রবিবার, ৩ মে, ২০২০

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা || রুদ্র কিংশুক || ভ্লাডিসলাভ রিসটভ-এর কবিতা

বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা 

রুদ্র কিংশুক 

ভ্লাডিসলাভ রিসটভ-এর কবিতা

ভ্লাডিসলাভ রিসটভ (Vladislav Hristov)- এর জন্ম বুলগেরিয়ার শুমেনে। বর্তমানে তিনি জার্মানির
কলোগমনেতে থাকেন। তাঁর প্রিয় কবিতা ফর্ম হাইকু । বহু বিশিষ্ট পত্র-পত্রিকা ও সংকলনে তাঁর হাইকু প্রকাশিত হয়েছে। ২০১০- এ থার্ড বুলগেরিয়ান ন‍্যাশনাল হাইকু কনটেস্ট- এ তিনি পুরস্কৃত হন।

হাইকু
১.
উষ্ণ বৃষ্টি
আঙ্গুর চাষী কাঁধগুলো
 কম্পন

২.
একাকী নই
হারিয়ে যাওয়া কুকুর
আমার অন্নভাগী

৩.
ধানক্ষেতে
যত ধান
 তত মশা

৪.
 প্রতিটি ব্যাগে
বোতলবন্দী সমুদ্র
গ্রীষ্মকালীন ট্রেন

৫.
যদি গতরাতে
আমি তুলতাম
 কাদামাখা ক্রিসানথেমাম 

৬.
ইস্টারের কেকে
ঘুমন্ত এক ইঁদুর
 পুনর্জাগরণ


কবিতা

চাষি জেগে উঠেছে এইমাত্র
কিন্তু নাশপাতি গাছের ছায়া
সারা বিকেল তার পিছু পিছু পিছু
যখন সূর্য জ্বলে তার
ঘাড়ের ওপর বুড়ো চাষীর
শুয়ে থাকে  সুখনিদ্রায়
রাত এখনো অনেক দূরে
আর সমস্ত মৃত্যু
মনে হয় অসম্ভব।


শিরোনামহীন

১.
 ইঁদুরটা মরে
বেড়াল থামায় খেলা
তার সঙ্গে
একটা ছোট মুহূর্ত
খাবার আগে
যখন বেড়াল ইঁদুরটাকে শোঁকে
 তখন তারা সত্যিই খুব
 কাছাকাছি ।
২.
একে একে
 আমরা সবাই ফটো ছেড়ে যাই
কুকুরটা যায় সবার শেষে
তারা লম্বা লেজ সর্বদাই
থাকে ছবির ফ্রেমে।

আটপৌরে কবিতা || নীলাঞ্জন কুমার || ধারাবাহিক কবিতা


আটপৌরে কবিতা 

নীলাঞ্জন কুমার 

১০১.

মদ/ রিপু/ নাশ 
  ) বুদ্ধিভ্রম  (
কেউ কেউ সঙ্গে হাঁটে ।

১০২.

উদ্ধার/  মুক্তি/  আনন্দ 
)  প্রাণবন্ত (
সে স্বাদ আর কতক্ষণ! 

১০৩.

হারমোনিয়াম/  এস্রাজ /সেতার 
          ) যন্ত্রানুষঙ্গ (
সুরে আনন্দ ভরিয়ে দেয় ।

১০৪.

অর্থ/ বিনিময়/ কারবার 
   ) অঙ্গাঙ্গী  (
ক্রমশ নেশায় রূপ নেয় ।

১০৫.

