বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪

আটপৌরে ৭২৮ || সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 728 by Sudip Biswas

 আটপৌরে ৭২৮ || সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 728 by Sudip Biswas





আটপৌরে ৭২৮

পাইট


আলোহাওয়া। এলাকায়। প্রস্তুত। 


চাপমান 


চড়েছে পারদের অবউষ্ণ সুরা।

শব্দব্রাউজ- ১০৯৯ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-1099, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ- ১০৯৯ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-1099, Nilanjan Kumar





শব্দব্রাউজ- ১০৯৯ ।। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা ১৮.৪. ২৪ . সকাল ৯টা ১০ মিনিট ।


শব্দসূত্র: মিঠুয়া বাতাস আয়


ভোরের মিঠুয়া বাতাস

কোথায় নিয়ে যায়

দাবদাহ !


ছুটে আয় পাগলা হাওয়া

ছুটে আয় বৃষ্টি উল্লাস ।


দাবদাহের

এখন অগ্নিবীণায় মন।


তাকে থামাই কি করে‌ ?



রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩ তম জন্মবার্ষিকী পালন ও কবিতার বই 'সন্দেশখালির মা' প্রকাশ ।। দিপালী মাইতির প্রতিবেদন ।। সংস্কৃতি সংবাদ, Sandeshkhali

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩ তম জন্মবার্ষিকী পালন ও কবিতার বই 'সন্দেশখালির মা' প্রকাশ

দিপালী মাইতির প্রতিবেদন 



 সন্দেশখালি, ৯ মে ।।  কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩ তম জন্মবার্ষিকী পালিত হলো বুধবার ৮ই মে, ২০২৪ সন্দেশখালির মাটিতে। অনুষ্ঠানটি হয় ভাঙাতুশখালি সুন্দরবন শিক্ষা সংস্কৃতির কক্ষে এবং সংলগ্ন মাছের ভেড়ি ও কুলগাছিয়া নদীর পাড়ে। ওই সংস্থার পরিচালক হাবিবের আয়োজনে উপস্থিত হয়েছিলেন এলাকার সাধারণ নরনারী, শিশু। হাওড়া থেকে গেছিলেন কবি অলোক বিশ্বাস এবং মেদিনীপুর থেকে এসেছিলেন কবি সন্দীপ সাহু। মাল্যদান করা হয় রবীন্দ্রনাথের প্রতিকৃতিতে। এই বিশেষ দিনটিতে সন্দেশখালিতে প্রকাশিত হলো আটের দশকের কবি অলোক বিশ্বাসের প্রতিবাদী কবিতার বই 'সন্দেশখালির মা'। প্রকাশিত হলো কবি সন্দীপ সাহু সম্পাদিত সন্দেশখালি গণআন্দোলন বিষয়ক কবিতার সংকলন 'চরৈবেতি সন্দেশখালি' এবং কবির নিজস্ব কবিতার বই 'সন্দেশখালির ঘোষণাপত্র'। অলোক বিশ্বাসের কবিতার বইটি প্রকাশিত হয়েছে কবিতা ক্যাম্পাস প্রকাশনী থেকে এবং সন্দীপ সাহুর বই দুটি প্রকাশিত হয়েছে প্রীতিকণা প্রকাশনী থেকে। উভয় প্রকাশনীর পক্ষে স্থানীয় আন্দোলনকারী নারীদের সংবর্ধিত করা হয়। হাবিব রবীন্দ্রনাথ প্রসঙ্গে কবির সামাজিক ভূমিকার কথা বলেন। কবি অলোক বিশ্বাস সন্দেশখালির আন্দোলনে নারীদের ভূমিকার ওপর আলোকপাত করেন। কবি সন্দীপ সাহু রবীন্দ্রনাথের সামাজিক ভূমিকা প্রসঙ্গে বলার পর সন্দেশখালি আন্দোলন সম্পর্কিত কবিতা সংকলন প্রকাশের গুরুত্বের কথা বলেন।


বক্তাদের কথায় বারবার উঠে আসে সন্দেশখালির ঐতিহাসিক আন্দোলনের পটভূমিতে বাংলার বুদ্ধিজীবীদের নীরবতার প্রসঙ্গ। প্রতিটি বই প্রকাশ করেন সন্দেশখালির প্রতিবাদী নারীরা। এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র ক'রে মাছের ভেড়ি সংলগ্ন গ্রামীণ মানুষের মধ্যে যথেষ্ট উৎসাহ লক্ষ্য করা গেছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রবীণ নাগরিক ধীরেন সরদার।

বুধবার, ৮ মে, ২০২৪

কিছু বই কিছু কথা - ৩১৮ ঐতিহাসিক মূল্য অপরিসীম নীলাঞ্জন কুমার মহেশ। গল্পের কাব্যরূপ ।‌গল্প লেখক : শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ।‌ কাহিনি কাব্য লেখক : অমিয় পালিত, Mahesh

 কিছু বই কিছু কথা - ৩১৮

ঐতিহাসিক মূল্য অপরিসীম

                           নীলাঞ্জন কুমার


মহেশ। গল্পের কাব্যরূপ ।‌গল্প লেখক : শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ।‌ কাহিনি কাব্য লেখক : অমিয় পালিত। কবিতা এখন , সন্দাইল, বরুন্দা হাওড়া  থেকে প্রকাশিত ।
মূল্য: কুড়ি টাকা ।





শরৎচন্দ্রের মহেশ গল্প  কে না পড়েছে।‌ বিপুল জনপ্রিয় মর্মস্পর্শী এ কাহিনির ভেতর যে বাস্তবতা, তা আজো আমরা প্রত্যক্ষ করি ।‌ সেই ছোট্ট গল্পটিকে  নিয়ে  হাওড়ার অমিয় পালিত সম্ভবত ১৯৭৫ সালে  কাহিনি কাব্যকথা রচনা করেন ( প্রকাশিত জানুয়ারী, ২০২৩) । ক্ষীণতনু পুস্তিকার উদ্যোক্তা চিত্ত সাহুর ভূমিকায় জানা যায় ।
‌‌‌‌‌   ‌‌‌‌‌      অমিয় ‌পালিতের লেখার অনেক ত্রুটি সংশোধন করেন প্রর্তক্য  পত্রিকার  সম্পাদক ও কাব্য বিদগ্ধ অশোক রায় । তাঁকে ধন্যবাদ কারণ তিনি পাঠকের কাছে কিছুটা হলেও লেখাটি উপযুক্ত করেছেন।‌
            অক্ষরবৃত্তে ও চারণ ছন্দে লেখা‌ এই কাহিনি কাব্যে
লেখক কাব্যের থেকে গল্পে জোর দিয়েছেন  বেশি। তাই কাব্যের দিক থেকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অসুবিধে হয় ।
          এই লেখাটির কাব্য  সে অবস্থানে‌ না পৌছোলেও গ্রন্থের ইতিহাস মূল্য  আছে। হাওড়া জেলার এক প্রত্যন্ত এলাকা থেকে এক অনিয়মিত লিটল ম্যাগাজিনের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয় । পুস্তিকার পারিপাট্য ও প্রচ্ছদ খুবই
অপাঙক্তেয়। তবু সার্বিক অর্থে পুস্তিকার সাফল্য  কামনা করি ।



যশোর রোড ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়, Arindam Chattopadhyay

যশোর রোড

অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় 



ছায়াঘেরা যশোর রোড

দুপাশ থেকে বেড়ে ওঠা গাছ

একেকটা মহীরুহ 

তাদের ডাল পালা যেন আকাশ ছোঁয়

আকাশ থেকে নুইয়ে পড়া 

গাছের ডাল অন্ধকার ঘনায়

সমস্ত পথ জুড়ে...

