শনিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২০

সবাই মিলে সিনেমা হলে~ ২০ || কান্তিরঞ্জন দে || সিনেমায় উৎসব, উৎসবের সিনেমা

সবাই মিলে সিনেমা হলে~ ২০

কান্তিরঞ্জন দে







    সিনেমায় উৎসব।। উৎসবের সিনেমা

       উৎসবের মরশুম এখনও চলছে । তাই সিনেমায় বাঙালির পুজো- পার্বণ, উৎসব  কিভাবে এসেছে সে নিয়ে আরও দু- চার কথা বলাই যায় ।
     ১৯১৯-এ প্রথম  বাংলা পূর্ণাঙ্গ কাহিনীচিত্রের জন্ম । আর এই সময় থেকেই বাংলা ( এবং ভারতীয় ) সিনেমা ধর্মভিত্তিক গল্প এ পুজো- পার্বণ , বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব এবং লোক কাহিনী , পুরাণ ও পৌরাণিক কাহিনী নিয়ে সিনেমা বানানোর রমরমা বাড়তে থাকে । এর কারণ কি ? কারণটা খুব সোজা ।
  ১) এই সব গল্প নিয়ে ছবি বানালে দর্শকদের ছবির গল্পটা জানা থাকে । ফলে , দর্শককে চট করে সিনেমা হলে টেনে আনা যাবে । ২) ধর্ম এবং ধর্মীয় গল্প বাঙালি ( এবং ভারতীয় ) জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ফলে দর্শক মহলে সিনেমাগুলি দেখার একটা আগ্রহ সবয়সময়েই থাকবে । ৩) সিনেমায় গল্প বলার ক্ষেত্রে আবেগ একটা বড় উপাদান । আর ধর্মীয় গল্পগুলোতে  আবেগের ঘনঘটার কোনও খামতি নেই । সুতরাং গল্পে একটা নাটকীয়তা তৈরি করা তুলনামূলকভাবে সহজ । ৪) সিনেমায় মানুষ বিস্মিত হতে ভালোবাসে । আজও সিনেমায় কোনও এক রকমের চমক থাকলে দর্শকের দৃষ্টি চট করে আকর্ষণ করা সহজ হয় । সেদিক থেকে ধর্মীয় এবং পৌরাণিক কাহিনীগুলো একেবারে আইডিয়াল  । সিনেমার আদিকালে , সেই দুর্বল কারিগরির যুগেও পর্দায় চমক লাগানো নানারকম কারিকুরি ( আজকালকার ভাষায়, যাকে বলে স্পেশাল এফেক্টস্ ) দেখানোর অঢেল সুযোগ পাওয়া যায় । যেমন---- রাম রাবণের যুদ্ধে তীর ছোঁড়াছুড়ি , কিংবা দেবদেবীর অলৌকিক ক্রিয়াকাণ্ড ।

      ফলে দীর্ঘদিন পর্যন্ত বাংলা ( এবং ভারতীয় ) সিনেমায় দেবী দুর্গা , মা- কালী , মা লক্ষ্মী , শ্রীকৃষ্ণ , মহাদেব- শিব, গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু ইত্যাদি ধর্মীয় বিষয় নিয়ে অজস্র সিনেমা তৈরি হতো । আজকাল পৌরাণিক সিনেমার ধারা অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়লেও , একেবারে অবলুপ্ত হয়ে গেছে , এমন কথা জোর দিয়ে বলা যায় না ।
      আগেই বলেছি , সিনেমা দেখা ব্যাপারটা নিজেই একটা উৎসবের সমান । ফলে ধর্মীয় বিষয় নিয়ে সিনেমা বানালে ভক্ত দর্শকদের আনুকূল্যে সে সমস্ত ছবি বক্স অফিসে রমরমিয়ে চলত । প্রযোজকের নিশ্চিত মুনাফা , আর পরিচালকের মানসিক শান্তি নিশ্চিত জুটে যেত । এই ধরণের ছবিগুলো হলে রিলিজ হতো মূলত উৎসবের মরশুমেই । সিনেমা হয়ে উঠত উৎসবের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।

    উৎসবের সময় লোকের হাতে দু-চারপয়সা বেশি থাকে । ফলে এই ধরণের ছবি দেখাটা অধিকাংশ দর্শকের কাছে উৎসব উদযাপনের জরুরী অংশ হয়ে উঠত ।

      বেশি দূরে যাবার দরকার নেই। সত্যজিৎ রায় সহ বহু বিখ্যাত পরিচালকই খ্যাতি প্রতিষ্ঠা পেয়ে যাবার পরেও চাইতেন , তাদের সিনেমাগুলো যেন পুজোর সময়ে হলে রিলিজ করে । তাহলে দর্শক সংখ্যা অনেক বেশি বেশি করে পাওয়া যাবে ।
       বাংলায় উৎসবের মরশুম   ভাদ্র- আশ্বিন মাসে , শরৎকালে দূর্গাপুজোর সময় শুরু হয়। চলে একেবারে সেই ইংরিজি নতুন বছর পেরিয়ে সেই দোল- উৎসব  পর্যন্ত । এই সময় শরৎ- হেমন্ত- শীত- বসন্ত কাল পর্যন্ত আবহাওয়াও থাকে অত্যন্ত চমৎকার । ফলে মানুষের মেজাজ মর্জি এই সময় অনেকটা হাল্কা থাকে 
    সে কারণেই , আজও বাংলা সিনেমার ছোটবড়ো নির্বিশেষে সমস্ত প্রযোজক , ডিস্ট্রিবিউটর এবং হল মালিকেরা চান , তাদের ছবিগুলো যেন এই উৎসবের মরশুমেই রিলিজ করে ।

     সে কারণেই , একদা বাংলাভাষায় দূর্গা , লক্ষ্মী , কালী , কৃষ্ণ , রামকৃষ্ণ , শ্রীচৈতন্যকে নিয়ে অজস্র , অসংখ্য সিনেমা তৈরি হয়েছে । ভক্তিমান দর্শক আনন্দ পেয়েছেন । প্রযোজক লাভের কড়ি ঘরে তুলেছেন । বাংলা ফিল্ম ইণ্ডাস্ট্রি সচ্ছলতার মুখ দেখেছে । 

     এতে কি  ইণ্ডাস্ট্রি সচল থাকলেও এর ফলে বাংলা সিনেমা কি সমৃদ্ধ হয়েছে ?? রুচিশীল , সংবেদনশীল , শিক্ষিত বাঙালি এ প্রশ্ন তুলতেই পারেন । এক কথায় এর উত্তর হল----- না । কারণ , সিনেমা এই অলৌকিক ধর্মীয় বিষয় নিয়ে ছবি ক‍রতে গিয়ে অনেক সময়েই তার স্বধর্ম থেকে চ্যূত হয়েছে । এমন কি , অনেক সময় সে  রুচিসম্পন্ন সাহিত্য থেকেও অনেকটা দূরে সরে গেছে ।
    
     আমরা সাহিত্য এবং সিনেমার সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে বলতে উৎসব প্রসঙ্গে চলে এসেছিলাম । আগামী সপ্তাহে আবার সিনেমা ও সাহিত্য  বিষয়ে ফিরে যাবার ইচ্ছে আছে ।


অন্য ক্যানভাস-এর ২০বর্ষ, শারদ-১৪২৭ সংখ্যা (অনলাইন) প্রকাশ


অন্য ক্যানভাস-এর ২০বর্ষ, শারদ-১৪২৭ সংখ্যা (অনলাইন) প্রকাশ



 মেদিনীপুর, ৩১ অক্টোবর || প্রকাশিত হল অন্য ক্যানভাসএর ২০বর্ষ, শারদ-১৪২৭ সংখ্যা (অনলাইন)। সংখ্যাটি একযোগে প্রকাশিত 'বাইফোকালিজম্ ' এর পাতাতেও। ফেসবুকের পর্দায় টাচ্ করে প্রকাশ করলেন কবি অচিন্ত্য নন্দী। উপস্থিত ছিলেন কবি সিদ্ধার্থ সাঁতরা, সঙ্গীত শিল্পী সমীর মহান্তি, চিত্র শিল্পী প্রসেনজিৎ মন্ডল, আলোকচিত্র শিল্পী রাকেশ সিংহ দেব, কবি ও সমাজ সেবিকা, রীতা বেরা এবং সম্পাদক, বিশ্ব বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।এই সংখ্যায় রয়েছে ভারত ও বাংলাদেশের কবিতা গুচ্ছ। কবি শ্যামল কান্তি দাশ,গৌর শংকর বন্দ্যোপাধ্যায়,প্রভাত মিশ্র, ধীমান চক্রবর্তী, অমিতাভ মৈত্র, শাহীন রেজা,শান্তা মারিয়া, সৌমিত বসু, তৌফিক জহুর, সৌর মন্ডল, সিদ্ধার্থ সাঁতরার কবিতা ছাড়াও অনেক কবিতাই উল্লেখযোগ্য । সপ্তদ্বীপা অধিকারী র গল্প অবশ্যই মন কাড়ার মতো। রয়েছে  অচিন্ত্য নন্দী, অলোক বিশ্বাস এবং রুবী আদক পান্ডার তিনটি অসাধারন গদ্য। কবিতা,গদ্য ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ ও বহির্ভারতের বিশিষ্ট চিত্র শিল্পীদের আঁকা ছবি এবং আলোকচিত্রীদের ছবিগুলি প্রসংশাযোগ্য।আছে  বর্ষীয়ান কবি মোহিনী মোহন গঙ্গোপাধ্যায় এর সাক্ষাৎকার। অন্য ক্যানভাসএর এই সংখ্যাটিতে বিশ্ব বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচ্ছদ ও অলংকরণ আরো মাত্রা যোগ করেছে।

মুক্তি পেল "প্রয়াস উপত্যকা"-র শর্ট ফিল্ম "দূরত্ব" || নিজস্ব প্রতিবেদন

মুক্তি পেল "প্রয়াস উপত্যকা"-র শর্ট ফিল্ম "দূরত্ব"




আজ দুপুরে প্রয়াস উপত্যকা-র শর্ট ফিল্ম "দূরত্ব" মুক্তি পেল ভার্চুয়াল মাধ্যমে | কাহিনি- কবিতা মাইতি, সংলাপ ও নির্দেশনা- শ্রীকান্ত ভট্টাচার্য | অভিনয়ে~ বৃষ্টি মুখোপাধ্যায় হারাধন দুয়ারী ও অন্যান্য শিল্পীবৃন্দ | গীতিকার- তাপস মাইতি সুরকার- সমীর মহান্তী শিল্পী~ অঙ্কিতা রায় |"PRAYAS UPATYAKA" youtube চ্যালেনের নিম্নলিখিত লিংকে ক্লিক করুন ! ইউটিউব, ফেসবুক, সোসাল মিডিয়া এবং তথ্যপ্রযুক্তি যুগের এই স্বপ্রকাশ পরিসরকে ধন্যবাদ জানান আই-সোসাইটির কর্ণধার সৌমিত্র রায়  |

ইচ্ছাপূরণের দেশে কোভিড-১৯ নেই || বিপ্লব মাজী || কবিতা

ইচ্ছাপূরণের দেশে কোভিড-১৯ নেই

বিপ্লব মাজী 



কোভিড-১৯-এর তোয়াক্কা না করে, 

অনেক সময় অলীকআকাশকুসুম ভাবনায় 

কেটে যায় বেশ সুন্দর সময়! 


মানুষের কল্পনার শেষ নেই, 

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ডানায় উড়ে 

সে পৌঁছে যেতে পারে 

পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে যে কারো কাছে, 

বাধা দেওয়ার কেউ নেই, 

অনেক গোপন স্বপ্ন অসমাপ্ত ভালবাসা 

অনায়াসে পূর্ণতা পায় কত সহজে, নিউনরমালে 

আমরা পৌঁছে যাই ইচ্ছাপুরণের দেশে !


ইচ্ছাপূরণের দেশে কোভিড-১৯ নেই 

সংক্রমণ বা মৃত্যুর ভয় দেখাতে, নিশ্চিন্তে আমরা পৌঁছে যাই পাহাড,কোন নির্জন দ্বীপ,অরণ্য, সমুদ্রে 


অবচেতন মনের গভীর থেকে উঠে আসে 

সবপেয়েছির দিন সুন্দর পৃথিবী ও একটি কবিতা... 



সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য ১৮০ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক গদ্য

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য

প্রভাত চৌধুরী



১৮০.

