার কোণে ।
কিন্তু ঠিক এখনই আয়নাটা ফাঁকা।

 তুষারপাতে
 আকাশের ফাঁসমুক্তি।

২.
 আপেল

এই হলুদ আপেলগুলো
 কি আমাদের ভাবতেই হবে?
 গতকাল, পাতাঝরার পর,আমাদের অবাক করে
 এমনই অপেক্ষমান, নগ্ন ।

আজ তারা মুগ্ধ করছে
যেহেতু তাদের কাঁধ
নরমভাবে উচ্চারিত
তুষার কিনার দিয়ে।

৩.
 বাগান

তুষার  ঝরছে
তুষার পালকের নিচে দরজা
 শেষ পর্যন্ত খোলা বাগানের দিকে
 জগতের চেয়েও বেশি কিছু।

 আমি এগিয়ে যাই। আমার স্কার্ফ
 আটকে যায় জংধরা
লোহাতে এবং ছেঁড়ে
আমার ভেতরে স্বপ্নের ফেব্রিক।

রবিবার, ৫ জুলাই, ২০২০

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা || রুদ্র কিংশুক || মোনিকা হারসেগ-এর কবিতা

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা 
রুদ্র কিংশুক 
মোনিকা হারসেগ-এর কবিতা


মোনিকা হারসেগ (Monika Herceg, 1990) ক্রোয়েশিয়ার বিশিষ্ট তরুণ কবি। তাঁর জন্ম ক্রোয়েশিয়ার  সিসাগ শহরে।  ইউনিভার্সিটি অব  রিজেকা থেকে তিনি পদার্থবিদ্যা অধ্যয়ন করেছেন। তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ:
Initial Coordinates 2018
Navrh Jezika 2019
বহু বিশিষ্ট পুরস্কারে পুরস্কৃত তাঁর কবিতাগ্রন্থগুলি। অনেক সময় গ্রন্থ প্রকাশের আগেই তাঁর পান্ডুলিপি পুরস্কৃত পুরস্কৃত হয়েছে। বর্তমানে তিনি ক্রোয়েশিয়ার জাগ্রেব শহরে থাকেন।

১.
বেড়ালের মৃত্যু

কয়েক সপ্তাহ ধরে উড়ন্ত প্লেন দেখে
 আমার ভাই বার করলো বেড়ালেরাও উড়তে পারে
সে তাদের ছুড়ে দিতো যতটা উঁচুতে সম্ভব
 আর মায়ের কাছে দৌড়ে গিয়ে চেঁচাতো
দ‍্যাখো, দ‍্যাখো, বেড়াল উড়ছে
বেড়ালরা সবসময় পায়ের ওপর  পড়তো
কেবল একবার বুড়ো মিকি পড়ল তলপেটে
 একটা গোঁজের ধারে

কয়েকদিন পরে
আমরা চৌকাঠে পৌঁছানোর আগে দেখি
 তার ধুসর-লোমনিস্তেজ শরীর
সমমর্যাদায় পড়ে আছে চৌকাঠে
তারই আনা মৃত ইঁদুরের মতো

২.
উর্বরতা

নিড়ানির যথাযথ আঘাত
 শস্যক্ষেত থেকে বার করে দেয় শীত
দিনগুলো পেকে ওঠে চেরিফলে
নারীরা বদলে যায় শক্ত ন‍্যাড়ায়

 মায়ের যত্ন বেড়ালের লম্বা কর্কশ জিভ
 লম্বা ভাব খোলে আর পরিষ্কার করে পোকামাকড়ের ময়লা
চেটে দেয় হারানো পশুর লোম থেকে
 লেগে থাকা উঠানে ঢোকা খারাপ অভ্যাস
তার হাত থেকে উৎসারিত বাঁধাকপি মুলোর চারা
মা তাদের পুনঃ রোপণ রোপণ করে বাড়ির গলায়
তার হাঁটু থেকে জন্ম নেয় সবুজতম সবজি
লোমের বদলে মায়ের শরীর ঝরনা ঢাকা

দুপুরের আগে মা শুয়ে পড়ে সর্বদাই
আকাশের নীলতয় হাড়ের সঙ্গে
সকালের আলো ভর্তি উদর নিয়ে
সকালকে ঢুকিয়ে নেয় তার জরায়ুর ভেতর
 আর জোড়া দেয়
উর্বরতার লম্বা গ্রীবা
ক্লান্তিকর গাছের ভেতর

বৃথা
আমাদের বাড়িতে
যেখানেই হোক না কেন
যারা মারা গেছে তারাও থাকে

বসন্ত কখনো ভেতরে ঢোকে না

শনিবার, ১৩ জুন, ২০২০

গ্রিসের নতুন কবিতা || রুদ্র কিংশুক || দিমিত্রিস লিয়াকস-এর কবিতা

গ্রিসের নতুন কবিতা
রুদ্র কিংশুক
দিমিত্রিস লিয়াকস-এর কবিতা


দিমিত্রিস লিয়াকস(Dimitris Lyacos)-এর রচনা পোয়েনা দামনি ট্রিলজি (Poena Damni trilogy)। ট্রিলোজির তিনটি অংশের নাম ইংরেজিতে যথাক্রমে Z213:Exit( জেড দুই এক তিন), With The People From The Bridge (উইদ দ‍্য পিপল ফ্রম দ‍্য ব্রিজ) The First Death (দ‍্য ফার্স্ট ডেথ)। এখন পর্যন্ত সতেরটি ভাষায় অনূদিত এই ট্রিলজি সাম্প্রতিক ইউরোপীয় কাব্যজগতে বিপুল প্রশংসিত এবং বিক্রীত কবিতা সংকলনগুলির মধ্যে অন্যতম। তিরিশ বছর ধরে হয়ে-ওঠা পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তন ও পরিবর্ধন সমন্বিত  নতুন নতুন সংস্করণের ভেতর দিয়ে  এই ট্রিলজির বর্তমান রূপ। এই প্রথাভাঙা টেক্সট দ্বারা অনুপ্রাণিত ও তার থেকে উৎসারিত বিভিন্ন সহ-পরিকল্পনা ও এর ভেতরে গড়ে ওঠা সংলাপও  এই নিরন্তর হয়ে-ওঠাকে  অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে।  সাহিত্যিক পরম্পরা,  আচার, ধর্ম, দর্শন ও নৃবিজ্ঞানের উপাদানের  সংমিশ্রন ও সংশ্লেষণের  মধ্যে দিয়ে হয়ে ওঠা এই ট্রিলজি ওয়েস্টার্ন ক‍্যাননের অনেকগুলি চিরস্থায়ী মোটিফের প্রেক্ষিতে  গ্রান্ড ন‍্যারেটিভের (grand narrative) পুনঃপরীক্ষা করতে চেয়েছে।  নোবেল প্রাইজের দাবিদার হিসেবে তাঁর নাম উল্লিখিত হয়েছে। 

প্রথম বইয়ে তিনি  বর্ণনা করেছেন সুরক্ষিত নগর থেকে পালিয়ে যাওয়া এক তরুণের বিচিত্র ভ্রমণকথা। এই ভ্রমণ কখনো স্বপ্নের ভেতর দিয়ে, কখনো শারিরীক। দ্বিতীয় বইতে আছে একজন ভূতগ্রস্ত মানুষ বাঁচিয়ে তুলছে এক মৃত প্রেমিকার আত্মাকে। তৃতীয় বইতে দেখানো হয়েছে জলবেষ্টিত ভূখণ্ডে আটকে পড়া একজন মানুষের বেঁচে থাকার লড়াই। গদ্য, পদ্য ও নাটকের মিশ্রণে কবি তৈরি করেছেন এমন বাচন যাকে অবশ্যই পোস্টমডার্ন বলতে হয়। ইংরেজি, স্প্যানিশ, ইতালিয়ান ও জার্মান  সহ পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত  লিয়াকতের কবিতা।  শিল্পের অন্যান্য মাধ্যমগুলোতেও উপস্থাপিত হয়েছে  তাঁর কবিতা।

প্রস্থান, অংশ ১১ থেকে
 (From Exit 11, Part)