আয়না/ মুখাবয়ব/ ভাবভঙ্গি 
         ) চরিত্র  (
অবলীলায় কেমন ফুটে ওঠে ।

রম্যরচনা || ওলোট পালোট || কাশীনাথ সাহা

রম্যরচনা
ওলোট পালোট
কাশীনাথ সাহা

দমবন্ধ ঘরে আটকে আছি। যা জীবনে শিখতে পারিনি তাই শিখছি। জানতামই না আলু কাটবার পরে ধুতে হয়, টমেটো কাটবার আগে।  চা তৈরি করাটা এতো ভাল পারি, আমার চা খেয়ে গিন্নী আর চা করতে ময়দানে নামে না। কতো চেষ্টা করেছি বউয়ের মন রাখতে তবুও মাঝে মাঝে  গোল্লা পেয়ে যাচ্ছি। এই সেবার একশো ভাগের এক ভাগও যদি বাবা মায়ের পেছনে খরচ করতাম তাহলে মৃত্যুর পরে স্বর্গবাস কোন মাঈকী লাল ছাড়াতে পারতো না।
বসে আছি বউ করোনাকে উদ্দেশ্য করে আমার দিকে তাকিয়ে বললো, এই আপদটা যে কবে বিদায় হবে! আমি উদ্দেশ্য না বিধেয় বুঝতে পারলাম না। বউ বাইপাস করে ফেস ওয়াশ  করতে চেম্বারে ঢুকে পড়লো।
সেদিন একটু হালকা হালকা ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পড়ছিল। রিমঝিম গিরে শাওন... ( বাকীটা জানিনা!) কি সুন্দর প্রেম-প্রেম ওয়েদার। সতের বছরের ওল্ড মডেল বউকেই একটু সোহাগ করতে মন চাইলো।  কিন্তু উনি মহাভারতে মজে আছেন। ধরা ছোঁয়া দিচ্ছেই না। ডন কো পকাড় না মুশকিল হি নহী নামুনকিন হ্যায়...।বিরক্ত হয়ে বললাম, তুমি একটা যাচ্ছেতাই, ভালবাসার ভ- ও বোঝ না। কিন্তু এ বউ সে বউ  নয়। শ্বশুর মশাই উকিল ছিল, সেখান থেকে কথার মারদাঙ্গাটা ভালোই রপ্ত করেছে। বউ বললো, ভালবাসার আমি কিছু বুঝি না? জিজ্ঞেস করে এসো আমাদের পাড়ার শ্যামলদা,অতনুদা,রূপমদাকে!  ওরা আমাকে একশোতে একশোদশ দেবে। অনিল কুম্বলের টপস্পিন দিতে গিয়ে শচীনের ওভার বাউন্ডারি খেয়ে ধরাশায়ী হয়ে গেলাম। আর কথা বাড়ালাম না। যুবী-র ছয় বলে ছ'টা ছক্কা এখনো স্মৃতিতে উজ্জ্বল।
বউয়ের জন্মদিনটা এই গাড্ডায় পড়ে গেল। কি দেব!  কি দেব ভাবতে ভাবতেই দু'দিন খতম। তৃতীয় দিন মানে জন্মদিনে চারটা মাস্ক কিনে বউকে সোহাগি কণ্ঠে গুনগুনিয়ে বললাম, হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ.... তারপরের অধ্যায়টা খুব একটা সুখকর হলো না। বউ পাক্কা সাতাশ ঘন্টা তের মিনিট একান্ন সেকেন্ড সেই মাস্ক পরে সেই যে মৌনব্রত শুরু করলো, তা বলে বোঝানো যাবে না।
কথাবার্তা বন্ধ, রান্না বন্ধ সব লকডাউন!
একা-একা গান গাইছিলাম, এই মেঘলা দিনে একলা ঘরে থাকে নাতো মন...  কবে পাবো ওগো তোমার দরশন।(  নিমন্ত্রণ টা ভুলে গেছলাম)   নিছক ভদ্রলোকের নিপাট নিরামিষাশী সংগীত। বউ কোথায় ছিল,  আদা রসুন পেঁয়াজ হলুদ মাখা মুখ নিয়ে
ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়লো। ও সায়ন্তনীর দর্শন পাওনি বলে বড্ড মন খারাপ তাই না। বুড়ো হয়ে গেলে এখনো ছুঁকছুঁকানি স্বভাবটা গেল না।
আর একবার তোমার গলায় ওইসব ঢংয়ের গান শুনি তারপর দেখ আমি কি করি!  আমার কণ্ঠনালী শুকিয়ে কাঠ। চৈত্র মাসের ধূ ধূ শিলাবতী..  তবুও ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলাম,  কি করবে?  একটু পুরুষোচিত বিক্রম দেখাবার ক্ষীণ প্রচেষ্টা ছিল, কিন্তু ঠিক সময়ে শর্টটা নিতে পারলাম না। চেয়েছিলাম ওমরীশপুরীর মতো থ্রো করতে  হয়ে গেল শচীনের কণ্ঠ। বউ বললো, কি করবো বলছি শোন, পাড়ার ঘরে ঘরে বলে আসবো তোমার তিনদিন ধরে হাঁচি হচ্ছে আর জ্বর গা হাত ব্যথা। তারপর বাকীটা আমাকে করতে হবে না, পাড়ার লোকেরাই বুঝে নেবে।
না আর কথা বাড়ালাম না। এরা মা কালীর বংশ পরম্পরা, মুখে যা বলছে তা যদি বাস্তবে করে দেয়,  তখন মার ঝাড়ু মার ঝাড়ু মেরে ঝেটিয়ে বিদেয় কর হয়ে কোন
মর্গে শিফট হয়ে যাব স্বয়ং ব্রহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বরও ওই বডির টের পাবে না।
লকডাউনে বডিটা লক করাই ছিল এবার  মুখটাও লক করে নিলাম।  আর সংগীত?  মাথা খারাপ!  নেড়া ক'বার বেলতলায় যায়?