কখনও একটা সুরঙ্গ পথ হয়ে  যায়

মনে হয় যেন কোন এক অসীমের দিকে

চলে যাওয়া পথরেখা

কোন উত্তাপ নেই

ছায়া শীতল পথ 

যেন আবহমান কাল জুড়ে

শতাব্দীর পর শতাব্দী পেরিয়ে যাওয়া

পথ জুড়ে ছড়ানো সভ্যতা

কত যে ইতিহাস জড়ানো গল্পকথা

আর কতো যে হারিয়ে যাওয়া স্মৃতিকথা

তবুও এই পথের ভেতরই যেন জুড়ে আছে

না ভাঙা কোন ভূমিখণ্ডের দৃশ্যকথা



শব্দব্রাউজ- ১০৯৮ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-1098, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ- ১০৯৮ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-1098, Nilanjan Kumar





শব্দব্রাউজ- ১০৯৮ ।। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা থেকে ১৭.৪.২৪ দুপুর ২ -১৫ মিনিট ।


শব্দসূত্র: উত্তাপ যে ছোঁয়


সৃষ্টি উত্তাপ যে

ছুঁতে পারে

তার কল্পনায় ব্রহ্মান্ড ।


শব্দের ভেতর যে

ভালোবাসার উত্তাপ

তাকে যে ছুঁতে পারে

সে সূর্যের সামনেও

দাঁড়ানোর ইচ্ছে নিয়ে বাঁচে। 

মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪

আটপৌরে ৭২৭ || সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 727 by Sudip Biswas

 আটপৌরে ৭২৭ || সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 727 by Sudip Biswas





আটপৌরে ৭২৭

আসল


বিনেপয়সাতে। দানখয়রাত। ভান্ডারা।


লক্ষ্মীমন্ত


ভোটের সমূহ রচিত আস্তিন।

সোমবার, ৬ মে, ২০২৪

শব্দব্রাউজ- ১০৯৭ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-1097, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ- ১০৯৭ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-1097, Nilanjan Kumar





শব্দব্রাউজ- ১০৯৭ ।। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা থেকে ৪.৪.২৪ সকাল সাড়ে এগারটা।


শব্দসূত্র : জাগো, নতুন সকাল


জাগলে

সত্য আমার

চোখের সামনে দাঁড়িয়ে ।


তারপর সকাল দুপুর

বিকেল সন্ধ্যে রাত

একটু একটু করে

মিথ্যে জড়ায়।


জাগো নতুন সকাল

তুমি যেওনা

সময়ের সঙ্গে !

আটপৌরে ৭২৬ || সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 726 by Sudip Biswas

 আটপৌরে ৭২৬ || সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 726 by Sudip Biswas





আটপৌরে ৭২৬

যাত্রা 


অভিসারে। গাগরিজল। চলতহ।


জলবায়ু 


পরিবর্তন আসে সেই মনপথে।

বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪

আটপৌরে ৭২৫ || সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 725 by Sudip Biswas

 আটপৌরে ৭২৫ || সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 725 by Sudip Biswas





আটপৌরে ৭২৫

কথালিলি


উন্মোচন। বারিবিন্দু। লিপিকা। 


সীতাকুণ্ড


কিছু কথা এখনো অনাবিল।

শব্দব্রাউজ- ১০৯৬ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-1096, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ- ১০৯৬ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-1096, Nilanjan Kumar





শব্দব্রাউজ- ১০৯৬ ।। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা থেকে ২৮.৩.২৪ তারিখে সকাল সাড়ে দশটা।


শব্দসূত্র : আমার আমি


আমার আমি

ছোঁয় আমাকে

স্বপ্নে।


জেগে উঠলেও

শুধু আমি!


তারপর

আমার আমি

উধাও আঁধার পথে।


লাভ লোকসান লাভ লোকসান

ঘিরে ধরে ।

বুধবার, ১ মে, ২০২৪

স্থায়ী বিষন্ন রাত ।। মহ:মহসিন হাবিব, কবিতা, Md Mahasin Habib

স্থায়ী বিষন্ন রাত

মহ:মহসিন হাবিব




বিষন্ন রাত বলে কিছু হয়না


কে বললো! 


ভরদুপুরে বিষন্নতার মিছিল

 ভিড় করে মিনারের চত্বরে


আর ইট গুলো 

ফোঁটা ফোঁটা করে

 জমায় বিষন্ন বাষ্প


ঘিরে ধরে তাপ প্রবাহের সূর্য্যকে


একটু একটু করে 

কমে যায় জীবনের আলো


তৈরি হয় প্রিয়ার মনে 

সুতোহীন নকশিকাঁথা

তার নিচে থাকে স্থায়ী বিষন্ন রাত।

'সূচনা' গ্রুপের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান ।। সংস্কৃতি সংবাদ ।। দিপালী মাইতি, কলকাতা

'সূচনা' গ্রুপের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান, 

দিপালী মাইতি, কলকাতা



২৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় কলকাতার শিয়ালদহের কৃষ্ণচন্দ্র মেমোরিয়াল সভাঘরে অনুষ্ঠিত হল ' সূচনা' গ্রুপের পক্ষ থেকে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান।‌ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন‌ কবি ও লেখক‌ বিশ্বরূপ মুখোপাধ্যায়,  অনুষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে ছিলেন কবি কমল দে সিকদার  , বিশেষ অতিথি হিসেবে আসন অলঙ্কৃত করেন কবি সমালোচক নীলাঞ্জন

কুমার,  কবি ও শিল্পী  শ্যামল জানা , কবি গল্পকার তাপস সাহা ।

      অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষন দেন সূচনা র সম্পাদক কবি নিপা চক্রবর্তী । সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী মুকুল চক্রবর্তী।‌


কবিতা পাঠে অংশ নেন কমল দে সিকদার, শ্যামল জানা,  নীলাঞ্জন কুমার,  তাপস সাহা,  অরূপ পান্তি, ভারতী বন্দ্যোপাধ্যায়,  চিরঞ্জীব হালদার , আবদুল কাইউম, মানস মুখোপাধ্যায়, কেতকী বসু,  সব্যসাচী মল্লিক প্রমুখ। অসাধারণ আতিথেয়তা ও. প্রাণভরা ভালোবাসায়  উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল এই সন্ধ্যা । সমগ্র অনুষ্ঠানটি সুচারুভাবে সঞ্চালনা করেন কবি তপতী চট্টোপাধ্যায় ।

শব্দব্রাউজ- ১০৯৫ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-1095, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ- ১০৯৫ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-1095, Nilanjan Kumar





শব্দব্রাউজ- ১০৯৫ ।। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা থেকে ২৬.৩.২৪. তারিখে । সকাল ৯ টায়।


শব্দসূত্র: দূর সুন্দর অন্য স্বাদে


দূর সুন্দর

গড়ে

অন্য স্বাদ ।


হরেক ভ্রম

দূর থেকে অদৃশ্য।


দূরের ডাক যে

জিজ্ঞাসা ছড়ায়

তার মাধুর্য

দূরে।


দূরের স্বাদ এগনোর‌

কৌতুহল

ছড়ায় ছড়ায়। 




মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

আটপৌরে ৭২৪ || সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 724 by Sudip Biswas

 আটপৌরে ৭২৪ || সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 724 by Sudip Biswas





আটপৌরে ৭২৪

শরীফ


হাজিরা। খাতায়। লেখাটি। 


দীর্ঘদিন 


নদী সমীপে ভগবান খুঁজছেন।

পাখিদের পাড়া পড়শী- ৩// পঙ্কজ গোবিন্দ মেধি মূল অসমিয়া থেকে বাংলা অনুবাদ-বাসুদেব দাস, Pankaj Gobinda Medhi, Pakhider Para Porshi

 পাখিদের পাড়া পড়শী- ৩// 

পঙ্কজ গোবিন্দ মেধি   

মূল অসমিয়া থেকে বাংলা অনুবাদ-বাসুদেব দাস,  

Pankaj Gobinda Medhi, Pakhider Para Porshi




তৃতীয় অধ্যায়, ষষ্ঠ অংশ ।। পাখিদের পাড়া- পড়শী

......