 আমি তোমার কথা ভাবি কিন্তু আগের মতো নয়। ঘুমের ভেতরে আমার চোখ খোলা, একটা হাত আমাকে ধরে। কারো হাতের মধুরতায়। পতনশীল আমি। আমার একই স্বপ্ন আবার, একটি শিশুর শরীর যাকে জড়িয়ে রেখেছে এক নারীর হাত। তার ওপরে ঠোঁট তার ঠোঁটকে রক্তিম করে। আমি উঠে পড়ি। অন্যেরা ঘুমায়। দিনগুলো পাহাড়ে উঠছে, চিরসবুজ সমতল আছে।  শান্ত। একটা আহত ফিসফিসানি কানের খুব কাছে।  আমার সঙ্গে ছিল এমন কিছু যার সাহায্যে আমি জয় করেছিলাম ভয় ।আমি কোন কিছুকেই  গ্রাহ্য করতে পারিনি । একটা ছবি আমার আঙ্গুল কেটে নিল । এবং রক্ত থামানোর ব্যাপারে আমি কিছুই করার কথা ভাবতেই পারিনি।  অপেক্ষা করার কিছুই নেই। দিনের শুরু, আলোহীন ঊষা। মঠ-মন্দিরের ভেতরে খালি পাখিবাসা। নির্জনতা।  তাদের মধ্যে বহমান নদী।  আর সেখানে অগনিত তারা গাইছে। বিবাহ বাসর পূর্ণ , হাতে ধরা হাত। শরীরের নিচে বহমান ঝরনা। তার তীরে তাদেরই এক ঝাঁক পড়ে আছে ,মুখোমুখি । আমি পাগলের মতো তোমাকে খুঁজছি।  একজন মা বুকে ধরেছে তার মেয়েকে,  পোড়া কপাল, আমরা  অনেকদিন খাইনি।  আশাহীন রশ্মি দীপ্যমান। স্বপ্নের ভেতরে এ ওর গায়ে ধাক্কা দিচ্ছে ।

তোমার মুখ আবার ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে,  তোমার মাথাটা একটু ধরতে হবে, এবং তোমার উষ্ণ শরীর।  আর যখন আমাকে চুম্বনের জন্য তুমি একটু নিচু হচ্ছো তখনও তুমি ইতঃস্তত করছো কিছুক্ষণ, যেন তাদের আগমনের শব্দ তুমি শুনতে পেয়েছো। অথবা জলের শব্দে অথবা পর্বের আঙুলের শব্দ ঢোলকের উপর।  আমার পাশে অবেলার ফুল তোমার মুখের উপর,  আর এটা তোমার চুম্বন। আলোর সন্ধ্যা তোমার মনে পড়ে? সেদিন পাথর খুঁড়ে ছিলাম আর পুঁতে ছিলাম ফার গাছের মুকুট...আমরা তখন ছিলাম দুজনে...

শুক্রবার, ১২ জুন, ২০২০

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা || রুদ্র কিংশুক || তিন মো-র কবিতা

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা 
রুদ্র কিংশুক 
তিন মো-র কবিতা



"কাব্য আমার শ্বাসপ্রশ্বাস,কবিতা আমার রুটি"। একথা বলেছিলেন প্রখ্যাত বার্মিজ কবি তিন মো (Tin Moe, 1933--2007)।  মধ্য মায়ানমারের একটি শহরে তিন মো-র জন্ম। ১৭ বছর বয়সে প্রথম প্রকাশিত হয় তাঁর কবিতা। ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ, কাঁচের লন্ঠন। ১৯৬৭খ্রিস্টাব্দে তিনি ইয়াঙ্গুনে চলে আসেন এবং রেঙ্গুন ইউনিভারসিটিতে কুড়ি বছর ধরে অনুবাদ ও প্রকাশনা বিভাগের কাজ করেন। রাজনৈতিক কার্যকলাপের কারণে ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে তিনি কারাবন্দি হন এবং ৬ মাস কারাবাস করেন করেন ২০০৪ খ্রিস্টাব্দে নেদারল্যান্ড সরকার তাকে প্রিন্স ক্লোজ আওয়ার্ড দেন।

 ১.বুড়ো অতিথি

সিগারেট পোড়া
বাদামি সূর্য
কেউ কি আমাকে ফেরাবে ঘরে?

২. নির্জন রাত

ভয় আর উৎকণ্ঠা উৎকণ্ঠা
রাতের প্রতীকধর্মিতা ।

সব পাখি ঘরে ফেরে
একটা পেঁচা ছাড়া, যে কেবল একাকী বাইরে বিস্ফারিত চোখ, নির্ঘুম
মনোরোগের নিশ্চিত চিহ্ন চিহ্ন ।

শুনেছি পদধ্বনি।
 বরফ পতনের মতো যদিও
আসলে তারা ভূমিধস ও ভূমিকম্পের
তীব্র গর্জন।

 বৃষ্টির ফোটার শব্দ
পাতার উপর  এক এক করে
কুচিকুচি করে আমার হৃদয় ।

আমার রাতের সঙ্গী ভাবনা
আমার দুর্বল ও ছেলেমানুষ মনকে ইতস্তত আন্দোলিত করে,
কতটা নির্বোধ আমি!

 তবু রাত শুধু রাত শুধু রাত রাত ...
আমি বুঝি
তা কখনো সুন্দর হতে পারে না।

৩. খাঁচাবন্দি মুরগি

 যদি আমার
ডানা
থাকত
তা হয়ে উঠত
কবিতা ।

যদি আমার
 কবিতা
 থাকত

সমস্ত মানবতার কাছে
উড়ে যেতো , ভেসে যেতো
ছড়িয়ে পড়া সংগীত।

কিন্তু এক্ষেত্রে
আমার
কোন কবিতা নেই।

 মানবতা থেকে অনেক দূরে
অন্ধকার ঘরে
 ডানাহীন বন্ধুহীন।
 খাঁচাবন্দি মুরগি
অসার ঘুমচোখে তাকিয়ে।

রবিবার, ৭ জুন, ২০২০

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা || রুদ্র কিংশুক || ভ্যালেন্টিন ডিসেভ-এর কবিতা

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা
 রুদ্র কিংশুক 
ভ্যালেন্টিন ডিসেভ-এর কবিতা


ভ্যালেন্টিনা ডিসেভ (Valentin Dishev, 1962)-- এর জন্ম বুলগেরিয়ার ব্লাগোয়েভগার্দে। সোফিয়ার সেন্ট ক্লিমেন্ট ক্লিমেন্ট ওহরিডস্কি ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি দর্শনে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। কবিতা লেখার পাশাপাশি তিনি একটি প্রকাশনা সংস্থার কর্ণধার। ক্রসওয়ার্ড এবং ডিকটাম নামের দুটি জার্নালের তিনি প্রধান সম্পাদক। বুলগেরিয়ার ন্যাশনাল রেডিও প্রোগ্রামে কবিতা ও সাহিত্য বিষয়ে তিনি অনেক অনুষ্ঠান সঞ্চালনা তিনি অনেক অনুষ্ঠান সঞ্চালনা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন।


রিপোর্ট

 নৈশব্দ‍্যের
দাগের ওপর :
১.
একটা প্রজাপতি গুণল
আমার আঙ্গুলগ্রন্থি ।
ঘোষণা করল সাদা
অপ্রয়োজনীয়
২.
হাওয়া বর্ণনা দিল
হ্রদের কাছে
আমার চোখের রং।
 লাল ---সে বলল ---একটু বেশিমাত্রার।
৩.
একটা গাছ
 বজ্রাহত
সবুজে আঁকল আমার অবিশ্বাস।
তার ফিসফিসানি-- বল্কল শুধু ঢাকনা নয়।

আমার নীরবতা
ছিল না।


কবিতা ১

আমার আগামীকাল
 সেলাইকরা ছুঁচ
 আমাকে ভয় দেখায় না

 সুতোটা
সুতোটা লম্বা
এবং খসখসে

কবিতা 2

আমি একজন দেবদূতকে
 চোখ বুজে কাঁদতে দেখেছি
 এমনকি তারও জন্য
 ভয় ছিল

ভেতরের ব্যাপার


শুক্রবার, ৫ জুন, ২০২০

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা || রুদ্র কিংশুক || ইয়ানিস স্টিগাস-এর কবিতা

 বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা 
রুদ্র  কিংশুক
ইয়ানিস স্টিগাস-এর কবিতা