বিপ্লব মাজী || মেদিনীপুর শহরে একদিন পৃথিবী উঠে আসবে

মেদিনীপুর শহরে একদিন পৃথিবী উঠে আসবে
বিপ্লব মাজী

মেদিনীপুর শহরে একদিন
                           পৃথিবী উঠে আসবে,
কংসাবতীর তীরে হবে বনভোজন, কবিতা পাঠ,
সেদিন আমি না থাকলেও তোমরা থাকবে,
যারা আমাকে দেখেছ, বা আমার কাছে
               কখনো সখনো এসেছ
কংসাবতীর জলে হাত ডোবালেই
ভেসে উঠবে স্মৃতি,
স্মৃতি তর্পণে
                  আমার মুখের ছবি,
গল্প করবে ছবির সঙ্গে, সেই জাহাজের গল্প,
অদৃশ্য যে জাহাজে চড়ে
                আমরা পৃথিবীতে আসি, ফিরে যাই :
                                  ' আবার আসব বলে '
যদিও আসি না, চিরতরে চলে যাই...

## ২৬ এপ্রিল, ভোর ১টা ৩০ মিনিট।।


কিছু বই কিছু কথা ।।নীলাঞ্জন কুমার শায়েরী মীনাকুমারী । অজয় নাগ অনুদিত । ভারবি । একশো টাকা ।

কিছু বই কিছু কথা ।।নীলাঞ্জন কুমার


শায়েরী মীনাকুমারী । অজয় নাগ অনুদিত । ভারবি । একশো টাকা ।

দু:খভরা জীবন গাথা ও তার আজীবন প্রেম খুঁজে চলা ও তাতে ব্যর্থ হওয়ার যে যন্ত্রণা তা এক অনবদ্য অবস্থানে দাঁড়িয়ে শায়েরীর ভেতর বন্দি করেছেন কিংবদন্তি অভিনেত্রী মীনাকুমারী । আত্মীয় সূত্রে রবীন্দ্রনাথের উত্তরসূরি অসামান্য এই নারী যখন লেখেন: 'প্যার সোচা থা প্যার ঢুঢা থা/ ঠন্ডী ঠন্ডী সী হসরতে ঢুঁঢি .....' কিংবা ' দর্দ তো হোতা রহতা হ্যায়/  দর্দকে দিল কি প্যারে হ্যায় ' এর মতো আবেগী অনুভূতি ,তখন তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা বেড়ে যায় ।
                       একথা সত্য মীনাকুমারীর শায়েরীর প্রতি আমাদের আরো বেশি মগ্ন করে তুলবে অনুবাদক কবি
অজয় নাগের অনুবাদ । অনুবাদক তাঁর সাহিত্যসত্ত্বা দিয়ে মীনাকুমারীকে বুঝেছেন বলে তাঁকে সার্থকভাবে অনুবাদ করেছেন ।দুঃখ মানুষের ভেতরের মননকে গড়ে তোলে বলে মীনাকুমারীর শায়েরী আজও জীবন্ত । আমরা তাতে তন্নিষ্ঠ হই। দুঃখে ভেসে যাই ।


সৌমিত্র রায়- এর জন্য গদ্য || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক বিভাগ