আমাদের কবিতাপাক্ষিক শীর্ষক সংখ্যায় শেষ লেখাটি ছিল নাসের হোসেনের। আর প্রথমটি ছিল আমার।

আমি যা বলার সবটাই তো বলছি , পরিবারের অন্য সকলের লেখার বা বলার মধ্য দিয়ে। আর নাসের তো সে সুযোগ পাচ্ছে না । এখন আমি নাসের কী লিখেছিল তা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। আবার মনে করিয়ে দিচ্ছি এসব বলাবলি সবই কিন্তু প্রথম দশ বছরের কথা । বা দশ বছরের প্রেক্ষিত-কথা।

নাসের হোসেন উবাচ :

' উৎসবের অনেকগুলো রঙিন বেলুন উঠে যাচ্ছে আকাশে , তাদের প্রত্যেকটির গায়ে লেখা রয়েছে কবিতাপাক্ষিক ১০ বছর । অজস্র রঙিন পতাকায় ছেয়ে যাচ্ছে চারপাশ । পাখি ও মানুষের গান একাকার হয়ে যাচ্ছে। '

এরপর নাসের লিপিবদ্ধ করেছিল কবিতাপাক্ষিকে প্রবেশ-কথা। এবং কবিতাপাক্ষিকের কিছু কর্মকাণ্ড। 

ওখান থেকেই আমি কয়েকটি অংশ টুকরো- টুকরোভাবে তুলে ধরছি।

' এরপর প্রভাতদা আমাকে প্রুফ দেখার আনন্দটা পাইয়ে দিলেন।তার আগে প্রুফ দেখা আমার কাছে অত্যন্ত কষ্টকর মনে হত। পরে হাজার হাজার পাতা প্রুফ দেখতে হয়েছে , এখন ভাবলে অবাক লাগে '।

' কবিতাপাক্ষিক-এর ৪১ সংখ্যায় কবিতা সংবাদে প্রভাতদা ঘোষণা করলেন : পরবর্তী সংখ্যা থেকে কবিতা সংবাদ লিখবেন অর্জুন মিশ্র কলম-নামের আড়ালে এই সময়ের একজন বিশিষ্ট তরুণ কবি। প্রভাতদা চেয়েছিলেন আমি কবিতা সংবাদ লেখাটা নাসের হোসেন নামেই লিখি ।কিন্তু আমি চাইছিলাম অর্জুন মিশ্র নাম নিয়ে ধারাবাহিক কলাম লিখতে। অর্জুন মিশ্র নামটি তারও কয়েক বছর আগে আমাকে দিয়েছিলেনThe Statesnan - এর চিত্রকর অলোক ভট্টাচার্য ' ।

' ১০ বছর ধরে চারটি ক্ষেত্রে সমান গুরুত্ব সহকারে কাজ করেছি। চারটি ক্ষেত্র হল ----বাড়ি, অফিস , লেখালেখি/ শিল্পসাধনা এবং কবিতাপাক্ষিক-এর কাজ। প্রভাতদা আর আমার অফিস পাশাপাশি হওয়ায় কবিতাপাক্ষিক সংক্রান্ত ব্যাপারে প্রয়োজন-মতো যে কোনো সময়ে সক্রিয় থেকেছি। তাছাড়া প্রায়-প্রতিদিন রাত সাড়ে আটটা- নটা নাগাদ প্রভাতদার বাড়িতে।'

এই ধারাবাহিকতাই কবিতাপাক্ষিক-কে ধারাবাহিকতা বজায় রাখার মূল রহস্য বা শক্তি। অন্য যে কোনো অবাণিজ্যিক পত্রিকায় যদি আর একজন নাসের হোসেন থাকত , তারাও অবলীলায় কবিতাপাক্ষিক- এর মতো ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারত। এই কথার সূত্র ধরে  আরো গুটিকয় কথা বলে রাখতে চাইছি। যেসব কথা লিখিত না থাকলে বহু ভ্রন্তি দূর হবে না ।

যেমন আমার চরিত্রের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল মানুষকে অপমান করা। সত্য সত্যই তিনি এমন কাজ করেছেন সেটাকে কিছুতেই সমর্থন করা যায় না। তাঁকে আক্রমণ করতেই হবে। আর আমি অধিকাংশ মানুষকেই মৃত-মানুষ মনে করি। কাজেই রণক্ষেত্রে মৃত সৈনিকদের মুখের কোনো সংলাপই আমার কাছে জরুরি নয়।

আর নাসের ঠিক আমার উলটোটা। একশো বছর চেষ্টা করেও যার পক্ষে কবিতার একটা লাইনও লেখার সম্ভাবনা নেই , নাসের জেনেবুঝে তাদের গুরুত্ব দিয়ে এসেছে চিরটা কাল । 

আর একটা কথা নাসের হোসেন-এর একজনও শত্রু নেই। সকলেই নাসেরের আত্মজন।

এই ঘটনাগুলিই কবিতাপাক্ষিক পরিবারের রক্ষা- কবজের কাজ করেছে। 

নাসের জানে কোনটা কবিতা আর কোনটা কবিতা নয়। কিন্তু কখনো মুখ ফুটে বলেনি তোমার এটি কিছুই হয়নি।

কিন্তু নাসেরের অসুস্থতার সময় বুঝে গেলাম কে আসল বন্ধু !

আরো একটা গোপনকথা ফাঁস করে দিচ্ছি।তা হল :

অনেকের ধারণা আমি একজন বানান-বিশারদ। এই ধারণাটি ভুল। আমি বানান-সচেতন । কারণ বানানের ব্যাপারে সদাসর্বদা আমাকে সাহায্য করে নাসের হোসেন এবং যূথিকা চৌধুরী। আর আমি যে বানানে বিশাল দক্ষ সেটা প্রমাণ করার জন্য লিখে ফেললাম --- বানানের হ্যান্ডবুক। 

আমার এই সমস্ত দুর্বলতাগুলি সযত্নে আড়াল করে রেখেছে নাসের হোসেন।

আরো অনেক কথা লিখেছি ' আমাদের নাসের হোসেন ' গ্রন্থটিতে। এই বইটি একটি অবশ্যপাঠ্য বই।

শেষ কথাটি হল এই পৃথিবী আরো কয়েকজন নাসের হোসেন থাকলে , পৃথিবীটা অনেক বেশি সুন্দর হত। কারণ সুন্দরের শ্রেষ্ঠতম পূজারি-র নাম নাসের হোসেন।

কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার শূন্যসংগত । সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সেলিব্রিটি । কুড়ি টাকা ।

কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার 



শূন্যসংগত । সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সেলিব্রিটি । কুড়ি টাকা ।



যাঁরা মহিলা এবং কবিতা নিয়ে মগ্ন থাকতে ভালোবাসেন,  তাঁদের কবিতা নিয়ে বহুলাংশে ' মেয়েলি' শব্দটি অনেকেই জুড়ে দেন । এই নিষ্ঠুর অপমানজনক  শব্দের ভেতর বন্দি থাকতে ভালোবাসেন অনেক নারী কবি। তারা লিখে চলেন পুরনো আমলের কবিতার অনুপ্রেরণায় কবিতা,  বর্তমানে অবশ্য এসেছে যৌনতা, কিংবা নারীবাদী উচ্চগ্রামের কবিতা । পাশাপাশি যাঁরা তার বাইরে গিয়ে ব্যতিক্রমী দিক ফুটিয়ে তুলে ধরেছেন তাঁদের মধ্যে কবি সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্যতম । তা জানান দেয় তাঁর ' শূন্যসংগত ' কাব্যগ্রন্থে : ' ঝেঁপে কালো হয়ে এলো এক ফর্মা দু-  ফর্মা / ব্যর্থ শোক ' ( দৃষ্টি)  , ' বখে গেল সব শান্ত আলোয় অনুশীলনরত সকাল ' ( এমারজেন্সি লাইট)  , ' কান্না ব্যক্তিগত  / নিচু ডালে সর্বশেষ পাতার পেছনে লুকোনো ' ( ' লৌহকীট ') এর মতো সমীহ জাগানো তাঁর পংক্তি গুলি তে ।

                সুমিতার এই বইটি কতবার যে পড়ে ফেলেছি ,কি এক অদৃশ্য টান আছে বইটির ভেতরে!  প্রতিটি কবিতা থেকে উৎসর্গীকৃত কাব্যচেতনা ধাবিত হয় রক্তে । নেশা জাগে কবিতা গঠনের নেশা । 

                দুঃখ,  ইদানিং তাঁর কবিতা পাওয়া যাচ্ছে না । এ ধরনের অসাধারণ কবিরা কেন যে নিঃস্তব্ধ হয়ে যান,  মাঝে মধ্যে মনে হলে দুঃখ লাগে । দশ বছর আগের প্রকাশিত এই কাব্যগ্রন্থে সংযত কবিতাগুলির ক্ষেত্রে প্রশংসা করা ছাড়া পথ থাকে না । পিপাসা গুপ্তের সাধারণ প্রচ্ছদ বইটির পক্ষে সুপ্রযুক্ত । বইটি প্রকাশের জন্য প্রকাশকও ধন্যবাদার্হ ।

আটপৌরে কবিতা ৯৯৮-১০০০ || নীলাঞ্জন কুমার || "আই-যুগ"-এর কবিতা

আটপৌরে কবিতা

নীলাঞ্জন কুমার

৯৯৮

সমাধানসূত্র / মিমাংসাস্থান/  আলোকপাত
                  ) আলোচনাস্থল (
           আলোচনাতে কি না  মেটে?

৯৯৯

সু-সাফল্য/   মহানন্দ/  কালজয়ী
          ) মহাসমাধান  (
মানুষের জন্যে মানুষ ঘটায় ।

১০০০

         ইতি/  কীর্তি/  অবিনাশ
                   ) সমাপন (
শুভেচ্ছায়  শ্রদ্ধায় ভালোবাসায় নমস্কারে।




শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২০

কবিতা উনত্রিশ পয়েন্ট ফাইভ - ৪৮ / সোমনাথ বেনিয়া

 কবিতা


উনত্রিশ পয়েন্ট ফাইভ - ৪৮ / সোমনাথ বেনিয়া



কোন পদ্ধতিতে, কোন প্রণালীতে খুঁজবে যে নিখোঁজ বারবার

আকাশের পুঁথি পড়ে পাখিও বুঝে নিচ্ছে চরাচরসমগ্র

ডানার ভাঁজে লুকিয়ে রাখছে সতর্কতার গুপ্ত মেড ইজি

হাতের তালুর ছাপে আতশকাচে দেখবে সময় কতদূর গেছে

শীর্ণ ছায়ার কাছে দুরন্ত বিশ্রামের আশা নিয়ে বোকা হয়েছো

ভাবো তো, কত সূর্যহত‍্যা, বায়ুপ্রদাহ, ঝরা পাতার ছিন্ন বিলাপ

মুখ ঘুরিয়ে শেষ অধ‍্যায়ের অংশবিশেষ মনে করার চেষ্টা

জানা নেই মজা খাল জীবনের কোন প্রহরের প্রতিফলন

অথচ সেই ভাবনা ভুলে চায়ের কাপ হাসি নির্বাচন করে

এই বিভ্রমের মধ‍্যে ডুবে পানাপুকুরের জলস্তর মাপছে

কাদাখোঁচা পাখির  কাছে ঘনশ্বাস নিয়ে বসে থাকা নিরুত্তর

ফুটপাথের দেওয়ালে ফেলে আসা দৃষ্টির হিসেব চোখের পলকে

স্বপ্নে মণি ছুঁতে গিয়ে আদরে চুমু খাচ্ছো সাপের ফণাকে

আটপৌরে কবিতা ৯৯৬-৯৯৭ || নীলাঞ্জন কুমার || "আই-যুগ"-এর কবিতা

আটপৌরে কবিতা

নীলাঞ্জন কুমার

৯৯৬

অনুষ্ঠান/  দিনযাপন/  কীর্তিস্মরণ
          ) উদযাপন  (
   মানুষের মধ্যে চারিয়ে দিতে।

৯৯৭

সৃষ্টি/  রসায়ন/  আশির্বাদ
             ) প্রক্রিয়াজাত  (
না হলে শিল্পবিপ্লব হতো?



আজকের দিন || সুকুমার রায়-এর জন্মদিবস ❤️ || ধ্রুবমোহন

 || আজকের দিন ||

 সুকুমার রায়-এর জন্মদিবস ❤️



সুকুমার রায় চৌধুরী  (৩০ অক্টোবর ১৮৮৭ - ১০ সেপ্টেম্বর ১৯২৩) ছিলেন একজন বাঙালি শিশুসাহিত্যিক ও ভারতীয় সাহিত্যে "ননসেন্স ছড়া"র প্রবর্তক। তিনি একাধারে লেখক, ছড়াকার, শিশুসাহিত্যিক, রম্যরচনাকার, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার ও সম্পাদক। তিনি ছিলেন জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর সন্তান এবং তার পুত্র খ্যাতিমান ভারতীয় চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়। তার লেখা কবিতার বই আবোল তাবোল, গল্প হ-য-ব-র-ল, গল্প সংকলন পাগলা দাশু, এবং নাটক চলচ্চিত্তচঞ্চরী বিশ্বসাহিত্যে সর্বযুগের সেরা "ননসেন্স" ধরনের ব্যঙ্গাত্মক শিশুসাহিত্যের অন্যতম বলে মনে করা হয়, কেবল অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড ইত্যাদি কয়েকটি মুষ্টিমেয় ধ্রুপদী সাহিত্যই যাদের সমকক্ষ। মৃত্যুর বহু বছর পরেও তিনি বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয়তম শিশুসাহিত্যিকদের একজন।


#ধ্রুবমোহন।

সৌমিত্র রায় -এর জন্য গদ্য ১৭৯ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক গদ্য

সৌমিত্র রায় -এর জন্য গদ্য

প্রভাত চৌধুরী



১৭৯.