ইয়ানিস স্টিগাস (Yiannis Stigas, 1977)-- এর জন্ম গ্রিসের আথেন্সে। তিনি পড়াশোনা করেছেন চিকিৎসাশাস্ত্র নিয়ে এবং পেশায় তিনি একজন চিকিৎসক। ফরাসি, জার্মান, বুলগেরিয়ান সহ বহু ভাষায় তাঁর লেখা অনূদিত হয়েছে। তাঁর কবিতায় পরম্পরা-ঐতিহ্যের সঙ্গে নতুন জীবনের অনুষঙ্গের সম্মিলন ঘটেছে। স্টিগাস-এর  কবিতার দৃশ্যগত নন্দনতত্ত্ব এবং পল সেলান এবং কাতেরিনা আনঘেলাকি রুকি- কবিতার সঙ্গে আন্ত:পাঠকৃতীয় মিথস্ক্রিয়া তাঁকে ইউরোপীয় পাঠকদের কাছে জনপ্রিয় করেছে। উচ্চমার্গীয় ধারণা ও দর্শনের সঙ্গে মজা-মশকরার সম্মেলনে তিনি গড়ে তুলেছেন তাঁর নিজস্ব নন্দনতাত্ত্বিক পরিসর যা যথার্থ অর্থেই উত্তরাধুনিক বা অধুনান্তিক।

১.
সরল গণিত

নৈঃশব্দ্যের চতুর্থ কিলোমিটার পৌছে
ঈশ্বর ও সূর্যের জন্য আনা পেরেক আমি ফেলে দিলাম।
 সেই থেকে আমি ঘুরছি বাহুর নিচে
মহাশূন্যকে  নিয়ে।

আরম্ভ করতে গেলে এটা ছিল
একটা সাধারণ ঘুমের ব্যাগ‍
--- তুমি জানো, তুমি ঢুকে পড়ো,
মানে তুমি স্বপ্ন দেখা শুরু করো।
 এখন এটা খুব বড়ো বোর্ডিং স্কুল
মনস্তাত্ত্বিকভাবে দাহ‍্যদের জন্য।

 যেহেতু এতসব ঘটল শূন্যকে নিয়ে
 তাহলে ভাবুন কি ঘটতে পারত এক কে নিয়ে।

২.
 কোমলতার অস্ত্রসজ্জিত

পালক ভর্তি
তার বুক
 তার ছায়া
তার গভীর হাত

 কারণ ছোটোবেলা থেকেই
সে খেলছে 'সে আমায় ভালোবাসে',
'সে আমায় ভালোবাসে না'
দেবদূতের নামানো পালক নিয়ে।

 সে উত্তরের জন্য এটা করে না,

 সে এটা করে তাদের কাছে রাখতে।

 ৩.
প্রাণায়াম

আমি উল্টে পাল্টে দিলাম আমার হৃদয়
এবং দেখলাম পাথর জন্মায়
(একটু আলোসহ )
সৌভাগ্য কঠিন হয় এবং ঘটে

যাতে পাখিরা উপরে ওঠে
এবং তখন
 সূর্য তাদের খুলে দেয়

স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস চেষ্টা করো
নীলাকাশ ভেতরে নীলাকাশ বাইরে
 একটা দমে সবকিছু ঘটে আবার।
 আমি বলছিলাম পাথর --
সব কিছু তোমার কাছে আসে ক্ষুরের মতো
 আর তুমি যদি তাকে আরো গভীরে চাও
 নীলাকাশ ভেতরে, নীলাকাশ বাইরে

অভ্যাস বজায় রাখো

এই জগৎ
 কখনও-না-এর সবচেয়ে করুণাঘন রূপ

কখনও-না হচ্ছিল ঘর্মাক্ত
এত গভীর ভাবে


বৃহস্পতিবার, ৪ জুন, ২০২০

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা || রুদ্র কিংশুক || নাদিয়া রাদুলোভা-র কবিত

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা
রুদ্র কিংশুক
নাদিয়া রাদুলোভা-র কবিতা

নাদিয়া রাদুলোভা(Nadya Radulova,1975)-র জন্ম বুলগেরিয়ায়। সোফিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে থেকে তিমি স্লাভিক স্টাডিজে স্নাতক।  বুদাপেস্টের সেন্ট্রাল ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি এমফিল ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তুলনামূলক সাহিত্যে তিনি পিএইচডি ডিগ্রী পেয়েছেন।তাঁর আগ্রহের বিষয় কম্পারেটিভ লিটারেচার, জেন্ডার স্টাডিজ এবং ট্রান্সলেশন। তিনি একটি বিশিষ্ট মাসিক পত্রিকার সম্পাদক।কবিতা এবং কথাসাহিত্যের অনুবাদক হিসেবেও তিনি যথেষ্ট সম্মান অর্জন করেছেন । এ পর্যন্ত তাঁর কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা চারের অধিক। তাঁর কবিতা ইংরেজি, রুশ  চেক, গ্রীক এবং তুরকিশ ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তাঁর কবিতায় প্রতিদিনের জীবন-পরিস্থিতির সঙ্গে মিশেছে গভীর অন্তর্দৃষ্টি।

 ১. কী পড়ে থাকে

 যদি বসন্ত থেকে প্রাথমিক বসন্ত বিয়োগ করি, পড়ে থাকে তলানি,
নীলফুল, শ্বাসনালির উত্তোলিত হালকা ইনফেকশন,
ভেড়ার ছানা, হাড্ডিসার,--- এখন
ক্রিস্টিনা রোসেট্টি আর উইলিয়াম ব্লেক আকাশে তাদের লোম আঁচড়াক---
 তারপর দ্রুত, ফোলানো সবুজ, এপ্রিলের
 বিরাট মরুভূমি
প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত
রক্তে আক্রমণ, সূর্য ,
অথবা সাধারণ আক্রমণ;  কী পড়ে থাকে যদি

 বাড়ি থেকে বিয়োগ করি ছেলেপুলে অথবা তাদের ভাবনা ,
চিপসে বালিশ, ফল আর তরিতরকারি
কোণের বড় ঝুড়িতে, ঘরকোণ,  সমস্ত কোণ
 চমৎকার রুপোলি মাকড়সাজাল---সময়ের কাঁটা চামচ,
কীভাবে আমাদের ঘেরে আবোলতাবোলে, কাটাকুটি করে
ছোট টুকরে --- আবার খাবারের কোমল
 অবশেষ, অভিসিঞ্চন,
প্রজনন ঋতু, কী পড়ে থাকে

যদি আমরা  বিয়োগ করি গলায় আটকানো মাছের কাঁটা
 প্রিয়জনের গলা থেকে, পেটুক বেড়াল দেখো কীভাবে  চাঁদকে আটকায় উঠানে, হারায় বেড়ালত্ব,
 এখন সে বেড়াল নয়, হতাশার চাকা
প্রজ্জ্বলিত রেশমী কাপড়, অন্ধকারের মাঝে ছুঁড়ে ফেলা,
তারপর মাঝখান নিভে যায়
আর মুহূর্তের জন্য পড়ে থাকে অন্ধকার কিন্তু অন্ধকার থেকে
 কিছুই বাদ দেয়া যায় না
অথবা পড়ে থাকে না কিছুই।

২. ছোটো রেমব্রান্ত

আয়নায়
একটা পুরনো
 বহু উপেক্ষিত
 কাঠ কয়লার উনুন
এবং ডান দিকে একটা সিংক।

গরম প্লেটের ওপর
 তিনটে আলু
দুটো বড় একটা অপেক্ষাকৃত ছোটো।

অনেক বছর আগে
 ট‍্যাপে গরম জল
পড়তো।

আমার মায়ের হাত
বদলে গিয়েছিল বাদামী রঙ
আর পরিচ্ছন্ন

তৈলাক্ত খাবারের ঠান্ডার ভেতর।

বুধবার, ৩ জুন, ২০২০

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা || রুদ্র কিংশুক || মারিয়া ডোনিভা-র কবিতা

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা
রুদ্র  কিংশুক
মারিয়া ডোনিভা-র কবিতা 



মারিয়া ডোনিভা (Maria Doneva, 1974)-র জন্ম বুলগেরিয়ার স্টারা জাগোরা-তে। সোফিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি বুলগেরিয়ান দর্শনে দর্শনে উচ্চ শিক্ষা লাভ করেন। কবিতা এবং ছোটোগল্পের জন্য তিনি পেয়েছেন অনেকগুলি বিশিষ্ট  সাহিত্য পুরস্কার। আইজ ফর বিউটি (Eyes for Beauty, 1988),  ফেয়ারওয়েল টু দ্য রিডার( Farewell to the Reader, 1996)  তাঁর কাব্যগ্রন্থগুলির মধ্যে অন্যতম।রাদনেভো-র স্টেট সাইকিয়াট্রিক হসপিটালে আর্ট থেরাপির প্রোগ্রামে তিনি নাট্যকার এবং নাট্য নির্দেশক হিসেবে হিসেবে কাজ করেছেন।