সৌমিত্র রায়- এর জন্য গদ্য // প্রথম কিস্তি
প্রভাত চৌধুরী



রচনাটির শিরোনাম দেখে বিচলিত হবার কারণ নেই। শিরোনামটিতে সৌমিত্র রায় নামটির উল্লেখ থাকায় একমাত্র সৌমিত্র রায়-ই এই গদ্যটি পাঠ করার অধিকারী এমনটা ভেবে নেবার কোনো কারণ দেখছি না। এই প্রসঙ্গে একটি সর্বজনগ্রাহ্য সিদ্ধান্ত জানিয়ে রাখতে চাইছি। তা হল : একটি রচনা প্রকাশিত হবার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত লেখাটি একমাত্র লেখকের অধিকারে থাকবে। কিন্তু যে মুহূর্তে রচনাটি প্রকাশিত হয়ে গেল , সেই মুহূর্তেই রচনাটি পাঠ করার অধিকার সর্বজনীন হয়ে গেল। তখন যে কেউ লেখাটি পাঠের অধিকার পাবেন। আপনি ইচ্ছে করলেও আমাকে আপনি আপনার রচনাটিকে আমার পাঠাঙ্গনের বাইরে রাখতে পারবেন না। আমিও আমার রচনাটিকে আপনার চোখের আড়ালে রাখতে পারব না।

অতএব বর্তমান রচনাটি সৌমিত্র রায়-এর জন্য লিখিত হলেও আপনিও দ্বিধাহীন চিত্ত পড়তে শুরু করতে পারেন।আরো একটা কথা বলে রাখতে চাই , যে সৌমিত্র রায়-এর নামটা শিরোনামে বসিয়ে দিলাম , সেই সৌমিত্র রায় কবি-সম্পাদক সৌমিত্র রায় নয়। বরং এই সৌমিত্র আমার এই লেখাটির একজন পাঠক মাত্র।
এই নাম কামিনী রায় হতে পারত , পার্বতী রায়ও হতে পারত। আর রায়বাড়িতে আপত্তি থাকলে, নাসের হোসেন , মুরারি সিংহ , গৌরাঙ্গ মিত্র , রুদ্র কিংশুক ইত্যাদি নামগুলি থেকে যেকোনো একটি নাম নির্বাচন করে নিতে পারেন।
অর্থাৎ শুরুতেই শিরোনামটিকে নস্যাৎ করে মূল লেখায় প্রবেশ করব।


কবিতা || বিধিলিপি || দুর্গাদাস মিদ্যা

বিধিলিপি
দুর্গাদাস মিদ্যা

কি আশ্চর্য ! হাওয়ার মত
 মৃত্যু খেলা করে ঘরে ঘরে।
অন্তর্লীন ব্যথা এত চিনচিনে 
 ইতিপূর্বে কেউ কোনদিন বোঝেনি।
 ভয় হয় চোখে চোখ রেখে তাকাতে।
বিষন্নতায় সহজিয়া জীবনের তার ছিড়ে যায়। ঘুরপাক খায় নানান প্রশ্ন প্রতিদিন
 আর কতদিন অন্তরীণ এর জ্বালায় ফালা ফালা হবে মানব হৃদয় ।
 সভ্যতার এই পরাজয় বুঝি বিধিলিপি ছিল।
তা না হলে কেন বসে থাকতে হয় দরজায় খিল এঁটে।
 বুক চিতিয়ে হেঁটে যাওয়া বারণ কেন।
কেন বন্ধ হবে স্বাভাবিক জীবনযাপন।



শনিবার, ২ মে, ২০২০

কিছু বই কিছু কথা ।।নীলাঞ্জন কুমার সুখ অসুখের সময় ছুঁয়ে । শশাঙ্কশেখর হাইত। প্রতিভাস