তৃতীয় অধ্যায়


(ছয়)

সৌম্যদা এসে যখন পর্যটক নিবাসে পৌঁছালেন তখন বাইরে সম্পূর্ণ অন্ধকার।

আমরা কয়েকজন দিনটির  শিবিরের পর্যালোচনা করছিলাম। ঘরের লাইটটা জ্বালানো  উচিত ছিল যদিও বাইরে থেকে ফ্যাকাসে জ্যোৎস্নায়  কথা বলে ভালো লাগছিল। সন্ধ্যার ফুরফুরে বাতাস আমাদের শরীরকে গ্রীষ্মের প্রকোপ থেকে রক্ষা করার জন্য তখনও শান্তভাবে বইছিল। নবজিৎ বৈশ্য, কীচক, জেপি ছাড়াও টিংকু, রাতুল্‌ পুলক, হীরক, সমরজ্যোতি সহ কয়েকজন স্থানীয় তরুণ আমাদের সঙ্গে আড্ডায় মিলিত হয়েছিল। তারা আমাদের পরিকল্পনায় উৎসাহ বোধ করছে এবং হাতে-কলমে লেগে যাবার জন্য বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছে। যাবার সময় অচ্যুতের সঙ্গে আমার দেখা হল না। অচ্যুতের মানসিকতার পরিবর্তন হয়েছে কিনা জানতে খুব ইচ্ছা করছিল। হয়তো সে আগামীকাল পুনরায় প্রকৃতি শিবিরে উপস্থিত থাকবে। যদি সে আগামীকাল উপস্থিত থাকে তাহলে তাকে জিজ্ঞেস করতে হবে— সে খড়ির দোকান না দিয়ে থাকতে পারবে কি?

সৌম্যদা ঘরে প্রবেশ করে হয়তো আমরা কোনো কথায় হতাশাগ্রস্ত বলে ভেবেছিল।

— এত অন্ধকারে এভাবে বসে আছ যে তোমরা? কোনো দুঃখবোধ বা হতাশা?

— না না সৌম্যদা। জ্যোৎস্নার  ফ্যাকাশে আলো আর ফুরফুরে বাতাসে বসে ভালো লাগছে ।

– আজ তোমাদের শিবিরের কার্যক্রম কীভাবে পালিত হল?

আমাদের খবর নেওয়ার সঙ্গে সৌম্যদা কাধের ব্যাগটা টেবিলের ওপর রাখল।

— আমি ভালোই হয়েছে বলব, এরা প্রকৃত সত্যটা বলবে। কোথায় খারাপ লেগেছে।

সুনন্দ ঘরের লাইটটা জ্বালিয়ে দিল। লাইটের আলো এক ধাক্কায় জ্যোৎস্নার ফ্যাকাসে আলোকে ঘরের বাইরে ঠেলে বের করে দিল। এরকম মনে হল বিদ্যুতের আলোতে মনোরম বাতাসও অন্তর্হিত হল।

— কতজন ছেলে মেয়ে হয়েছিল?

— এইবারের শিবিরে ছেলে-মেয়ে খুব বেশি হয়নি। যুবক-যুবতী এবং বয়োজ্যেষ্ঠ লোকের সংখ্যাই বেশি। আগামীকাল আপনি দেখতে পাবেন। উপস্থিতির মোট সংখ্যা ছিল বিরাশি।

— তাহলে তো ভালোই হয়েছিল। খাওয়া-দাওয়া?

— চা-বিস্কুট এবং দুপুরের নিরামিষ ভাত।

— সুন্দর। অনেক কিছু জোগাড় করতে হয়েছে দেখছি। আগামী কাল কী করবে?

— আজকের মতো একই রকম থাকবে। চা এবং দুপুর বেলার ভাত। নবজিৎ বৈশ্য বলেছে পারলে মাছের ব্যবস্থা করবে।

— এত গরমে মাছ মাংসের ব্যবস্থা করাটা ঠিক হবে না নাকি?

— এক টুকরো মাছ পাতে পড়লে খাওয়াটা জুতসই হয়েছে বলে মনে হয়। তাই—

সৌম্যদা ব্যাগ খুলে কাপড় বদলাল।

— একবারে স্নান করে আসবে নাকি সৌম্যদা?

সুনন্দ জিজ্ঞেস করল।

--না ।একটু দেরি করে স্নান করব। একটু ঠান্ডা পড়ুক। এখন লাইটটা নিভিয়ে দাও। জ্যোৎস্নার আলোতে কথা বলি। ভালো লাগবে।

আলোটা নিভিয়ে দেওয়ার আগে সুনন্দ উপস্থিত যুবক কয়জনকে সৌম্যদার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিল।

তারপরে আরম্ভ হল আড্ডা।

শিবিরে আমি কী কথা বললাম সৌম্যদাকে আদ্যোপান্ত বর্ণনা করলাম । সঙ্গে বললাম — প্রত্যেকেই গাছ রোপণ করার পক্ষে মত দিয়েছে।অরণ্য গ্রামের ধারণাকে সমর্থন জানিয়েছে। প্রকৃতি পর্যটনের জন্য কাকাবাবু জমি দেওয়ার কথা বলেছে । কাজেই আমরা প্রকৃতি পর্যটন আরম্ভ করার অবস্থায় পৌঁছে গেছি ।

সৌম্যদা আমার কথাগুলিতে সায় দিল।

আমি নিবারণের কথাটা আলোচনা করার জন্য সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। তাই সুযোগ বুঝে এবার আমি  নিবারণের কথা  উত্থাপন করলাম। সুদীর্ঘ দেড় বছরের মধ্যে এখানে এসে আমি খড়ির দোকান এবং কাঠ চেড়াই  কল স্থাপন করা এবং পাখিদের পাড়া-প্রতিবেশীর শিমুল গাছটা কাটার কথা বললাম। প্রকৃতি শিবিরের জন্য নিমন্ত্রণ করতে যাবার সময় অচ্যুত এবং নিবারনের করা ব্যবহার বিষয়ে অবগত করাটা ছিল আমার এই বকলা মেলার মূল উদ্দেশ্য। 

--অচ্যুত শিবিরে অংশগ্রহণ করেছে কিন্তু নিবারণ আসেনি। সে আসবে বলে আমি ভাবিওনি তবে কাঠের চেরাই কলটা বন্ধ করার কী করা যেতে পারে।

  --আইন হাতে তুলে নিয়ো না তোমরা। তথ্য জানার আইন ২০০৫ অনুসারে বন বিষয়াকে জিজ্ঞেস কর তারা এখানে কোনো কাঠ চেরাই কল স্থাপনের জন্য অনুমতিপত্র প্রদান করেছে কিনা। যদি করেনি তাহলে নিবারণ--  নিবারণ কি লেখে--

  --তালুকদার।

 সুনন্দ বলল।

  নিবারণ তালুকদারের অবৈধ কাঠ চেরাই কল উচ্ছেদ করার কোনো বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে নাকি? যদি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে কত দিনের ভেতরে এই ব্যবস্থার সম্পন্ন করা হবে? সঙ্গে দশ টাকার আইপিও বা নগদ দশ টাকার নোট একটা গেঁথে দিলেও হবে। কেবল একটা প্রতিলিপি রেখে সেখানে দশ টাকার নোটটির নাম্বারটা বসিয়ে দিতে ভুলে যেও না। আবেদনে উল্লেখ করবে তোমাদের প্রামানিক নকল বা সার্টিফাইড কপি দিতে হবে।তারপরে দেখ বন বিভাগ কী ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

 --আপনি স্নান  করার পরে আবেদন পত্রটা লিখে নেব। সুনন্দ আর পুলক কাল শিবির চলার সময় গিয়ে জেলা বন বিষয়ার কার্যালয়ে চট করে আবেদন পত্রটা জমা দিয়ে আসবে। কাঠ চেরাই কলটা একদিন আগে বন্ধ করতে পারা মানে মঙ্গল প্রতিদিন অন্তত দশ-বারোটা গাছ কাটা ছেঁড়া হচ্ছে।