১. একটুকরো ধোঁয়া

 ঘনিষ্ঠ হও ---আমাদের জুতো এমন করে ছুঁয়ে থাকুক,
 অঘ্রাণ-সিক্ত নাক ঘষতে থাকুক আদরমাখা।
 কাছে এসো! মেলে ধরি একটা চুমু সৌরভ
 হতেই পারে তোমার কাঁধে রাখা আমার

 মাথা? শোনো, কীভাবে ঋতু নামে
রুফটপে--- আর জগৎ দক্ষিনে বিগলিত, এর সঙ্গে আমিও, তুষার-দগ্ধ আমার আঙ্গুল,  তোমার মুখের মাধুর্যে গলে যায়।

কাছে এসো। আমাদের সিল্যুয়েত দেখাবে যেন
শীতের মুক্ত আকাশে চড়াইয়ের ছায়া।
একে কি বলা যায় ভালোবাসা? বরং একটা ভিন্ন নাম খোঁজা যাক---
 একটা উপাধি যা ততটা ভারী বা ভয়ের নয় বা ভয়ের নয়।

 আমাদের মৌহূর্তিক আবহাওয়া বসবাস,
ছাদ থেকে খসে আসা  বরফ হস্তক্ষেপ করবে;
 আবেগ উড়ে যাবে দূরে দূরে, নীরব পালক---
এক টুকরো ধোঁয়া মশলা চা কাপের কাপের চা কাপের কাপের মশলা চা কাপের কাপের চা কাপের কাপের ওপর।


২. এসো

তুমি আমার অন্য জীবন
যা এখনও নয় সংঘঠিত।
 তোমার পায়ের শব্দ শুনি চারপাশে,
 তুমি পাঠাও গৃহহীন অনেক কুকুর
ভয়ঙ্কর লোকদের হাত থেকে রক্ষা করতে। আমাকে তুমি জ্বালাও আগুনপোকা। পিউনিফুলে
তুমি বার্তা পাঠাও সমাধান
দেখাতে তাদের। বৃষ্টি জোরে আসে
আর তোমার বদলে ... তোমাকে ছাড়াই।পরিবর্তে।
 তুমি যখন শব্দহীন আমি শুনতে পাই।
 দেখো,কাছে এসো আমার বারবার।
যদি তা পারো , শীঘ্রই এসো।


সোমবার, ১ জুন, ২০২০

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা || রুদ্র কিংশুক || ইভান লান্ডজেভ-এর কবিতা

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা 

রুদ্র কিংশুক 
ইভান লান্ডজেভ-এর কবিতা


ইভান লান্ডজেভ (Ivan Landzhev, 1986) বুলগেরিয়ার কবি, চিত্রনাট্য-লেখক এবং প্রাবন্ধিক। ইউনিভার্সিটি অব সোফিয়া থেকে তিনি দর্শনে স্নাতক এবং সমকালীন সংস্কৃতি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ।তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ "ব্লেম ইট অন ববি ফিশার" জাতীয় কবিতা পুরস্কারে" জাতীয় কবিতা পুরস্কারে ভূষিত।


১. লেখক উল্লেখ

 আমার দাবার শিক্ষক
 আমাকে বলতেন:
তোমার নিজের খেলা খেলো।

 আমার বক্সিং কোচ
আমাকে সর্বদাই বলতেন:
বাঁয়ে -বাঁয়ে-ডাইনে-- তারপর আপারকাট
আর সে কুপোকাত!

 মধ্যযুগ পাঠছর অধ্যাপক
আমাকে মনে করেন যে,
 আমি সে যে আছে।

তিনজনেই সঠিক
 দিনের তিনটি ভিন্ন সময়ে

২. যা ঘটেছে তার আগে নয়

 ছয় বছরের পুরনো
 বাড়ির পিছনে
আমি নিজেই পেলাম একটা পাথর

আর সেটা দিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবেই
 আমি ভেঙে ফেললাম মায়ের মেডেলগুলো
 যৌবনের সমস্ত খেতাবজয়

কয়েকটা জাতীয় পতাকা ছিঁড়ে কুটিকুটি কুটিকুটি কুটিকুটি
স্ফুলিঙ্গ বার হচ্ছিল  পৈত্রিক
অর্জনগুলো থেকে

না, আমি বিদ্রোহী নই
আমি স্বর্ণ-খনক
 আমি ঠিক খুঁড়ছিলাম
 গৌরবোজ্জ্বল অতীত

বুধবার, ২৭ মে, ২০২০

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা || রুদ্র কিংশুক || Ivanka Mogilska-এর কবিতা

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা 

রুদ্র কিংশুক

ইভাঙ্কা মজিলস্কা-র কবিতা
ইভাঙ্কা  মজিলস্কা  (Ivanka Mogilska,1981)-র জন্ম বুলগেরিয়ার প্লভডিভ শহরে। কবিতা ও উপন্যাস লেখা ছাড়া,  তিনি একজন ডিজিটাল আর্টিস্ট এবং সঙ্গীতজ্ঞ ।
এ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে তাঁর চারটি চারটি গ্রন্থ ।দুটি কবিতা সংকলন এবং দুটি উপন্যাস। ইংরেজি, ফরাসি ও হাঙ্গেরিয়ান সহ পৃথিবীর অন্যান্য কয়েকটি ভাষায় অনূদিত হয়েছে তাঁর লেখা ।পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সাহিত্য তিনি বুলগেরিয়ান ভাষায় অনুবাদ করে  থাকেন ।বর্তমানে এই লেখক থাকেন বুলগেরিয়ার সোফিয়া শহরে।

১. ছবি
কখনো কখনো সে বলে অবিশ্বাস্য সব গল্প
 সে খায় দিনটাকে ছোট্ট ছোট্ট টুকরে
অন্ধকারে সে হাসে।
 সবটাই তার সূর্যালোক
আর কয়েক টুকরো সাদা মেঘ ।
কখনো ইচ্ছে করে শুয়ে শুয়ে থাকে
প্রতিদিনের প্লেটের উপর ।
কোনোভাবেই সে গ্রাহ্য করে না ।
কোন শব্দ নেই ।
কোন গল্প নেই ।
তখন কোন অন্ধকারও না
 হাসির
যোগ্য।
 সে এতটাই  উদাসীন ---
তাই তুমি ভাবো
ঝড়ের আগের নিস্তব্ধতা
অথবা তার চোখ ।

২. শোভাযাত্রা

সময়
যতটা তুমি নাও
সেটাই সময়
যা কেউ তাকে স্মরণ করতে নেয় ।

৩. আকাশ
সে চাই সেলাই-না-করা একটা আকাশ
খোলা প্রান্ত সহ
যাতে যখন সেটা খুলে যাবে
 সে লাফিয়ে উঠতে পারবে
একটা সূতো ধরে
 উঠে যাবে
একেবারে চূড়ায়।

৪. একটা দিন
 একটা দিন গলে যায়
জলের গ্লাসে ভিটামিনের মতো
 যা কেউ একজন ভুলে গেছে টেবিলের ওপর টেবিলের ওপর গেছে টেবিলের ওপর টেবিলের ওপর।
 ফিসফিস শব্দ হয় ।
নীরব কুলকুচি।
শোনার মতো কেউ নেই আশে পাশে পাশে
তার তুচ্ছ নালিশ।
 তাই সে শান্ত হয়ে পড়ে,
বুদবুদ ওঠে ,
তলানি পড়ে ।
সন্ধ্যেবেলা মালিকেরা বাড়ি ফিরে এসে
তাকে ঢেলে দেয় সিঙ্কের ভেতর।

সোমবার, ২৫ মে, ২০২০

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা || রুদ্র কিংশুক || রোজেন কুকুসেভ- এর কবিতা

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা
 রুদ্র কিংশুক
রোজেন কুকুসেভ- এর কবিতা

রোজেন কুকুসেভ (Rosen Kukushev, 1983) সোফিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং আরব সমাজ ও সংস্কৃতি  বিষয়ে লেখাপড়া করেছেন। 
জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পলিসি স্টাডিজ বিষয়ে পাঠ নিয়েছেন।  তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ "ইনস্পিরেশনস অ্যান্ড ডেস্ট্রাকশন " প্রকাশিত হয় ২০১২ খ্রিস্টাব্দ। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও বুলগেরীয় কবিতার সংকলনে তাঁর কবিতা সংকলিত । আরবি সহ বিভিন্ন ভাষায় তাঁর কবিতা অনূদিত। তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ "আফটার দি  ইন্টক্সিকেশন" ২০১৮ তে প্রকাশিত হয়।