কিছু বই কিছু কথা ।।নীলাঞ্জন কুমার

সুখ অসুখের সময় ছুঁয়ে । শশাঙ্কশেখর হাইত। প্রতিভাস । একশো টাকা ।

কোন কোন কবির ভেতর যে কবিতা লেখার আকাঙ্খা থাকে, তা তাঁর জীবন সংঘর্ষে কিছুদিন হারিয়ে গেলেও পরে আবার তা বাসা বাঁধে । কবি শশাঙ্কশেখর হাইত সে রকম এক কবি । কবি তাঁর কবিতাক্ষেত্রে অনেকাংশে ব্যর্থ হলেও কিছু কিছু কবিতায় তিনি বুঝিয়ে দেন তাঁর দক্ষতা । যখন তিনি এসব পংক্তি পাঠকের কাছে ছুঁড়ে দেন যেমন : 'বাঁধি তাকে আজ এই বৃষ্টির রেলিং দেওয়া জ্যোৎস্নার দুর্লভ সুযোগে । '( ''অভিভব') , ' জ্বরের তাপের মতো অস্তিত্বে জড়িয়ে তোকে/ চোখ বুজে একা একা কী আরামে শুয়ে থাকা যায় ! ' (অন্তর্গত দুঃখকে)। বলতে দ্বিধা নেই যে, কবি আজকের কবিতা থেকে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও তাঁর উত্তরিত হওয়ার তাগিদ আছে ।এই কাব্যগ্রন্থে কিছু কবিতা বর্জন যোগ্য।সুদীপ্ত দত্তের প্রচ্ছদ পেশিদারী ।কবিতার প্রচ্ছদ নিয়ে  চিন্তা ভাবনার অবকাশ আছে বলে মনে করি ।

আটপৌরে কবিতা || নীলাঞ্জন কুমার || ধারাবাহিক বিভাগ

আটপৌরে কবিতা 

নীলাঞ্জন কুমার 

৯৬.

পাখি/ উড়ন্ত/ চন্চ্ঞল
  ) সুন্দর  (
মন ভালো করে দেয় ।

৯৭.

আহ্লাদ/ সোহাগ/  স্নেহ 
    ) নিষ্পাপ  (
শরীর  জুড়ে ফুটে ওঠে ।

৯৮.

গড়াপেটা/  ভ্রষ্ট/  ঘৃণার্হ 
    ) আজন্ম  (
দেখে যাই দিক বিদিকে ।

৯৯.

উচাটন/  উদ্বিগ্ন/ উত্তাল 
  ) উন্মন (
অজানা আশঙ্কা ঘিরে থাকে।

১০০.

আবদার/ চাহিদা/ দাবী
   ) প্রাপ্তি  (
হাতে এলে অচেনা আনন্দ ।


হাইকু || রুদ্র কিংশুক || কবিতাগুচ্ছ

হাইকু

রুদ্র কিংশুক

১.

পাপিয়া ডাকে
 ফুলন্ত পলাশ ডালে
অন্ধকার নামে ।
২.

কদম ফুটেছে
 চলমান কুন্তলরাশি
টইটুম্বর দিঘি-দর্পণ ।

৩.
চৌচির মাঠে আজ
ঢোলকলমির নির্জন ফুলে
শিশিরের টায়রা ।

৪.

শিউলিকীর্ণ মাঠ
উড়ন্ত মৌটুসী ফুল
নীল গির্জাচূড়া।

৫.

সবুজ কলাগাছ
প্রণত ফলের ভারে
অন্ধ জানে না।

অণুগল্প || বিচার || সোমনাথ বেনিয়া

অণুগল্প

বিচার 
সোমনাথ বেনিয়া

একটি অণুগল্প লিখে জয়কে ফোন কোরে অনিমেষ জানায় যে জয়দের পত্রিকার পূজা সংখ‍্যার জন‍্য লেখা রেডি এবং আগামীকাল অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাকে হাতে-হাতে দেবে। জয়‌ও সম্মতি দিলো। এরপর যখন পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়ে অনিমেষের হাতে এলো, অনিমেষ সম্পাদকের নাম দেখে রাগে ফেটে পড়লো। রুমা! রুমা পত্রিকা সম্পাদনা করেছে, যে কিনা সদ‍্য বিবাহবিচ্ছেদ শেষে দাঁড়িয়ে থাকা অনিমেষের ব‌উ। অনিমেষ তখন‌ই জয়কে ফোনে জিজ্ঞাসা করে
- আগে বলিসনি কেন যে রুমা এই পূজা সংখ‍্যা সম্পাদনা করছে। তাহলে কখন‌ই লেখা দিতাম না।
জয় বললো
- আগেই তো তোকে বলেছিলাম!
- কী বলেছিলি?
- বলেছিলাম, রুমাকে বিয়ে করিস না ...

শুক্রবার, ১ মে, ২০২০

আটপৌরে কবিতা || নীলাঞ্জন কুমার || ধারাবাহিক বিভাগ

আটপৌরে কবিতা 

নীলাঞ্জন কুমার 

৯১.