কবিদের নির্দিষ্ট কোনো জীবিকা আছে বলে আমার জানা নেই। তবে অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত মানুষজন কবিতার সঙ্গে থাকেন এটা আগে যতটা প্রকট ছিল , এখন ততটা নেই। যেমন দেখুন তিনের দশকের বিশিষ্ট কবিরা অনেকেই অধ্যাপক ছিলেন। এবং ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক ছিলেন।

এখন কবিতা লেখার জন্য অধ্যাপনা করাটা বাধ্যতামূলক নয়। যে কেউই কবিতা লিখতে পারেন।তবে তাঁকে কবিতার মানুষ হতে হবে। এই কবিতার মানুষ হবার প্রাথমিক শর্ত হল : কবিতার সঙ্গে থাকা । বা কবিসঙ্গে থাকা।

এভাবে শুরু করার উদ্দেশ্য হল এখন আমি যাঁর কথা বা যাঁর লেখা কথা তুলে আনব তিনি অধ্যাপক নন। তিনি ডেন্টাল সার্জন। বা দন্ত- বিশারদ। তিনি ড : প্রদীপ ঘোষ ।

আমি হেলথে কাজ করতাম। করণিকের কাজ। এক সময় দাঁতের চিকিৎসকদের এস্টাবলিস্টমেন্ট -এর প্রাথমিক কাজকর্ম দেখিশুনো করতাম। সেই সূত্রেই প্রদীপ ঘোষের সঙ্গে আমার যোগাযোগ এবং ঘনিষ্টতা।  প্রদীপের উদ্যোগে কবিতাপাক্ষিকের দশ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে দক্ষিণেশ্বরে একটি উৎসব হয়েছিল। সেই উৎসব থেকেই পেয়েছিলাম উৎপল ফকির এবং সহজ মা-কে। যা পেয়ে আমি পূর্ণ হয়েছিলাম। প্রদীপ আমার ৬০ তম জন্মদিন তথা কবিতাচর্চাকেন্দ্র-র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে বাঁকুড়ায় কাদাকুলিতে গিয়েছিল।  

এই প্রদীপ ঘোষ-এর কবিতাপাক্ষিক কেমন একবার দেখে নেওয়া যাক :

' প্রভাত চৌধুরীর হৃদয় খামারের ফসল কবিতাপাক্ষিক বাংলার কবি, কবিতাপ্রমিক ও প্রেমিকেরা যত্নে ঘরে তুলে রাখবেন আশা নিয়ে শেষ করছি। 

নুরুল আমিন বিশ্বাস -এরও আমাদের কবিতাপাক্ষিক শীর্ষক একটি লেখা ছিল৷

নুরুলের একটা  মাত্র স্বীকারোক্তি আমার এই ধারাবাহিকে রাখছি অতীতকে স্বীকৃতি দেবার জন্য।নুরুল লিখেছিল :

' আর এই ভাবনার জন্য প্রত্যেক সদস্যকে আমি স্যালুট করি। কবিতা ছেড়ে দিলেও আজীবন আমি তোমার। তোমারই রয়ে গেলুম ।' 

না নুরুল সততার জন্য আমি অনেক কিছুই ত্যাগ করতে পারি। বন্ধুত্বও মুছে দিতে পারি।

গৌরশংকর বন্দ্যোপাধ্যায় সত্তরের প্রতিষ্ঠিত কবি।কবিতাপাক্ষিকের কবি এবং আত্মজন। আমার পূর্বাহ্ণের বন্ধু , উত্তরপর্বেরও। এই দীর্ঘপথ পরিক্রমা থেকে বলা যায় , গৌরশংকরের মতো হৃদয়বান বন্ধু পাওয়াটা আমার ভাগ্য।

গৌরশংকর লিখেছিল :

' পরিকল্পনার আর একটা জুতসই শব্দ হতে পারে রূপায়ণ , উদ্ভাবন , নকশা ইত্যাদি তবে ৩৬ডি, হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের একতলার ফালি গলি পেরিয়ে ঘরে ঢুকে যেদিন দেখলাম কবিতা আর রান্নার ব্যঞ্জনগন্ধ একসঙ্গে মিলেমিশ আছে শান্তনু রজতেন্দ্র এবং প্রভাত চৌধুরীকে ঘিরে এবং রাত করে নাসের-এর প্রবেশ ---- তখন মনে মনে এই পরিবারের একজন হতে বাধা আছে বলে মনে হল না।'

গৌরশংকর আরো বলেছিল :

'  আসলে অচলায়তন উপেক্ষা করার কাজটি কবিরাই করতে পারেন আর সেই উপেক্ষা তৈরি হয় গঠনকর্মে উদ্দীপনা সঞ্চয়ের সৃষ্টি করা, যার জন্যে এই

অচলায়তনকে সরিয়ে, সব ইলিউশন দূর করে নটে গাছটি মুড়োবে না। সে কারণেই তৈরি পোস্টমডার্ন স্বপ্নভাবনা ,ইন্দ্রিয়মুখর না হয়ে ঘটি ডোবা জলের আধার ধীরে ধীরে একদিন সাগরে পরিণত হতে পেরেছে ' ।

গৌরশংকর শেষ করেছিল কীভাবে , তা পড়ুন :

' এবার এইসকল সমীকরণের সূত্র ধরে আমি লিখতে পারি এতসব সুস্থতার ভিতরেও যে কবিতামনস্ক অনুসন্ধান এতদিন ধরে একটা নিজস্ব কবিতাভূমি তৈরি করেছে , সেই ভূমিতে গড়ে ওঠা পরিবারের সদস্য ভাবতে দোষ কোথায় ?'

না গৌরশংকর কোথাও কোনো দোষ নেই।এই পরিবার, কবিতার পরিবার।

কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার সাদা পাতা ও চাঁদের গল্প । বিশ্বজিৎ রায়

 কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার 




সাদা পাতা ও চাঁদের গল্প । বিশ্বজিৎ রায় । প্রয়াগ প্রকাশনী । পন্ঞ্চাশ টাকা ।


' আমাদের অপেক্ষমান গল্পের মাটিতে প্রোথিত বীজ , ভালোবাসার/ জলসিন্ঞ্চন করে তাপস,  দেবাশিস,  নীলাঞ্জন,  ঠাকুরদাস .../ প্রতিদিনের পিতৃহারা যাপনে খড়কুটো ঐ কবিতার কাগজ ' ( ' বীজ ' )-র মতো আবেগী অথচ গভীরে ঢুকে পড়া কবিতার  হাজারো ছটা খুঁজে পাওয়া যায় কবি বিশ্বজিৎ রায়ের ২০০৭ সালে প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ' সাদা পাতা ও চাঁদের গল্প ' পুণঃপাঠ করে । তাই তাঁর চিন্তাভাবনার সঙ্গে মিত্রতা করা যায় যখন পাই : ' সত্য থেকে সরে আসলে জীবন লোভের আকাশ/  দ্বন্দ্ব ও মুখোশের অবিরাম সংকেতে / পাক খায় জঠরের নস্বরতা/  নেমে আসে বিষাক্ত যন্ত্রণার পালক ' ( ' যন্ত্রণার পালক ') এই ধরনের পংক্তিকণা  মনকে আকর্ষণ করে ।

             আগেও বলেছি বিশ্বজিৎ সেই কবি যিনি প্রতিটি কাব্যগ্রন্থে পাল্টাতে চেষ্টা করেন । যা নতুন দিক নির্দেশ করে । একঘেয়ে ক্লিশে কবিতার কাছ থেকে সরিয়ে নিয়ে যায় । তাঁর সরলতার দিক কিন্তু অটুট থাকে , যা বহু কবিতা তাঁর পড়ে ফেলার ফলে  চিনে নিতে অসুবিধে হয় না তাঁর কবিতার কি পয়েন্ট । 

           বিশ্বজিতের সহজতা ও সরলতা সমস্ত জীবন যন্ত্রণার সামনে দাঁড়িয়ে তাদের কথা বলে যায় । সে কারণে পাই: ' দুলে যাচ্ছে মানুষের চাঁদ/  আর চাঁদের নীচে রুটি/  ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘ, / উদোম শরীরগুলো ভেসে যাচ্ছে ঐ রুটির দিকে  - ' ( চাঁদ ও রুটি ') - বড় চেনা ছবি হলেও কবিতার  মোচড়ে মন দুলে ওঠে ।

                সার্বিক অর্থে এটি বিশ্বজিতের আরো একটি কাব্যগ্রন্থ যা পড়তে বিব্রত করে না ।  বরুণ সাহার প্রচ্ছদ হাসির খোরাক হয়ে যায় গোটা বইটি পড়ার পর ।

প্রচ্ছদ যে কত কঠিন শিল্প,  তা যদি প্রচ্ছদকারের মাথায় থাকতো! কবি ও প্রকাশক বর্গের কবে যে প্রচ্ছদ নিয়ে হুঁশ হবে!

বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২০

সৌমিত্র রায় -এর জন্য গদ্য ১৭৮ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক গদ্য

সৌমিত্র রায় -এর জন্য গদ্য

প্রভাত চৌধুরী



১৭৮.

সোনালি বেগম -এর কবিতাপাক্ষিক কেন্দ্রিক আত্মকথার কিছু অংশ পড়তে থাকুন :

' আমার কবিতালেখার দ্বিতীয় ইনিংস শুরু হয়েছে কবিতাপাক্ষিকের আবির্ভাবের পর। একটু একটু করে লক্ষ করলাম কবিতার আলোর বিরল ঝলকানিতে কবিতাপাক্ষিক তার তোরণদ্বার খুলে দিয়েছে । তার মধ্য দিয়ে যতদূর ইচ্ছে চলে যাওয়া যায় । কবিতাপাক্ষিক-কে মনে হয়েছে এক স্বপ্নদিগন্তের অশ্বারোহী । সে পশ্চিমবঙ্গ থেকে অনেক দূরের বাঙালিদের মনেও কবিতার স্বপ্নকে সঞ্চারিত করতে পেরেছে । যেন এক নতুন বেগ সঞ্চারিত হল আমার মধ্যে। বেশ কিছু কবিতা লিখে ফেললাম যা কোনো- মতেই আমার আগের কবিতাগুলির মতো নয়।'

 সোনালি বেগম -এর ব্যক্তিগত পরিচয় জানানোটা খুব একটা জরুরি মনে না হওয়ায় জানালাম না।

গোপাল আচার্য এক বিরল প্রজাতির মানুষ । ভিন্ন প্রকৃতির কবি। সুজিত হালদার সূত্রে কবিতাপাক্ষিক- এর সঙ্গে যোগাযোগ। আর সেই সূত্রেই কবিতায় অনুপ্রবেশ।

গোপাল আচার্য তাঁর কবিতাপাক্ষিককথায় লিখেছিলেন :

' আমার কবিতাচর্চার প্রায় সমস্তটাই কবিতাপাক্ষিক কেন্দ্রিক । কবিতাপাক্ষিকের বাইরে আমার কবিতা কম প্রকাশিত হয়েছে ... সময়ের অভাব /উদ্যোগের অভাবে ।কবিতাপাক্ষিকের জগতে এসে আমি অনেক শিখেছি ... দৃষ্টি প্রসারিত হয়েছে ভুবন জুড়ে... কবিতার হাল হকিকৎ সম্পর্কে জ্ঞান বেড়েছে যথেষ্ট।'

' আজ কবিতাপাক্ষিক একটা বিশাল প্রতিষ্টান। অমুক বিখ্যাত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কাগজে কবিতা লেখার চেয়ে , আমি কবিতাপাক্ষিকে কবিতা লিখি বলাটা বেশি গৌরবের।'

কবিতাপাক্ষিকের আত্মজন গোপাল আচার্য জানিয়ে ছিলেন তাঁ ব্যক্তিগত অভিমত। আপনাকে তার মান্যতা দিতে হবে , এটা বলতে যাব কেন !

রামকিশোর ভট্টাচার্য আটের দশকের বিশিষ্ট কবি তথা কবিতাপাক্ষিকের আত্মজন। 

রামকিশোর তার কথায় জানিয়েছিল : 

'  কবিতাপাক্ষিক ' বর্তমানে সে- রকম কাগজ যা বাংলা পত্রিকা-সমাজে নতুন ভাবনা মেলে ধরেছে। যাকে আমি তথাকথিত লিটল ম্যাগাজিন বলতে রাজি নই। বরং যদি প্রতিপত্রিকা বা সমান্তরাল কাগজ বলা যেতে পারে। যেখানে যত শব্দের আশ্চর্য কাণ্ড তার অনেকটাই আসে এখানে। কবিতা এক ধরনের ব্যাধি। এই ব্যাধি ছড়ানোর এক উৎকৃষ্ট মাধ্যম কবিতাপাক্ষিক। ফলে এর নিন্দুকের সংখ্যাও প্রচুর । আমি চাই আরো নিন্দা বৃদ্ধি হোক । আরো বিতর্ক। তবু কবিতাপাক্ষিক পরিবারের লেখকপাঠকদের কাছে একটা অর্জন , আশ্রয় ।'

রামকিশোর তার রচনাটির উপসংহারে লিখেছিল :

' এক অদ্ভুত ফোকাসের আলোয় আলোকিত এই পরিবার আরো বহুদিন প্রেরণার গান গেয়ে যাবে। কবিতা যতদিন কবিতাপাক্ষিক পরিবারের প্রভাও ততদিন। একখনোই কষ্টকল্পনা নয়। এ পরিবারে কোনোদিন রাত্রি নামবে না। '

আত্মজনকথা চলতেই থাকুক।

সুজন || ফটিক চৌধুরী || কবিতা

 সুজন

ফটিক চৌধুরী



কোনো পাখি যদি ডেকে যায়

           তার কূজনে আমি সুজন হয়ে যাই।

তেঁতুল পাতার সুজন আর নেই

                           এখন ন'জনে ন'টি পাতা

টকের জ্বালায় কেউ বাস করে না সেখানে।


পৃথিবীর সবটুকু আলো কেড়ে নিচ্ছে

                                  কুশাসক ও মাফিয়া

অন্ধকারে ঘোরাফেরা করে কবন্ধ মানুষ

             তার ভয়ে সবাই আজ কৃষ্ণগহ্বরে

কে কার জন্য বেরিয়ে আসবে, অসময়ে?

তবুও এই হেমন্তে কোনো পাখির ডাকে 

কূজিত হলে আমাকে কি সুজন বলবে?



কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার সংকেত লিপি । অরূপ চন্দ্র

 কিছু বই কিছু কথা ।  নীলাঞ্জন কুমার 




সংকেত লিপি ।  অরূপ চন্দ্র । বাসভূমি প্রকাশন । পঁয়ষট্টি টাকা ।


যদিও এটি কোন রকম কবিতা গল্প কিংবা প্রবন্ধের বই নয় , এটি  অত্যন্ত দুরুহ বিষয়ের পাঠ্য বই । যাকে আমরা বাংলা কোন শব্দ  দিয়ে চিহ্নিত করি না,  বরং ইংরেজি  ' শর্টহ্যান্ড ' শব্দটির মাধ্যমে চিহ্নিত করতে বেশি আরাম বোধ করি । বাংলা শর্টহ্যান্ড বা সংকেত লিপি র পথিকৃৎ ছিলেন কবি ও দার্শনিক দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর।আর প্রথম বই প্রকাশিত হয় লিথোগ্রাফের মাধ্যমে। প্রিয়ংবদা দেবীর হস্ত প্রতিলিপি  ( ১৩১৯ বঙ্গাব্দ)  'রেখাক্ষর বর্ণমালা ' নামে।  তা আমরা জানতে পারি বইটির মুখবন্ধের মাধ্যমে । অরূপ চন্দ্র একজন প্রাবন্ধিক অনুবাদক কবি ও সম্পাদকের সঙ্গে সঙ্গে শর্টহ্যান্ড বিশেষজ্ঞও তা এই বইটি না পড়লে জানা যেত না । বহরমপুরে একটি কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউটের তিনি অধ্যক্ষ আর সেখানে শেখানো হয় শর্টহ্যান্ড কোর্স। 

            শর্টহ্যান্ডের বাংলা প্রতিশব্দ অনেকে অনেকভাবে করার চেষ্টা করেছেন যেমন সুবোধ দাস চৌধুরীর  ' লঘুলিপিকা ' কিংবা ' শব্দরেখা ' অথবা  প্রিয়ংবদা দেবীর ' রেখাক্ষর ' । কিছু শব্দ যেহেতু সংকেত বহন করে আমাদের বোধ জাগ্রত করে ও সেই  'সংকেত লিপি ' শব্দটি শর্টহ্যান্ডের পক্ষে সঠিক বলা যায় ।  সে কারণে গ্রন্থে ব্যবহৃত ' সংকেত লিপি ' শিরোনাম সঠিক । বইটির আদ্যোপান্ত পড়ে বুঝতে পারি কি দারুণ কঠিন বিষয় কত অসাধারণ দক্ষতাতে তিনি ছাত্র ছাত্রীদের কাছে হাজির করেছেন যা সাধারণ পাঠক যদি আগ্রহী হয়ে পড়েন তবে তাদেরও ভালো লাগবে বলে বিশ্বাস ।

              বইটিতে ২১ টি অধ্যায়ে সংকেত লিপি শেখানোর প্রচেষ্টা রাখা হয়েছে । যার ভেতরে ব্যাকরণ,  শব্দ বিজ্ঞান,  সর্বোপরি ছাত্র ছাত্রীদের আকর্ষণ বাড়ানোর জন্য শিক্ষকসুলভ যত্ন বহাল। প্রান্ঞ্জল ও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে বইটিতে অরিন্দম চন্দ্রের প্রচ্ছদ   যা সাধারণ পাঠ্য বই থেকে বেশ আলাদা ।


আটপৌরে কবিতা ৯৯১-৯৯৫ || নীলাঞ্জন কুমার || তথ্য

আটপৌরে কবিতা

নীলাঞ্জন কুমার

৯৯১

খ্যাতনামা/  বিশিষ্ট/  সেলিব্রিটি
         ) নামীদামি  (
   এক হাঁকে যাদের চেনে ।

৯৯২

ভীত  / সন্ত্রস্ত/  ভয়বন্দি
        ) ভয়ভাবনা  (
নিত্য জীবন সুখের নয় ।

৯৯৩

সন্মান/  খ্যাতি/  প্রশংসা
       ) পদক  (
যা একমাত্র স্মারক হয় ।

৯৯৪

স্বীকার/  প্রমাণ/  মান্যবর
       ) মানপত্র (
দিলে প্রকৃত স্বীকৃতি হয় ।

৯৯৫

অবস্থান/  প্রবেশদ্বার/  ঘটনাবিন্দু
            ) উৎসমূল  (
জানতে পারলে সত্য জ্ঞাত ।



বুধবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২০

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য ১৭৭ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক গদ্য

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য

প্রভাত চৌধুরী



১৭৭.

আমাদের কবিতাপাক্ষিক চলছে ।এসবই প্রথম দশ বছরের কীর্তি বা কার্যকলাপ সম্পর্কিত কথাবার্তা।দশ বছরের পরের কথা পরে কখনো লেখা যাবে।

এখন বলছি হিমাদ্রিশেখর দত্ত-র কথা। হিমাদ্রির আগমণ ছিল সুমিতেশ সরকার সূত্রে।

হিমাদ্রিশেখর লিখেছিল :

' বাঁকুড়ার গেস্ট হাউসে মাঝরাতে কার্তিকদার গাছে উঠে কাঁচা আম পেড়ে খাওয়ানোয় বা বহরমপুরে রাতভোর আড্ডায় যে উষ্ণতা, সেইসব শ্রাব্যদৃশ্য অভিজ্ঞতা আছে মনের মন্তাজে , অমলিন।

কবিতাপাক্ষিক ঘিরে যে ৭০ মিমি অভিজ্ঞতা তা তো অশেষ , শুধু দশকপূর্তির দিক তাকালে বোধ হয়, আরে ! একটা দশক ঝরে গেল।'

এসব টুকরো স্মৃতিকে  মৃলধন করে এগিয়ে যাবার চেষ্টা করছি। বাংলাকবিতাকে এগিয়ে নিয়ে যাবার চেষ্টা করছি।

দেবাশিস সাহা -র লেখা থেকে আমি তুলে দিচ্ছি। পড়তে থাকুন :

'প্রায় জন্মলগ্ন থেকেই কবিতাপাক্ষিকের সঙ্গে আলাপ। কবিতাপাক্ষিক-৫০ বেরিয়েছে।আমি সদ্য এসেছি কলকাতায়। আর আজ কবিতাপাক্ষিক ২৫১ বেরোচ্ছে।এর মাঝে ২০০টি সংখ্যা অতিক্রান্ত।কবিতা

পাক্ষিকের সঙ্গে সম্পর্ক নিবিড়  ও গহন হয়েছে। সে দিনটির কথা এখনও স্পষ্ট। কলকাতা বইমেলার মাঠে প্রভাতদা আমাকে নিয়ে বসলেন , শুনলেধ আমার কবিতা। তারপর কানে দিলেন কবিতার ইষ্টমন্ত্র। আজ তা উল্লেখ না করে পারলাম না। --- দেবাশিস , কবিতা উপলব্ধির জিনিস। পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত কত কী ঘটে যাচ্ছে। এর বাইরেও আরো কিছু ঘটে যেতে পারে তো। যেটা ঘটেনি তুমি সেটাকে কাব্যে চিত্রিত কর। 

আমি কতটুকু পেরেছি জানি না তবে কথাগুলো আজও আমার কানে মন্ত্রের মতো বেজে চলেছে। সহৃদয় আন্তরিক প্রভাতদা বহরমপুরে প্রায়ই আসতেন  । দেখা হলেই কবিতাময় শরীরটি বেজে উঠতো ।'

দেবাশিস সাহা শেষ করেছিল :

' কারণ কবিতা নিয়ে নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা কবিতাপাক্ষিক ছাড়া কেউ করে না  । সারাবাংলা এমনকী ভারতের বাইরেও যখন কবিতাপাক্ষিক পাতা মেলে তখন আমাদের গর্ব হয় । কবিতাপাক্ষিক আজ শুধু কবির পরিবার নয় , বাঙালির পরিবার ।

দেবাশিস সাহা-কে ধন্যবাদ।

এরপর দীপংকর সরকার । আমার জীবনে দীপংকর সরকার একাধিক ।এই দীপংকর সরকার চাকদা-র।সুমিতেশ সরকার সূত্রে কবিতাপাক্ষিক। এই দীপংকর কবিতাপাক্ষিক প্রকাশনার প্রথম ক্রেতা। প্রথম গ্রন্থমালা সিরিজটি কিনেছিল কলকাতা প্রেস ক্লাবে। সেই হিসেবে তো দীপংকরের নাম কবিতাপাক্ষিকের ইতিহাসে লেখা হয়ে গেছে।

দীপংকর সরকার লিখেছিল :

' কবিতাপাক্ষিকের সঙ্গে যুক্ত থাকায় অন্যান্য সকলের মতো এ গর্ব আমারও , বলতে পারেন অহংকারও। '

দীপংকরকেও ধন্যবাদ।

এরপরের জন তাপস দাস। তাপস লিখেছিল :

' যা কিছু জন্ম দেওয়া, খুব শক্ত। লালন পালন করা আরও শক্ত। এ ব্যাপারে প্রভাত চৌধুরীর ওপর সকলের গভীর আস্থা। এতবড়ো একটা কাজ যত্ন নিয়ে করা, সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের কবি ও সৃজনশীল মানুষজনের সাথে সেতুবন্ধন করা সেতো শুধু কথার কথা নয়। ...   ...   ... ছোটো ছোটো কাজের মাধ্যমে আরও গভীরে যাওয়ার সুবাদে বুঝলাম কবিতাপাক্ষিকের এত সতেজভাবে বেড়ে ওঠার কারণ। দূরের মানুষকে কাছে আনার অস্ত্র যে তাদের মুঠোয়। অস্ত্রটি ভালোবাসা ।'

একদম হককথা বলেছে তাপস দাস।  এই ভালোবাসা দিয়েই সবকিছু জয় করার স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু !

এখন কোনো কিন্তু নয় । কিন্তুগুলো তুলে রাখলাম। পরে অনেক কিন্তু বলা যাবে।

আটপৌরে কবিতা ৯৮৬-৯৯০ || নীলাঞ্জন কুমার || তথ্যপ্রযুক্তি যুগের কবিতা

আটপৌরে কবিতা

নীলাঞ্জন কুমার


৯৮৬

আন্দোলিত/  উড়ন্ত/  এগোন
        ) ঝাপটানি  (
    বাতাস সরে সরে যায় ।

৯৮৭

শক্তি / তেজ/  ভয়হীনতা
        ) তাকত  (
লড়াকু মানুষের সঙ্গে থাকে ।

৯৮৮

দেবী/  নারীশক্তি/  অশুভবিনাশিনী
         )  মহিষমর্দিনী  (
    ঘরের মনের প্রাণের উৎসব ।

৯৮৯

আমোদ/  ব্যতিক্রম/  মুক্তি
          ) পরব (
   বোঙার প্রসাদ বড় মধুর !

৯৯০

বর্তমান/  হালহকিকত/  খবরাখবর
          )  হালচাল  (
     সব কুছ ঠিকঠাক হ্যায় ।


বিশ্বজিৎ || কবি || কবিতা

বিশ্বজিৎ

কবি




বিপ্লব ও সম্পর্ক

পাশাপাশি হাঁটছে।

ক্ষতবিক্ষত সময় নিয়ে

পার হচ্ছ দুবেলা,

কত আশ্চৰ্য ছুটে ছুটে

আসছে।কত স্তব্ধতা

ছায়ার ভেতর


তুমি উন্মাদ!

তুমি অবিচল।


নিকোটিনের গন্ধে

ম ম করছে স্মৃতি...

কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার ভালবাসার বেলা অবেলা । অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়

 কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার 



ভালবাসার বেলা অবেলা । অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় । নাথ পাবলিশিং । কুড়ি টাকা । 


ভালোবাসা এক বিচিত্র বিষয় । যাকে মানুষ বিভিন্ন চোখে দেখে । যা স্বপ্ন আনে,  আনে মানবতা,  নিখাদ উজ্জ্বল প্রেরণা ।তাই কবি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আটান্নটি অনু কবিতার সমন্বয়ে গঠিত কাব্যগ্রন্থ ' ভালোবাসার বেলা অবেলা '-য় ভালোবাসার বহুরূপ প্রত্যক্ষ করি : ' এখন আমার সূর্যমুখী বেলা/  ভ্রুযুগলে গড়ায় দুপুর হেসে/  মেদুর কিছু মেঘ ছিল দু চোখে/  সূর্য মুখীর মাঝে আড়াল খোঁজে ।' ( ' সূর্যমুখী বেলা ') , ' ধ্রুপদী শব্দের মতো/  তুমি ভেঙে যাও/  টালমাটাল/  বিন্দুবাসরে আনত ঘ্রাণপর্বে / আপেক্ষিক শর্তদান/  প্রণয়কাল । '( ' আপেক্ষিক ')। ' প্রাচীনের কাছে চাইলে/  উড়ে এসে জড়ো হয়/ কিছু ওম সময় করতলে/  আগামীকে ' ওম' দেবে বলে । ' ( ' উত্তাপ ')-এর মতো কবিতা পড়তে পড়তে ।

           কবির এই কাব্যগ্রন্থে প্রধান বিষয় যখন ভালোবাসা,  তখন তার রূপের ভেতরে গড়ে উঠবেই যৌনতা,  কিন্তু অতি সন্তর্পণে তা ব্যক্ত করেন, ফলে তাঁর পরিমিতিবোধকে সাবাশি দিতেই হয় ।কবিতার নাতিদীর্ঘ তার কারণে কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়তো তাঁর কবিতা  কৃত্রিমতা আনে, কিছু ক্ষেত্রে সাধারণ কবিতার দৈর্ঘ্যপ্রস্থতা দাবি করে । 

                 ' শব্দের আকাশ থেকে/  প্রিয় শব্দ পদ নির্বাচন/  শেষ প্রসাধনে ছিল/ নম্র ঘাসের আস্তরণ । ' 

( ' প্রসাধন  ') কবির  এই মনোভাব সারা গ্রন্থটিতে প্রকট বলে ' ভালবাসার বেলা অবেলা ' মনোযোগ আকর্ষণ করে । কবি দীর্ঘ দিন কবিতার  সঙ্গে সহবাস করছেন,  কবিতার গতিপ্রকৃতি নিয়ে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল । ফলে যা লিখুন না কেন তিনি মনোযোগ আকর্ষণ করবেন এতো বলাই যায় । বাদল দাস প্রচ্ছদ ও অলংকরণে যত্নবান ।

মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২০

আশ্চর্য দহন || কমলেশ নন্দ || কবিতা

আশ্চর্য দহন

কমলেশ নন্দ





১.