১. ধোঁয়াশা

কারখানার ধোঁয়াশা
এলোমেলো নগরায়নের রূপরেখা
 যেন ভাগ্য গণকের করতল
 দড়ি-পথে অর্ধ নামে তোমার চোখের পাতায়
 আর মনে হয় যেন তুমি কান্নার
দোর গোড়ায়
কিন্তু দয়া করে তা করো না
পাঠ্য কদাচ তা ইঙ্গিত করে
 বাকিটা আমরা কথা বলব তা শব্দলেখা ছাড়াই
 আমি তোমায় ভালোবাসি তৃপ্তি সহ, সহজে
তুমি অন্ধকারে দূরে
আমি তোমায় আকর্ষণ করি
তুমি ঠেলে দাও দূরে আমাকে:
 যন্ত্র বিদ্যার সহজ নিয়মে

২. লাল মাথা
লালমাথার আছে
অতুলনীয় সৌন্দর্য
 অতুলনীয় আবেগ
সে চেটে নেয় সুন্দরভাবে
তার আঙ্গুলের প্রান্তগুলো
স্বচ্ছ তামাক-মাখানো
 তার কাঁধ উপচানো কোঁচকানো ঘন কুন্তল
যার ভয়ংকর পাকানো বেণী
দীর্ঘ জিভের মতো
দাগভর্তি সাদা মুখের উপর
 ক্রিসেনথিমাম চোখে
 নারী-সিংহ দানবের হাসি

লালমাথার আছে
 অতুলনীয় কবিতা রূপ
আর তার ঠোটে অখন্ড মাংসের স্বাদ
সে  গলায় বরফ তার হাতের তালুতে
 ছড়ানো এবং বদলে যায়
সমুদ্রে,  দূরত্ব
তার ও আমার মাঝে
 আগুনপাখি বৃষ্টির ফোঁটা
 সৌন্দর্য,
আশ্লেষ ও কবিতার
অতুলনীয় রূপ...

রবিবার, ২৪ মে, ২০২০

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা || রুদ্র কিংশুক || আইআনা বকুভা- কবিতা

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা
 রুদ্র কিংশুক 
আইআনা বকুভা- কবিতা

আইয়ানা বোকুভা (Iana Boukova,1968) দ্বিভাষিক কবি। তিনি বুলগেরিয়ান ও গ্রিক -- দুই ভাষাতেই লিখেছেন মৌলিক কবিতা।
বুলগেরিয়ার সোফিয়াতে তাঁর জন্ম।১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি  চলে আসেন  গ্রিসের আথেন্সে এবং গ্রিক ভাষায় সৃজনশীল সাহিত্য রচনায় নিজেকে নিযুক্ত করেন। তার আগে বুলগেরীয় ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে তাঁর দুটি কাব্যগ্রন্থ, একটি ছোট গল্পের বই  এবং একটি উপন্যাস। এছাড়া গ্রিক থেকে বুলগেরিয়ান ভাষায় তিনি অনুবাদ করেছেন আধুনিক কালের বহুপ্রতিষ্ঠিত কবির কবিতা। এই অনুবাদ তালিকায় রয়েছেন সেফেরিস, কাতেরিনা আনঘেলাকি-রুকি এবং জেনি মাসটোরাকি।  ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে গ্রিসের প্রখ্যাত কবিতা প্রকাশনা সংস্থা 'ইকারস' প্রকাশ করে তাঁর কাব্যগ্রন্থ 'মিনিমাল গার্ডেন'। গ্রিক কবিতার একটি বিশিষ্ট অনলাইন পত্রিকা "গ্রিক পোয়েট্রি নাউ"। বকুভা এই সংস্থার একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।পৃথিবীর নানান ভাষায় অনূদিত  বকুভার কবিতা। 

১. ছোটো বাগান

তুমি দরজা খুলেছিলে
আর সেখানেই ছিল এটা: রাত্রি
আটকে পড়েছিল
 কয়েক সপ্তাহ ধরে ছিল না খাবার মতো রুটি
 এরকম লোকই ছিলে
তুমি কল খুলে রেখেছিলে
ক্ষতস্থান, রক্ত-নির্গমনে
তুমি উলটো করে পড়েছিলে চশমা
দেখো আমি পরেছি জুতো যা আমি  পরতাম ছোটবেলায়
এবং মোজা যা পরতাম  হাঁটু পর্যন্ত
কিন্তু আমার হাঁটু বেড়ে উঠছে অ্যালিসের মতো
 আমাদের বাগানে আগুন লাগল অতিরিক্ত চাঁদনির কারণে
 আর আমাদের অতিথিদের গলা এখনো বেড়ালছানার পিছনে
কুয়োর ভেতর
এখন আমি দেখছি ঘর
কোথাও একটু ওপর থেকে
পশ্চাতে আমার ছোট্ট বিছানা
বুনো জিনিস
 উস্কানিমূলক ভাবি কুৎসিত
একঘেয়ে

২. বলকান সরল চিত্রকর

 এবং যখন তারা পৌঁছলো অন্তিম দরজায় বিচারকেরা জিজ্ঞাসা করল তাদের
( কেবল মজা করার জন্য)
 এটা কী
 চিৎকার আর কষ্ট নিয়ে উপরে উঠছে
 আনন্দে উড়ছে
আর নিঃশব্দে পড়ছে
সবগুলো অগ্নিশিখায়
অগ্নিমানুষ বলল আমার গান
পাখি যা  উড়ালো
মাথার এধার থেকে ওধারে আর আমায় ভালবাসলে--
তৃতীয়জন (সুখী!)
 ছোট ভাই বলল
সবই শিখাময়।

৩. সন্ধ্যা ও সংগীত বিষয়ক ছোটো কবিতা

সাতটা বাজে,  পাখাগুলো বন্ধ হয়েছে
শহরের ভ‍্যাপসা বারান্দা
যেখানে আলো শেষ আর ধৈর্য ফুরিয়ে যায়
 একটা শিশু চিৎকার করছে যেন তাকে হত্যা করা হচ্ছে
অথবা কাউকে হত্যা করা হচ্ছে আর সে চেঁচাচ্ছে শিশুর মতো
 আমি কি জানি
কোনটা তার মাটির তলায় গেছে
আর কোনটা সোজা শিরাতন্ত্রে,
আমার শিক্ষানবিসি সাম্যবস্থায়
ঠিক যখন তুমি চাবি দিয়ে বাজাও
খুব দায়িত্বজ্ঞানহীন ।

৪. দায়িত্ব ও উপাধি ছাড়াই

আহা, আমি জানি বিবর্তন চলছে
আর আমি নিজেই এখন মুছে ফেলি
 আমার ত্বক থেকে আঁশ
 আর শ্বাসের জন্য হাঁপায়
 গতকাল আমার প্রতিবেশীও এ কথাই বলেছিল:
 প্রত্যেকেরই আছে অফুরন্ত সম্ভাবনা
যেমন সিগারেট-অবশেষে আগুন লাগা
 যেমন ভোঁকাট্টা ঘুড়ির
 শুন্যে এখন ওড়া
অসম্মার্জিত তারামণ্ডলের উঠানে
 কিন্তু কেন তবে
(আমি জানতে চাই )
প্রতিটি সকালে তারা ঘুম ঘুম চোখে লাফায়
ধড়াম করে দরজা বন্ধ করে, গাড়ি স্টার্ট করে
 দীর্ঘ মিনিটগুলো ইঞ্জিন গরম করে
 দীর্ঘ ঘন্টাগুলো ইঞ্জিন গরম করে
কেন প্রতিদিন সকালে
 তারা যাত্রা করে এবং গাড়িতে স্টার্ট দেয়
এবং কোথাও না যাওয়া হয়।

বুধবার, ২০ মে, ২০২০

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা || রুদ্র কিংশুক || ভানজেল ইমরিওরভ-এর কবিতা

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা

 রুদ্র কিংশুক

 ভানজেল ইমরিওরভ-এর কবিতা

ভানজেল ইমরিওরভ (Vangel Imreorov, 1988) জন্মেছেন বুলগেরিয়ায়।ইংল্যান্ডের ব্র্যাডফোর্ড
ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি ডিজিটাল বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেছেন। আইটি ও টেলিকমিউনিকেশন বিভাগে তিনি কর্মরত। আট বছর ইংল্যান্ডে কাটিয়ে তিনি ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে বুলগেরিয়ায় ফিরে আসেন। সেই বছরই প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'লিভিং দ‍্য মেমোরি'(Leaving the memory,2017) যা বুলগেরিয়ায় একটি বিশেষ পুরস্কার লাভ করে।


১. যখন আমি অপেক্ষা করি

সংগীত দ্রবীভূত হয় নৈঃশব্দ‍্যে।

আমার চোখগুলো আদর করে পৃষ্ঠাকে
ঘুমন্ত বিড়াল যেন ।

পাখিরা বাতাসে সাঁতার কাটছে
আর মাছেরা শিখছে ওড়া
জলের ভেতর।

বাতাস আকাশে তারাদের লোফালুফি করে।

রাস্তাগুলো পানরত
বৈদ্যুতিক বাতিস্তম্ভের আলোয়।

আমার ছায়া ভিজে যাচ্ছে
 বৃষ্টিতে।

যখন আমি অপেক্ষা করি

অনন্ত তোতলায়
প্রতিটি আলাদা মুহূর্তে

এবং আর আমি লড়াই করি উচ্চারণ করতে "বিদায়,আমি তোমায় ভালোবাসি..."