  কথামতো কাজ হল ।সৌম্যদা স্নান করে আসার পরে আবেদন পত্রটা লিখে একটা দশ টাকার নোটের সঙ্গে সুনন্দের হাতে দিয়ে সুনন্দকে দৃঢ়তার সঙ্গে বলল-- আগামীকাল আমি ব্যস্ত থাকব।কেবল তুমি কোনোমতেই যেন ভুলে না যাও।

 পরের দিন শিবির সুচারুরূপে অনুষ্ঠিত করায় গুরুত্ব আরোপ করে আমরা পরস্পরের থেকে আজকের জন্য বিদায় নিলাম।

 শিবির আরম্ভ হওয়ার আগে সাফাই অভিযানের সময়  আবেদন পত্রটার বিষয়ে  পুনরায় মনে করিয়ে দিলাম। পরে আমি লক্ষ্য করলাম শিবির চলার সময় সুনন্দ এবং পুলক  তথ্য জানার জন্য আবেদনপত্রটা জমা দেওয়ার জন্য নলবাড়ি গিয়েছে। 

আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার পরে সৌম্যদা প্রকৃতি পর্যটন এবং প্রকৃতি পর্যটকের বিষয়ে বলতে আরম্ভ করলেন।। প্রকৃতি পর্যটন এবং প্রকৃতি পর্যটককে আমরা সংক্ষেপে প্র্রপর্যটন এবং প্রপর্যটক হিসেবে বলতে শুরু করেছি।এটা আভিধানিক শব্দ নয় ব্যবহারের সুবিধার্থে আমরা উদ্ভাবন করা শব্দ।।

 প্রকৃতি পর্যটন, প্রপর্যটন বা ইকো ট্যুরিজম।। কেবল ব্যবসা-বাণিজ্য নয় অনেকে ইকো ট্যুরিজমকে বন বন্যপ্রাণী এবং পরিবেশ সংরক্ষণের ম্যানেজমেন্টের অংশ হিসেবেও গণ্য করে। ইকো ট্যুরিজম অর্থাৎ পরিবেশ পর্যটন বা প্রকৃতি পর্যটন তার আভিধানিক অর্থ যাই হোক না কেন সহজ ভাবে আমি যেভাবে বুঝতে পারি সেটা হল আপনি যেখানে বেড়াতে গেলেন বা বেড়াতে এলেন তার কোনো ধরনের ক্ষতি না করে সেই অঞ্চল ভ্রমণ। সঙ্গে আপনার ভ্রমণে সেই অঞ্চলকে এবং সেই অঞ্চলের স্থানীয় লোকদের সামান্য হলেও আর্থিক বৌদ্ধিক এবং সামাজিক প্রকৃতিগত তথা মানবীয় ভাবে কিছুটা হলেও অগ্রগতির দিকে নিয়ে যাবার ক্ষেত্রে অবদান রাখতে হবে।। আদর্শ ইকো ট্যুরিজম নিষ্ঠাবান টুরিস্ট বা নিষ্ঠাবান ভ্রমণকারীর মধ্য দিয়ে গড়ে তোলা সম্ভব এবং সত্য  অর্থাৎ ভ্রমণকারীরাই হতে পারে ইকো ট্যুরিস্ট। ইকো টুরিস্টের ধারণা এরকম একটি চেতনা যার উপলব্ধিতে প্রতিটি ভ্রমণকারী নিজেকে ইকো ট্যুরিস্টের সারিতে উত্তরণ ঘটাতে পারে।

সৌম্যদা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে সামনের বোতল থেকে এক ঢোক জল খেলেন। বিদ্যুৎ চলে যাবার ফলে ঘরের ভেতরটা গরম হয়ে উঠেছে।। সৌম্যদা ঘর্মাক্ত মুখমণ্ডল পকেট থেকে রুমাল বের করে মুছে নিয়ে বলে চলেছেন নিজের বক্তব্য।

 বর্তমান মানুষের মনে বাসনা একটা প্রবল চাহিদা রূপে আত্মপ্রকাশ করেছে।বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেই চাহিদা প্রকৃতি ভিত্তিক।এটা অত্যন্ত শুভ লক্ষণ কিন্তু আমাদের সজাগ থাকতে হবে যে আমাদের একটি অসংগত এবং দর্শন রহিত শুভচিন্তা এবং তার কার্যক্রম আমাদের জন্যই যাতে ক্ষতি কারক বলে বিবেচিত না হয়। তাই আজকাল ভ্রমণকারী ভ্রমণ চিন্তা চেতনার মধ্য দিয়ে  করতে হয়।

 সৌম্যদা উপরোক্ত কথাগুলি তার দ্বারা রচিত ‘ইকো টুরিস্ট’ শীর্ষক বইটি থেকে বলে চলেছেন। সুনন্দ নলবারিতে গিয়েছে যদিও শিবিরের তরফ থেকে তার বিশেষ লোকসান হবে না তাকে আমি ইকো টুরিস্ট বইটি ইতিমধ্যে পড়তে দিয়েছি এবং সে পড়া শেষ করেছে বলে জানিয়েছে। সৌম্যদার বক্তব্যের মধ্যে আমার সুনন্দের কথা মনে পড়ছে। ওরা দুজনেই সেখানে পুনরায় কী ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে কে জানে। নিজের বক্তব্যে পর্যটন ইতিহাসের সঙ্গে পর্যটনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলি স্পর্শ করে চলেছেন।

 ১৯৪২ সনে ক্রাপফেই এবং হাঞ্জিকার পর্যটন সম্পর্কে কিছু ভিন্নমত প্রকাশ করে। এই দুই ব্যক্তি অধ্যাপকের মধ্যে কোনো একটি অঞ্চলে যদি সেই অঞ্চলের বাইরের কোনো ব্যক্তি বা কিছু ব্যক্তি এসে থাকে এবং ভ্রমণ করে এই বহিরাগতদের ভ্রমণকে কেন্দ্র করে যে যে কার্যকলাপ হবে সেই কার্যকলাপের সমষ্টিই হল পর্যটন।পর্যটন শিল্পের সঙ্গে মানুষের সামাজিক সাংস্কৃতিক শৈক্ষিক পরম্পরাগত আচার বিচার এবং সামগ্রিক নৃতাত্ত্বিক কর্মকাণ্ড জড়িত হয়ে থাকে। অনেক সমাজ বিজ্ঞানই পর্যটনকে মানুষের সুবিধা সুখ এবং বিনোদনের সঙ্গে যুক্ত করেছে। অপরিচিত বস্তু বা স্থান সম্পর্কে মানুষকে সন্ধান দেওয়ার সঙ্গে মানুষের প্রয়োজনীয়  জিনিসপত্রের যোগান ধরা ইত্যাদি ও পর্যটনের  অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ডক্টর জিভাদিনের মতে পর্যটককে বিশ্রাম, বিভিন্ন নতুন নতুন জিনিসের সম্ভেদ দেওয়া এবং সাংস্কৃতিক চাহিদার  জোগান ধরাটা পর্যটনের মূল উদ্দেশ্য। তার মতে পর্যটন সামাজিক আন্দোলন। প্রিমন্টের মতে পর্যটন মানুষকে সুখ এবং আরামের সন্ধান দান করে। ভ্রমণকারীর আরাম এবং সুবিধাই হল পর্যটনের মূল উদ্দেশ্য।আশা করি এই উদ্ধৃতি সমূহ থেকে আপনারা পর্যটন এবং পর্যটকদের সম্পর্কের বিষয়ে কিছুটা হলেও সম্যক জ্ঞান লাভ করতে সক্ষম হবেন।

  সৌম্যদা অসহ্য গরম থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য পুনরায় বোতল থেকে কিছুটা জল খেয়ে নিলেন। তারপর চারপাশে একবার দৃষ্টি নিক্ষেপ করে পুনরায় নিজের ভাষণ আরম্ভ করলেন।।