কিছু মানুষের অতলান্তিক লোভ আর আত্মতুষ্টিগত মনোবিকলনে আজ সমগ্ৰ মানবজাতি প্রতিনিয়ত মৃত্যু ভয়ে অস্থির। অমৃতের পুত্র হে মানব তোমার কীর্তিই তোমার পরিচয়। প্রযুক্তির চরম শিখরে পৌঁছেও আজ যে আমরা কতটা অসহায় এই শিক্ষা কী যথেষ্ট নয়! 

২.

প্রকৃতি আর মানুষের সরল সমীকরণ আমরা বুঝেও প্রতিদিন না বোঝার ভান করি। কিছু মানুষের লাগামহীন রসনাতৃপ্তিতে প্রকৃতির নির্মল প্রাণ, রূপ-রস-গন্ধ-স্পর্শ সবকিছুই আজ ছন্দহীন। তবে একেই কী বলে সভ্যতা? 

৩.

আমার ছয় বছরের বালক পুত্রের সরল প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারছি না। শিশুমন প্রশ্ন তোলে, বিজ্ঞানীরা রোবট তৈরি করতে পারে, কিন্তু রোগ প্রতিরোধের ওষুধ তৈরি করতে পারছে না কেন? পুলিশ চোর ডাকাত ধরতে পারে, তাহলে যারা পশুপাখিদের হত্যা করছে তাদের ধরতে পারছে না কেন?

৪.

অপরাধ আর অপরাধীকে চিহ্নিত করতে পেরেও মুখে কুলুপ এঁটে ঘুমিয়ে থাকা, এটাই যেন নিয়ম!  


আজ শুধু বলতে ইচ্ছে করছে,


কে যেন বলছে।

আলোটা সরিয়ে নাও হে।

সরিয়ে নাও এই সুখ সাচ্ছন্দ, মিথ্যে সোহাগ।


দেখো দীর্ঘ মৃত্যুহীন এক তরঙ্গিত শশ্মান থেকে ভেসে আসছে আগুনের গান।

হে বিষণ্ণ ঋষি!

লিখে রেখো আমাদের কথা।

আমরা বেড়ে উঠেছি, বড় হতে শিখিনি।

বাঁচা-মরার তফাৎ বুঝিনি।


প্রতিদিন প্রশ্ন করো নিজেকে নিজেই।

দেখো একটিও ফুল ছড়ানো নেই সে পথে।

যে হাতে পায়রা ওড়ায় ওরা।

কত রক্ত মেখেছে সে হাত!

কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার প্লাবিত উঠোনে কথাকলি । অমর চক্রবর্তী

কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার 



প্লাবিত উঠোনে কথাকলি । অমর চক্রবর্তী । পত্রলেখা । দশ টাকা ।


কবি অমর চক্রবর্তী র  চতুর্থ কাব্যগ্রন্থ 'প্লাবিত উঠোনে কথাকলি ' যা দীর্ঘ চব্বিশ বছর আগে প্রকাশিত,  তাকে পুনঃপাঠ করতে গিয়ে বুঝতে পারি কবিতাগুলি এখনো কতটা প্রাসঙ্গিক । এই প্রাসঙ্গিকতা বিশেষভাবে পাওয়া যায় তাঁর বহু পংক্তিতে, যেমন:  ' আজ নাকে শুধু দারিদ্র্যের গন্ধ/  চোখে অশ্লীল দৃশ্য/  কানে বেদনা হাহাকার ' (' দৃশ্যকাব্য ') , ' ধর্ম ডেটল হলো না আজও/  বরং ধর্মই কাটে আঙুল ' ( ' প্রতারণা ') , ' ডানামেলা বকুলকে তাই বললুম/  হে সুচরিতা,  চশমা রাখো/  ক্যারাটে শিখে নাও দস্তুর মতোন ' ( ' স্থাপত্য ') - র মতো প্রান্ঞ্জল ও প্রাণবন্ত পংক্তি এখনো স্নায়ুকে টানটান করে রাখে ।

               একথা সত্যি,  জাত কবিদের ক্ষেত্রে যত পুরোনোই হোক তাদের ভেতরে কাব্যিক গাঢ়তা ও প্রাণবন্ত চেতনা প্রত্যক্ষ করি । কবির এখনকার কবিতা আরো গভীরতা পেয়েছে,  আর হয়তো আরো অসাধারণ দিকে যাচ্ছে । কিন্তু এই বইটিতে বলা যায় সেই গভীরতা না থাকলেও জীবন দেখার প্রবণতা কিন্তু জাদু করে রাখে ।

            কবির কবিতার প্রধান গুণ হল সরলতা ও বাস্তব তাকে  আশ্রয় করে সুঠাম কবিতা লেখার প্রবণতা । সে কারণে মনে গেঁথে যায়:  ' কুড়োনো জন্ম আমাদের/  কুড়িয়েই যাব  - একদিন কুড়িয়েই/ পাবো পূরবী বিভাস ।' ( ' পূরবী বিভাস ' )।।প্রচ্ছদকারের নামহীন কালার কম্বিনেশনও গঠন দাগ কাটে না ।

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য ১৭৬ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক বিভাগ

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য

প্রভাত চৌধুরী



১৭৬.

কোচবিহারের হিমাংশু দেব লিখেছিল :

' আমাদের কবিতাপাক্ষিক। আমি এবং কবিতা পাক্ষিক।'

এরপর হিমাংশু লিখেছিল তার প্রেম এবং কবিতা লেখার প্রচেষ্টার কথা। এসব স্বীকারোক্তি সরল এবং সহজ। এরপরের পর্বে হিমাংশু যোগ করেছিল :

' কবিতাপাক্ষিক ২৩৬-২৩৭ সংখ্যায় গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিশা থেকে বিদিশায় আমায় ২০ বছর এগিয়ে দেয়। আমার জীবনের পিছিয়ে পড়া ২০ টা বৎসর খুঁজে পাই দিশা থেকে বিদিশায়। প্রতীক্ষা করে থাকি প্রতিটি সংখ্যার জন্য। এই কবিতাপাক্ষিক আমার , আমাদের। কবিতা এবং কবিদের সাথে যোগাযোগের মিলনায়তন এই কবিতাপাক্ষিক।তথ্য- প্রযুক্তির যুগে আধুনিতোত্তর কবিতার হাতিয়ার কবিতাপাক্ষিক , সে এক আশ্রয় মাধ্যম কবিতাকে সাথে নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে এগিয়ে যাওয়া সামনের দিকে ।

কবিতাপাক্ষিক প্রকাশনা আমার সামনে মেলে ধরে পোস্টমডার্ন কবিতা বিচার , পোস্টমডার্ন মানচিত্র ,আধুনিকতার বিরুদ্ধে কথাবাত্রা , পোস্টমডার্ন বিড়ালের সন্ধানে , এই সময়ের পরের কবিতা, অধুনান্তিকতা ও ভবিষ্যতের কবিতা ইত্যাদি।'

শেষের দিকে একটি বহু মূল্যবান কথা লিখেছিল :

' আজ আমি বুঝতে পারছি কোন রাস্তায় হাঁটব শব্দদের সাথে নিয়ে এগিয়ে যাবার জন্য  '।

[26/10, 8:35 pm] Kobi Prabhat Chowdhury: ১৭৬ ॥ শেষাংশ


সূচিপত্রের পরের আমাদের একজন সুমন ঝা। সুমন লিখেছিল :

' ১লা বৈশাখের এক হাওয়া ভরা বিকেলে সাগরদিঘির বর্ণময় জীবনযাপনকারী এক মস্ত পাকা যুবকের হাত ধরে আমার  জীবনে এসে যায় কবিতা পাক্ষিক। আচ্ছা এটা আবার কী? কিছু এলোমেলো লাইনের সংস্করণ?  সত্যি বলছি , কবিতা নিয়ে আগে অন্য ধারণা ছিল, আস্তে আস্তে নিজেই ঢুকে পড়তে থাকলাম, ডুবে যেতে থাকলাম আর একসময় হারিয়ে গেলাম একটি গভীর ঘুম স্বপ্নময় এক দুর্দান্ত জীবন আর অগোছালো হাঁটাচলার মধ্যে নিজেকে ছড়িয়ে দিলাম। প্রতিটি পথের বাঁকে প্রচুর গুপ্তকথা থাকে , থাকে নতুন নতুন অচেনা মুখ অজানা সুরের গানে মিষ্টি মিষ্টি হাসি সবার পাশে আভিও যেন নিজেকে খুঁজে পেলাম বাদাম আখরোট কাজুর দেশে প্রচুর রংবেরঙের কবিতা নিয়ে এল কবিতাপাক্ষিক , আমাদের কবিতাপাক্ষিক  ' ।

পারফেক্ট সুমন ঝা। একদম পারফেক্ট।

আটপৌরে কবিতা ৯৮১-৯৮৫ || নীলাঞ্জন কুমার || ধারাবাহিক বিভাগ

আটপৌরে কবিতা 

নীলাঞ্জন কুমার




৯৮১

অসহায় / সম্বলহীন/  সাহায্যপ্রার্থী
         ) বিপন্নতা  (
    আর্তের সেবা পরম ধর্ম ।

৯৮২

দুরূহ/  আদেশ/  দুর্গম
      ) অলঙ্ঘ  (
মৃত্যুকে লঙ্ঘন করা যায়?

৯৮৩

সিদ্ধান্ত/  সমাধান/  ফলাফল
        ) নির্ণয়  (
হলে তখন বড় আনন্দ ।

৯৮৪

জলরাশি/  জনজীবন/  জলাকার
          )  সপ্তসিন্ধু  (
নৈসর্গিক  ভয়াল তরঙ্গ উদ্ভাসিত ।

৯৮৫

সামুদ্রিক/  সমুদ্রপ্রাণ/  সমুদ্রজীবন
          )  সমুদ্রজাত  (
       যা সমুদ্রের একান্ত অঙ্গ ।

সোমবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২০

কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার ঘনিষ্ঠ বসবাস । নমিতা চৌধুরী

কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার 



ঘনিষ্ঠ বসবাস । নমিতা চৌধুরী । নান্দীমুখ সংবাদ । কুড়ি টাকা ।


পুরোনো কবিতার বই পুনঃপাঠ করতে গিয়ে বহুলাংশে চূপ করে থাকা উৎকৃষ্ট পংক্তি যখন প্রকাশ্য হয়,  তখন নিজেকে আবিষ্কারক আবিষ্কারক মনে হয় । যেমন হয়েছে কুড়ি বছর আগে প্রকাশিত কবি নমিতা চৌধুরীর  কাব্যগ্রন্থ ' ঘনিষ্ঠ বসবাস ' পড়তে গিয়ে । এর পর্যাপ্ত কারণ এই সব পংক্তি:  ' এ যেন আচমকা ভুল বই-এর পাতা খুলে বসা/  এবং অবাক চোখে তাকিয়ে দেখা / কত না জানা ঘুমন্ত ইতিহাস  / শুয়ে আছে গুটি সুটি মেরে । ' ( ' পুরাপর্ব '), ' পথ এবং পথ শেষের দুরত্ব চিহ্ন ঘুচিয়ে/  এখন সে ভাঙা ডালের শুকনো পাতা কুড়োয় ' ( ' নিখোঁজ মানুষের গল্প '),' সন্ধি এবং বিবাদের মাঝখানে/  আমরা পরস্পর পরস্পরকে দেখব প্রবীন বিস্ময়ে ।' ( ' ভ্রমণ এক ')।

           কবির কবিতার প্রধান গুণ হল অন্তঃসলিলা ব্যন্ঞ্জনা । তা যখন ধীরে ধীরে উপসংহারে পৌঁছোয় তখন কথাই নেই। ' আমরা লোভীর মতো মেঘের দেওয়াল/  চেটেপুটে তৃষ্ণা মেটাই ' - এর মতো দুষ্টুমি মেশানো লাইনও পাই তাঁর কাছে । তিনি পাঠকের কাছে ধরা দিতে চান,  যাতে তারা তাঁর কবিতার প্রতি তন্নিষ্ঠ হয় । 

     কবি তবু কিছু কিছু সময় শ্লোগানের সামনে আসেন,  তখন তাঁর কবিতা মে দিবস  শিশু শ্রমিক ভূমিহারা দের নিয়ে কথা বলে । যা এই বইটিতে পরিহার করলে বইটির মান বাড়তো । '  ঘনিষ্ঠ বসবাস ' এ কারণে ভালো লাগে কারণ তার মধ্যে মিলনের গন্ধ ঘোরে । যোগেন চৌধুরীর প্রচ্ছদের স্কেচও তার জানান দেয় ।

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য ১৭৫ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক গদ্য

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য

প্রভাত চৌধুরী



১৭৫.

আমার এই লেখার শতকরা একশো জন পাঠকই তৃপ্তি সান্ত্রা-কে চেনেন।

সেই তৃপ্তি-র কলমে ' আমাদের কবিতাপাক্ষিক ' ঠিক কেমন ছিল তা একবার দেখে নেওয়া যাক। আমার দ্যাখাদেখিতে আপনারাও দেখে নিন তৃপ্তি-র কবিতা- পাক্ষিক-কে। পড়তে থাকুন শুরুর গুটিকয় কথা  :

' বাজারি সংবাদপত্রের উত্তর-মৃগয়া পর্বের অল্পকিছু আগে কবিতাপাক্ষিকের ডানার সঞ্চারণ শোনা যাচ্ছিল আমাদের মফস্ সল শহরে। বইমেলায় বা কলকাতার বইপাড়ায় যাদের যাতায়াত তারা বাদে অন্য সবার পক্ষে লিটল ম্যাগাজিনের হাল হকিকৎ জানা বেশ মুশকিল। বোতাম টিপে বিশ্বকাপ দেখা বা যুদ্ধ দেখার চাইতে অনেক কঠিন মফস্ সলের কলকাতা এবং কলকাতার মফস্ সলে পৌঁছনো। ...