২. তুমি একবার লটারি জিতেছ

জন্মেছ--- তার মানে তুমি জিতেছ লটারি:
এই মুহূর্তে থাকাটাই জেতা,
 আশা করা, যন্ত্রণা পাওয়া,
খাওয়া এবং ঘুমানো,
সময়ের গতিপথে পুরনো স্বপ্নকে ঝেড়ে ফেলা তোমার স্মৃতির ভেতরে সময়কে ধরতে---
তুমি জিতেছ !

 সকালের আকাশের ধুসর আলো।
বাতাসের গতি পরিবর্তন।
বিকালের নীরব।
জীবন থেকে পালানোর চেষ্টা
 এবং তিক্ততার পাল্টে যাওয়া মাধুর্যে...

বেঁচে থাকার সুযোগ তুমি পেয়েছো
 এবং তুমি তা আছো!

৩. যখন তারা আমার বয়স জানতে চায়

আমি দেয়ালের ক্যালেন্ডারের পাতা
 উল্টাবো ধীরে ধীরে ,
আর সূর্য ডুবে যাবে ও উঠবে,
 (মেঘেরা আকাশ মুছবে ঘর মোছার মতো,
বৃষ্টি ঝরবে, ঝড় আমার ছোট্ট পৃথিবীর পাতাগুলো
দোমড়াবে মোচড়াবে)

আর আসবে ঊনত্রিশটা শীত
আর ঊনত্রিশটা গ্রীষ্ম
মাঝখানে সম পরিমাণ
বসন্ত হেমন্ত নিয়ে।

তারপর
ওয়ালপেপারের ওপর বিবর্ণ চৌকো দাগ রেখে,
ক‍্যালেন্ডার হারিয়ে যাবে,
আমি চলে যাব বহু দিন আর কেউ একজন
সেই বিবর্ণ চৌকের ওপর রাখবে
একটা গোলাকার ঘড়ি।


৪. হেনরি

আমি মানুষকে পাস কাটাই
আমার জুতোর চেয়েও জীর্ণতর মুখে

 এই শহর অথবা সেই দোকান চার দিকে হাঁটা

তারা হাসে, তাদের সস্তা হাসি
যখন আমি ভাবি নিঃসঙ্গতার বিলাসিতা
 দিনে দিনে দুর্লভ হয়ে যাচ্ছে।

মঙ্গলবার, ১৯ মে, ২০২০

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা || রুদ্র কিংশুক || ইভান ক্রিসটভ- এর কবিতা

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা

 রুদ্র কিংশুক

ইভান ক্রিসটভ- এর কবিতা

ইভান ক্রিসটভ (Ivan Hristov, 1978)- জন্ম বুলগেরিয়ার  বোরোভোত। তিনি  কবি ও সাহিত্য-সমালোচক। পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত  হয়েছে
তাঁর কবিতা।
সাহিত‍্যকর্মের জন্য তিনি একাধিক পুরস্কারও পেয়েছেন।
বর্তমানে তিনি ইনস্টিটিউট অফ লিটারেচার লিটারেচার অফ দ্য বুলগেরিয়ান অ্যাক্যাডেমি অফ সাইন্সেস- এ তিনি কর্মরত।

১ গ্রাউন্ড জিরো

আমি সেই বাসে উঠলাম---
 চারপাশ দেখার জন্য।।
যাতে দেখা যাবে
গোটা নিউইয়র্ক দুদিনের
 আমি অবাক
সেই রুটে আছে একটা স্টপ
'গ্রাউন্ড জিরো'।
শূন্য তাকে কি শূন্য তাকে তাকে কি শূন্য তাকে তাকে কি
করে তোলা যায় একটা আকাঙ্ক্ষার বস্তু,
 শূন্যতার জন্য টিকেটের দাম
কত হতে পারে
'গ্রাউন্ড জিরো'- র  সামনে
সবাই চুপচাপ
যেন কোন অদৃশ্য
 সমাধিক্ষেত্র সামনে।
কেবল একজন আফ্রো-আমেরিকান নারী
 তবু চিৎকার করছিল
"দেখো !"
"দেখো!"
 যদিও
পাঁচ বছর
 ইতিমধ্যে পার ইতিমধ্যে পার ।
 আমি  দেখেছিলাম
নগ্ন মাটি নগ্ন মাটি
কিছু ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কারের
আশায়,
 কিছু চিহ্ন
 বিগত দিনের
 কিন্তু ব্যর্থ হলাম।
 ভয়ঙ্কর নৈঃশব্দ্য
আমিই ছিলাম একমাত্র টুরিস্ট
 ইতিহাস ভারাক্রান্ত

২.অগ্নিবর্ণ

বেনিআসহকলার বাইরের একটা রং রং
নীল আর লালের মেলবন্ধন
রক্তবর্ণের সমান
উষ্ণ রংয়ের গোষ্ঠীভুক্ত
রক্তবর্ণের মতো নয়
 যা
 ঠান্ডা রঙের দলে
কখনো কখনো একে কালচে লালের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা হয়
রক্ত লালের ক্ষেত্রেও তাই
সংযোগ :
ক্ষমতা, সম্রাজ্য, উচ্চ সম্ভ্রান্ততা

৩. তৈলস্ফটিক

তৈলস্ফটিক এই জগত
দুধ সাদা রঙে
দুধসাদা সমুদ্র
 দুধ সাদা আকাশ
চিনি দুধ সাদা
গরম সাদা দুধে
তার সছিদ্র গঠন
এবং প্রয়োজনীয় তেল
 সহজে নির্মাণ করা যায়

সোমবার, ১৮ মে, ২০২০

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা || রুদ্র কিংশুক || ওলিয়া স্তোয়ানোভা-র কবিতা

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা 
রুদ্র কিংশুক 
ওলিয়া স্তোয়ানোভা-র কবিতা

ওলিয়া স্তোয়ানোভা (Olya Stoyanova, 1977)-র জন্ম বুলগেরিয়ার সোফিয়া শহরে। সোফিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে থেকে তিনি স্নাতক জার্নালিজম এন্ড ম্যাস কমিউনিকেশনে।  এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
তিনি সাংবাদিকতা এবং জনসংযোগ বিষয়ে গবেষণাও করেছেন । তাঁর প্রকাশিত উপন্যাস 'পারসোনাল জিওগ্রাফি' (২০০৫),  একটি ছোটোগল্প সংকলন 'হোয়াট উলভস্ ড্রিম ' (২০১১) এবং চারটি কবিতা সংকলন 'ফটোগ্রফস'(২০০০), 'প্রোজ'(২০০২),  ,'রোড ম‍্যাপ'(২০০৩) এবং 'হ‍্যাপিনেস স্ট্রিট' (২০১৩)। তাঁর কবিতা,  ছোটোগল্প এবং নাটক পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে ।সাহিত্যকর্মের জন্য তিনি পেয়েছেন একাধিক পুরস্কার।

১. লাঞ্চ ব্রেক

 লোকটা
 যে মসজিদপাহারা দেয় ---
দুপুরে
দরজা খুলে রেখে চলে যায় ---
ঢোকে
কাছেই
কাফে ক্যালিফোর্নিয়ায়
দুটো স্যান্ডউইচ আর একটা কোক---
 --- এই সময়
এমনকি আল্লাহও বিশ্রাম নেন ---
সে দোকানদাকে
মেয়েটি হাসে,
আর ফেরবার পথে সে নিজে
দৌড়ায়।