রন্ধন/  ব্যন্জ্ঞন / রসনা 
      ) আহারাদি  (
অদ্ভুত মুহূর্ত নিয়ে আসে।

৯২.

হাত/ অস্ত্র/ বরাভয়
  ) দেবতা  (
দুই হাত নমস্কারে  ওঠে ।

৯৩.

পাতা/ সবুজ/  আলোক 
) স্লালোকসংশ্লেষ  (
কি করে দেহ বাঁচায় ।

৯৪.

কাগজ/ কলম/মন 
    )সৃজন  (
আয় বেঁধে বেঁধে থাকি ।

৯৫.


কান্না/  হাহাকার/ শোক 
          ) মৃত্যু  (
সুখ কোথায় হারিয়ে যায় ।

অবরুদ্ধ সময়ের -অনুগল্প || বইমেলা || কাশীনাথ সাহা

অবরুদ্ধ সময়ের -অনুগল্প

বইমেলা
কাশীনাথ সাহা

বইমেলার ১২১ নম্বর স্টলে কবিতার বইয়ের তাকে হাত দিতে গিয়েই অপর্ণাকে দেখতে পেলাম।অপর্ণাও আমাকে দেখতে পেল। দুজনেরই চোখে বিস্ময় আর খুশির ছটা। অপর্ণা জিজ্ঞেস করলো, অর্ণবদা তুমি!  কি বই কিনছো?  কবিতার নিশ্চয়ই!  শঙ্খ ঘোষ না জয় গোস্বামী! নাকি মল্লিক! কার?
স্টল থেকে বেরিয়ে বাইরে এলাম। অপরাহ্নের আলোর মুগ্ধতা অপর্ণা -র শরীর ছুঁয়ে আমাকেও স্নাত করছে।
বইমেলার এক প্রান্ত থেকে আর এক সীমানা ছুঁয়ে এলাম।  ওর হাত মুঠোয় নিয়ে বুক ভরে টেনে নিলাম নতুন বইয়ের বৈভব। কবিতার নৈঃশব্দ্য বিন্যাস ছুঁয়ে ছুঁয়ে চললাম দু'জনে। অনেকক্ষণ।

 অপর্ণা -র মৃত শরীরের সামনে দাঁড়িয়ে কয়েক বছর আগের সেই দিনটিকে  পুনরায় স্পর্শ করলাম!

কবিতা || বাঘুই-স্বপ্ন || ইয়াসিন খান

বাঘুই-স্বপ্ন
ইয়াসিন

বাঘুই স্বপ্নের স্রোতে
স্মৃতির জোয়ার আর ঢেউ
মাছেরা সব অকৃত্রিম
আমাদের শ্বাস আর বাঘুইয়ের বাঁক ...

প্রথম কৈশোরে গোপন অভিসার
চাঁদ জোৎস্নায় গাছেদের ছায়া
ধোঁয়া উড়ে যায় আগুনে ছাই
বিজ্ঞান ও কৃষি মেলার জয়গান গেয়ে যাই ...

কারা যেন বলেছিল সেবা কর
দুপুরের ভরা বৃষ্টিতে ডুবে যায় পাড়
সন্ধ্যায় ভাঁটা নামে চোরাবালি
 নীরবে অনেক কথা ঝিনুক জীবন...

ভোরের বাঘুই ছাদেতে আমার ঠাঁই
দূরে বহুদূরে কারা যেন ভীড় করে
নৌকা নাব্যতা নাই... স্রোতের তীরে
নীড় সুখ সব কাছে দূরে হৃদয় জুড়ে ।

গ্রামে বিদ্যুৎ  নাই ... মৃত মুঠোফোন
কথা নাই, সংযোগ নাই
যাপন কথন ছাই হয়ে যায় বাঘুই মন
ঠাঁই নাই আজ,  নাই ভালোবাসা নাই

মৃত ফোনের মত অতীত নিঃসাড় জড়
সোনালী রোদ্দুর জানে বাড়িতে থাকার মানে
শোক মিছিল আর মৃত মানুষের যাত্রা
আগুন জ্বলে ধিকি ধিকি চিতার আগুন...