দশ বছর ধরে একটি পাক্ষিক কবিতা কাগজ যেন সত্যি নয় ---- স্বপ্ন । স্বপ্নের ডানাও কখনো ভারী হয়ে যায় --- যখন তত্ত্ব --- যখন পোস্টমডার্নিজমের ভারী পালক । ...   ... যুদ্ধ হিংসা সফলতার গ্লানিতে জেরবার হয়ে অসুস্থ পৃথিবীর মানুষের প্রেসক্রিপশনে এই বাকশস্য হয়তো একদিন একমাত্র শুশ্রুষা হয়ে উঠবে আর পাক্ষিক তখন শতবটের ডানা। অজস্র মৃত্যু --- তবুও দৃশ্যের জন্ম হোক '।

তৃপ্তি সান্ত্রা - এই প্রতিক্রিয়ার পর উপস্থিত করছি

রিমি দে-কে। 

রিমি দে লিখেছিল বা লেখাটা শুরু করেছিল :

' কে বলেছে কবিতার তেমন একটা পাঠক নেই। ' এই বাক্যটি দিয়ে ।

রিমি আরো লিখেছিল :

' প্রচুর কবিতা লেখা হচ্ছে। জীবন জটিল হচ্ছে দিনকেদিন । জীবনের মতো। সময়ের মতো। কখনো বা সময়কে ফেলে বহুদূর এগিয়ে যায় । যেন কল্পবিজ্ঞান। যেন কবিতা নিয়ে এক চরম বেঁচে থাকা । ঠিক এই সময়ে অলিখিতভাবেই এর ভার গ্রহণ করেছেন কবিতাপাক্ষিক । না, তার পত্রিকা বলেই তার গুণগান নয়  এ যেন শুক্ল আর কৃষ্ণপক্ষের মতোই সত্যি ।কবিতায় মোড়া পক্ষকার কবিতা- পাক্ষিক ।'

সঞ্জয় সোম লিখেছিলেন :

' একটু একটু করে হেঁটে চলেছি। জখম হয়ে বসে পড়েছি। কখনো একটু হোঁচট খেয়েছি। কিন্তু এতটুকু শুয়ে পড়িনি। সামান্য বিরতির পর আবার শুরু করেছি হাঁটতে। কোনো আদবকায়দা শিখিনি।বলা ভালো , শেখাও হয়নি। '

এরপর সুবীর সরকার-এর ব্যক্তিগত জীবনকথা ছিল। তারপর :

'এই এক জায়গায় ঘর অবশ্যই আমাদের কবিতা-পাক্ষিকে। প্রভাতদা অনুপমের মুখ দিয়ে বলেছেন--

ঘনত্ব জানবার জন্য বাড়াতে হয় দূরত্ব। ঘনত্ব বলা হউক, কী আসক্তি , কী সম্পর্ক , কী বন্ধন এখানেই শুরু হয় বৃষ্টিপাত। মাটি ভিজে ওঠে। জল পেয়ে সঞ্জীবিত হয়। পরিবেশকে দূষণমুক্ত করে। আমরা জোরে জোরে শ্বাসগ্রহণ করে আরামবোধ করি। অপেক্ষা করি পাক্ষিকের পরবর্তী সংখ্যার জন্য।'

এসব কথা কিন্তু প্রথম দশ বছরের কথা। পরের অনেক বছর বাকি থাকতে দেব না। একটা জায়গায় লেখা থাকুক আমাদের অহংকারের কথা , আমাদের স্পর্ধার কথা ।

আটপৌরে কবিতা ৯৭৬-৯৮০ || নীলাঞ্জন কুমার || ধারাবাহিক বিভাগ

আটপৌরে কবিতা

নীলাঞ্জন কুমার


৯৭৬

শত্রুতা/ জোচ্চোর/  ঠগ
       ) বেইমানি  (
করলে ক্ষোভ ধিকিধিকি জ্বলে ।

৯৭৭

ধর্ম/  গোঁড়া/  শাস্ত্রীয়
     ) সনাতন (
মানুষ বিশ্বাসে ধারন করে ।

৯৭৮

লক্ষ্মী/  লেনদেন/  অর্থনৈতিক
             )  বিনিয়োগ(
নাহলে অর্থ বাড়বে  কোত্থেকে!


৯৭৯

অধঃগামী/  দুর্বিপাক/  হতাশা
           ) মন্দা  (
পৃথিবীর অর্থনীতির এখন মন্দা ।

৯৮০

স্তাবক/  চাটুকার/  পা- চাটা
          ) চামচামো (
মানুষের চরিত্রেই শোভা পায় ।

শব্দ'৬ || ছয় শব্দের আটটি কবিতা || আশিস চৌধুরী

শব্দ'৬ || ছয় শব্দের আটটি কবিতা

আশিস চৌধুরী



১॥
তুমি যেন দীর্ঘ এক দুরূহ কবিতা

২॥
শুধু একবার ছুঁতে চাই তোমার বাঁশিটি

৩॥
ঘরের ভিতরেই এক পড়শী বসত করে

৪॥
হারিয়ে গেছে সেই ছোট্ট রাবারের বল

৫॥
শমন তিলেক দাঁড়া শেষ করি লেখা

৬॥
আর কত দূরে  বকুল বিছানো পথ?

৭॥
আমাদের মিলিত হওয়ার সেতুগুলি ভাঙছে ক্রমশ

৮॥
ঈশ্বর তোমার চশমার পাওয়ার বদলাও এবার

রবিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২০

একগুচ্ছ হাইকু || সুধাংশুরঞ্জন সাহা || কবিতা

একগুচ্ছ হাইকু

সুধাংশুরঞ্জন সাহা



(এক)

আমার আছে

নানা রঙের পাখি

মায়াবী চোখে ।


(দুই)

দুদিন ছিল

একটু মনমরা

ঘরে বাইরে ।



(তিন)

আজ আবার

মানুষ মেখেছে কি

শীতের ঢেউ !


(চার)

বিপদ ভুলে 

কারা যেন মারছে

মারণ ঝাঁপ !


(পাঁচ)

আলোর ভাষা

পড়তে ভুলে গিয়ে

লিখছে রাত !


(ছয়)

অলীক চোখে

জাদুর নানা খেলা

মেলছে ডানা ।


(সাত)

মানুষ নিয়ে

শহর ঘিরে ফের

ভাববে কেউ !


(আট)

নিষেধ ভুলে

আইন হাতে নিয়ে

কী খেলা এটা  !


(নয়)

জীবন নিয়ে

ছিনিমিনি খেলায়

মেতেছে রাত !


(দশ)

বলছি তাই

এবার শুরু হবে

শেষের গান ।


(এগারো)

এই সময়ে 

অবাধ মাতামাতি

মিলবে ফল ।


(বারো)

বিষাদ নদী

বইছে একা একা

খুব নীরবে ।


(তেরো)

তুমি আমার

হারানো কারুভাষা

আবছা ভোরে।


(চোদ্দ)

ফিরছে কারা

আমাদের ধূসর

বনের পথে !


(পনেরো)

জীবন নিয়ে

গাইবে কারা গান

শেষের বেলা !

সৌমিত্র রায় -এর জন্য গদ্য ১৭৪ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক বিভাগ

সৌমিত্র রায় -এর জন্য গদ্য

প্রভাত চৌধুরী



১৭৪.

সব্যসাচী রায়চৌধুরী এই নামটি দেখতে পাচ্ছি ,  আমাদের কবিতাপাক্ষিক শীর্ষক তার লেখাটিও দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু তার মুখ মনে পড়ছে না। সে লম্বা না বেঁটে , ফরসা নাকি শ্যামবর্ণ সেসবও মনে পড়ছে না। ২০০৩ থেকে ২০২০ , মাত্র ১৭ বছরে সব উধাও হয়ে গেল !

সেসব নিয়ে ভাবতে বসছি না। লিখছি সব্যসাচী কী লিখেছিল , সেই লেখার কথা :

' পরের অ্যাসাইনমেন্ট কলকাতা বইমেলা '৯৩। কবিতা

-পাক্ষিকের স্টল পড়ল এস ২২৬ নম্বরে। সে এক খোশগল্পের মক্কা বিশেষ। মাঝে মাঝে সেটা ক্যাওস থিয়োরি ছুঁয়ে দিলে প্রভাতকাকু দূর করে দিত আমাদের , মানে কবিতাপাক্ষিক সি টিম , অর্ণব , বাপন, সৌমিত্র , রাজেশ।তখন আমরা সিগারেট , ট্যাপ আর কাউন্টারে মেলা প্রাঙ্গণ জমিয়ে রাখছি উদ্ভট তত্ত্ববাগ্মিতায় , বলা ভালোবাওয়ালিতে । শক্ত হচ্ছে মানবশৃঙ্খলের দৃঢ়বদ্ধতা তার সঙ্গে জানতে পারছি খুচরো ডিটেল । যেমন বাইরে গম্ভীর ভাব দেখালেও সুমিতেশদার মধ্যে অনেক দুষ্টুমি লুকানো। কী দুষ্টুমি সেটা অবশ্য লিখছি না,  কারণ আছে। তাছাড়া আমার ' সি ড্রাইভ'টা নেহাতই জালি, তাই পরপর সব সাজানোর চেষ্টা বৃথা '।

এরপর সুব্রত চেল কথা। সুব্রত কীভাবে শুরু করেছিল লেখাটা :

' আমার কবিতাপাক্ষিক না আমাদের কবিতাপাক্ষিক এই টাইটেল স্থির করতে দশমিনিট লেগে গেল।'

... ...   ... ' অনুষ্টানের পর তখন রাত্রি দশটা, প্রভাতদা , আমি , সম্ভবত সুজিত হালদার আর কেউ কি ছিল পোস্টার আঠার পাত্র নিয়ে চললুম রবীন্দ্রসদন। পোস্টারে ছয়লাপ করে দিতে হবে কাল পঁচিশে বৈশাখ রবীন্দ্রসদনের মানুষজন ঘুম থেকে উঠে যে নামটি পড়বে তা হল কবিতাপাক্ষিক। রাত্রি ১২টা । একটায় আমরা ফিরে এলুম কালীঘাটে। আমাদের যাত্রা হল শুরু।'

সুব্রত চেল আরো লিখেছিল :। 

' সেই কবিতাপাক্ষিক আর আজকের কবিতাপাক্ষিকের বেসিকেলি কোনো পার্থক্য নেই  সেদিনের যাত্রাসংগীত আজকের চলার পথের গান একই সুরে গলা মেলাচ্ছে । কবিতাপাক্ষিক প্রথম দিন থেকে ছিল তরুণদের ভাবনার প্রকাশ  । আজও তাই আজকের কবিতার সঠিক প্রকাশ এবং যার চেষ্টাই তাই তার বিচ্যুতি ঘটেনি । যথার্থ সম্মান দিয়ে পরীক্ষা - নিরীক্ষা সে সবসময়ই করে যায় । একটা কাখজ যখন শুরু হয় তখন যে কতগুলো স্বপ্ন দেখাবে বলে মনে রাখে। আমিও মাঝে মাঝে বিস্মিত হই সত্যিই এতগুলো স্বপ্ন মানুষ দেখতে পারবে । যদি ঘুভ ভেঙে যায় । এই ১০ বছরে কবিতাপাক্ষিক কোথায় নেই ? ধুলোয় ফুঁ দিয়ে দেখার সাহস হয়নি  ।'

সুব্রত আরো একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছিল :

" ইতিমধ্যে যুগটার নামও চেঞ্জ হয়ে , হয়ে উঠল পোস্টমডার্ন  ' ।

হ্যাঁ সুব্রত এটাই আমাদের লক্ষ্য ছিল। লক্ষ্য আছে। সেদিনের অনেক সঙ্গী এখন আমাদের বিরোধিতায় নেমেছে। কিন্তু আমরা যে বাংলাকবিতাকে অলরেডি বদলে ফেলেছি , সেই বদলকে অস্বীকার করবে কীভাবে ! চোখ খোলা রেখে সাম্প্রতিক বাংলাকবিতাকে দেখতে হবে। শুধু দেখলেই হবে না, মনোযোগ দিয়ে পড়তেও হবে। তুলনামূলক আলোচনা করতে হবে। সেটা করতে পারলেই তোমার ঘোষণার সত্যতা প্রমাণিত হবে।

আটপৌরে কবিতা ৯৭১-৯৭৫ || নীলাঞ্জন কুমার || ধারাবাহিক বিভাগ

 আটপৌরে কবিতা

নীলাঞ্জন কুমার





৯৭১

আনুগত্য/  ভালোবাসা /বশ্যতা
               ) সমর্পণ  (
       দেখে শুনে করতে হয় ।

৯৭২

মার/  দাওয়াই /   শাস্তি
      ) আড়ংধোলাই  (
প্রয়োজন হলে লাগে বৈকি?