২. ছোট ছোট গল্প গল্প

 সে ভালোবাসে নোট লিখতে নোট লিখতে---
 'আমি তোমাকে ভালোবাসি' স্বামীকে লেখে,
 বাচ্চাকে 'আমি তোর কথা ভাবছি,'
আর মাকে 'ধন্যবাদ'।
 এটা সত্যিই খুব হাস্যকর
 কিন্তু তার প্রিয়জনেরা এসব নিয়ে কিছু বলে না,
 এমনকি ভান করে
 যেন কখনোই তারা
কিছু দেখেনি এসব তাদের পকেট।
 তবু সে এসব করে চলে কিছুদিন---
সে দিন থেকে
যে দিন সে কোথাও পড়েছিল
একজন মেয়ে চোদ্দো তলা থেকে ঝাঁপ দিয়েছিল,
 আর তার পকেটে ছিল একটা নোট
এই শব্দগুলি---
 'পাঁচটা ডিম আর একটা রুটি'।

৩. ক্ষমা প্রার্থনার পরিবর্তে

প্রতিটি সকালে ---
কাজে যাবার পথে ---
বৃদ্ধ লোকটি,
ব্যাংকের সামনে বসে ---
হাত প্রসারিত করে আর জিজ্ঞাসা করে:
কটা বাজে, বাছা ---
আমি তাকে কী বলি ---
প্রতিটি সকালে
 একই সময়ে
দেরি,
খুব দেরি ....

৪. বোখারা

তোমরা কি জানো
কোথায় প্রাচীন বুখারাকে
 খোঁজা যায়?
 চতুর্থ পবিত্র
মুসলিম শহর
মক্কা, মদিনা আর জেরুজালেমের পর?
 এখানে
মধ্য এশিয়ার,
 তিন দিক মরুভূমি মরুভূমি
 ঘেরা,
শহরকে মনে হয় মরীচিকা---
মাদ্রাসা আর বালি-বর্ণ
দূর্গের দেয়াল,
 যারা
অর্ধেক চোখ বুঝে বাতাসের বিরুদ্ধে হাটে
 আর বাতাস
 তারা মেয়েদের স্কার্ট তোলে
খুব উঁচুতে।
তারা বলে যে শহরেরা এভাবেই টিকে থাকে।

রবিবার, ১৭ মে, ২০২০

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা || রুদ্র কিংশুক || ভ্লাডিসলাভ রিসটভ-এর কবিতা

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা 

রুদ্র কিংশুক 

ভ্লাডিসলাভ রিসটভ-এর কবিতা

ভ্লাডিসলাভ রিসটভ (Vladislav Hristov)- এর জন্ম বুলগেরিয়ার শুমেনে। বর্তমানে তিনি জার্মানির
কলোগমনেতে থাকেন। তাঁর প্রিয় কবিতা ফর্ম হাইকু । বহু বিশিষ্ট পত্র-পত্রিকা ও সংকলনে তাঁর হাইকু প্রকাশিত হয়েছে। ২০১০- এ থার্ড বুলগেরিয়ান ন‍্যাশনাল হাইকু কনটেস্ট- এ তিনি পুরস্কৃত হন।

হাইকু
১.
উষ্ণ বৃষ্টি
আঙ্গুর চাষী কাঁধগুলো
 কম্পন

২.
একাকী নই
হারিয়ে যাওয়া কুকুর
আমার অন্নভাগী

৩.
ধানক্ষেতে
যত ধান
 তত মশা

৪.
 প্রতিটি ব্যাগে
বোতলবন্দী সমুদ্র
গ্রীষ্মকালীন ট্রেন

৫.
যদি গতরাতে
আমি তুলতাম
 কাদামাখা ক্রিসানথেমাম 

৬.
ইস্টারের কেকে
ঘুমন্ত এক ইঁদুর
 পুনর্জাগরণ


 কবিতা

 চাষি জেগে উঠেছে এইমাত্র
কিন্তু নাশপাতি গাছের ছায়া
 সারা বিকেল তার পিছু পিছু পিছু
যখন সূর্য জ্বলে তার
ঘাড়ের ওপর বুড়ো চাষীর
শুয়ে থাকে  সুখনিদ্রায়
রাত এখনো অনেক দূরে
আর সমস্ত মৃত্যু
মনে হয় অসম্ভব।

শিরোনামহীন

১.
 ইঁদুরটা মরে
বেড়াল থামায় খেলা
তার সঙ্গে
একটা ছোট মুহূর্ত
খাবার আগে
যখন বেড়াল ইঁদুরটাকে শোঁকে
 তখন তারা সত্যিই খুব
 কাছাকাছি ।
২.
একে একে
 আমরা সবাই ফটো ছেড়ে যাই
কুকুরটা যায় সবার শেষে
তারা লম্বা লেজ সর্বদাই
থাকে ছবির ফ্রেমে।

শনিবার, ১৬ মে, ২০২০

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা || রুদ্র কিংশুক || মারিন বোডাকভ- এর কবিতা

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা 

রুদ্র কিংশুক 
মারিন বোডাকভ- এর কবিতা


মারিন বোডাকভ- (Marin Bodakov, 1971)- বুলগেরিয়ার নয় দশকের বিশিষ্ট কবি । তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা সাতের অধিক। পৃথিবীর বিভিন্ন
ভাষায় অনূদিত হয়েছে তাঁর কবিতা । তিনি বুলগেরিয়ার প্রখ্যাত কুলতুরা পত্রিকার সম্পাদক এবং সোফিয়া ইউনিভার্সিটিতে সাংবাদিকতা বিষয়ে অধ্যাপনায় যুক্ত আছেন। তাঁর গবেষণার  আগ্রহের বিষয় বুলগেরিয়ার সাহিত্য সমালোচনার ইতিহাস।তিনি বুলগেরিয়ার সরকারকে সংস্কৃতি বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকেন । তাঁর কবিতা সংক্ষিপ্ত,  ঘন সন্নিবিষ্ট এবং বহুস্তরীয়।

১. ক্ষুধিত দুধ

প্রতিযোগিতা ঘোষণা না করেই
 বিজয়ী ঘোষিত হয় ।

নির্মাণ উৎকর্ষ অবাস্তবিক,
বিচার-দক্ষতা অপ্রাসঙ্গিক:
 শ্রেষ্ঠ সহায়ক ভূমিকা পুরস্কার
সর্বদাই মৃত্যুর কাছে যায় ।

অবশ্যই অন্য কারো।

২. সরল শিল্প

বৃত্তীয় নাচ
অসুস্থ আত্মীয়ের চারপাশে
পাথুরে নাচ ভারী, ভরাট চোয়ালে

(অন্যথায় একটি শিকার দৃশ‍্য )

তাকে মারো, আমার হৃদয় থেকে হারাবো অসংখ্য হৃদয়,
তাকে যেতে দাও, আমি শেষ পর্যন্ত স্বাধীন স্বাধীন হবো

৩. উড়োজাহাজ থেকে দেখা

আকাশকে দেখতে মস্তিষ্কের ভাজের মতো:
নীলের ধূসর এবং সবুজের ধূসর
এবং দুঃখের সমাধি দ্রুত সরে যায়
আমাকে জায়গা দিতে।

৪. কেবল নৈঃশব্দ্য কখনো বিশ্বাসঘাতকতা করবে না

যেমন ক্লান্ত প্রভু ছুটি দেয় না তার বুড়ো ভৃত্যকে
কেবল নৈঃশব্দ্য তোমাকে শেখাবে কীভাবে খোলা ঘরে ঘুমানো যায়
কোন কিছু আশংকা না করেই করেই আশংকা না করেই করেই না করেই।

৫. আমি স্বপ্ন দেখি আমি কম্বলে সমাধি ঢাকছি

 আমার বাবার মৃত শরীরগুলো
কোনো দায়সারা কপি নয়, কেবল অরিজিনাল,
 একই বৃদ্ধের অনেকগুলো শরীর
আমার বাড়ির সর্বত্র ছড়ানো,
 মুখ নিচের দিকে

৬. সে লেখে

রোগাপটকা কবিতা।
শব্দের কাঁধের হাড়গুলো চামড়া ভেদ করে বেরোয়।
তারা তবুও তার স্তন পান করে
এবং মধুর পা ছোড়ে।