--ইকো ট্যুরিজমের বিষয়ে আলোচনা করার পূর্বে আমাদের জানতে হবে ইকোসিস্টেম বা প্রকৃতিতন্ত্র বলতে আমরা কী বুঝি।। প্রকৃতিতন্ত্র হল কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় অবস্থানরত সমস্ত সজীব এবং উপাদানের মিথস্ত্রিয়ার মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা এক সঙ্ঘবদ্ধ বা যৌথ বসবাস প্রণালী। এই সুচিহ্নিত এলাকাটা যেভাবে সমগ্র পৃথিবীও হতে পারে অনুরূপ ধরনের কোনো একটি নির্দিষ্ট পাহাড় পর্বত অরণ্যভূমি নদী সাগর হৃদ বা ক্ষুদ্র জলাশয়ও হতে পারে। প্রকৃতির প্রতিটি অঞ্চলের সেটা  ক্ষুদ্রই হোক বা বৃহতই হোক প্রত্যেকের নিজস্ব প্রকৃতিতন্ত্র আছে। একটি প্রকৃতিতন্ত্রের অন্তর্গত সজীব এবং জড় উপাদান গুলির পারস্পরিক আদান-প্রদানের মধ্য দিয়ে সেই প্রকৃতিতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা হয়। স্বাভাবিকভাবেই প্রকৃতিতন্ত্রের যে কোনো একটি উপাদানের ক্ষতি হলে সমগ্র প্রকৃতি তন্ত্রটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইকোটুরিজমে এই প্রকৃ্তি তন্ত্রের কথাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যটনের কোনো ধরনের কার্যকলাপ দ্বারা যদি প্রকৃতিতন্ত্র বা ইকো সিস্টেমের কোনো ধরনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে তাকে কোনো কারণেই প্রকৃতি পর্যটন বা ইকো ট্যুরিজম বলা যাবে না।

সাধারণত দেখতে পাওয়া যায় যে কোনো একটি অঞ্চলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পাহাড়, পর্বত, নদ-নদী, অরণ্য-আদ্র ভূমির আশেপাশে  পর্যটন শিল্প গড়ে ওঠে।। অসমের পর্যটন শিল্পের আধার প্রকৃতি। আমাদের মধ্যে অনেকেই স্থানীয়ভাবে উপলব্ধ প্রকৃতিজাত সামগ্রী দিয়ে গৃহ প্রস্তুত করে সেখানে গ্রাম্য পরিবেশ সঞ্চার করে তাকেই ইকো ট্যুরিজম বলে অভিহিত করতে চায়। প্রকৃতি পর্যটনকে শিল্প হিসেবে গণ্য করা হলে এই শিল্প গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন হওয়া কাঁচামাল অথবা প্রধান উপাদান হল প্রকৃতি। অর্থাৎ নদ- নদী, ঝরনা, জলপ্রপাত, গিরিপথ, গিরিখাত, বিল, জলাশয়, অরণ্য, বন্যপ্রাণী ইত্যাদি সমস্ত কিছুই।সেইজন্য প্রকৃ্তি ভিত্তিক পর্যটন শিল্পকে গড়ে তুলতে হলে প্রথমে আমাদের সংরক্ষণ করতে হবে এই শিল্পের প্রধান উপাদান গুলি।  আমাদের প্রত্যেককেই মনে রাখা উচিত প্রকৃতি পর্যটন নির্দিষ্ট আদর্শ এবং মৌলিক ধারণার উপর প্রতিষ্ঠিত শিল্প।

 বাক্যটা শেষ হওয়ার সঙ্গে কাছে থাকা সুনন্দ এসে সৌম্যদার কাছে উপস্থিত হল।

--বল কিছু বলবে?

-- সৌম্যদা চায়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

--আচ্ছা দিয়ে দাও। আমরা এখন একটু চা খেয়ে নেব।।দশ মিনিটের জন্য বিরতি। ইচ্ছা করলে আপনাদের মধ্যে কেউ বাইরে থেকেও ঘুরে আসতে পারেন। তবে একটি কথা সবাই মনে রাখবেন যে এই শিবিরে সমস্ত ধরনের তামাক জাতীয় সামগ্রী সেবন নিষিদ্ধ।

 কথাটা বলে সৌম্যদা বসলেন এবং তার কাছে উপস্থিত হওয়া দুই চারজনের সঙ্গে কথা বলতে লাগলেন।। কাকাবাবুর পরিবারটিও তার কাছে উপস্থিত হয়েছে বলে আমি দেখতে পাচ্ছি। 

প্রকৃতি শিবিরের কাজে আমি মন দিয়েছি যদিও আমার মনের অন্য একটি অংশ সুনন্দ দিয়ে আসা আবেদনপত্রের উপরে ন্যস্ত হয়েছিল ।তার ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া জানার জন্য আমি অগ্রহান্বিত হয়ে পড়েছি সেই জন্য এই সুযোগে আমি নলবাড়ি থেকে ফিরে আসা সুনন্দের সঙ্গে দেখা করলাম। সে চা- পর্বে ব্যস্ত রয়েছে।আমাকে সামনে দেখতে পেয়ে সুনন্দ কার্যালয়ে কী অবস্থার সম্মুখীন হয়েছিল অতি সংক্ষেপে জানাল।

 অফিসারটি আবেদন পত্রটা নিতে চাইছিল না। তিনি বললেন-- যুবক ছেলে অন্য কিছু কাজ কর এই অপ্রয়োজনীয় কাজগুলিতে লেগে থেকে সময় নষ্ট এবং নিজের ক্ষতি কেন করছ।। আমি বললাম-- একটা আবেদন পত্র দিতে এসেছি-- নেবেন কিনা বলুন। আপনারও সময় নষ্ট করা ঠিক হবে না। কোথায় কী করতে হয় আমি যে একেবারে জানিনা তা কিন্তু নয়।

  --তিনি আবেদন পত্রের প্রাপ্তি স্বীকার করেছেন কি?

-- হ্যাঁ করেছেন।

--তাহলে বাকি বিষয় পরে আলোচনা করব।।

 সুনন্দ হাতে থাকা চায়ের কেটলিটা নিয়ে পুনরায় প্রকৃতি কর্মীদের মধ্যে ঢুকে পড়ল।

 চা-বিরতির পরে সৌম্য্যদা নিজের বক্তব্য আরম্ভ করলেন। উপস্থিত প্রত্যেককেই এখন কিছুটা সজীব বলে মনে হচ্ছে।

 এখন আসছি ইকো টুরিস্টের কাছে। তারা কে? টুরিস্ট এবং ইকো টুরিস্টের মধ্যে ব্যাপক প্রভেদ রয়েছে।  যে সমস্ত পর্যটক ভ্রমণ কালে প্রকৃতি বন্যপ্রাণী বা বিশেষভূমিকে অগ্রাধিকার দান করে তারা হল ইকো ট্যুরিস্ট। যে সমস্ত পর্যটক সংরক্ষণের দর্শন দীর্ঘস্থায়ী বিকাশ দূষণমুক্তের জন্য খরচ বহন দেশের বন্যপ্রাণী এবং প্রকৃতি সংরক্ষণের আইনের উপরে আস্থা এবং নিজের ক্রিয়া কান্ডের মধ্য দিয়ে এই সমস্ত কিছুর প্রয়োগ প্রমাণিত করে তারা হলেন ইকো ট্যুরিস্ট।। সাধারণ পর্যটকের সঙ্গে প্রকৃতি পর্যটকের পার্থক্য রয়েছে। একটি উদাহরণ দিচ্ছি কেউ হলৌ বাঁদর দেখার জন্য অরণ্যে গেলে ইচ্ছা করলেই হলৌ বাঁদর দেখতে পারেনা। তার জন্য তাকে গভীর অরণ্যে প্রবেশ করতে হবে ।একজন সাধারণ পর্যটক নির্দিষ্ট স্থানে গাড়িতে যাবার মানসিকতা গ্রহণ করবে এবং একজন প্রকৃতি পর্যটক হলৌ বাঁদরের অনিষ্ট সাধন না করার জন্য পায়ে হেঁটে যাতায়াত করবে। অরণ্যের অভ্যন্তরে গাড়ির ব্যবহার করা মানেই প্রক্রিয়াটা অপ্রাকৃতিক। একজন প্রকৃতি পর্যটক অপ্রাকৃতিক প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে না। আপনারা উদাহরণটির মধ্যে দুই ধরনের পর্যটকের পার্থক্য বুঝতে পেরেছেন নিশ্চয়।