৯৭৩

অবিশ্বাস/  মুহূর্ত/  দিবানিশি
       ) নিশিদিন  (
দিবস রজনী আমি তার ।

৯৭৪

তোষামোদ/  আনুগত্য/  বশংবদ
          ) কচলাকচলি  (
    করলে কারোর লাভও হয় ।

৯৭৫

ব্যবস্থা/  আঁটঘাট/  স্বস্তি
        ) বন্দোবস্ত  (
করলে পরে দুর্ভাবনা নেই ।

কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার শিল্পের ব্যাকরণ , ভারত ও বিশ্বশিল্প

 কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার 



শিল্পের ব্যাকরণ , ভারত ও বিশ্বশিল্প । অরূপ চন্দ্র । বাসভূমি প্রকাশন । আড়াইশো টাকা ।


অঙ্কন শিল্প অর্থাৎ ললিত ও কারু কলা  ভিত্তিক তত্ত্বজ্ঞানের জন্য যে  ব্যাকরণের প্রয়োজন আছে,  তা উপলব্ধি করেই  গ্রন্থকার  অরূপ চন্দ্রের ' শিল্পের ব্যাকরণ,  ভারত ও বিশ্বশিল্প ' নামের গ্রন্থটির জন্ম । গ্রন্থ কারের চারু ও কারুকলা ব্যাখ্যার সহজতার গুণ  বইটিকে ধীরে ধীরে পড়িয়ে নেয়।  সবচেয়ে আশ্চর্য লাগে এত কঠিন একটি বিষয় এখানে সহজভাবে পরিবেশিত হয়েছে তার জন্য । সারা গ্রন্থটি যেভাবে অত্যন্ত পরিকল্পনার ভেতর দিয়ে ধাপে ধাপে তত্ত্ব শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য কতখানি  যত্নবান তা পরিণত পাঠকের বুঝে নিতে অসুবিধে হয় না ।

                দুশো বত্রিশ পৃষ্ঠার এই গ্রন্থটিতে চিত্রশিল্প নিয়ে কি নেই! চিত্রশিল্প কাকে বলে তার সাধারণ ব্যাখ্যা থেকে ছবিতে আলোছায়ার প্রভাব,  টেম্পেরা, রুট ক্রাফট,  সিরামিকস,  বালু শিল্প,  ডোকরা শিল্প,  স্থাপত্য,  কার্টুন,  ভারতীয় ষড়ঙ্গ , ভারতীয় শিল্প কলার ভাষা  ইত্যাদির মতো শিল্পের বিভিন্ন দিকের বিশ্লেষণ,  প্রয়োগ শিক্ষা সর্বোপরি লেখার মুন্সিয়ানা মুগ্ধ করে ।

              জানানো উচিত গ্রন্থের ছটি সংস্করণ ইতিমধ্যে প্রকাশিত , যা আনন্দ জাগায়।  এছাড়া বইটির ইংরেজি অনুবাদ গ্রন্থ ' The Theory Of  Art ' সাড়া ফেলেছে । অচিরেই হিন্দি অনুবাদ প্রকাশ পাবে।  বইটির আরো গুরুত্বপূর্ণ দিক গ্রন্থকার সারা পৃথিবীর শিল্পচর্চার দিক তুলে ধরেছেন মহাদেশ ভিত্তিক । এছাড়া ভারতের ও বিশ্বের কিংবদন্তি শিল্পীদের পরিচয় উপরি পাওনা । তবে ভারতের ক্ষেত্রে বাঙালি শিল্পীদের সঙ্গে অন্যান্য প্রদেশের শিল্পীদের মধ্যে রবি বর্মা ছাড়া  অন্য কেউ অন্তর্ভুক্ত না হওয়া রহস্য থেকে গেল । প্রচ্ছদে পিকাসোর ' স্বপ্ন ' ও পশ্চাৎ প্রচ্ছদে বাংলাদেশের সাহাবুদ্দিনের অসামান্য ছবি বইটির মান বাড়িয়েছে ।

শনিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২০

দুটি চাকা || সায়ন বক্স || কবিতা

 


দুটি চাকা 
সায়ন বক্স 





হাঁটতে হাঁটতে হটাৎ দুটি চাকা থেমে পড়ল মাঝপথে
মুখ ফিরিয়ে চলে যায় সন্ধ্যা
এখন পাখিদের বাসায় ফেরার সময় হয়েছে 
ক্ষনিকের আলাপ সেরে-মেঘের ক্লান্ত মুখপানে চেয়ে বসে থাকে একটি ধ্যানমগ্ন লাঠি
                            যেখানে আমার কবর

নৌকায় মিটমিট জ্বলা আলো, প্রেমিকার নগ্ন দেহ 
এসব এখন আর আমায় ভাবায় না

দুটি লাল চোখ চেয়ে থাকে...

আমি হারিয়ে যেতে চেয়েছি-দূরে বহুদূরে 
যেখানে আমার নাম ধরে ডাকার কেউ থাকবে না 
কিছু কথা গপনীয় থাক,

সবাই মিলে সিনেমা হলে (১৯) || কান্তিরঞ্জন দে || উৎসব ও সিনেমা

সবাই মিলে সিনেমা হলে (১৯)

কান্তিরঞ্জন দে



উৎসব ও সিনেমা

------------------------------


       সিনেমা নিজেই একটা উৎসবের সমান ।  সবাই মিলে  সিনেমা দেখা কিংবা দেখতে যাওয়া একটা উৎসব । অনেকগুলো  সৃষ্টিশীল মানুষ  মিলে একটা সিনেমা তৈরি  একটা সমবেত উদযাপন । বর্তমান যুগে  একা একা সিনেমা যদিও  বা  দেখা যায়  , একা একা সিনেমা বানানো একেবারেই অসম্ভব ।


       সিনেমা কিসের  উৎসব ? কিসের আবার ? দৃষ্টিসুখের । প্রায় দু ঘন্টা কিংবা কাছাকাছি সময় ধরে আমরা ( বড় অথবা ছোট )  পর্দায় যে গল্পটি উপভোগ করি ----তা তো আসলে এক ধরণের বিনোদনই । অনেকে ভাবেন , বিনোদন মানে শুধুই হাসি , শুধুই আনন্দ । কিন্তু গভীর আনন্দেও তো আমাদের চোখে কখনও কখনও জল আসে । আসে না কি ? ভারতীয় হোক , অথবা পাশ্চাত্যের-----নন্দনতত্ত্ব বলে , এ-ও  এক ধরণের  গভীথ বিনোদন । ইংরিজিতে এর একটা গুরুগম্ভীর নাম আছে----- ক্যাথারাসিস । আবার , নায়ক- নায়িকার দুঃখে   কাঁদে  না , এমন পাষণ্ড দর্শক কেউ আছে নাকি । ওই  কান্নাও আমাদের চিত্তকে বিশুদ্ধ করে । এ-ও একধরণের  ক্যাথারাসিস বা আত্মমোক্ষণ ।


          যাই হোক, অতশত জটিল তাত্ত্বিক আলোচনায় আমরা যাব না । ভারতবর্ষ মহাকাব্যের দেশ । এ দেশের মানুষ  গোষ্ঠীগতভাবে  পাশ্চাত্যের  মানুষের  চেয়ে  অনেক বেশি আবেগ নির্ভর । অতএব, এ দেশে খুব বেশি যুক্তি বুদ্ধি নির্ভর  শুকনো ইন্টেলেকচুয়াল সিনেমা বানালে  দর্শক আনুকূল্য পাওয়া ভীষণ মুস্কিল । এ কথা বহুবছর ধরে বারেবারে প্রমাণিত ।


        সত্যজিৎ রায়ের কথাই ধরুন না । তাঁর তৈরি  পথের পাঁচালী দেখতে দেখতে কাঁদেন না , বা কাঁদেন নি , এমন দর্শক ভূ-ভারতে আছে নাকি ?  ভিন রাজ্যের কিংবা , ভিন দেশের অ-বাংলাভাষী মানুষেরা , এমনকি সাহেব-মেমরা পর্যন্ত , আজও পথের পাঁচালী দেখে চোখ মুছতে মুছতে হল থেকে বেরোন । এ হচ্ছে এক উঁচু স্তরের বিনোদন । সিনেমার গল্পের বিষয়বস্তু যত গভীর রসের হবে , পরিচালক যত গভীর দক্ষতার সঙ্গে সিনেমার ভাষার সার্থক প্রয়োগ ঘটিয়ে তাকে পর্দায় হাজির করতে পারবেন ------ দর্শক তত বেশি গভীর রসের বিনোদন পাবেন । অবশ্য,   দর্শককেও তার জন্য নিজেকে তৈরি করতে হবে বৈ কি । এ দুনিয়ায় মুফতে , বিনা পরিশ্রমে কোনও দিন কিছু পাওয়া যায় ?


       এই কথাতেই ফিরে আসি আমাদের বিগত কয়েকদিনের আলোচনায় । দর্শক সিনেমা দেখায় নিজেকে শিক্ষিত করতে চাইলে ,তাকে  শিল্প সংস্কৃতির প্রতিটি শাখা বিষয়েই ন্যূনত  ধারণাটুকু নিয়ে রাখতে হবে । আর  চিত্র পরিচালক হতে চাইলে তো প্রতিটি শিল্প মাধ্যম সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখতেই হবে।


       আগের দুটো কিস্তিতে সিনেমার সঙ্গে সাহিত্যের সম্পর্ক নিয়ে কিছু কথা বলেছিলাম । আগামীতে এ বিষয়ে আরও কিছু কথা বলে নিয়ে ভিন্ন প্রসঙ্গে যাব"খন ।


      শেষে আবার বলি , শারদ উৎসব যেমন শুধুমাত্র ঠাকুর দেখার ব্যাপার নয় , গভীর অনুচিন্তনের ব্যাপারও বটে । সিনেমাও তেমনি শুধুই চোখের খিদে মেটানোর ব্যাপার নয় ।

     যারা অতশত সাতপাঁচ ভাবতে রাজি নন, এমন কি, তেমন মানুষজনও   উৎসবের পাঁচদিনের মধ্যে একদিন , ঘোরাঘুরি , ঠাকুর দেখা , রেস্টুরেন্টে ভালোমন্দ খাওয়া দাওয়া-র পাশাপাশি  সপরিবারে সিনেমা দেখার জন্যও বরাদ্দ রাখেন।


       সিনেমা এখানেই বাঙালির কাছে উৎসবের অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে ওঠে ।

আটপৌরে কবিতা ৯৬৬-৯৭০ || নীলাঞ্জন কুমার || ধারাবাহিক বিভাগ

আটপৌরে কবিতা

নীলাঞ্জন কুমার



৯৬৬

মনোরঞ্জক/  ঝলমলে/  মনোগ্রাহী
           ) আকর্ষণীয়(
           মন চায় নিজের হাতে ।

৯৬৭

ছুটি/  বন্ধনচ্ছেদ/  সঙ্কটমোচন
              ) মুক্তিশ্বাস  (
         কত ভালোই না লাগে !

৯৬৮

নিরাপত্তা/  পাহারা/  রক্ষক
          ) সুরক্ষা  (
       কে আর না চায় !

৯৬৯

তাড়াহুড়ো/  উর্ধশ্বাস/  বুদ্ধিহীনতা
             ) হড়বড়  (
     সব কিছু তালগোল পাকায় ।

৯৭০

আলাপ/  কথা/  ঝগড়া
       ) মুখোমুখি  (
যা হোক সাক্ষাতেই হোক ।




কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার তোমাকে । কুমারেশ চক্রবর্তী ।

কিছু বই কিছু কথা ।  নীলাঞ্জন কুমার 



তোমাকে । কুমারেশ চক্রবর্তী । পাঠক । পঞ্চাশ টাকা 



তোমাকে শব্দের ভেতর দিয়ে যখন ধীরে ধীরে সার্বিক ' তোমাকে ' কিছু বলতে চাওয়া হয়,  হয়তো তখনই পূর্ণতা পায় ' তোমাকে ' বলা কথার সার্থকতা । কবি কুমারেশ চক্রবর্তী তাঁর 'তোমাকে ' কাব্যগ্রন্থের ভেতরে 

' তোমাকে বলছি ' কবিতায়  সর্বজনীন সত্য ধরেন: ' আর কোন প্রয়োজন নেই শুশ্রূষার .... যন্ত্রণার / আঘাতে আঘাতে আমাকে এই ছায়াপথে নিয়ে চলো ...'

তখন মনে আঘাত,  যন্ত্রণা , শুশ্রূষার পূর্ণ মানে ফুটে ওঠে । 

           কুমারেশ হয়তো বাস্তবিক ছায়াপথে যেতে পারেন না কিন্তু তিনি ঘুরপাক খান রিলিফ ক্যাম্পে , ময়লা কাঁথায় , উচ্ছিষ্ট ঠোঁটের চুমুতে,  শূন্য হুইস্কির গ্লাসে , খালাসিটোলায়,  পোস্টমর্টেম রিপোর্টে ....। ' সে কারণে তাঁর পংক্তি জীবন্ত হয়:  ' দিনান্তের ওপারে  ক্ষতবিক্ষত রয়ে যাই .../ খুবই সাধারণ সাইজের এক বেদনার পোড়ামাটি ... ! ' ( পোড়ামাটি)  , ' আমার হাতে দু চারটে লিফলেট , লিফলেটে অপমানিত অক্ষর- / সরলতা রেখে নেমে পড়েছে মাঠে ...' ( অপেক্ষা করো)  ।

      এইসব  বাস্তব চিন্তার সামনে দাঁড়িয়ে ' তোমাকে ' ছুঁয়ে যায় তার গভীরতা দিয়ে । অন্যান্য কাব্যগ্রন্থের মতো কুমারেশের কবিতার  ক্ষোভ বিক্ষোভ এ কাব্যগ্রন্থেও বর্তমান । তার ভেতর থেকে দিয়ে চলেছেন বহুমাত্রিক রহস্যময়তা । কুমারেশকে লিখতে হবে,  এখনো অনেক পথ বাকি । দেবাশিস সাহা র প্রচ্ছদটি একক থেকে বড় কে  চেনানোর চেষ্টায়  রত ।

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য ১৭৩ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক গদ্য

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য

প্রভাত চৌধুরী



১৭৩.