কিছু বই, কিছু কথা || আলোচক~ নীলাঞ্জন কুমার

কিছু বই কিছু কথা ।।নীলাঞ্জন কুমার

আমাকে আদর নামে ডেকো ।সৌগত পাল । উন্মুখ ।চল্লিশ টাকা ।

পশ্চিমবঙ্গের বাইরে যে সব কবি অবস্থান করেন তাদের মধ্যে সৌগত পাল গুরুত্বপূর্ণ কবি বলা যায়।তাঁর সাম্প্রতিক কাব্যগ্রন্থ 'আমাকে আদর নামে ডেকো' আদ্যন্ত পড়ে কবিতার ভেতরে এক অন্য দ্যোতনার সন্ধান পাই । বইটির ভেতর তিনটি দীর্ঘ কবিতার স্বাদ শেষ পর্যন্ত টেনে ধরে রাখতে সক্ষম । যেখানে এই দীর্ঘ কবিতা লিখতে অনেক কবির ভেতর অতিকথনের প্রবণতা খুঁজে পাওয়া যায় ।কবির বাকি কবিতাগুলোর ভেতর এক দৃঢ়তা সন্ধান পাই যা তাঁর শব্দচয়ন ও ব্যঞ্জনার ভিতর দিয়ে ধরা পড়ে । কবিকে বিশেষ ভাবে পাই : 'মনে হয় কিছু গল্পেরা অগোছালো/ মনে হয় দিন ফুরোয়নি কারো কারো/ আসলে তুমিই বাঁচিয়ে রাখতে জানো/ যেভাবে এখনো প্রতিদিনমান মারো / এ বয়সে ঠোঁট চুম্বন পটভূমি ....' ('শেষ পাতার কবিতা ') কিংবা 
' বাউলতো নাচে পথে পথে/  যে রকম আমিও কোনমতে/ ঘুঙুর বেঁধেছি তালকানা ' ( 'নিষ্কৃতি ')র সামনে দাঁড়িয়ে। সৌগতর কবিতার ভেতরে ফুটে ওঠে প্রেম, প্রকৃতি , আবেগ ও উচ্ছ্বলতার ভেতর দিয়ে গোপন গভীরতা । যা তাকে ক্রমাগত পরিণত করে তুলছে। রিংকী দাসের প্রচ্ছদ বাহবা পাবার যোগ্য ।

বৃহস্পতিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২০

আটপৌরে কবিতা || নীলাঞ্জন কুমার || ধাহাবাহিক বিভাগ


আটপৌরে কবিতা 

নীলাঞ্জন কুমার 

৮৬.

আতঙ্ক/  শ্বাসরোধী/  উদ্বেগ 
     ) করোনা  (
সারাক্ষণ সঙ্গে সঙ্গে হাঁটে ।

৮৭.

হাল্কা/  উড়ন্ত/  বায়বীয় 
    ) প্রাকৃতিক  (
বিস্ময় বিস্মিত করে তোলে ।

৮৮.

উদগ্রতা/  কামনা/  রিপু 
      ) বোধহীন  (
করে শুধু ধুলোয় মেশায় ।

৮৯.

ভ্রম/  নির্বুদ্ধিতা/ হঠকারিতা 
     ) হঠাৎ  (
ছুঁয়ে যায় আমার পরিধি ।

৯০.

গরমিল/ যোগবিয়োগ/ অংক
    ) সমাধান  (
কি করে ঘটে যায় !

কবিতা || দুঃসময় || সোমনাথ দে

দুঃসময়
সোমনাথ দে।

বিশ্ব জুড়ে চলছে মহামারী---
লক্ষ জীবন নিচ্ছে দেখো কাড়ি
বন্ধ ঘরে প্রমাদ গুনছে সবাই
করছে না কেউ অহংকারের বড়াই।

শতবর্ষে ফিরে ফিরে এসেছে সে
সাক্ষ্য রেখেছে প্রতিবার ইতিহাসে
বিশ্ব মানব কত দেখেছে দুঃসময়
ধ্বংস বুঝি এভাবেই হতে হয়।

তমসা কেটে আসবে কবে আলো
সেই ঠিকানা জানা আছে কারো বলো?
দেশ থেকে দেশ হচ্ছে দিশেহারা
চেনা পৃথিবীটা আজ হঠাৎ সৃষ্টিছাড়া।

ভারত থেকে শিকাগো জুড়ে কান্না
এই মৃত্যু মিছিল আর দেখতে চাইনা
ইতালি থেকে ফ্রান্সের অলি গলি
ছাপ রেখে, সে আজ  গিয়েছে চলি।