উপস্থিত প্রকৃতি কর্মীরা মাথা নেড়ে সৌম্যদাকে সমর্থন জানাল।

--প্রকৃতি পর্যটকরা শিক্ষা এবং জ্ঞান লাভের জন্যও আগ্রহী। সেই জন্য বিভিন্ন প্রকৃতি পর্যটন স্থলে ভ্রমণ আমন্ত্রণ বিভিন্ন প্রকৃতি বিষয়ক কাজকর্মের সঙ্গে গ্রন্থাগার ছাড়াও ডিজিটাল শিক্ষণ প্রণালী ব্যবস্থা রাখা হয়।। আমরা আমাদের এখানে প্রকৃতি পর্যটনের চিন্তা করলে এই সমস্ত কিছু দিকগুলি বিচার বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে। আপনারা এই ধরনের নিয়ম নীতি বাধ্যবাধকতার মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলে প্রকৃতি পর্যটনের ব্যবস্থা করতে আগ্রহী হতে পারবেন কি?

--পারব।পারব।

উপস্থিত প্রকৃতি কর্মীদের প্রতিক্রিয়ায় হলঘরটা গমগম করে উঠল।

--আমি আপনাদের গ্রামকে অরণ্য গ্রাম এবং প্রকৃতি পর্যটনের ব্যবস্থায় সমৃদ্ধ পর্যটকের স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আপনাদের সহযোগিতা চাইছি।আমরা আশা করছি এখানে কেউ গাছ কাটবে না। পাখি জীবজন্তুকে বধ করবে না। পর্যটকদের আগমনের জন্য সুগম ব্যবস্থা আয়োজন আপনাদেরকেই করতে হবে। যদি আপনাদের সহযোগিতা লাভ করি তাহলে অনাগত ব্যবস্থাসমূহ সম্পন্ন হওয়ার আগে আমরা একটি টেন্টে শিবিরের আয়োজন করব। পর্যটকরা টেন্টে থাকবে।পর্যটকদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে আপনাদের।। আশা করি আপনারা পারবেন। এই টেন্ট শিবিরটি হবে আপনাদের প্রথম আয়োজন। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে চলা শিবিরটির জন্য আপনারা প্রস্তুতি নিতে পারেন।।। অন্তত কুড়িজন পর্যটকের ব্যবস্থা আমি করব। কথা থাকল। এখন আপনাদের কোনো প্রশ্ন থাকলে আমরা আলোচনা করতে পারি।

--স্যার আমরা যদি প্রকৃতি পর্যটনের সূত্র কি বলে আপনাকে প্রশ্ন করি ? একজন প্রকৃতি কর্মী জিজ্ঞেস করল।

--আমি বুঝতে পারছি তুমি লিখে নিতে চাইছ।

  হ্যাঁ স্যার আমরা লিখে নেব।

লেখ তাহলে। প্রকৃতি পর্যটন হল প্রকৃতিভিত্তিক প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য মানুষকে তথা পর্যটককে ন্যায্য সুখ সুবিধার প্রদানের মধ্য দিয়ে ভ্রমণের সমস্ত সুবিধা প্রদান করা একটি ব্যবস্থা যেখানে প্রকৃতি সংরক্ষণ ভ্রমণকারীর ন্যায্য সুবিধা এবং বিনিয়োগকারীর আর্থিক লাভ সামান্তরালভাবে গতি করে। 

সৌম্যদা লিখতে পারার মতো ধীরে ধীরে বলে গেল। তারপরে তিনি আর কারও কোনো প্রশ্ন আছে কিনা জিজ্ঞেস করলেন। তখন একজন ছাত্র উঠে দাঁড়াল।

  --আমরাও প্রকৃতি পর্যটক হতে পারি কি?

-- কেন পারবে না যদি তোমার মনে প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা আছে, কিছুক্ষণ আগে বলা প্রকৃতি পর্যটকের গুণগুলি তোমার থাকে তুমি একজন প্রকৃতি পর্যটক। লোভ থাকা ব্যক্তি নয়।। মাছ মাংস না হলে সে ভাত খেতে পারে। মনে রাখবে স্থানীয় বাতাবরণ খাদ্য এবং জীবন ধরার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন  প্রকৃতি পর্যটকের অন্যতম ধর্ম।। প্রকৃতি পর্যটক পর্যটক হিসেবে কী করতে হয় আর কী করতে হয় না জানা উচিত।। সেই সমস্ত তোমাদের পরবর্তী পর্যায়ে জানানো হবে। বুঝতে পেরেছ?

 হ্যাঁ স্যার। ছেলেটি বলল।

-- তোমাদের মাঝখানে অচ্যুৎ কে? 

--আমি সৌম্যদা

--বল এই দুদিন তোমার কী রকম লাগল, কী ধরনের অনুভব হল।

অচ্যুত বুঝতে পারছে সৌম্যদা কেন তাকে নির্দিষ্টভাবে জিজ্ঞেস করছে ।অন্যদিকে সৌম্যদা অচ্যুতকে সম্বোধন করার সঙ্গে সঙ্গে অচ্যুৎ  কী বলে জানার জন্য সুনন্দ সজাগ হয়ে পড়ল।

--সৌম্য্যদা অনেক ভালো লেগেছে। এই সুযোগে আপনাকে জানিয়ে রাখি যে আমি গতকাল থেকে কাঠ খড়ির দোকান বন্ধ রেখেছি সেটা আর কোনোদিনই খোলা হবে না। আমি ভাবছি আমি সেখানে পাথর, বালি ইট সিমেন্টের দোকান দেব।

প্রত্যেকেই সৌম্যদাা সম্বোধন করা শুনে অচ্যুত সেভাবে সম্বোধন করল।

 সৌম্যদা প্রসঙ্গ বদলে বলল-- আমি জিজ্ঞাসা করতে চাইছি তুমি আমাদের সঙ্গে কাজ করার জন্য উৎসাহী কি? এই দুদিন শিবিরে থাকার পরে তোমার মানসিক সিদ্ধান্ত কি আমরা তোমার কাছ থেকে জানতে চাইতে  পারি নয় কি?

-- হ্যাঁ সৌম্যদা, আমি  যথাসাধ্য প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য কাজ করে যাব। 

সুনন্দ অচ্যুতের কাছ থেকে এই ধরনের প্রতিক্রিয়াই আশা করেছিল। অচ্যুতের বক্তব্য শুনে সৌম্যদা অচ্যুতকে সাধুবাদ জানিয়ে বলল-- তোমাদের মতো প্রকৃতিপ্রেমীর জন্য প্রকৃতি সংরক্ষণ সম্ভববপর।তোমার সঙ্গে আমার আগেই দেখা হলে হয়তো তুমি এই দোকানটা আরম্ভই করতে না। উপার্জনের জন্য অনেক ভালো পথ আছে নয় কি? তবে এখানে চলতে থাকা কাঠ চেরার  কলটা বন্ধ করতে হবে। একটা কাঠ চেরাাই করার কলে দিনে আট দশটা প্রকাণ্ড গাছ কেটে টুকরো করে তক্তা বানানো যায়। ভেবে দেখ মাসে , বছরে কলটা কত গাছের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তোমাদের চারপাশ থেকেই কাটা হবে এবং তোমাদের গ্রামের পারিপার্শ্বিক অবস্থার যে পরিবর্তন হবে সেটা নিশ্চিত।

 সৌম্যদার কথা শুনে অচ্যুৎ কিছুই বলল না। নিবারণ কী ধরনের ছেলে। নিজের স্বার্থে আঘাত হলে সে যে কোনো কাজই করতে পারে। কথায় কথায় সে বলে থাকে —বেশি তেরিবেরি করবি না, নদীর বালিতে পুঁতে রাখব। মদ-মাংস, মোবাইল মোটরসাইকেল দিলে অজাত সঙ্গীর অভাব নেই। সেই জন্য অন্ধকার হওয়ার আগে পর্যন্ত তার পেছন পেছন একদল ছেলে ঘুরে বেড়ায়। ওরা হল নিবারনের অস্ত্র।

 —সব কাজ একদিনে হয় না। কিছু সময় লাগবে। আমাদের কেবল মনে রাখতে হবে যাতে আমাদের মধ্যে কেউ আইন হাতে তুলে না নেয়। বল কারও আর কিছু জিজ্ঞেস করার আছে?