আজ মুরারি সিংহ-র কথা। ২০০৩ - মুরারির কবিতা-পাক্ষিক কমন ছিল একবার দেখে নেওয়া যাক।মুরারি সিংহ-র কবিতাপাক্ষিক থেকে পড়তে থাকুন :

' আরো অনেকের মতোই আমার কাছেও কবিতাপাক্ষিক এখন একটি বিশুদ্ধ আবেগের নাম।

' কবিতাপাক্ষিক' নামটা উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে তার আগে ' আমাদের ' শব্দটি অনায়াসেই বসে যায়। এর মধ্যে কোনোরকম গড়াপেটা নেই। জোর-জবরদস্তি নেই। কষ্টকল্পনা নেই। শ্বাস-প্রশ্বাসের মতো এটাও একটা স্বাভাবিক ঘটনা।'

এর পরের অংশে বর্ধমান বইমেলায় কবিতাপাক্ষিকের সঙ্গে পরিচয়ের কথা জানিয়ে ছিল মুরারি।সেখানে মুরারি জানিয়েছিল  সে বাঁকুড়ার এক গণ্ডগ্রামের ছেলে। আই পি টি এ , জমিদখলের লড়াই পার করে কর্মজীবন, ঝাড়গ্রাম, বালুরঘাট হয়ে বর্ধমান।

এরপর আবার মুরারি-কথায় :

' তারপর কেটে গেছে সাড়ে পাঁচ বছর। কবিতাপাক্ষিকের সংসার আরো বড়ো হচ্ছে।কোচবিহারের সুবীর সরকার থেকে মেদিনীপুরের মানসকুমার চিনি। কীর্ণাহারের রহিম রাজা থেকে জামশেদপুরের শ্যামল শীল । অতি প্রবীণ গদাধর দাস অথবা দীপংকর ঘোষ থেকে অতি নবীন সৌমিত্র রায় অথবা অতি নবীনা দিনিকা বসু --- এ যেন অসীম বিস্তার। অগ্রজদের আমরা যেমন মাথা নত করে শ্রদ্ধা জানাই নবাগতদেরও তেমনি মুহূর্তে আপন করে নিই।

নতুন কলম ধরা ছেলেমেয়েদের কাছে তো কবিতা-পাক্ষিক এখন এক অতি বড়ো ভরসাস্থল।বাংলাভাষায় যাঁরা সাহিত্যচর্চা করেন সবাই আমাদের বন্ধু। গত দশ বছরে কবিতাপাক্ষিকের পাতায় পাতায় যত নতুন কবিতা বা কবিতার আলোচনা প্রকাশিত হয়েছে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের ইতিহাসে তার তুলনা নেই। সাম্প্রতিক সময়ে যাঁরা লিখতে এসেছেন তাঁদের মধ্যে খুব কমজনই আছেন যাঁদের কোনো না কোনো লেখা পাক্ষিকে ছাপা হয়নি। অনেক ছেলেমেয়ে তো  কবিতাপাক্ষিক দিয়েই শুরু করেছেন।কবিতাপাক্ষিকের আর একটি অনন্য কৃতিত্ব আছে সেটা না বললে কথা সম্পূর্ণ হয় না তা হল আমাদের মতো অনেক প্রান্তিক মানুষ যারা হয়তো সারাজীবন কবিতার পাঠক হয়েই কাটিয়ে দিত তাদের অনেককে খুঁজে বের করে তাদের দিয়ে অনেক কবিতা লিখিয়ে নেওয়া । '

মুরারি-র লেখার শেষ অংশ :

' বিংশ শতাব্দীর শেষ দশক অথবা একবিংশ শতাব্দীর প্রথমটা কবিতাপাক্ষিকের দশক ছিল কিনা তার বিচার করবে ভাবীকাল তবে খুব বুড়ো হয়েও আমাদের মধ্যে যারা বেঁচে থাকবে তারা তাদের নাতিপুতিদের কাছে অন্তত একটা কথা খুব গর্বের সঙ্গে বলতে পারব যে আমি এই কবিতাপাক্ষিক পরিবারেরই একজন সদস্য । '

এই মুরারি সিংহ লিখিত রচনাটির আমার কোনো ব্যক্তিগত সংযোজনের প্রয়োজন নেই।

ভালো থাকুন। এই শারদোৎসব অনেকটাই অন্যরকম তা আমরা জেনে গেছি। আমরা , যারা সৃষ্টিকর্মের সঙ্গে যুক্ত , তারা সকলেই জানি আমাদের করণীয় কী।

শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২০

নিউ নরমাল আই ফেস্ট ২০২০ || বিশেষ প্রতিবেদন

দারুণভাবে সফল হল "নিউ নরমাল আই-ফেস্ট ২০২০"




বিশেষ প্রতিবেদন, দৈনিক বাংলা নিউজ ডেস্ক, ২৩ অক্টোবর || আজ মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর স্মৃৃৃতিমন্দিরে অনুষ্ঠিত হল i-সোসাইটি আয়োজিত "নিউ নরমাল আই ফেস্ট ২০২০" ৷ ছিল সংবর্ধনা জ্ঞাপন, পত্রিকা ও বই প্রকাশ ডিজিটাল কবি সম্মেলন ৷ ছিল মাস্ক স্যানিটাইজার ও পুষ্প দিয়ে বরণ ৷ একটি নতুন ওয়েবসাইটও প্রকাাশিত হয়েছে ৷

আটপৌরে কবিতা || নীলাঞ্জন কুমার || ধারাবাহিক বিভাগ

 আটপৌরে কবিতা

নীলাঞ্জন কুমার

৯৬১

বল / ক্ষমতা/  অহংকার
      ) পরাক্রম  (
রাজারাজড়ার ছবিতে ফুটে ওঠে ।

৯৬২

চুরি/  দখল/  অবৈধ
     ) আত্মস্যাৎ  (
একদিন জবাব দিতেই হয় ।

৯৬৩

সৎ/  সত্যবাদী/  শ্রদ্ধেয়
      ) সত্যবচন  (
সবাই ভালো চোখে দেখে ।

৯৬৪

খোঁজ/  নিরীক্ষা / গবেষণা
        ) অন্বেষণ  (
না থাকলে জগৎ বৃথা ।

৯৬৫

বীর/  পালোয়ান/ শক্তিধর
        ) বাহুবলী  (
বাহুতে তুমি মা শক্তি ।


দুঃখ || বর্ণজিৎ বর্মন || কবিতা

দুঃখ 

বর্ণজিৎ বর্মন 



ভাবনা যদি পাখি হয়,

দুঃখ গুলি মেঘের মতো হাঁস হয়ে ওপারে যেতে পারে না কেন ?


পরিখা ছুঁয়ে ছুঁয়ে 

প্রয়োজনীয় সুখ নিয়ে ভেসে আসত ,

আমাদের প্রত্যেকের হাঁস

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য ১৭২ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক গদ্য

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য

প্রভাত চৌধুরী



১৭২.

এই ধারাবাহিক রচনাটিতে ধারাবাহিকভাবে কয়েকটি ঢাকের বাদ্যি-কে ব্যবহার করে চলেছি । সেকারণে এই লেখাটিকে প্রচারের ঢক্কানিনাদ বলে চিহ্নিত করা যেতেই পারে । করলে তার বিরুদ্ধে একটিও আবেদনপত্র জমা করব না। বরং আরো কিছু আত্মপ্রচার ধর্মী লেখা পাঠকদের সামনে তুলে ধরব। যাতে অভিযোগটি আরো পাকাপোক্ত হয়। কারণ আমি জানি যাঁদের নিজস্ব কিছুই করার থাকে না , তাঁরা চিরটা কাল কাঠিবাজি করতে থাকেন । এটা না করে যদি এঁনারা  ' কাঠিনাচ ' নামক লোকনৃত্যটি রপ্ত করার চেষ্টা করতেন , তাহলে দর্শকবৃন্দ কিঞ্চিৎ উপভোগের সুযোগ পেতেন সেই কাঠিনাচ। অনেকেই জানেন কাঠিবাজি দ্বারা আমাকে বিচলিত করাটা কখনোই সম্ভব হবে না। কারণ আমি কাঠিবাজি- ছুঁচোবাজি ইত্যাকার বাজির আওতার বাইরে অবস্থান  এ করি। আমি যা করি তার সবটাই নতুন প্রকল্পনা। এর প্রতিষেধক এখনো বাজারজাত হয়নি। এতক্ষণ যা লিখলাম , তার সবটাই আত্মপ্রচার।

এখন  ' সৌমিত্র রায় -এর জন্য গদ্য ' এই লেখাটিতে সৌমিত্র রায় , এই অনলাইন দৈনিকটির সর্বেসর্বা ২০০৩ -এ কবিতাপাক্ষিক সম্পর্কে কী দৈববাণী  করেছিল , তা একবার পড়ে নেওয়া যাক। আমি পড়ি, আপনারা পাঠশালার ছাত্রদের মতো ধুয়া ধরুন।

সৌমিত্র রায় -এর কলম লিখেছিল বা এক নবীন কিশোর লিখেছিল :

' কবিতাপাক্ষিক সূত্রে টোটাল পোয়েট্রির কাজকর্ম খুব সামনে থেকে দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। সেইসব কাজকর্মে দু-এক বছরের জন্য হলেও নিজেকে সম্পূর্ণ নিয়োজিত করতে পেরেছিলাম বলে নিজে গর্ববোধ করি। সর্বোপরি নিজেকে গড়ে তোলার জন্য যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় তার মূল্য অপরিসীম। টোটাল পোয়েট্রির কাজকর্মের মধ্যে কবিতা লেখা , কবিতার জন্য লেখা , সেইসব ছাপার ব্যবস্থা করা এবং পাঠকের দরবারে পৌঁছে দেবার পাশাপাশি ,অন্যতম আরো একটি কাজ করে চলেছে কবিতাপাক্ষিক , তা হল কবিজন্ম। বেশ কিছু  নতুন কবির জন্ম হয়েছে কবিতাপাক্ষিক

[22/10, 11:47 am] Kobi Prabhat Chowdhury: কবিজন্ম। বেশ কিছু  নতুন কবির জন্ম হয়েছে কবিতাপাক্ষিক পরিবারের সংস্পর্শে এসে। নিজের কথাই বলি। সেই ভাগ্যবানদের মধ্যে আমিও একজন। '

ধন্যবাদ সৌমিত্র। একমাত্র তুমিই স্পষ্টভাবে এহেন কথা বললে। বা তোমার এই কথার সূত্র ধরে অনেক সত্যই সামনে চলে আসবে ৷ সৌমিত্র রায় প্রদত্ত সার্টিফিকেটে আরো কিছুটা যোগ করা যাক :

' সর্বোপরি ফাদার প্রভাত চৌধুরী নানান ফাইফরমাসে একসাথে কাজ করার আনন্দ কোনোদিন ভোলার নয়।সকাল দুপুর বিকেলে যে কোনো সময় ফাদারের কথামতো উপস্থিত হয়েছি নিদির্ষ্ট স্থানে। কখনো পটলডাঙার ছাদ , কখনো শৈবালদার " সাইবার পাস " কখনো বা ছাপাখানা আবার কখনো দুষ্টুদার ট্রান্সপোর্ট ।'

সৌমিত্র-র আরো কিছু কথা :

' টোটাল পোয়েট্রির বাইরে থাকলে হয়তো কোনোদিন নতুন কবিতায় মনোযোগ আসত না। বাংলা কবিতা সম্পর্কিত খুব কম বই পড়েছি।কিন্তু পাক্ষিক সংশ্লিষ্ট নানান ব্যক্তিত্বের মুখ নিঃসৃত বাণী শুনেছি অনেক বেশি।পাক্ষিক পরিবার আমায় অনেক বেশি আপন করে নিয়েছে।'

শুধুই যে সৌমিত্র-কে আপন করে নিয়েছিলাম , তা নয়। সৌমিত্র-র পাশাপাশি আরো অনেককে আপন করে নিয়েছিলাম।কারণ আপন করে নেওয়াটা আমার স্বভাব। সৌমিত্র সাদাসিদে গ্রামীণ মানুষ।তথ্য- প্রযুক্তি যুগেও সে তার চরিত্রের মৌলিক মূল্যবোধ গুলিকে বিসর্জন দেয়নি বা দিতে পারেনি। নিজের সততাকে ত্যাগ করতে এখনো শেখেনি সৌমিত্র। 

সৌমিত্র রায় কীভাবে শেষ করেছিল , সেটাও জেনে নিন :

' বিশ্বাস করুন শান্তনুদা , রজতদা অফিসে কাজ করতে করতে আমার ভীষণ দেখতে ইচ্ছে করে প্রভাতকাকু নতুনদের শেখাচ্ছেন কবিতা লেখা , কবিতার জন্য প্রুফ সংশোধন কিংবা পেটি বাঁধতে গিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন --- ওভাবে নয়, এভাবে।

নাসেরদা , আমার এখনো অনেক শেখার বাকি। আমাদের টিমওয়ার্কে আমিও থেমে থাকার নয়। আমার অন্তরের টান , হৃদস্পন্দন সবটাই পাক্ষিকের টোটাল পোয়েট্রির জন্য।'

এবার আমার একটি ছোটো কথা বড়ো মুখ করে বলছি : 

সৌমিত্র তার নিজের মতো করে নিজেকে গঠন করে নিয়েছে । এখানে আমার ভূমিকা সৌমিত্র অনেক বড়ো করে দেখিয়েছে।

এবং আরো একটা কথা সৌমিত্র যখনই সুযোগ পেয়েছে দেশে-বিদেশের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আমাকে উপস্থিত করেছে। সৌমিত্র-র তরফে আমার প্রাপ্তিও কম নয়।  সেসব কথা অন্য কোনো সিরিয়ালে , অন্য কোনো এপিসোডে।

Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...