সারাদেশে দিনমুজুরেরা আজ
এই দুর্দিনে হারিয়েছে সবাই কাজ
রাজাবাহাদুর দিয়েছে যৎসামান্য
 চলবে কদিন সে খুবই নগন্য।

সারা পৃথিবীর গৃহ বন্দি দশা
তবুও তারা লালন করছে আশা
এই ঝড়ের একদিন হবে শেষ
তছনছ করেও রয়ে যাবে তার রেশ।

কিছু বই, কিছু কথা ।। নীলাঞ্জন কুমার || প্রসঙ্গ~ শ্রীচরণেষু মা । গুরুপ্রসাদ যশ ।

কিছু বই, কিছু কথা ।। নীলাঞ্জন কুমার


শ্রীচরণেষু মা । গুরুপ্রসাদ যশ । আলোপৃথিবী । ত্রিশ টাকা ।


' মা আত্মদর্পণে লিখে রাখে/ ছোট ছোট/ অশ্রুকথা ' কিংবা ' তুমি হাত ধরলে/ নুড়ি কুড়াবো/ যার মধ্যে লুকিয়ে থাকবে/  নারায়ণ শিলা । '-র মতো পংক্তির সামনে  দাঁড়িয়ে কবি গুরুপ্রসাদ যশ কে আবিষ্কার করি । তাঁর ' শ্রীচরণেষু মা ' কাব্য পুস্তিকায় ভালো খারাপ মিশ্রিত নামহীন কবিতাগুলি পড়তে গিয়ে বোঝা যায় তাঁকে লক্ষে পোঁছোতে হলে আরো বহুদূর  কণ্টকাকীর্ণ পথ ধরে চলতে হবে । যে পথ তাঁকে অভিজ্ঞতা জোগাবে ।কবির ভেতরের আকুলতা অনেকাংশে অতিরিক্ত আবেগী হওয়ায়  তা অতিসরলীকরণের স্বাদ নেয় । মাত্র বারোটি কবিতারএক ফর্মার কাব্য পুস্তিকার ভেতর দিয়ে তাঁর কবিতা নির্মাণ তেমন আকর্ষণীয় না হলেও কিছু কিছু শব্দ কৌশলের কাছে দাঁড়াতে ইচ্ছে করে । যেমন,  ' সকালে পথে এসে/ খুঁজতে থাকে মেয়েবেলা ' অথবা 'এখনও সন্তানের অসুখ হলে/ মা শুঁয়ো কাপড়ে মন্দিরে ছোটেন/  অন্তরে দপদপে ভয় ।' কবির কবিতা আরো পড়ার প্রত্যাশায় থাকলাম ।

কবিতা || ঘুম || অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়


 ঘুম
 অরবিন্দ  মুখোপাধ্যায়

  ঘুম এসেছিল ।
জাগরনে নীলাভ ছিল দেহমন ;
তার সময় ডুব দিয়েছিল নীল ছবিতে-
রবাহূত ঘুম ছিল ছদ্মবেশী  বিশ্রামের।
সাদা পাতা চিঠি হয়ে ওঠেনি তখনও..
কিছু বলার আগেই আসে নিশিসখা
আত্মমগ্ন সন্নাসী ঘুম ।।


বুধবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২০

আটপৌরে কবিতা || নীলাঞ্জন কুমার || ধারাবাহিক বিভাগ

আটপৌরে কবিতা 

নীলাঞ্জন কুমার 

৮১.

জীবনদায়ী/ জীবন্ত/ সচল
      )শ্বাস  (
লাব ডুব লাব ডুব 

৮২.

জানালা/ আলো/হাওয়া 
       )প্রাণোচ্ছল  (
কবির সামনে অন্য ব্যন্জ্ঞনা ।

৮৩.

বই/  জ্ঞান/ তৃষ্ণা 
    )সাধনা  (
সে পথে আমি যে ।

৮৪.

প্রসাধন/ সৌন্দর্য/ নায়িকা 
    )বিনোদন  (
স্বপ্নে মোহে উল্লাসে ভাসে ।

৮৫.

আগাছা/  জন্জ্ঞাল/ নোংরা 
       ) আবর্জনা  (
আস্তাকুড়ে ফেলে ভুলে যাই ।


Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...