 তখনই নবজিৎ বৈশ্য সৌম্যদাকে দুপুরবেলার ভাত তৈরি বলে জানাল।

 —চলো ।আজ ছেড়ে দিলাম ।খুব তাড়াতাড়ি আমরা পুনরায় মিলিত হব।

 শিবিরের  সমস্ত কাজ, দেনা পাওনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে নিতে গিয়ে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল। সেই সময় সুনন্দ, নবজিৎ ,জেপি, পুলক রাতুল এবং অন্যান্য কয়েকটি ছেলে তাতেই ব্যস্ত হয়ে রইল। কাকাবাবুরা সৌম্যদাকে  বাড়িতে নিয়ে যেতে চাইছিল। সৌম্যদা গেল না। তিনি স্থানীয় লোকদের সঙ্গে প্রকৃতি সংরক্ষণ সম্পর্কে বিভিন্ন আলোচনা করলেন।গ্রামবাসীর সহায়-সহযোগ কামনা করলেন।অসমের বিভিন্ন স্থানে প্রকৃতি আন্দোলনের জন্য ব্যক্তিগত এবং সামূহিক পর্যায়ে বিভিন্নজন অক্লান্তভাবে কাজ করে থাকার উদাহরণ তুলে ধরলেন।সৌ্ম্যদা তাদের পঞ্চায়েতের মাধ্যমেও এগোনোর উপদেশ দিল।বলল গ্রাম সভায় আপনারা বিষয়টা উত্থাপন করতে পারেন।সরকারি বিভিন্ন পরিকল্পনা থাকে,তারমধ্যে আপনারা আপনাদের গ্রামটিকে সবুজ করে গড়ে তোলার কোনো সুযোগ–সুবিধা বেরোয় নাকি চেষ্টা করতে পারেন।

 সৌ্ম্যদা পরিবেশ সংরক্ষণের ওপরে অতি সরলীকরণ করে এগোনোর মন্তব্যে গ্রামবাসীরা তাদের সমর্থন জানাল।তাদের মধ্যের কয়েকজন বর্তমান বিশ্বের পারিপার্শ্বিক প্রয়োজনে সামূহিকভাবে ক্ষুদ্র প্রয়াস এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য সম্মতি জ্ঞাপণ করে প্রত্যেকেই বৃক্ষরোপণ প্রক্রিয়ায় সহযোগ করবে,সৌ্ম্যদাকে জানাল। সৌ্ম্যদা আমার কাজ অনেকটা সহজ করে দিল।

 সন্ধ্যার দিকে গুরুত্বপুর্ণ কথা আলোচনা করার মধ্য দিয়ে আমরা প্রত্যেকেই মিলে আড্ডা জমালাম।বিষয় ছিল ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা।আমরা আগামীকাল থেকে বৃক্ষরোপণ কার্যসূচি এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য হাতে কলমে কাজ শুরু করে দেব।প্রথমে চারা সংগ্রহ করব।লক্ষ্য স্থির করে নিয়েছি একহাজার চারা।জানি না,মইরাডাঙার চারা উৎপাদন কেন্দ্রে বর্তমানে কত চারা আছে এবং তাঁরা আমাদের কত চারা দিতে পারবে।সঙ্গে তাদের আমরা অতিরিক্ত এক হাজার চারা দ্রুত জোগান দেবার অনুরোধ জানাব।তাঁদের বলতে হবে তাঁরা যাতে আমাদের প্রয়োজন পূরণের জন্য যৎপরোনাস্তি চেষ্টা করে। সঙ্গে জানাতে হবে প্রথম অবস্থায় আমরা ফলের গাছের ওপরে গুরুত্ব আরোপ করছি।আমরা সকলেই আশা করছি অতি দ্রুত আমাদের এই কার্যসূচি সমাজে গুরুত্ব লাভ করবে।বিদ্যালয়ের ছেলেমেয়ে সমূহকে বিদ্যালয়ে,মন্দির কর্তৃপক্ষকে মন্দির আদিতে,গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মকর্তাকে রাস্তা-পথের পাশে বৃক্ষরোপণণ করার জন্য অনুরোধ জানাতে হবে।বৃক্ষরোপণ কার্যসূচিকে আন্দোলনের রূপ প্রদান করার জন্য আমরা আমাদের সাধ্যের ভেতরে সর্বস্ব উজার করে দিতে হবে।বৃক্ষরোপণ করলেই হবে না সেই সব দেখাশোনা করার জন্যও সমান গুরুত্ব দিতে হবে।নাহলে একদিক থেকে রোপণ করে যাব আর অন্যদিক থেকে গরু ছাগল মাড়িয়ে যাবে।এসব কি ছোটো ছেলে-মেয়েদের খেলায় পর্যবসিত হবে নাকি? বণিক সন্থার বিপিন ডেকাকে অনুরোধ জানাতে হবে তিনি আমাদের পাঁচশো সিমেন্টের বস্তা দিক।আমরা চারটা করা বাঁশের খুঁটি পুঁতে গাছের চারাকে নিরাপত্তা দেবার ব্যবস্থা করব।ডেকামহাশয়ের ওপরে ভরসা আছে।আমার মনে হয় তিনি বলবেন তোমরা পাঁচশোর কথা বলেছ আমি এক হাজার বস্তা দেব।

 একটা দল বৃক্ষরোপণ করার সামান্তরালভাবে অন্য একটি দল প্রকৃ্তি পর্যটন কেন্দ্রের জন্য ঝুপড়ি সাজাতে আরম্ভ করব।আমাদের আলোচনায় ঘরগুলি কীরকম হওয়া উচিত হবে সেটাই মূল স্থান লাভ করল।আমি প্রত্যেককে একটা নমুনার ইঙ্গিত দিলাম—এই অঞ্চলে দেখতে পাওয়া ভাঁড়ার ঘরটাকে বড়ো করে সাজালে যেরকম হবে ঠিক সেই ধরনের।ঘরটার বাইরের বেড়াগুলি হবে তর্জার,বার্নিশ করা এবং ভেতরটা ধাড়ি দিয়ে সাজাব।স্নান করা ঘর এবং শৌ্চালয়ের ভেতরের ভাগ ফ্লোর পেপার বা প্লাস্টিক কার্পেটের দ্বারা ঘিরে দিলে জল অনিষ্ট করতে পারবে না।স্থায়িত্বের স্বার্থে আজকাল বের হওয়া সবুজ রঙের টিনের ঘরগুলি দোচালা করে তৈরি করতে হবে।নবজিৎ বৈশ্য খড়ের চাল দেবার কথা বলল যদিও খড়ের দামের সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় পরিমাণের খড় পাওয়াটাও কঠিন হতে পারে বলে খড়ের পরিবর্তে টিনের চাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত বহাল রইল।ঘরটা মাটি থেকে আড়াই ফুটের মতো উঁচু এবং চাঙ ঘরের মতো হবে। চাঙটা উঁচুতে রাখার জন্য পাকা খুঁটি কিছু ব্যবহার করা হয় ।এখানে তারা সেই খুঁটিগুলোকে ঢোল বলে থাকে। একটা ঘরে প্রায় ষোলোটার মতো ঢোলের প্রয়োজন হবে। ঢোলের উপরে বাঁশ পেতে দিয়ে তার ওপরে চাঙটা তৈরি করতে হবে। পুনরায় স্থায়িত্বের স্বার্থে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে ভুলুকা বাঁশের পরিবর্তে আমরা লাইটের খুঁটির মতো ঢালাইয়ের বাটাম ব্যবহার করব। মূল ঘরটার খুঁটি আদিগুলির জন্য ভলুকা বাঁশ ব্যবহার করা হবে সাধারণভাবে ঘর গুলির নকশা তৈরি হয়ে গেল তথাপিও সৌম্যদা ঘর তৈরি করাার সময়ে দুজন অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে এখানে পাঠাবেন বলে আশ্বাস দিলেন।