৭. আমি ফিরছি

 আরো কম
 এবং  নিখুঁত ভাঁজকরা শব্দ নিয়ে
অতিরিক্ত লাগেজ ভাড়া আমি দিতে পারবো না

 তাদের পরিচ্ছন্ন জামাকাপড় আমার জন্য বড্ড বড়ো--
 যেন তারা কোন অপরিচিতের গায়ে।

শুক্রবার, ১৫ মে, ২০২০

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা || রুদ্র কিংশুক || গিয়র্গি বেলোরেচকি-র কবিতা

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা 

রুদ্র কিংশুক 

গিয়র্গি বেলোরেচকি-র কবিতা 

গিয়র্গি বেলোরেচকি (Georgi Belorechky, 1990)-র জন্ম বুলগেরিয়ার মন্টানাতে। তিনি লেটার অব ফ্লেস
নামের একটি প্রখ্যাত সাহিত্যি সাহিত্য সংস্থা গড়ে তোলেন। তাঁর কবিতা বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। বর্তমানে তিনি সোফিয়ার অধিবাসী।

১. সবাই কবি

তোমরা জানো মহান কবি কী উপাদানে তৈরি? তিনি একজন লজ্জাহীন মানুষ, মুখ লাল করতে অসমর্থ।
--------হাম সুন, মিস্ট্রিজ


কবিরা  ঘুমোতে পারে না
তারা সর্বদাই জাগ্রত
এমনকি প্রতিদিনের জীবনেও
তাদের মনে হয় কিছুটা কুঁড়ে।
তারা দেখে, হাঁটে , কাজ করে
 পাগলাটে নিদ্রা-চারীদের মতো,
 দিনের বেলা তারা ভাবনার ভেতর সাঁতরায়
কে জানে কী তারা  মেপেছে।

পালক -ছাড়ানো পাখি
তাদের দোসর
প্রকৃতিতে ,
পালক-খসানো তারা রাস্তা ধরে হাঁটে
দেয়াল থেকে জোগাড় করে
মানব-আকাঙ্ক্ষা...

 আর রাতে
ছোট আলোকিত
পরিসরে,
 তারা কাটে তাদের ধাতব পাত্র
অন্য মানুষের স্মৃতি থেকে
 শব্দে শব্দে।

২.চালিয়ে যাওয়া

আমি হারিয়ে গেছি রাস্তার মাঝে,
আমি হারিয়ে গেছি দিনের মধ্যভাগে,
আমি নিজেকে ছাড়াচ্ছি চিন্তা ভাবনা থেকে,
আমি নিজেকে ছাড়াচ্ছি ঝামেলা ঝঞ্ঝাট থেকে।

 আমি তাকাচ্ছি সামনে
পিছনে  ছাড়ছি দীর্ঘশ্বাস,
আমার তৃষ্ণা মিটিয়ে
প্রতিটি পদক্ষেপে ,

আমি চালিয়ে যাচ্ছি। কোনভাবে
 বর্তমান থেমে গেছে ---
ঘটমান বর্তমান---
 আমার আরম্ভের নাভিমূল ।

আমি চালিয়ে যাচ্ছি ,
না থেমে ,
কোথায় যাব না জেনে,
 কারণ আমি জানি না
অন্য কোন পথ।

বুধবার, ১৩ মে, ২০২০

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা || রুদ্র কিংশুক || আকসিনিয়া মিহাইলোভা- র কবিতা

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা
রুদ্র কিংশুক

আকসিনিয়া মিহাইলোভা- র কবিতা

আকসিনিয়া মিহাইলোভা (Aksinia Mihaylova, 1963) জন্মেছেন বুলগেরিয়ার উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে। সোফিয়ার সেন্ট ক্লিমেন্ট ওহবিডস্কি ইউনিভার্সিটিতে
তিনি দর্শনের পাঠ নিয়েছেন। আহ্ মারিয়া (Ah Maria)  নামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সাহিত্য পত্রিকার তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। নিজের মৌলিক বুলগেরিয়ান কবিতার একাধিক সংকলন ছাড়াও প্রায় ত্রিশটি অনুবাদ কবিতার সংকলন প্রস্তুত করেছেন তিনি। লিথুয়ানিয়ান, লাটভিয়ান এবং ফরাসি কবিতার তিনি একজন উল্লেখযোগ্য অনুবাদক।

১. বৃষ্টি

আধঘন্টা ধরে আমি সাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে
 তবুও ধুয়ে ফেলতে পারছি না বহু বছরের তাড়া- করে- আসা স্বপ্নকে
যে স্বপ্নে তুমি আমাকে ছেড়ে যাচ্ছ
 কৃষি বাজারে
দক্ষিণের এক শহরে ।
রক্তের জোয়ার ঝেরে ফেলছে
 বালি এবং মৃত জেলিমাছ আমার চোখে
আর আমি দেখতে পাচ্ছি না কী করে তুমি চলে যাও দূরে
 তোমার কাঁধের ওপর ঝুঁকে পড়া
কোনো একজনের আনন্দ বয়ে নিয়ে

 এপ্রিল খুলে দেয় ব্যালকনি
তথাপি আমার ভেতরের বেড়াল জেগে ওঠেনা
টানা পাঁচ মাস :
গরম  টিন-ছাদ,
রৌদ্রল  টালি-ছাদ
অন্য ঋতুর দৃশ্য।

ডুমুর গাছের তলায় আমি গর্ত খুঁড়ি,
তালুর মধ্যে পিষে ফেলি আকাশমনি- বীজ,
 আমি অচেনা ভাষায় কথা বলি তাদের সঙ্গে
 কিন্তু তবু বৃষ্টি আসে না
 আর তুমি কিছুতেই বুঝতে চাওনা
আমাকে তোমার কতটা ভালোবাসা প্রয়োজন।

 আমার মাথার ওপর মেঘ ঝুলে থাকে
প্রতিশ্রুতির মতো।

২. নিষ্পাপ

প্রথমবার আমি নেমে এসেছিলাম,
জোনাকিদের ধীর অগ‍্রসরের আগে
না-কাটা বার্লি ক্ষেতের ওপর,
 শিরদাঁড়া বরাবর আঙ্গুলের আগে
ঘুমের ভাঙ্গা ডানা বাঁধা
নিজেকে শেখানোর আগে।
 আমি চেয়েছিলাম আরেকটা শরীর
দুজন একসাথে খাওয়াব বলে,
কিন্তু কেউ ডাকেনি আমার নাম।

 দ্বিতীয় বার আমি নেমে এসেছিলাম,
তখন আমি শিখে গেছি ছোট্ট ছোট্ট আনন্দের বর্ণমালা,
যদিও জ্ঞানবৃক্ষের ওপর ডালিম
 তখনও কাঁচা, অসীমের উপভোগের পক্ষে,
আমরা প্রেমিক-প্রেমিকার মতো ধীর নদীর ভেতরে ঢুকলাম
আর ভাইবোন হিসেবে উদ্বেলিত:

তোমার এবং আমার ভেতর---- আলো।


৩. কিছুটা ইতস্তততার পর

আমি জেগে উঠি
হাসি পরিহিত

যা নেমে আসে আমার হাঁটু অবধি

আমি এটা পড়েই কি পার্কে যাব
সতেজ হাওয়া খেতে
অন্তত সন্ধ্যা পর্যন্ত টিকে থাকতে

অথবা আমি তাদের
 রেঁধে ফেলবো সবজি ঝোলে
ভঙ্গুর পারিবারিক সাম্যের কারণে

বাইরে যাবার আগে
 আমি আয়নার দিকে তাকাতে সাহস করি না।

৪. যেহেতু আমি জানিনা হাত দিয়ে কী করবো

 যেহেতু আমি জানিনা হাত দিয়ে কী করবো,
 আমি ডুমুর ঝুড়ি দোমরাই মোচরায়
যখন সে আনন্দ-বাগিচা থেকে দূরে যায়
বোতাম দিয়ে বন্ধ করে শেষ সূর্যালোক
কন্ঠনালী পর্যন্ত ।

কাল সে ডেস্কের সবচেয়ে নিচের ড্রয়ারে
 রেখে দেবে আরও একটা জলরং ছবি
জীবন বদলানোর অভিপ্রায়ে
সে ঝেড়ে ফেলে শরীর থেকে আমার হাসি যেভাবে
মৌমাছিরা মুছে ফেলে পায়ে- লাগা বাবলা-রেণু
 আর সে ফিরবে মুর্তি-ভরা গলিপথে
যারা তাদের মাথার ওপর ছরিয়ে রেখেছে আকাশের পরিবর্তে
 পান্ডুলিপি।

Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...