 নবজিৎ বৈশ্য কীচকরা অনেক রাত হয়ে গেছে বলে যাবার জন্য প্রস্তুত হল। রাত তখন প্রায় সাড়ে আটটা গরমের দিনের জন্য খুব বেশি রাত হয়নি বলে মনে হয়। নবজিৎদের সঙ্গে সুনন্দ যাবার জন্য প্রস্তুত হল। তার নাকি ক্লান্ত মনে হচ্ছে। 

--যাবে দাড়াও। ক্লান্ত ,ক্লান্ত আবার কি? আমাদের অভিধানে ক্লান্ত বলে কোনো শব্দ নেই সুনন্দ। 

সৌম্যদা এভাবে বলায় সুনন্দ থেকে গেল।

 সুনন্দের উৎসাহ দেখে ভালো লাগে। বড়ো পরিষ্কারভাবে কাজ করে। সুনন্দকে কিছু একটা কাজ দেওয়া মানে নিশ্চিন্ত  থাকা যায়। একই কথা নবজিৎ বৈশ্য কীচক জেপির ক্ষেত্রেও খাটে।আমি ঘরের ভেতরে কয়েকটি দৈনন্দিন কাজ করে স্নান করতে গেলাম। সৌম্যদা সুনন্দের সঙ্গে কথা বলছে। দুজনেই নিবিষ্ট মনে কী কথা বলছে আমি বুঝতে পারছি না। হয়তো সুনন্দের বাড়ির কথা জিজ্ঞেস করছে। নিজ পরিবারকে ছেড়ে সুনন্দ পরিবেশ সংরক্ষণের কাজে যথেষ্ট সময় দিচ্ছে। সুনন্দের স্থানে আমি হলেও আমি পারতাম না।

  আমি অবসর হয়ে আসার পরে সু্নন্দ যাবার জন্য প্রস্তুত হল।

বাইরে ভীষণ অন্ধকার।

  তোমার হাতে টর্চ আছে সুনন্দ?

লাগবেনা সৌম্যদা।মোবাইলের ফ্লাশটায় যথেষ্ট আলো আছে।

একটু দেখেশুনে যেও। প্রকৃতির গন্ধ গায়ে লেগে আছে যখন বন্যপ্রাণী পেছন ছাড়তে  নাও পারে। 





সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪

আটপৌরে ৭২৩ || সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 723 by Sudip Biswas

 আটপৌরে ৭২৩ || সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 723 by Sudip Biswas





আটপৌরে ৭২৩

বৃষ্টিকথা


রেওন।পরশ। রেইনট্রি। 


সঁপেছি 


প্রাণ আকুল দীর্ঘশ্বাসের কাছে।

শব্দব্রাউজ- ১০৯৪ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-1093, Nilanjan Kumar

 শব্দব্রাউজ- ১০৯৪ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-1093, Nilanjan Kumar





শব্দব্রাউজ- ১০৯৪ ।। নীলাঞ্জন কুমার

বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা থেকে ২৫. ৩ ২৪ তারিখ সকাল ১০টা ২০ মিনিট।


শব্দসূত্র: পলাশ বনে একলা


পলাশ বনে

একলা থাকার যন্ত্রণা

কেউ বোঝে?


পলাশ কি চায়

নারী পুরুষ!


অনুভবের পলাশ

সামনে দাঁড়িয়ে

হেসে ওঠে ,


দেহে মনে শিহরণ।

রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪

কিছু বই কিছু কথা - ৩১৭ ।। জুলফিনার কবিতা ভবিষ্যৎ ভাবনা লেখায় ।। ‌‌‌নীলাঞ্জন কুমার, Book Review

 কিছু বই  কিছু কথা - ৩১৭

   
    জুলফিনার কবিতা  ভবিষ্যৎ ভাবনা লেখায়

       ‌‌‌‌‌‌‌‌‌                   ‌‌‌নীলাঞ্জন কুমার




One Two Three Let's Read Poetry ! Julfina Ali. Published by Nayak Enterprise, DumDam 700030.
Rs. 270.00.

    মাত্র বার বছরের ছোট্ট ফুটফুটে মেয়ে জুলফিনা আলি যে ইতিমধ্যেই তিনটি সুন্দর  ইংরাজী কবিতার বই লিখে ফেলেছে  তা জেনে বিস্মিত হই। সেই সঙ্গে চোখ ধাঁধানো আর্ট ও করছে । তাকে নিয়ে বিশেষ ভাবনা ভাবতেই‌ হয় ।
           দারুণ মুদ্রণ ও নির্ভুল ছাপার এই বই  তে তার লেখা কুড়িটি কবিতায়  জুলফিনা প্রমান করে তার ভবিষ্যৎ আছে। যখন পাই The Origin কবিতার প্রথম স্তবকে ' Old is gold /Original is fragile ,/Will I tell you why / Origin brings a lot of smie ?' , The world in 2070  কবিতায় সে যখন ভবিষ্যৎ দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাসা করে ' Why did you destroy the trees? Why did the words/ you said didn't stay ?' তখন তার গাঢ়  অনুভূতি প্রত্যক্ষ করি।
              জুলফিনার ভেতরে অজস্র জিজ্ঞাসা । সে তাকে কবিতায় সাজাতে চায় ।‌ তার কাছে বহু কিছুর সমাধান অজ্ঞাত । তবে তার এই নাবালিকা জীবনে  এই সব সাবলীল কবিতা অনেকাংশে সাবালিকার দিকে এগোয়,যখন প্রশ্নগুলো তীব্রতা নিয়ে আমাদের সামনে হাজির‌ হয়।
           জুলফিনা ইতিমধ্যেই ' India Book Of Record ' এ প্রথম দশের ভেতর একজন । তার কবিতার যাত্রা ন বছর থেকে । বলা যায় প্রতি বছরে তার বই প্রকাশ পাচ্ছে । বাকি বইগুলোতে দেখার সৌভাগ্য  না হলেও আলোচ্য বইটিকে তারিফ জানাতেই হয় ।
   ‌‌‌‌      ‌‌‌‌    বইয়ের প্রতি কবিতার সঙ্গে আছে অসাধারণ কিছু ডিজিটাল আলোকচিত্র ।‌ যা বইটিকে তারিফ যোগ্য করেছে। কবির নিজের করা প্রচ্ছদ ও ড্রয়িং বাহবা পাবে।
গ্রন্থকার ভবিষ্যতে এই চর্চা চালিয়ে যাবে কামনা করি ।

আটপৌরে ৭২২ || সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 722 by Sudip Biswas

 আটপৌরে ৭২২ || সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 722 by Sudip Biswas





আটপৌরে ৭২২

ইঙ্গিতচিঠি


অধ্যায়। হিসেবেই। দেখি।


জখমের


 পাশাপাশি হাতছানি দিচ্ছে সম্ভাবনা।

Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...